বইয়ের নামঃ কুটু মিয়া
লেখকঃ হুমায়ূন আহমেদ
জনরাঃভৌতিক
নমষ্কার/আদাব আমারা বাংলা ব্লগ বাসী।আশা করি সবাই ভাল আছেন।অসহ্য তাপদাহের পর সকাল থেকে আকাশ টা মেঘলা।তার উপর লোডশেডিং এর জন্য দুপুরের ভাতঘুম মাটি।এদিকে মোবাইলেও চার্জ নেই৷হাত পা গুটিয়ে বসে থাকা আমার স্বভাবের ধারে কাছে দিয়েও যায় না।ভাবলাম বই পড়া যাক,সময় তো কাটবে।এরপর কোন বই পড়ব,কোন জনরা পড়ব তা নিয়ে পড়ে গেলাম দ্বিধায়।যেহেতুএমন মেঘলা দিনে সব গল্পের থেকে বেশি জমে ভূতের গল্প।তাই বসে গেলাম কুটু মিয়া নিয়ে।
সংক্ষিপ্ত বর্ণনাঃ
প্রথমেই একটা কথা বলে নেই, বইটিকে আমি হরর বলছি বটে কিন্তু বইটিকে আদতেই হরর বলা যাবে কিনা তা আমি নিশ্চিত না।বইটিকে রহস্য-রোমাঞ্চ জনরা তেও ফেলা যায়।কারন গল্পটা পড়ে আপনার গা ছম-ছম করবে বটে কিন্তু কেন গা ছম-ছম করছে সেই কারনটি অজানা।অনেকটা লারা লাভক্রাফট এর গল্পের মত।এবার আসা যাক গল্পের দিকে।
আলাউদ্দিন সাহেব একজন অবসরপ্রাপ্ত "ইসলামের ইতিহাসের" প্রভাষক।যিনি বিয়েথা করেন নি।ঢাকার একটি সাবলেট ফ্ল্যাটে একাকী থাকেন। এবং বর্তমানে ফুলটাইম লেখক হিসেবে কর্মরত। লেখালেখির টাকা দিয়েই তার সংসার চলে।স্বভাবতই তার একজন বাবুর্চি কাম হেল্পিং হ্যান্ড এর দরকার পরে। এমন একদিন তার বাসায় হাজির কুটু মিয়া।তার হাতে পাইলট সাহেবের প্রশংসাপত্র। সে থাই,চাইনিজ,ইংরেজী, বাংলা রান্নায় পারদর্শী।কিন্তু কুটু মিয়া কে লেখক প্রথমেই অপছন্দ করেন।কারন তাকে দেখেই লেখকের মনে অজানা আশংকা কাজ করে।তাই তাকে তাড়াতে লেখক অনেক কৌশল খাটান।কিন্তু সব কৌশলই ব্যর্থ হয়।সে রাতেই লেখক কুটু মিয়ার রান্না খেয়ে বিষ্মিত হয়ে যান, এত ভাল রান্না তিনি এর আগে কখনো খান নি।কুটু মিয়া আসার দিন তিনি স্বপ্নে দেখেন তার বিছানার নিচে কে যেন আছে এবং সে কাগজ কুটি কুটি করছে।এই স্বপ্ন দেখার পর লেখক জেগে ওঠেন এবং দেখেন আসলেই তার বিছানার নিচে কুটিকুটি করা কাগজ।কুটু মিয়া আর একটি গুণ হচ্ছে সে যে মনের কথা বুঝতে পারে,তাকে বলার আগেই সব তৈরি।
এর কিছুদিন পর আলাউদ্দীন সাহেব জানতে পারেন কুটু মিয়া আগে যাদের কাছেই কাজ করেছে তাদেরই মর্মান্তিক মৃত্যু। আর মৃত্যুর পদ্ধতিও ছিল একই।
এরপর আলাউদ্দিন সাহেব যে প্রকাশকের হয়ে কাজ করতেন সেই প্রকাশকের বিধবা ভাগ্নীর সাথে বিয়ে হয় আলাউদ্দিন সাহেবের। তিনি বুঝতে পারেন কুটু মিয়ার মাঝে কোন অলৌকিক ব্যপার আছে। তাই তিনি কুটু মিয়া কে তাড়ানোর চেষ্টা করতে থাকেন।
কে এই কুটু মিয়া?আলাউদ্দিন সাহেবের স্ত্রী কি পারবেন কুটু মিয়া কে তাড়াতে? নাকি আলাউদ্দিন সাহেব কেও কুটু মিয়ার আগের মালিক দের মত মর্মান্তিক ভাগ্য বরণ করতে হবে? জানতে হলে আপনাকে অবশ্যই পড়তে হবে বইটি।
ব্যক্তিগত মতামতঃ
আগেই বলেছি গল্পটি প্রচলিত ভূতের গল্পের মত নয়।আপনি গল্পটি পড়ে ভয় পাবেন ঠিক আছে সেই সাথে আপনার মনে এরপর কি হয়,আসলে কি হবে এই ধরনের চিন্তা চলতে থাকবে।আবার গল্পটি অনেকটা হাস্যরসাত্মক ভংগিতে লেখা,তাই মজাও পাবেন। বইটি একবার হাতে নিলে পুরোপুরি শেষ করার আগে হাত থেকে নামাতে পারবেন না। গল্পটি আপনাকে চুম্বকের মত আটকিয়ে রাখবে।বইটিকে আমি ১০ এ ৮.৫ দেব।