হাই বন্ধুরা!
হাই
বন্ধুরা!আপনারা সবাই কেমন আছেন? আশা করি, সৃষ্টিকর্তার অশেষ রহমতে অনেক অনেক ভালো রয়েছেন। আমিও আপনাদের দোয়ায় অনেক ভালো রয়েছি। 'আমার বাংলা ব্লগ'এর সকল ভাইবোন বন্ধুদেরকে আমার পক্ষ থেকে সালাম এবং অভিনন্দন জানিয়ে শুরু করতে যাচ্ছি আজকের নতুন একটি পোস্ট। প্রথমে বলে রাখি,
মানুষ ভুলের উর্ধ্বে নয়, ভুল ত্রুটি হলে ক্ষমার দৃষ্টিতে দেখবেন।
আজকে আমি গুরুত্বপূর্ণ একটা বিষয় নিয়ে আলোচনা করব। বর্তমান স্টুডেন্টদের অবনতির হাত থেকে রক্ষা করতে অভিভাবক ও শিক্ষকদের কেমন ভূমিকা রাখা প্রয়োজন, সে বিষয়ে আমার মতামত প্রকাশ করব।আলোচনার বিষয়: শিক্ষার আলো |
---|
মনে করুন একজন শিক্ষক ক্লাস নিতে গিয়েছেন একটি শ্রেণিকক্ষে। তিনি যে সময়টা সেই শ্রেণীকক্ষে ব্যয় করবেন। সময়টা ছাত্রছাত্রীদের জন্য খুবই মূল্যবান। তিনি চাইলে সময়টা গান বলে নষ্ট করতে পারেন। তিনি চাইলে নাচ শিক্ষা দিয়ে নষ্ট করতে পারেন। হাসি গল্প আড্ডা দিয়ে নষ্ট করতে পারেন। আবার চাইলে পাঠ্য বইয়ের পাশাপাশি নিজের মধ্যে থাকা জাগ্রত শক্তির সুশিক্ষার কথা বলেও সুপ্ত প্রতিভার বিকাশ ঘটানোর চেষ্টা করতে পারেন। বর্তমান সমাজে নৈতিক শিক্ষার অবক্ষয় লক্ষ্য করা যায়। তাই ছাত্র-ছাত্রীদের নৈতিক শিক্ষা দেওয়াটা জরুরি। শিক্ষকরা চাইলে ক্লাসে সুযোগের সুযোগে নৈতিক শিক্ষা প্রদান করতে পারেন।এখন বিষয়টা নির্ভর করবে সেই শিক্ষকের জ্ঞানের উপর। শিক্ষক হলেই হবে না, শিক্ষকের মতো শিক্ষক হতে হবে। যে শিক্ষক বাবার ভূমিকা পালন করবে,মায়ের ভূমিকা পালন করবে, শাসকের ভূমিকা পালন করবেন, নিরাপত্তার ভূমিকা পালন করবে, সঠিক পথের আলোর দিশারির ভূমিকা পালন করবেন। আর এই সমস্ত দৃষ্টিকোণ থেকে যদি বিরত থেকে কুরুচি সম্পন্ন মনোভাব নিয়ে শিক্ষা দিতে চান তাহলে ছাত্ররা তো কখনোই সুন্দর শিক্ষা গ্রহণ করবে না। প্রায় শোনা যায় কিছু কিছু শিক্ষক রয়েছেন ক্লাসে গিয়ে ছাত্রীদের সাথে লাইন সৃষ্টি করে। তাহলে সেই শ্রেণীর ছাত্ররা কি শিক্ষা নিবে। ছাত্রীরা কি শিক্ষা পাবে। তাহলে বোঝা যাচ্ছে সেখানে একজন শিক্ষকের অনেক দায়িত্ব। শিক্ষক যদি শিক্ষকের মত হয় অবশ্যই সে সমস্ত ছাত্র-ছাত্রীরা কিছুটা হলেও সঠিক পথে আসার সুযোগ পাবে। আর যে শিক্ষক সঠিক পথে চেনেন না, সে অন্যকে কিভাবে সঠিক পথের সন্ধান করে দিবে। তাই সবকিছুর মাঝেই রয়েছে বিবেক। শিক্ষার আলো ফুটিয়ে তুলতে হলে বিবেককে জাগ্রত করতে। নিজ নিজ অবস্থান থেকে এই শিক্ষার আলো ছড়িয়ে দিতে হবে প্রত্যেকটা শ্রেণীতে, প্রত্যেকটা সমাজের প্রত্যেকটা পর্যায়ে।
বর্তমান সময়ে ছাত্র-ছাত্রীদের অবনতি এতটাই হয়ে গেছে যে, স্কুলে বসে টিকটক করে অনলাইনে ভিডিও ছাড়ে। শিক্ষক ছাত্র-ছাত্রী একসাথে নাচ-গান করে। আবার শোনা যায় শিক্ষক দ্বারা ছাত্রী ধর্ষিত হয়েছে। শিক্ষক ছাত্রীর প্রেমে পড়েছে। ছাত্র-ছাত্রীদের জোড়ায় জোড়ায় প্রেম ভালবাসা চলছে। আমি মনে করি বর্তমান সমাজের যেমন অবক্ষয় সৃষ্টি হয়েছে, ঠিক তেমনি শিক্ষকদের দুর্বলতা সৃষ্টি হয়েছে ব্যাপক। তা না হলে এই যে নোংরামি গুলো কিভাবে সম্ভব। প্রত্যেকটা শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে যদি কড়া ভাবে আইন সৃষ্টি করা যায় তাহলে কখনোই শিক্ষার্থীরা খারাপ পথে যেতে পারবে না। করোনা ভাইরাসের সময় আমরা লক্ষ্য করে দেখেছি স্টুডেন্টদের হাতে মোবাইল তুলে দেওয়া হয়েছে। উদ্দেশ্য ছিল তাদের লেখাপড়া যেন থেমে না যায়। ঘরে বসে লেখাপড়া করতে পারে। আমি যতটা ধারণা করেছি বিভিন্নভাবে সেখানে পিতা-মাতারা তার সন্তানদের মোবাইল ম্যানেজ করে দিয়েছে ঠিকই কিন্তু তারা মোবাইল কোন পথে ব্যবহার করছে সে বিষয়ে সচেতন অভিভাবক খুব কমই ছিলেন। তার জন্য এই পাঁচ বছরের মধ্যে শত শত ছেলে মেয়েদের অবনতি হয়েছে। অনলাইনে নিজেদের ইজ্জত বিলিয়ে দেওয়ায় অথবা প্রেম পিরিতি ভালোবাসায় মগ্ন থেকে লেখাপড়ার দিকটা নষ্ট করে ফেলায়। মোবাইল যখন স্টুডেন্টদের হাতে তুলে দেওয়া হয়েছে তখন খেয়াল রাখতে হত অভিভাবকদের এবং শিক্ষকদের, তারা লেখাপড়ার জন্য মোবাইল ব্যবহার করছে নাকি বিনোদনের জগতে হারিয়ে গেছে। প্রত্যেকদিন পিতা-মাতার মোবাইল যাচাই করা প্রয়োজন ছিল, তারা সঠিকভাবে লেখাপড়ার জন্য মোবাইল ব্যবহার করছে নাকি গোপনে গোপনে প্রেম করছে মোবাইলে, আর টিকটক করছে বা টিক টক ভিডিও দেখছে।
আমাদের সময় বিনোদন ছিল। সাপ্তাহিক সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান হয়েছে। তাই বলে স্টুডেন্টদের মধ্যে নোংরামি ছিল না। হাতে গুনতিতে যদি দু একজনকে স্কুলে খুঁজে পাওয়া যেত। শিক্ষকরা অভিভাবকরা তাদেরকে সহজে সঠিক পথে পরিচালনা করে ঠিক করে নিতে পারতো। কিন্তু এখন স্টুডেন্টদের এমন খারাপ পর্যায়ে সৃষ্টি হয়ে গেছে যে, মনে হয় না এদের অভিভাবক রয়েছে। সেক্ষেত্রে আমি মনে করি অভিভাবকরা যদি নিজেরাই খারাপ হয় তাহলে সন্তানদের কিভাবে কন্ট্রোল করবেন। হয়তো সকল অভিভাবকরা খারাপ নয় কিন্তু কিছু কিছু অভিভাবকদের কারণে তার সন্তানরা আজ সহজেই নিজেদের খারাপ পথে নিতে পারছে। মনে করুন আমি যদি সিগারেট এ আসক্ত হই, তাহলে আমি কখনোই আমার সন্তানকে সিগারেটের আসক্ততা থেকে বিরত রাখতে পারব না। কারন সে যখন তখন বলে বসবে আপনিও তো সিগারেট খান। আজকের প্রজন্ম যেমন অশ্লীল বিনোদনের প্রতি আসক্ত হচ্ছে তাহলে আগামী প্রজন্ম অর্থাৎ তাদের সন্তানরা না হলে কতটা খারাপের দিকে অগ্রসর হবে। কারণ তার সন্তানরা বলবে আপনারাও তো এই ভিডিও সেই ভিডিও করেছেন, প্রেম করেছেন ইত্যাদি ইত্যাদি, তাহলে আমরা কেন করবো না। আজকের শিক্ষকরা যদি ছাত্র-ছাত্রীদের কাছে নিজের মূল্যায়ন না করতে জানে। একটা শিক্ষকের যে দায়িত্ব সেই দায়িত্ব যদি পালন না করে, তাহলে আগামী প্রজন্মের শিক্ষকরা কি শিক্ষা দিবে? আসলে এই সমস্ত বিষয়গুলো ভাবতে গেলে খুবই খারাপ লাগে আমার।
দিনে দিনে আমাদের পরিবেশটা খুবই খারাপ দিকে চলে যাচ্ছে। কিন্তু আমাদের শিক্ষিত মহল কিছুই করতে পারছে না। স্বচক্ষে দেখেও যেন না দেখার ভান করে থাকে। তাই আমার সব ক্ষেত্রে আহ্বান থাকবে, অভিভাবক হিসেবে নিজেকে সচেতন ভাবে সক্রিয় দায়িত্ব পালন করতে হবে। আপনি আপনার শিক্ষকতা জীবনে সেভাবে দায়িত্ব পালন করেন, যেটা আপনার পরিবেশ আপনার থেকে আশা করে। কারণ এই মুহূর্তে অভিভাবক আর শিক্ষকরা যদি সঠিক পথ অবলম্বন করে না চলে, তাহলে আগামী প্রজন্ম খুবই খারাপ দিকে চলে যাবে। বর্তমান তো খারাপের দিকে চলছে হাজার হাজার স্টুডেন্ট। তাদের দেখে ছোটরাও অগ্রসর হচ্ছে খারাপের দিকে। মিডিয়ার দিকে তাকালে দেখা যায় অশ্লীল বাক্য কথাবার্তা নিয়ে ভিডিও ছাড়ে স্টুডেন্টরা। অভিভাবকরা শিক্ষকরা যদি এই বিষয়গুলো খেয়াল না করে তাহলে খুব শীঘ্রই তারা ধ্বংসের পথে চলে যাবে। সৃষ্টিকর্তার ভয় যেন দিন দিন তাদের মধ্য থেকে হারিয়ে যাচ্ছে। জেনে শুনেও পাপের পথে প্রতিনিয়ত পরিচালিত হচ্ছে। এতে যেমন মেধা শক্তি হারিয়ে যাচ্ছে, তেমন আমাদের মানবসম্পদ ধ্বংসের দিকে। প্রত্যেকটা ধর্ম অভিভাবক হিসাবে আপনার আমার যে দায়িত্ব দিয়েছে, অবশ্যই সেই দায়িত্ব পালন করার চেষ্টা করতে হবে। মনে রাখবেন সন্তান জন্ম দিলেই আদর্শ পিতা-মাতা হওয়া যায় না। শিক্ষক হলেই আদর্শ শিক্ষক হওয়া যায় না। নিজের মধ্যে সে আদর্শ পাতা লালন করতে হয়। আপনার আমার আদর্শে গড়ে উঠবে আগামী প্রজন্ম। আপনার আমার মধ্যে আদর্শ চিন্তা চেতনা না থাকলে, ভবিষ্যৎ সুন্দর জাতি গঠনে নিজেরা নিজেদের বিবেকের কাছে ব্যর্থ হিসাবে চিহ্নিত হতে হবে।
বিষয় | শিক্ষার আলো |
---|---|
ফটোগ্রাফি ডিভাইস | Infinix Hot 11s |
Photo editing app | picsart app |
লোকেশন | গাংনী-মেহেরপুর |
ব্লগার | @sumon09 |
দেশ | বাংলাদেশ |
পোস্টটি পড়ার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ।
পুনরায় কথা হবে পরবর্তী কোন পোস্টে, ততক্ষণ ভালো থাকুন সবাই। আল্লাহ হাফেজ। |
---|
Upvoted! Thank you for supporting witness @jswit.
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
04-02-25
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
X-promotion
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
ছেলে মেয়ে গঠনে বাবা মায়ের যেমন ভূমিকা আছে তেমনি ছাত্র গঠনে শিক্ষকের ভূমিকা অপরিসীম । আসলে প্রত্যেকটি গুরুজনেরই ভূমিকা আছে অনুজদের উজ্জ্বল করে তোলার পেছনে। কিন্তু বর্তমানে বিজ্ঞানের আবিষ্কার এই মোবাইল নামক খেলনাটি বাচ্চা থেকে বুড়ো সব্বার জীবন নষ্ট করছে। খুব সুন্দর লিখেছেন সুমন ভাই। আমাদের এটিই মেনে চলা উচিত মোবাইল কাজের জিনিস। তাই কাজের বাইরে মোবাইল না ব্যবহার করাই ভাল।
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
ধন্যবাদ ভাই
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
একদম ঠিক বলেছেন শিক্ষক এবং অভিভাবকের চিন্তা আদর্শ মুখী হলে সেই বাচ্চাগুলো আদর্শবান হয়ে গড়ে উঠবে। তাদের মধ্যে থাকবে সততা ন্যায় পরায়ণ যেগুলো একজন মানুষ হিসেবে থাকা উচিত। ভাল লাগল আপনার পোস্ট পড়ে।
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
সুন্দর মন্তব্য করেছেন
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
একটা সময় জানতাম শিক্ষক ছাত্র-ছাত্রীদের গুরুজন। এই গুরুজন মানুষ তৈরি করার কারিগর। শিক্ষককে দেখে ছাত্রছাত্রীরা ভয় পেত। শিক্ষকের কাছ থেকে নৈতিক শিক্ষা পেয়ে মানুষ হতো। কিন্তু এখন বেশিরভাগ শিক্ষক ছাত্রদের মধ্যে হয়ে গেছে বন্ধু শালা সম্পর্ক। শিক্ষকরা যেমন নৈতিক শিক্ষার দিতে জানে না। ছাত্ররা কেমন শিক্ষককে মান্য করতে জানে না। আর অভিভাবকরা জেনে শুনে দেখেও যেন না দেখার ভান করে থাকে তার সন্তানদের খারাপ পথে চলে যাওয়ার কার্যগুলো। এইজন্যই তো আমাদের সমাজটা আজকে অধঃপতনের দিকে।
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
অনেক ভালো লাগলো
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
আপনি আজ খুব সুন্দর একটি বিষয় নিয়ে পোস্ট শেয়ার করেছেন। এটা একদম সত্যি কথাই।একজন মেয়ে ও ছেলের জন্য মা-বাবা যেমন চিন্তা করেন।তেমন একজন শিক্ষকও তেমন কিছুই ভাবেন ছাত্র-ছাত্রীর জন্য। প্রতিটি মা-বাবার মতো শিক্ষকদের ও আর্দশমুখী চিন্তা চেতনা থাকা জরুরী।আপনি খুব সুন্দর ভাবে বিষয়টি তুলে ধরেছেন। এজন্য অনেক ধন্যবাদ আপনাকে।
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
হ্যাঁ আপু চেষ্টা করেছিস মনের অনুভূতি তুলে ধরবে
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
জী ভাই ঠিক বলেছেন শিক্ষক ও অভিভাবকদের চিন্তা চেতনা হতে হবে আদর্শমুখী। শিক্ষকরা হল মানুষ গড়ার কারিগর। সেই সাথে অভিভাবকরা তাদেরকে সাপোর্ট করতে হবে। গুরুত্বপূর্ণ একটি ব্লগ শেয়ার করেছেন। ধন্যবাদ।
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
ভালো প্রজন্মের জন্য দুই জনাকেই সজাগ হতে হবে
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
দারুন বলেছেন আপনি একদম শিক্ষানীয় একটি পোস্ট আমাদের মাঝে শেয়ার করেছেন। আমরা অনেক সময় বাচ্চাদেরকে নিয়ে অনেক ধরনের চিন্তাভাবনা করে থাকি। তবে সবার আগে আমাদের নিজের চিন্তা ভাবনার পরিবর্তন করতে হবে। অনেক সময় আমরা বাচ্চার আদর্শে অসন্তুষ্ট হয়ে শিক্ষকদের বিভিন্ন ধরনের কথা বলি। তবে সবার আগে আমাদের অর্থাৎ অভিভাবকদের চিন্তা ভাবনা যদি আদর্শ হয় তাহলে একজন ছাত্র বা সন্তান আদর্শ মানুষ হয়ে উঠতে পারবে।
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
আমার অনুভূতি বুঝতে পারার জন্য ধন্যবাদ
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit