আপনারা সবাই কেমন আছেন? আশা করি অনেক অনেক ভাল আছেন। আমিও আলহামদুলিল্লাহ আপনাদের দোয়ায় অনেক ভালো আছি। আজকে আমি আপনাদের মাঝে উপস্থিত হলাম হাড় কিপটি নাটকের ১০৫ পর্বের মধ্য থেকে ৬৮ তম পর্ব রিভিউ করে শেয়ার করার জন্য। আশা করি আমার এই রিভিউ পোস্ট আপনাদের অনেক অনেক ভালো লাগবে।

ভূপেন বিয়ে করে বউ বাড়িতে এনেছে। তার দুই মামা তাকে সহযোগিতা করেছে। দুই মামাও যেন তাদের বাড়িতে ফিরে এসেছে। এমন অবস্থায় আবারো হারাধনের কষ্ট বেড়ে গেল। সে খুব নিশ্চিন্তে দিন পার করা শুরু করেছিল। দুই কুটুম চলে গেছে। অবাধ্য সন্তান বাড়ি ছাড়া হয়েছে। মেয়েকে নিয়ে বেশ আনন্দে দিন যাচ্ছিল তার। কিন্তু হঠাৎ ছেলে এমন বিয়ে করে বাড়ি ফেরাটা সে কিছু দিয়ে মেনে নিতে পারছে না। বিয়ে করে বাসায় ফেরার প্রথম দিন তার রিঅ্যাকশন দেখে ছেলেরীতিমতো ভয় পেয়ে যায়। কিন্তু বেটার বারবার সুখে যেতে চাই পাল্টা জবাব দেওয়ার জন্য। অনেক বুঝিয়ে ভূপেন বউকে থামিয়ে রাখে। পরের দিন ভূপেনের বউ ভূপেনের বোনের সাথে কথা বলার চেষ্টা করে কিন্তু শিবানী পাত্তা দেয় না। উল্টাপাল্টা বলতে থাকে। শিবানির উল্টাপাল্টা জবাব দিতে থাকে নতুন বউ। ভাইয়ের বউ ডাকাতের বোন আবার জল্লাদ টাইপের কথাবাত্রা এই দেখে বাবা মেয়ে খুবই শঙ্কিত। তাই একপর্যায়ে হারাধন দত্ত অসুস্থ বোধ করে।

এদিকে পাড়াগাঁয়ে ভূপেনের বিয়ের খবর ছড়িয়ে পড়তে থাকে। দোকানে দোকানে গল্প হতে থাকে তার বিয়ের কথা নিয়ে। ভূপেনের সঙ্গীরা এক প্রকার আনন্দিত। এদিকে ভূপেনের ঘটনাটা নজর আলী কৃপণের বাড়িতে প্রভাব ফেলে। না জানি কখন নজর আলী কৃপণের দুই ছেলে এমন কাজ করে বসে। তাই মেজ ছেলের সাথে নজর আলী কৃপণ বিভিন্ন বিষয় নিয়ে আলাপ-আলোচনা করতে।

ভূপেনের দেখাদেখি ফরহাদের ভাই মজনু বিয়ের জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছে। ভাবির সাথে এই নিয়ে কথোপকথন হয়। ভাবি জানে তার বড় ভাই সব সময় তাকে নিয়ে অহংকার করে। তাই ফরহাদের ছোট ভাই মজনু ভাইকে চ্যালেঞ্জ দিয়েছে ভাবির চেয়ে সুন্দরী মেয়েকে বিয়ে করবে। একটি পর্যায়ে মজনু তার ভাবিকে বলে তার কোন চাচাতো বোন নেই, যার সাথে মজনু বিয়ে করতে পারবে। এক কথায় মজনু তার ভাবিকে বোঝাতে চাই তার ভাবি যেন, তার মনের মধ্যে একটা মেয়ে দেখে তার বিয়ে দিয়ে দেয়। এদিকে গোল্লা আর ভূপেনের মামা দুইটা আলোচনা শুরু করে কিভাবে নজর আলীর দুই কুলাঙ্গার ছেলেকে বিয়ে দেওয়া যায়। কারণ তারা তো দুই ভাই প্রেম করে বসে আছে কিন্তু কৃপণ বাবার ভয়ে বিয়ে করতে পারছে না।

এদিকে একপর্যায়ে দেখা যায় ভূপেনের নতুন বউ দেখার জন্য যখন তখন পারা গায়ের মানুষ উপস্থিত হচ্ছে। কিন্তু শিবানী কিছুতেই মেনে নিতে পারেনি ভূপেন এর বউকে। তবে ভূপেনের বউ যথেষ্ট চালাক ও বুদ্ধিমতী। সে কিভাবে মিলনকে হাত করতে হয় সেটা জানে। প্রথমে মিলনের কাছে টাকা দেয় মিষ্টি আনার জন্য। শিবানী কে দেখে মিলন রাজি না হলেও মিলনের হাতে বিশ টাকা ধরিয়ে দেওয়া হয় মিষ্টি খাওয়ার জন্য। এরপর খুব সহজেই মিলন চাটমোহন বাজারে মিষ্টি আনতে যায়। এতে শিবানী আরো তর্ক সৃষ্টি করে নতুন বউয়ের সাথে। এতে কোন লাভ হয় না। বন্ধুর বউকে এবং বন্ধুকে বারণ করতে নহর চলে এসেছে গোলাপ ফুল হাতে। শিবানী কয়জনের মুখ বন্ধ রাখবে। তাই শিবানী একপ্রকার অসহায় বোধ করতে থাকে।

ভূপেন হঠাৎ করে বিয়ে করে বাসায় ফিরবে এটা তার বন্ধুদের কাছে এবং পরিবারের কাছে বেশ অসাধ্য ব্যাপার। কেউ কখনো কল্পনাই করি নাই এমন একটা কান্ড তার দেয়া হবে। তবে শিবানী গণমান করেছে এর পেছনে তার দুই মামার হাত রয়েছে। কিন্তু তাতে কোন লাভ হচ্ছে না। ইতোমধ্যে জেনে গেছে নতুন বউয়ের দুই ভাই রয়েছে ডাকাত। তার ব্যবহার আচারগুলো শিবানীকে অতিক্রম করে চলছে। শিবানীর বাবা হারাধান দত্ত রেগে আগুন কিন্তু তাতে কোন লাভ হলো না। এক্ষেত্রে নাটকের অভিনয় যেন নতুন মাত্রা খুঁজে পেয়েছে। দর্শক বেশ আনন্দ পেয়েছে শিবানী আর তার কৃপণ বাবার কৃপণতা দেখে। যেখানে বাড়ির একমাত্র ছেলে বিয়ের বয়স পার হয়ে গেছে তার বিয়ে দেওয়ার নাম গন্ধ নেই। সে বিয়ে করে বাড়িতে এসেছে তাই কৃপণদের মানসিক কষ্ট বেড়ে গেছে। এখানেই তাদের অভিনয়ের সাফল্যতা এসেছে। নিখুঁতভাবে তারা অভিনয় করে দেখিয়েছে কতটা মানুষ কৃপণ আর নিচু মনের হয়। এক্ষেত্রে ভূপেনের নতুন বউয়ের চালাক চতুরী বুদ্ধি দেখে দর্শক মুগ্ধ। সে খুবই সুকৌশলী জ্ঞানসম্মত একটি মেয়ে। তাই কিভাবে শ্বশুরবাড়ি কন্ট্রোলে আনতে হয় সেটা সে ভালো করে বুঝেছে। এখন চিন্তার বিষয় এভাবে যদি নজর আলীর দুই কুলাঙ্গার ছেলের বিয়ে হয় না জানি নজর আলী কিভাবে গ্রহণ করবে। তাই আমি বলতে পারি কৃপণতা যতই বেশি হোক না কেন কুলাঙ্গারদের মাঝে তারা যেন ব্যর্থ হয়ে যাচ্ছে। আর এখানেই সার্থকতা নাটকের।