হ্যালো বন্ধুরা,
আপনারা সবাই কেমন আছেন? আশা করি, সৃষ্টিকর্তার অশেষ রহমতে অনেক অনেক ভালো রয়েছেন। আমিও আপনাদের দোয়ায় অনেক ভালো রয়েছি। 'আমার বাংলা ব্লগ'এর সকল ভাইবোন বন্ধুদেরকে আমার পক্ষ থেকে সালাম এবং অভিনন্দন জানিয়ে শুরু করতে যাচ্ছি ওয়াজ মাহফিলের মেলা ভ্রমণের তৃতীয় পর্ব। আজকের পর্বে আমি আপনাদের মাঝে উপস্থিত হয়েছি খাওয়া-দাওয়ার বিশেষ মুহূর্ত নিয়ে যেখানে। ওয়াজ মাহফিলের জায়গায় বিভিন্ন প্রকার খাবারের আইটেম পাওয়া যায়। আর সেই সুন্দর বিষয়গুলো তুলে ধরব এই পোষ্টের মাঝে। তাই চলুন আর কথা না বাড়িয়ে এখনই বিস্তারিত পর্যায়ে চলে যায়।
ওয়াজ মাহফিলে মানুষ ওয়াজ শোনার নামে বেশিরভাগ যায় মেলা ভ্রমন করতে, বিভিন্ন প্রকার মিষ্টি ঝাল জাতীয় জিনিস খেতে, আবার কেউ যায় আড্ডা দিতে। বাস্তব সত্য যেটা সেটাই তুলে ধরলাম। কারণ আমার দীর্ঘ কয়েক ওয়াজ মাহফিলে যেয়ে অভিজ্ঞতা অর্জন হয়েছে। তবে সব জায়গায় এমনটা নয়। গ্রাম অঞ্চলে বেশি এটাই লক্ষ্যনীয়। ঠিক আমি আর আমার বন্ধু গিয়েছিলাম ওয়াজ মাহফিলের ওই জায়গায়। পাশের গ্রাম রুয়েরকান্দি, জীবনে যেখানে যায়নি। ওয়াজ মাহফিলের মেলাতে খাওয়া দাওয়ার উদ্দেশ্যে গিয়েছিলাম আর ফটোগ্রাফির উদ্দেশ্যে গিয়েছিলাম। যাই হোক ওয়াজ মাহফিলের জায়গা ঘুরে আসলাম চারিদিকে লক্ষ্য করলাম এরপর দুই বন্ধুর প্রধান উদ্দেশ্য খাওয়া দাওয়া ও ফটোগ্রাফি। আগে ঝাল নাকি মিষ্টি দিয়ে শুরু করবো এটাই ছিল আমাদের ভাবনার বিষয়। মারুফ হঠাৎ বলল আগে মিষ্টি দিয়ে শুরু করি, শুভ কাজে মিষ্টি দিয়ে শুরু করতে হয়। আমি বললাম মিষ্টি খাওয়ার পরে যদি ঝাল খায় তখন তো ঝাল লাগবে বেশি। মারুফ ইয়ার্কি করে বলে বসলো আবার মিষ্টি খাব। তখন বললাম যদি আবার ঝাল খেতে মন চায় মিষ্টি খেলে তো ঘিনঘিন করে। ও বলল তারপর আবার ঝাল খাব। তারপর ইয়ার্কি করে আরো বললো সমস্যা হলে দুইটা মিশিয়ে খাবো! নে শুরু কর। যাইহোক শুরুতেই বলল চল জিলাপির দোকানে যাওয়া যাক। জীবনে এখানে আসা হয় না আসছি স্মৃতি হয়ে থাকবে। চলে গেলাম জিলাপির দোকানে। কয়েক জায়গায় জিলাপি ভাজছে কিন্তু রাস্তার কোল দিয়ে যে জিলাপি ভাজছে সেখানে আমি কখনোই খাব না। কারণ মানুষের পায়ের ধুলো সেই জিলাপিতে লাগতেই আছে, হয়তো রাতের কারণে দেখা না গেলেও বোঝাতে যাচ্ছে। একটু সাইড করে যেখানে জিলাপি ভাজছিল সেখানে উপস্থিত হলাম আর একপোয়া জিলাপি কিনে নিলাম। বসার জায়গা না থাকাই দাঁড়িয়েই খেতে হল।
এরপর পাশে একটা গজার দোকান বসেছে দেখলাম এ জাতীয় মিষ্টি গুলো খেতে আমার খুবই ভালো লাগে। তবে মারুফকে বললাম একটু ঝাল জাতীয় কিছু খেয়ে আসি। ও বলল ঝাল জাতীয় খবর নিয়ে কয়েকটা আগে এই মিষ্টি খেয়ে নি। তবে জিলাপি খেয়ে একটু রুচি কমে গেছে মিষ্টির প্রতি তাই বেশি একটা না নিয়ে সামান্য পরিমাণ এই মিষ্টি নিয়ে নিলাম। এগুলো গুড়ের গজা। খেতে বেশ ভালো লাগে। ওয়াজ মাহফিলের মেলাতে এসব জিনিস বেশি পাওয়া যায়।
এরপর চলে আসলাম চিংড়ির বড় আর বার্গারের দোকানে। অবশ্য চিংড়ি মাছের বড়া আমার খুবই ভালো লাগে। তাই দুজন দুইটা করে চারটা কিনে নিলাম এবং খেতে গিয়ে এতটা ঝাল অনুভব করলাম মারুফকে তখনই বললাম আমাদের প্রথমে মিষ্টি খাওয়া ঠিক হয়নি। মারুফ বলল শুভ কাজে মিষ্টি খেতে হয় আগে। আমি বললাম তাহলে এখন ঠেলা বুঝ। ও বলল সমস্যা নেই আবার তো মিষ্টি খাব। যাইহোক এখানে খাওয়া-দাওয়া শেষ করলাম দেখলাম আমাদের মত অনেকেই নিজ দায়িত্বে খাওয়ার কাজে ব্যস্ত।
এদিকে হঠাৎ দেখতে পারলাম কুলপি মালায়। মারুফ বলল বরফ খাবি নাকি রে বেশ ভালো লাগে। আমি মোটেও রাজি হলাম না দাতে সমস্যা করবে তাই। তাই মারুফেরও খাওয়া হলো না।
এরপর চলে আসলাম বড়ার দোকানে। দেখলাম অনেক জায়গায় বড় ভেজে রেডি রয়েছে কিন্তু মারুফ বলল যেখানে ভাজছে, সেখানে চল গরম গরম বড়া খাব। যাইহোক এরপর ভালোমতো বড়া দেখে গরম গরম এক পোয়া নিয়ে নিলাম। কিছুটা সময় ধরে দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে খেলাম আর চারিপাশের মানুষের কার্যক্রম দেখতে থাকলাম নতুন স্থান সম্পর্কে ধারণা পেলাম। সত্যিই জীবনের একটা সুন্দর স্মৃতি রয়ে গেল দুই বন্ধু একসাথে পাশের অচেনা গ্রামে রাতে অবস্থান করে সুন্দর আনন্দঘন মুহূর্ত অতিবাহিত করেছিলাম বিভিন্ন বিষয়ের মধ্য দিয়ে। মনে হল বাড়ি এসে আর ভাত খেতে পারব না মুখ যেন ঝালে মিষ্টিতে ঝলসে গেল।
আমি ছোটবেলায় কদমা খেতে খুব পছন্দ করতাম। এই বিষয়টা মারুফের খুব ভালো করে জানা রয়েছে। ও বলল চল কিছু কর্ম কিনে নি। এখন কিছু মুখে দিলে ঝাল দূর হয়ে যাবে। আর বাড়িতে যাওয়ার পথে গাড়িতে বসে খেতে খেতে গেলেই হবে। দেখলাম তার কথাটা মন্দ নয়। তাই এক পোয়া কদমা কিনে নিলাম। এত সাদা ফর্সা দেখে যেন মন ভরে যায় কদমা।
পাশে পানি খাওয়ার সুব্যবস্থা থাকাই খুব ভালো লাগলো আমাদের। দেখলাম ওয়াজ মাহফিলের আয়োজকরা সুন্দর একটা ব্যবস্থা করেছে মানুষের জন্য। এরপর আমরা দুইজন এখান থেকে পানি খেয়ে মুখ ফ্রেশ করে নিয়ে বাড়ির দিকে রওনা দিলাম। আর এভাবে সম্পূর্ণ হলো রুয়েরকান্দি গ্রামের ওয়াজ মাহফিলের মেলা ভ্রমণের অভিজ্ঞতা।
পোস্টটি পড়ার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ।
পুনরায় কথা হবে পরবর্তী কোন পোস্টে, ততক্ষণ ভালো থাকা হয় যেনো। আল্লাহ হাফেজ। |
ভাইয়া এখন বর্তমান সময়ের মানুষ ওয়াজ মাহফিলে যাওয়ার থেকে মেলায় বেশি ভ্রমণ করে ঠিক বলেছেন। অনেক আমি খেয়াল করে দেখেছি যেখানে মেলা বসে না সে ওয়াজ মাহফিলে মানুষজন খুবই কম হয় আর আমাদের এখানে বাওটের ঐতিহ্যবাহী ওয়াজ মাহফিল মেলার জন্য বিখ্যাত। আপনি দেখছি অনেক কিছু খাওয়া দাওয়া করেছেন ভীষণ ভালো লাগতেছে ভাইয়া। আমাদের এধারে এখনো কোনো ওয়াজ মাহফিল শুরু হয় নাই। আপনি আগে আগে আগে যাক মেলায় ভ্রমণ করে ফেললেন। দাঁতের সমস্যার কারণে যাই হোক আপনি কুলফি খেলেন না। নাহলে আরো সমস্যায় পড়তে পারেন পরে। যাইহোক অনেক সুন্দর কিছু মুহূর্ত অতিবাহিত করেছেন আপনারা মেলায়।
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
হ্যাঁ ভাই ওই জায়গাটা বিখ্যাত কিন্তু আজ পর্যন্ত আমার যাওয়া হয়নি তবে এবার চেষ্টা করব
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
ওয়াজ মাহফিলের স্থান ভ্রমণ করে অনেক ভালো একটি সময় অতিবাহিত করেছেন নিশ্চয়ই।
যেখানে এরকম আয়োজন হয় সেখানে অনেক দোকানদারেরও আনাগোনা হয় বিভিন্ন ধরনের লোভনীয় খাবারের দোকান বসে।
খাবারগুলো খেয়েছেন আর লোভনীয় ফটোগ্রাফি গুলো শেয়ার করেছেন আমারও তো দেখে খুব লোভ হচ্ছে।
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
হ্যাঁ ভাইজান খুবই ভালো লাগার একটা মুহূর্ত ছিল সেই দিন
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit