নাটক রিভিউ "উড়ে যায় বকপক্ষী" ১২ তম পর্ব

in hive-129948 •  3 months ago 


আসসালামু আলাইকুম

আজ
রবিবার

২৫ আগস্ট,
২০২৪

কেমন আছেন সবাই? আশা করি সবাই ভাল আছেন। আমি আপনাদের দোয়ায় মোটামুটি অনেক ভালো আছি। সকলকে শুভকামনা জানিয়ে শুরু করছি নতুন একটি পোস্ট। আজকে আমি আপনাদের মাঝে উপস্থিত হয়েছি নাটক রিভিউ নিয়ে। নাটকের নাম 'উড়ে যায় বকপক্ষী', যা আমার অতি প্রিয় একটি নাটক। নাটকটির মূল পর্ব ২৬ টি। আজ আমি আপনাদের মাঝে ১২ তম পর্ব রিভিউ আকারে শেয়ার করব। আশা করি আপনাদের অনেক ভালো লাগবে।


Screenshot_20240825-131156.jpg

❤️স্ক্রিনশট: ইউটিউব❤️


নাটকের বিশেষ তথ্যঃ


নামউড়ে যায় বকপক্ষী
রচনাহুমায়ূন আহমেদ
পরিচালকহুমায়ূন আহমেদ
অভিনয়েমেহের আফরোজ শাওন,রিয়াজ,চ্যালেঞ্জার,মাসুম আজিজ,ফারুক আহমেদ,স্বাধীন খসরু,এজাজুল ইসলাম,ড. ইনামুল হক,সালেহ আহমেদ সহ আরো অনেকে।
দেশবাংলাদেশ
ভাষাবাংলা
ধরণহাস্যরসাত্মক এবং সামাজিক
পর্বের সংখ্যা২৬
রিভিউ১২ তম পর্ব
দৈর্ঘ্য২০ মিনিট ৫৫ সেকেন্ড
প্ল্যাটফর্মইউটিউব চ্যানেল @NTVNatok


প্রধান চরিত্রেঃ


চ্যালেঞ্জার
মেহের আফরোজ শাওন
ফারুক আহমেদ
মাসুম আজিজ সহ আরো অনেকে


কাহিনীর সারসংক্ষেপ


উড়ে যায় বকপক্ষী নাটকের ১২ তম পর্বে লক্ষ্য করা যায় গানের দলের মেয়ে কৈতরির বিয়ে। কই তরীকে ভালবাসে গানের দলের তৈয়ব। কৈতরির বিয়ে হয়ে যাচ্ছে বলেই, সে গলায় ফাঁস দিতে চাই। এমন ফাঁস দেওয়ার ঘটনা অনেকবার দেখা গেছে তৈয়বের। যেখানে সারা মহল্লা জুড়ে আনন্দ চলছে আর এই মুহূর্তে তৈয়বের এমন কর্মকাণ্ড পুষ্পের কাছে মোটেও ভালো লাগছিল না। তাই ওস্তাদের মেয়ে পুষ্প তৈয়বের কাছে আসলো, সে নিজ হাতেই তৈয়ব ভাইয়ের গলায় ফাঁস দিয়ে দিতে চাই। এমন কথা শুনে পতৈয়ব দৌড়ে পালিয়ে গেল। পুষ্প জানে সে শুধু এভাবেই ন্যাকামি করে অন্যের বিবাহ বন্ধ করার চেষ্টা। যে মেয়েকে দেখে তারই ভালো লেগে যায় তৈয়বের। এদিকে গ্রামের এক ব্যক্তির শালিকা সেলিনা বেগম কেউ তার ভালো লাগে। অর্থাৎ যুবতী মেয়ে ছেলে দেখলেই তার খুব ভালো লেগে যায়। এমন বিষয়টা পুষ্প ভালো করে জানে। তবে তৈয়ব খুবই ভালো একজন বোকা মানুষ, এতে কোন সন্দেহ নেই। পথের মধ্যে সেলিনা বেগমের সাথে তৈয়বের দেখা হলে সে তাকে বলে খুবই সুন্দর লাগছে তাকে। যেন কৈতরির কথা ভুলেই গেল তৈয়ব সেলিনা বেগমকে দেখে।

Screenshot_20240825-155550.jpg

🌻স্ক্রিনশট: ইউটিউব🌻



এদিকে কৈতরির বিয়েতে গ্রামের মানুষ খুবই আনন্দ করছে। তাকে গোসল করিয়ে দিচ্ছে। মেহেদী রাঙিয়ে দিয়েছে। যেন পাড়াগাঁয়ের এখন অন্যরকম আনন্দ আয়োজন শুরু হয়ে গেছে। তবে এর বিয়েতে গ্রামের মন্ডল সোলাইমান খুবই আনন্দিত। উনার স্ত্রীকে সেখানে যেতে বললে স্ত্রী উল্টা কথা বলে মন খারাপ করিয়ে দেয়। কারণ তাদের সন্তান নেই। তার স্ত্রী কোন আনন্দের বাড়িতে গেলে নাকি অমঙ্গল হয়। তাই মন্ডলের স্ত্রী এমন একটা খুশির দিনে কৈতরির পাশে যেতে রাজি নয়। এমনকি স্বামীকে আর একটা বিয়ে করতেও প্রস্তাব রাখে, যেন সন্তান হয়। এরপরে বরপক্ষ বিবাহ করতে আসে, গ্রামবাসীরা সাদরে গ্রহণ করে।

Screenshot_20240825-155639.jpg

🌻স্ক্রিনশট: ইউটিউব🌻



উড়ে যায় বকপক্ষী নাটকের পুষ্পদের গ্রামের নাম বাতাকান্দি। পুষ্পের মা দূরে কোথাও বসবাস করে। পুষ্পের কাছে কখনো পরিচয় দিতে আসে না। কিন্তু গোপনে আড়াল থেকে মেয়েকে দেখার চেষ্টা করে। লোকের মাধ্যমে জানার চেষ্টা করে তার মেয়ে কেমন আছে। তবে আজ কেন জানি তার হঠাৎ মেয়ের প্রতি অতি টান সৃষ্টি হয়েছে, তাই বাতাকান্দি গ্রামে রওনা দিয়েছেন। সে পুষ্পের বাড়িতে টুকি মেরে দেখতে গিয়ে বৈদেশী দেখে ফেলে। তাই দৌড়ে পালায়। বৈদেশীর কোন প্রশ্নের উত্তর দিল না পুষ্পের মা।

Screenshot_20240825-155741.jpg

🌻স্ক্রিনশট: ইউটিউব🌻



রাতে কৈতরির বিবাহ উপলক্ষে গানের দল খুব সুন্দর নাচ গানের আয়োজন করেছে। যেখানে বৈদেশি ইংরেজি গান পরিবেশন করে সাথে পুষ্প নাচ করতে থাকে। রাতের আঁধারে পুষ্পের মা তাদের এই আনন্দ আয়োজন আড়াল থেকে দেখে। এরপর পুষ্পের জন্য নতুন শাড়ি ও ৪০০ টাকা পুষ্পের বাড়ির উঠানের চকিতে রেখে যায়। পুষ্প এত সুন্দর শাড়ি পেয়ে তো অবাক এবং আনন্দিত। সাথে ৪০০ টাকা। বৈদেশীর হাতে কোন টাকা নেই তাই তাকে ২০০ টাকা দিয়ে দিল আর বাকি 200 টাকা ফজলু চাচাকে দিয়ে দিল। এতে পুষ্পের উদার মনের প্রকাশ ঘটে। সে শাড়িতেই খুব আনন্দিত কিন্তু কে এই শাড়ি এনেছে বুঝতে পারল না।

Screenshot_20240825-160204.jpg

🌻স্ক্রিনশট: ইউটিউব🌻



এদিকে বাতাকান্দি গ্রামে কাদের এসেছে দুলাভাই সোলায়মানের পক্ষে ভোট করে দিতে। কিন্তু এলাকার বর্তমান যে চেয়ারম্যান রয়েছেন উনি বেশ বদরাগি লোক। কাদেরকে কাছে ডেকে বলে দেয়, সে যেন তার নামে দুর্নাম ছড়াতে থাকে; এতে হয়তো তার দুলাভাইয়ের ভোট একটু বাড়তে পারে। কিন্তু কাদের তো মুখের উপরে বলে বসে সবাই জানে সে একজন খারাপ মানুষ তার নামে আর নতুন করে কি দুর্নাম করবে। এ কথা শুনে চেয়ারম্যান বেশি রেগে গেল। চেয়ারম্যানের মুখের উপর কাদের স্লোগান দিতে থাকলো তার দুলাভাইয়ের ভোটের প্রতিক নিয়ে। এছাড়াও গোপনে কাদের গাছের সাইনবোর্ড টাঙিয়ে রাখে চেয়ারম্যানের নামে দুর্নাম কিছু লিখে। যার জলজ্যান্ত প্রমাণ তৈয়ব রয়েছে। চেয়ারম্যান বিষয়টা দেখার পর তৈয়ব কে প্রশ্ন করলে প্রথমে বলে না, কিন্তু টাকা পাবা মাত্রই সত্য টা বলে দেয় চেয়ারম্যানকে এটা কাদের টাঙিয়েছে।

Screenshot_20240825-160329.jpg

🌻স্ক্রিনশট: ইউটিউব🌻



এদিকে কৈতরির বিয়ে হয়েছে ঠিকি, কিন্তু তার বিয়ের মধ্যে দিয়ে হাসি আনন্দ গান-বাজনা যেন বন্ধ হয়ে গেল। তার স্বামী তাকে অপমান করতে থাকলো সে নাচনেওয়ালা গানের দলের মেয়ে। এরপর থেকে সে যেন আর কৈতরিকে মাথার ঘোমটা ফেলতে না দেখে, গানের দলে যেতে না দেখে। কথায় কথায় সে অপমানিত হতে থাকলো স্বামীর কাছে। তার স্বামী তার মাকে তুল্য করে বেশ অপমান করতে থাকে। তবে তার স্বামীর কাছে সে একটাই প্রতিবাদ করে এত কিছু জানার পরে কেন তাকে বিয়ে করলো আর এখন কেনই বা অপমান করছে। আর এভাবেই উড়ে যায় বকপক্ষী নাটকের ১২ তম পর্বের সমাপ্ত ঘটে।

Screenshot_20240825-160414.jpg

🌻স্ক্রিনশট: ইউটিউব🌻


99pyU5Ga1kwqSXWA2evTexn6YzPHotJF8R85JZsErvtTWYsppmXccekHQtuRnvumd4YXJL6tgu3HeQ9kVdaMY7Ztny91Kmy6WbCfuPPL5AaxDjDtXQqm2QqLmK5DNCPD34-1.png

ব্যক্তিগত মতামত:

আমরা এই নাটকে দুইটা বিষয় লক্ষ্য করেছি। এক কৈতরির বিবাহ ও বিয়ের পরপর তার গানের দলের আনন্দ বন্ধ হয়ে যাওয়ার উপক্রম। আরেক দিকে লক্ষ্য করেছি পুষ্পের মায়ের আগমন কিন্তু তিনি এখনো তার মেয়ের সামনে উপস্থিত হননি। পুষ্পের মা কেন মেয়ের কাছে পরিচয় গোপন রাখছে বিষয়টা বেশি রহস্যজনক। হয়তো পরবর্তীতে আরো কিছু জানতে পারবো। তবে এখানে কৈতরির বিয়ে হলেও আনন্দ উপভোগ করতে দেখেছি পুষ্পের। সে অন্যান্যদের তুলনায় বেশি আনন্দিত ছিল এবং নাচ গান করেছে বিবাহ উপলক্ষে। যেন এই বিয়ের মধ্যমণি পুষ্প। তাকে ঘিরেই যেমন নাটকের সবকিছু ঠিক তেমনি এই পর্বের হাসি আনন্দ সবকিছু পুষ্পকে ঘিরে। সে প্রতিবাদস্বরূপ তৈয়বের সামনে উপস্থিত হয়েছে, যেন গলায় ফাঁস নিজেই টেনে দিবে। কারণ সে তৈয়বের কর্মকাণ্ড জানে। এই পর্বে ইলেকশনের কিছুটা প্রভাব লক্ষ্য করা গেছে। হয়তো পরবর্তীতে ইলেকশনের কার্যক্রম বৃদ্ধি পাবে। এছাড়াউ লক্ষ্য করা গেছে তৈয়েবের রোমান্টিক একটা মন। যেখানে,যেকোন মেয়ে ছেলের সৌন্দর্য ধরা পড়ে। তাই বলতে গেলে এই পদের অভিনয়টা দর্শকের জন্য খুবই আনন্দদায়ক। মন ভালো রাখার ও আনন্দ পাওয়ার অন্যতম একটি নাটকের পর্ব ছিল এটা।

ব্যক্তিগত রেটিং:

৮/১০


নাটকের লিংক


রিভিউটা ভিজিট করার জন্য ধন্যবাদ।

received_434859771523295.gif

আমার পরিচয়

আমি মোছাঃ সিমরান জারা। আমার বাংলা ব্লগ কমিউনিটির সদস্য সুমন জিরো নাইন এর পরিবার। আমার বাসা গাংনী মেহেরপুর। আমি একজন গৃহিণী। আমি ফটোগ্রাফি, রেসিপি পাশাপাশি ব্লগ করতে বেশি পছন্দ করে থাকি। এছাড় বিভিন্ন জায়গায় ঘোরাঘুরি করতে ভালো লাগে। আমি এসএসসি পাশ করেছি। গাংনী ডিগ্রী কলেজে অধ্যায়ণরত রয়েছি।


qjrE4yyfw5pEPvDbJDzhdNXM7mjt1tbr2kM3X28F6SraZjhKfwarvyppgw9vqb9HZvwjHzdVYbXjNSwmxX8BvQtkJibkzjkMfqSg4GHwc6sRTpcDcvAvyxra.png

Authors get paid when people like you upvote their post.
If you enjoyed what you read here, create your account today and start earning FREE STEEM!
Sort Order:  

Thank you, friend!
I'm @steem.history, who is steem witness.
Thank you for witnessvoting for me.
image.png
please click it!
image.png
(Go to https://steemit.com/~witnesses and type fbslo at the bottom of the page)

The weight is reduced because of the lack of Voting Power. If you vote for me as a witness, you can get my little vote.

এটা আমারও অনেক পছন্দের নাটক । এই নাটক কয়েকবার দেখেছি যতই দেখি ততই দেখতে ইচ্ছা করে । অনেকদিন পরে নাটকটি চোখের সামনে দেখে নাটকের প্রত্যেকটা পর্ব মনে পড়ে গেল । ভালো লাগলো নাটকটির রিভিউটি দেখে ও পড়ে ।

অসংখ্য ধন্যবাদ আপু

উরে যায় বকপক্ষি হুমায়ুন আহমেদ এর এক দারুন সৃষ্টি আমি বেশ কয়েকবার এই নাটকটা দেখেছি আমার ক্লান্তি লাগে নি।আসলে এমন নাটক আর হবে না কখনো।অনেক সুন্দর ভাবে আপনি উপস্থাপন করেছেন। শুভ কামনা রইলো।

অনেক অনেক ভালো লাগলো

আমার পছন্দের নাটক গুলোর মধ্যে এটা অন্যতম। আমিও মাঝেমধ্যে নাটকটা দেখার চেষ্টা করি। তবে জীবনে অনেকবার দেখেছি এই নাটকটা। খুবই ভালো লাগে নাটকের অভিনয়গুলো। বিশেষ করে তৈয়বের কথা মজার।

দারুন মন্তব্য করেছেন