||কলেজ থেকে ইন্ডাস্ট্রিয়াল ট্যুর ||১০%সাই - ফক্স এবং ৫% এবিবি - স্কুল

in hive-129948 •  3 years ago 

আসসালমুআলাইকুম,আদাব ।



আজ,

২০ই জৈষ্ঠ্য ১৪২৮
৩ই জুন ২০২২



মার বাংলা ব্লগ বাসি সকল এর প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে শুরু করছি আজকের এই পোস্ট, আশা করছি আপনারা সকলে ভালো আছেন।আজ আমি দিনাজপুর পলিটেনিক্যাল ইনস্টিটিউট থেকে লোকোমোটিভ কারখানা এবং তার সাথে উত্তর বঙ্গের সর্ব বৃহৎ পিকনিক স্পট স্বপ্নপুরী ঘুরে আসলাম ।সেখানে ঘোরাঘুরি নিয়ে আমার আজকের এই পোস্ট ।

20220602_073322.jpg

অবস্থান:দিনাজপুর পলিটেকনিক ইনস্টিটিউট
ডিভাইস: মোবাইল

দিনটি ছিল ২ জুন 2022 ।আগের দিন রাতে বন্ধু গুলোকে নিয়ে বসে আড্ডা দিতেছিলাম কালকের কে কি করবো কোথায় বসবো স্যার ম্যাডাম কে আমাদের বাস এ উঠতে দিবো না ইত্যাদি ।পরেরদিন সকাল ৬:০০ না বাজতেই সুমন এসে দরজায় জোরে জোরে ডাকতেছে ।অনেক্ষন ডাকার পর আমি কোনো মতন চোখ খুলে গেইট খুলে আবার শুয়ে পড়লাম ।এ দেখে সুমন বলে উঠ মামা জাবি না আমি তো চোখ খুলতেই পারছিলাম না ।এটা দেখে সুমন আমার মুখে বোতল এর মুখ খুলে আমার মুখে পানি ঢেলে দেয় আমি সিঁটকে উঠি ।উঠে ওকে দেই এক লাথি। এর পর রেডি হয়ে কলেজ এ গিয়ে দেখি সবাই ট্যুর গেঞ্জি পড়ে আছে।আমি আগের দিন কলেজ যাই নি তাই আমার গেঞ্জি নেওয়া হয়নি ।তাই আমি শার্ট পড়ে গিয়েছিলাম ঐখানে গিয়ে দেখি সবাই পরে আছে। আমাকেও টি-শার্ট দিয়ে জোর করে বললো তুমিও টি-শার্ট পরো।তারপর সকল এ মিলে বাস এ চরি ।বাস ২ টা নেওয়া হয়েছে একটা এ গ্রুপ আরেকটা বি গ্রুপ ।আমরা বি গ্রুপ যারা ছিল সব গুলো একটা বাস এ চড়ে সব ছিট ব্লক এ গ্রুপ এর একটা ছেলে ও আমাদের বাস এ চড়তে পারে নি ।আগের দিন যেভাবে প্ল্যান করেছিলাম ।এরপর বাস ছাড়া হল বাসে অনেক মজা করেছি আমরা বাসে চড়ে সকলে মিলে গান নাচ পুরো ভরপুর এক অবস্থা। যেগুলো বিড়ি খায় না সেগুলো কেও বিড়ি লাগিয়ে দেই। এরপর আমরা প্রথমেই পার্বতীপুর লোকোমোটিভ কারখানায় গিয়ে পৌঁছায়।
20220602_100029.jpg20220602_100045.jpg

অবস্থান:পার্বতীপুর লোকোমোটিভ কারখানা
ডিভাইস: মোবাইল

এর পর আমরা বাস থেকে নেমে সকলে মিলে কারখানার দিকে চলতে শুরু করি। ওইখানে গিয়ে ম্যাডাম এবং সি আই স্যার মিলে আমাদের চারটা গ্রুপে ভাগ করল। কারণ কারখানার ভিতরে একসাথে অনেক জনকে নিয়ে যাওয়া যাবে না। এরপর আমরা চারটা ভাগে ভাগ হই। প্রথম গ্রুপটা যায় এরপর দ্বিতীয় গ্রুপ যায় এরপর একের পর এক বাকি দুইটা গ্রুপ ভিতরে যায়। কারখানার ভিতরে গিয়ে আমি পুরো হতবাক, অনেক জিনিসের সাথে আমি পরিচিত হয়েছি। জিনিসগুলো এর আগে ছোট আকারে দেখেছি কিন্তু কারখানার ভিতরে গিয়ে দেলওয়ের বড় বড় পিস্টন ,সিলিন্ডার,জেনারেটর। আমি ১৬ সিলিন্ডার দেখে বেশি অবাক হয়েছিলাম এর এর আগে ২স্টক বা ৪ স্টক সিলিন্ডার দেখেছি ।কারখানায় রেলওয়ের সব প্রসেস দেখতে পারি ।ধাপে ধাপে প্রত্যেকটা কাজ করা হয় ।সেখানকার কিছু ছবি তুলেছি চলুন দেখে আসি ।

20220602_102741.jpg

অবস্থান:পার্বতীপুর লোকোমোটিভ কারখানা
ডিভাইস: মোবাইল

এগুলো হচ্ছে পিস্টন এবং কানেকটিং রড একসাথে ।

20220602_102759.jpg

অবস্থান:পার্বতীপুর লোকোমোটিভ কারখানা
ডিভাইস: মোবাইল

এগুলো হচ্ছে লুব অয়েল পাম্প।

20220602_103151.jpg

অবস্থান:পার্বতীপুর লোকোমোটিভ কারখানা
ডিভাইস: মোবাইল

এটি হচ্ছে কম্প্রেশ্বর।

20220602_103222.jpg

অবস্থান:পার্বতীপুর লোকোমোটিভ কারখানা
ডিভাইস: মোবাইল

এটি হচ্ছে ক্যামশাফট।

20220602_104521.jpg

অবস্থান:পার্বতীপুর লোকোমোটিভ কারখানা
ডিভাইস: মোবাইল

এটি ইঞ্জিন এর পুরো প্রসেস ,এখানে ১৬ সিলিন্ডার এর ইঞ্জিন ক্রাংকশ্যাফট ক্যামশাফট পিস্টন ফ্লাই হুইল ইত্যাদি পুরো প্রসেস ।

20220602_104735.jpg

অবস্থান:পার্বতীপুর লোকোমোটিভ কারখানা
ডিভাইস: মোবাইল

পিছনের রেলওয়ে চাকা, আমি সেখানকার স্যারকে জিজ্ঞাসা করলাম বললাম চার চাকা গুলোর দাম কত হতে পারে তিনি আমার প্রশ্নের জবাবে বলল 16 লাখ টাকা। আমি তো পুরো অবাক হয়ে গেলাম চাকার সেট এর দাম 16 লাখ টাকা।

20220602_110126.jpg

অবস্থান:পার্বতীপুর লোকোমোটিভ কারখানা
ডিভাইস: মোবাইল

এখানে হর্ন এর পুরো প্রসেস তৈরি করা হয় ।আমাদের চেক করে দেখানো হলো। বাজানোর আগ মুহুর্তে আমরা সকলেই সকলের কান চেপে ধরছিলাম কারণ অতিরিক্ত পরিমাণে সাউন্ড এই হর্ন মাধ্যমে হয়।

20220602_104824.jpg

অবস্থান:পার্বতীপুর লোকোমোটিভ কারখানা
ডিভাইস: মোবাইল

এরপর এই জায়গায় এনে ইঞ্জিন সেট করে ।এবং এখান থেকে ইঞ্জিন বের হয়ে যায় বাহিরে ।

20220602_113911.jpg20220602_112207.jpg

অবস্থান:পার্বতীপুর লোকোমোটিভ কারখানা
ডিভাইস: মোবাইল

এরপর আমরা কারখানায় অনেকেই অনেক ধরনের ছবি তোলা শুরু করি। আমার এক বন্ধু জাহিন সে ক্যামেরা নিয়ে আসায় তাকে এ একবার ডাকে তো আরেকজন আরেকবার ডাকে এই নিয়ে ছবি তুলতে তুলতে বেছারা বিরক্ত হয়ে যায়। আমাদের গ্রুপ ছবি গুলো ক্যামেরায় এখনো রয়ে গেছে যার কারণে আপনাদের সামনে নিয়ে আসতে পারলাম না। এরপর আমরা বাস এ চড়ে স্বপ্নপুরীর উদ্দেশ্যে রওনা হই।স্বপ্নপুরীর উদ্দেশ্যে যাত্রার পর পর এ সবাই সিট থেকে নেমে এই যে নাচ ।কি আর বলবো কে দেখবে কর নাচ সবাই সবার মত করে নাচ শুরু ,থামতেই চায় না । এরপর আমরা সপ্নপুরিতে নেমেই প্রথমে আমরা খাওয়া দাওয়া করি।

20220602_140537.jpg

অবস্থান:স্বপ্নপুরী
ডিভাইস: মোবাইল

কারণ আমাদের সকলেরই প্রচুর পরিমাণে ক্ষুধা লেগে গিয়েছিল। কেননা অনেক সকালে উঠে হালকা নাস্তা করে বেরিয়েছি ভারী খাবার খাইনি। তাই সেখানে আমরা খাওয়া-দাওয়া করি।

20220602_152927.jpg

অবস্থান:স্বপ্নপুরী
ডিভাইস: মোবাইল

খাওয়া-দাওয়া শেষ করাও দেরি নেই গ্রুপ অনুযায়ী ভাগ হওয়ার দেরি নেই। যে যার মত ভাগ হয়ে গেলাম, আমরা যেগুলো বেশি ফাজিল সবগুলো একসাথে ই রয়ে গেলাম। অন্য গ্রুপ এর থেকে আমাদের গ্রুপের ছেলেপেলে বেশি।

20220602_161103.jpg

অবস্থান:স্বপ্নপুরী
ডিভাইস: মোবাইল

আমার এক বন্ধু ফাইজলামি করে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরকে জড়িয়ে ধরে। এবং বলে দাদু তোমাকে আমি আর ছাড়বো না তোমাকে আজকে আমি পেয়ে গেছি। এ দেখে আমরা হাসতে হাসতে মাটিতে লুটিয়ে পড়ার মত অবস্থা। এরপর পুরো স্বপ্নপুরী ঘুরলাম ।
20220602_154742.jpg20220602_155659.jpg

অবস্থান:স্বপ্নপুরী
ডিভাইস: মোবাইল

এই জায়গা আমার বেশি ভালো লেগেছে যার কারণে না তুলে আর পারলাম না।যদিও বা ২/৩ বছর আগে আমি এসেছিলাম।কিন্তু এখন আরো সুন্দর করেছে স্বপ্নপুরী ।

20220602_171050.jpg20220602_171246.jpg

অবস্থান:স্বপ্নপুরী
ডিভাইস: মোবাইল

স্বপ্নপুরী এর চিড়িয়াখানায় গিয়ে ময়ূর পেখম বেঁধেছিল । যা চোখ ধাঁধানো করা এক অবস্থা, কেননা এর আগে আমি আমার জীবনে কখনো সরাসরি ময়ূরকে পেখম বাঁধতে দেখি নি ।হরিণ এর ঘাস খাওয়ার ব্যাপার টাও দারুন ছিল।এরপর ঘোরাঘুরি শেষ এ আমরা দিনাজপুর এর দিকে আবার রওনা দেই ।

অনেক অনেক ধন্যবাদ আমার পুরো পোস্টটি পড়ার জন্য।

UF7UDccXmKiRkXceCavGEKH3TNDM65wJtxFfBvK53mUcMEN1RtxDtd2qctmxbj85zamfAyPuQoVu5pH2hQSYC82VLsES2d3cmZ8aKnsxxU...ZRqX57aCNfBEVr8xP4ZVQvXtGnN9RTYY3tTRTP3iJsec9qp2U7UVz8sdPRmeySEvfJ4wcrT5G4DKYMC3jwNKSbfqbxJiCzMFawmJqraZZFqesWqtUQ4fXishWN.png

নিজের সম্পর্কে কিছু কথা :

আমি একজন স্বাধীন চিত্তপ্রিয় মানুষ। আমি মনে করে মানুষ মানুষের জন্য। আমি এটাও মনে করি একটি ভালো ব্যবহার পাল্টে দিতে পারে একটি মানুষের জীবনের গতিপথ। আমি একজন ডিপ্লোমা ইন ইঞ্জিনিয়ারিং ছাত্র। পড়াশোনায় এখনো অধ্যায়নরত ভাবে আছি।

UF7UDccXmKiRkXceCavGEKH3TNDM65wJtxFfBvK53mUcMEN1RtxDtd2qctmxbj85zamfAyPuQoVu5pH2hQSYC82VLsES2d3cmZ8aKnsxxU...ZRqX57aCNfBEVr8xP4ZVQvXtGnN9RTYY3tTRTP3iJsec9qp2U7UVz8sdPRmeySEvfJ4wcrT5G4DKYMC3jwNKSbfqbxJiCzMFawmJqraZZFqesWqtUQ4fXishWN.png

Authors get paid when people like you upvote their post.
If you enjoyed what you read here, create your account today and start earning FREE STEEM!
Sort Order:  

খুব ভালো লাগলো আপনার পোস্ট পড়ে। আপনি অনেক সাজিয়ে পোস্ট শেয়ার করেছেন। আপনার পোস্টের ফটোগ্রাফিগুলো অসাধারণ ছিলো ভাই। আর একটা কথা হচ্ছে বন্ধু বান্ধব এক সাথে থাকলে ভালো মজা হয়। আপনার জন্য অনেক অনেক শুভকামনা রউলো।

অনেক ধন্যবাদ কাকন ভাই এত সুন্দর কমেন্ট করার জন্য। বন্ধুবান্ধব থাকলে আসলেই অনেক মজা হয়।

কলেজ থেকে ইন্ডাস্ট্রিয়াল ট্যুরে যাওয়ার মজাই আলাদা করা যায় একমাত্র তারাই বুঝতে পারে যে বন্ধুদের সঙ্গে ইন্ডাস্ট্রিয়াল ট্যুর করার মজা কতটা। আমিও যখন পলিটেকনিকে পড়তাম তখন কয়েকবার ইন্ডাস্ট্রিয়াল ট্যুরে গিয়েছিলাম খুব চমৎকার একটি মুহূর্ত অতিবাহিত করেছেন সকলের সঙ্গে। আপনার মুহূর্তটা আমাদের মাঝে শেয়ার করার জন্য ধন্যবাদ।

এটা জেনে খুব ভালো লাগলো যে আপনিও পলিটেকনিক এর স্টুডেন্ট ছিলেন ভাই। অনেক ধন্যবাদ আমার পুরো পোস্টটি পড়ার জন্য আর আসলেই অনেক মজা হয় বন্ধুরা সাথে থাকলে।

গ্রুপ ভিত্তিক ট্রর গুলো বেশ ভালই মজা করা যায়।একই ব্যজ এর বন্ধুরা মিলে আমাদেরো কিছুদিন পর একটা ট্রর রয়েছে আপনার উপস্থাপনা চমৎকার হয়েছে এগিয়ে যান শুভ কামনা রইলো।

আমি আশা করতেছি আপনাদের ভ্রমণ অনেক মজাদার হবে। কেননা বন্ধুবান্ধব থাকলে আর কিছুই লাগে না। অনেক ধন্যবাদ ভাই পুরো পোস্টটি পড়ার জন্য।