হ্যালো বন্ধুরা,
আপনারা সবাই কেমন আছেন? আশা করি, সৃষ্টিকর্তার অশেষ রহমতে অনেক অনেক ভালো রয়েছেন। আমিও আপনাদের দোয়ায় অনেক ভালো রয়েছি। 'আমার বাংলা ব্লগ'এর সকল ভাইবোন বন্ধুদেরকে আমার পক্ষ থেকে সালাম এবং অভিনন্দন জানিয়ে শুরু করতে যাচ্ছি আজকের নতুন একটি পোস্ট। আজ আমি আপনাদের মাঝে উপস্থিত হয়েছি সুন্দরবন ভ্রমণের দ্বিতীয় পোস্ট নিয়ে। ইতপূর্বে আপনারা দেখেছেন সাতক্ষীরা থেকে কালিগঞ্জ পর্যন্ত একটি ব্লগ আপনাদের মাঝে উপস্থাপন করেছি। আজ আমি আপনাদের মাঝে তুলে ধরতে এসেছি কালিগঞ্জ থেকে শ্যামনগর যাত্রাকালীন মুহূর্তটা। আশা করি দীর্ঘ এই জার্নির আনন্দ ঘন মুহূর্তটা খুব মনোযোগ সহকারে পড়বেন এবং অনেক তথ্য জানতে পারবেন।
সুন্দরবনের দিকে আবারো আমরা অগ্রসর হলাম আল্লাহর নাম নিয়ে। সাতক্ষীরা থেকে কালীগঞ্জে আসতে আমাদের অনেক সময় লেগে গেল। যেহেতু আমাদের লোকাল বাসে যাত্রা করছিলাম, নতুন স্থান গুলো ধীরে সুস্থে দেখতে দেখতে যাবো বলে। হয়তো লোকাল বাসে সিট পাওয়া কঠিন, তবে ভাগ্যক্রমে আমরা তিন বন্ধু সিট পেয়েছিলাম। আমরা তিন বন্ধু একটু রেস্ট নিলাম এরপরে কালিগঞ্জ বাস টার্মিনাল থেকে কিছু তথ্য গ্রহণ করার জন্য টারমিনালে অবস্থান করা চায়ের দোকানে কিছু মানুষের কাছে আমরা জানতে চাইলাম এখান থেকে শ্যামনগর আর কত দূর, কতটা টাইম লাগতে পারে। সেখান থেকে জানতে পারলাম এই বাস একটানা শ্যামনগরে পৌঁছে দেবে,আর শ্যামনগরের বাস স্ট্যান্ড থেকে সামান্য ১০ মিনিটের পথ হাঁটলেই আমরা সুন্দরবনের ফেরিঘাটে পৌঁছাতে পারবো। এরপর আমরা থেমে থেমে কিছুটা সময় পর একটি খালি বাসে উঠে বসলাম। কিছুটা সময়ের মধ্যে বাস যাত্রী সম্পন্ন হয়ে গেল, এরপর বাস রওনা দিল শ্যামনগরের দিকে। শ্যামনগরের দিকে যাত্রাকালীন মুহূর্তে জানালার বাইরে দিয়ে তাকাতে কত কিছুই চোখে বাধতে থাকলো। একসময়ের নদী চোখে বাঁধলো, নদীর যতদূর চোখ যাই ততদূর শুধু দেখলাম নদীর পূর্ণ পানি আর নদীর পানি গুলো বেশ ফ্রেশ লাগছিল। ইচ্ছে হয়েছিল নদীর বুকে লাফ দিয়ে নেমে গোসল করি। আমার দীর্ঘদিনের শখ রয়েছে নদীতে মাছ ধরার, ছোট থেকে পুকুরে মাছ ধরেছি মাছ আবাদ করেছি কিন্তু নদীতে কখনো মাছ ধরি নাই। এরপরে চলতে চলতে হাট-বাজার এর দৃশ্য, বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের দৃশ্য, আবার গ্রামের দৃশ্য, নতুন নতুন অচেনা জায়গা গুলো দেখতে বেশ ভালো লাগছিল। খুবই আনন্দ মুহূর্ত নিয়ে চলছিলাম। জীবনে প্রথম সুন্দরবন দেখতে চলেছি তাও আবার প্রাণপ্রিয় দুই বন্ধুর সাথে। মনের মধ্যে একটু হাসি আনন্দ আবার একটু সংকোচ হচ্ছিল। যেহেতু আমরা মেহেরপুর থেকে সাতক্ষীরায় গেছি পরীক্ষা দিতে, পরীক্ষার মাঝে ছুটি পেয়ে সেখান থেকে চলেছি সুন্দরবনের দিকে। না জানি কোন সমস্যা সম্মুখীন হতে হয়। তবুও তিন বন্ধু একসাথে ছিলাম তাই যথেষ্ট সাহস ছিল সকলের মনের মধ্যে।
Photography device: Infinix hot 11s
Location
কালিগঞ্জ বাজার পার হয়ে গিয়ে সামনের যে সমস্ত ছোট ছোট বাজার গুলো চোখে বাজছিল সে সমস্ত বাজারগুলো বেশ পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন মনে হচ্ছিল এবং একটি জিনিস আমি বেশি লক্ষ্য করেছি এই অঞ্চলের লোক সংখ্যা খুবই কম লাগছিল আমার কাছে। হাইরোড থেকে নেমে যাওয়া গ্রামীন হেয়ারিং রাস্তাগুলোর দৃশ্য ছিল অসাধারণ। অনেক সুন্দর তাল গাছের শারি ছিল পাশ দিয়ে। বাজারে লোকজনের সংখ্যা এতটাই কম মনে হচ্ছিল যে আমাদের এলাকার চেয়েও অর্ধেক কম হবে। আর আরেকটি জিনিস বেশি লক্ষ্য করেছি হাইরোড এর পাশ দিয়ে ঘরবাড়ি সংখ্যা খুবই কম নেই বলে চলে তবে রাস্তার পাশ দিয়ে বেশিরভাগ জমিগুলো যেন বর্ষার পানিতে ডুবে রয়েছে। হয়তো এখানে কৃষি আবাদ খুবই কম হয় বসার কারণে অথবা বৃষ্টির কারণে। বেশিরভাগ অঞ্চল লক্ষ্য করলাম রাস্তার পাশ দিয়ে জমিগুলো এক হাঁটুর বেশি পানি বেধে রয়েছে। তবে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলো যথেষ্ট উন্নত মনে হয়েছিল। নতুন নতুন স্থান গুলো যতই দেখতে দেখতে যাচ্ছেন অন্তত যেন ভালো লাগছিল তবে একটি মুহূর্ত আমি লক্ষ্য করেছিলাম আমার দুই বন্ধু হালকা হালকা ঘুমানোর চেষ্টা করছে তবে আমার কিন্তু কখনোই জার্নি করতে গেলে ঘুম আসে না। বরঞ্চ আরো বেশি ভালো লাগে নতুন নতুন জায়গা গুলো দেখতে।
Photography device: Infinix hot 11s
Location
এতক্ষণ হয়তো নদী ও হাট বাজার নিয়ে আপনাদের মাঝে উপস্থাপন করেছি এবার চলুন একটু কৃষি জমির দিকে তাকিয়ে দেখি যেখানে আমি লক্ষ্য করে দেখলাম অনেক মোটা আইলের ব্যবস্থা করা হয়েছে আর তার পাশ দিয়ে পানি নিষ্কাশনের ব্যবস্থা রয়েছে যেন ধানের জমিগুলোতে পানি বেঁধে না যায়। তবে দীর্ঘ এই আইনের ব্যবস্থা আমার কাছে অনেক বেশি ভালো লেগেছিল এই জন্য যেখানে খুব সুন্দর করে পানি বার করার সু-ব্যবস্থা রয়েছে যে পানিগুলো ছোট ছোট খাল দিয়ে নদীতে বয়ে যাচ্ছে। এই অঞ্চলের মানুষ কৃষি প্রধান এখানে যথেষ্ট ধান আবাদ রয়েছে, এই লক্ষ্য করেছি।
Photography device: Infinix hot 11s
Location
এভাবেই দীর্ঘ পথ চলতে চলতে আমরা তিন বন্ধু শ্যামনগরে এসে পৌছালাম। বাস এসে শ্যামনগর টার্মিনালে আমাদেরকে নামিয়ে দিল এবং বাসটি থেমে গেল। এরপরেও অন্য কোথাও বাস যাওয়ার সুব্যবস্থা রয়েছে তবে ওই অঞ্চলে এটাই শেষ টার্মিনাল। এরপরে রয়েছে নদী আর সুন্দরবন। বাস থেকে নেমে আমরা বিআরটিসি বাস কাউন্টারের নিকটে গেলাম এবং সেখানে জানতে চাইলাম বিআরটিসি কাউন্টার থেকে সরাসরি সাতক্ষীরায় কোন বাস চলাচল করে কিনা এবং আমাদের সুবিধামতো যেতে পারবো কিনা। তখন বিআরটিসি কাউন্টারে জানতে পারলাম রাত্রে গাড়ি রয়েছে সাতক্ষীরায় পৌছাতে রাত ১১ টা বারোটা বেজে যাবে। তাই আমরা বিআরটিসি গাড়ির আশা ছেড়ে দিলাম। এরপর আমরা তিন বন্ধু মিলে শ্যামনগরের সুন্দর বনের দিকে পায়ে হেঁটে চলতে লাগলাম। বাকিটা সামনের পোস্টে পেয়ে যাবেন।
Photography device: Infinix hot 11s
Location
পোস্টটি পড়ার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ।
পুনরায় কথা হবে পরবর্তী কোন পোস্টে, ততক্ষণ ভালো থাকা হয় যেনো। আল্লাহ হাফেজ। |
আসলে লোকাল বাসে সিট পাওয়াটা নিঃসন্দেহে সৌভাগ্যের বিষয়। যাহোক শ্যামনগরে পৌঁছে সুন্দরবনের দিকে আপনাদের পায়ে হেঁটে যাওয়ার মনোবলের কথাগুলো জানতে পেরে আমার খুবই ভালো লেগেছে। আপনার পরবর্তী পর্বের অপেক্ষায় রইলাম।
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
সে সৌভাগ্য আমাদের তিন বন্ধুর হয়েছিল
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
মামা আপনি আজকে আমাদের মাঝে শেয়ার করেছেন সাতক্ষীরা শহর থেকে সুন্দরবনের দিকে যাত্রা দ্বিতীয় পর্ব। আসলে আপনারা লোকাল বাসে যাত্রা করেছিলেন আপনার পোষ্টের মাধ্যমে জানতে পারলাম। ঠিক বলেছেন মামা আপনি আমাদের সাতক্ষীরা এলাকার দিকে রাস্তাগুলো বেশ পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন থাকে। ধন্যবাদ এত সুন্দর একটি পোস্ট শেয়ার করার জন্য।
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
লোকাল বাসে গিয়েছিলাম সবকিছু দেখব বলে
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
সাতক্ষীরাতে পরীক্ষা দিতে গিয়ে দেখছি আপনারা সুন্দরবন ভ্রমণ করে এসেছেন। আসলে আপনাদের ভাগ্য ভালো ছিল না হলে লোকাল বাসে আপনারা তিনজন সিট পেয়ে গেলেন এটা সচরাচর হয় না।
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
গাংনী মেহেরপুরের মত লোকাল বাস নয় ওদিকে ভালোই সিট পাওয়া যায়
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit