পাঙ্গাস মাছের বাচ্চার ট্রিটমেন্ট

in hive-129948 •  19 days ago 


আসসালামু আলাইকুম




হ্যালো বন্ধুরা,

আপনারা সবাই কেমন আছেন? আশা করি, সৃষ্টিকর্তার অশেষ রহমতে অনেক অনেক ভালো রয়েছেন। আমিও আপনাদের দোয়ায় অনেক ভালো রয়েছি। 'আমার বাংলা ব্লগ'এর সকল ভাইবোন বন্ধুদেরকে আমার পক্ষ থেকে সালাম এবং অভিনন্দন জানিয়ে শুরু করতে যাচ্ছি আজকের নতুন একটি পোস্ট। আজকে আমি পাঙ্গাস মাছের বাচ্চার ট্রিটমেন্ট নিয়ে আলোচনা করব। আশা করব এই পোস্ট থেকে বেশ কিছু জানার সুযোগ পাবেন।

IMG_20240911_153427_201.jpg


ফটোগ্রাফি সমূহ:


শীতের সময় আসলেই মাছের বিভিন্ন রকমের ভাইরাস আক্রমণ করে থাকে। আর এই ভাইরাসজনিত কারণে অনেক মাছ অকালে মারা যায়। তবে তার মধ্যে পাঙ্গাস মাছ গুনতি হিসাবে পুকুরে দেওয়া হয়। সেই অনুপাতে মাছের খাবার দেওয়া হয়। অনেকে পুকুরে পাঁচশ পাঙ্গাস দিয়ে চাষ করে। আবার অনেকের রয়েছে ১০০০-২ হাজার ৫ হাজার পাঙ্গাস মাছ চাষে দিয়ে রাখেন। আবার অনেকেই রয়েছে ছোট পুকুরে মজুদ রাখেন বড় পুকুরেও চাষের রেখে দেন। শীতের শেষে ফাল্গুন চৈত্র মাসে পূর্ণাঙ্গ মাছ চাষ শুরু হয়ে যায়। পুকুর পরিপাটি করে মাছ দিয়ে প্রতিনিয়ত সঠিক মাত্রায় খাবার দেওয়া থেকে শুরু করে পরিপূর্ণ যত্ন চলতে থাকে। কিন্তু শীতের সময়টাতে অনেকে আশা ভরসা নষ্ট হয়ে যায় ভাইরাসের কারণে।

IMG_20240911_153311_403.jpg

IMG_20240911_153323_587.jpg


শ্রাবণ ভাদ্র মাসে মানুষের পাঙ্গাসের বাচ্চাগুলো ছোট পুকুরে মজুদ রাখে অথবা বড় পুকুরেও দিয়ে রাখে। কিন্তু এই মুহূর্ত থেকে শীত পর্যন্ত বেশ ব্যাপক পরিমাণে খরচ করে ফেলে খাবারের পিছনে আর ভিটামিন জাতীয় জিনিস দেওয়ার পেছনে। কিন্তু মধ্যবর্তী এই সময়টা শীতকালে এসে যদি ভাইরাসজনিত কারণে মাছ নষ্ট হয়ে যায় তাহলে খুবই খারাপ লাগে। ব্যাপক পরিমাণ টাকা নষ্ট হয়। ঠিক তেমনি আমাদের দুইটা ছোট পুকুরে পাঙ্গাস বাচ্চা দেওয়া হয়েছিল। প্রথম পর্যায়ে পাঙ্গাস মাছের ভাইরাস লেগেছিল। অনেক ঔষধ ব্যবহার করার পর কোনরকম কাটিয়ে উঠতে পেরেছিলাম। কিন্তু এখনো আবার দেখা যাচ্ছে সেই একই অবস্থা শুরু হয়ে গেছে। প্রাথমিক পর্যায়ে ট্রিটমেন্ট হিসেবে ব্যবহার করা হয় চুল লবণ আর ভাসমান খাবারের সাথে ভিটামিন সি যুক্ত ঔষধ। এছাড়াও আরো অনেক ঔষধ রয়েছে সেগুলো দেওয়ার প্রসেস অন্যরকম। যা ক্যামেরা বন্দি করা হয়ে ওঠেনা। আসলে সেই ট্রিটমেন্টের বেলায় পুকুরে নামা লাগে তো তাই আর ফটো ধারণ করা সম্ভব হয় না।

IMG_20240911_153534_558.jpg

IMG_20240911_153537_570.jpg


ভিটামিন সি দানাদার ভাস্যমান খাবারের সাথে মিশিয়ে খাওয়ালে দ্রুত রোগ প্রতিরোধ হয়। সেক্ষেত্রে নির্দিষ্ট পরিমাণে দানাদার খাবার নিতে হয়। পুকুরে পাঙ্গাস মাছের বাচ্চা যে কয় হাজার আছে সেই অনুপাতে ভাসমান খাবার নিতে হয়। যদি ১০০০ পাঙ্গাসের বাচ্চা থাকে তাহলে এক পোয়া খাবারের সাথে ৫/১০ গ্রাম ভিটামিন সি মাখাতে হয়। যদি ৪ হাজার পাঙ্গাসের বাচ্চা থাকে সেক্ষেত্রে এক কেজি খাবারের সাথে ৪০ গ্রাম নয় ২০ থেকে ৩০ গ্রাম মাখাতে হয়। এখানেও আবার পুকুরে পানি কেমন আছে না আছে কতটুক আছেনা আছে সেগুলোও খেয়াল রাখতে হয়। যাইহোক এভাবেই দানাদার খাবার একটি গামলার মধ্যে নিয়ে নির্দিষ্ট পরিমাণ ভিটামিন সি তার উপরে দিয়ে পানি দিয়ে মাখিয়ে নেওয়া হয়। এরপর ১০-২০ মিনিট রোদে শুকাতে দেওয়া হয়। দশ কুড়ি মিনিট রোদে শুকালে ভিটামিন সি খাবারের গায়ের সাথে লেগে যায়।

IMG_20240911_153621_753.jpg

IMG_20240911_153618_548.jpg

IMG_20240911_153647_394.jpg


যখন মাছগুলো খাবার খেতে আসে। রেডি ভাসমান খাবার পাঙ্গাসের বাচ্চারা ভেসে ভেসে খেয়ে বেড়ায়। তখন ভিটামিন সি গুলো সরাসরি মাছের পেটে চলে যায়। আর এতেই মাছের বাচ্চার জন্য বেশ উপকার হয়ে থাকে। যাদের রোগ রয়েছে রোগগুলো দ্রুত সেরে যাওয়ার সম্ভাবনা থাকে। যাদের গায়ে হালকা রোগ হয়েছে বা হয়নি তারা সুস্থ হয়ে যায়। আর পাশাপাশি তো অন্যান্য ট্রিটমেন্ট রয়েছে বললাম। তবে শীতের সময় সবচেয়ে বড় ট্রিটমেন্ট হচ্ছে প্রতিনিয়তই পুকুরে গরম পানি দেওয়া। অর্থাৎ স্যালো মেশিন বা মোটর চালিয়ে পাইপ থেকে পুকুরে পানি দেওয়া। এতে আবার মাছের অনেক উপকার হয়ে থাকে। যাহোক বেশ বিভিন্ন রকমের ট্রিটমেন্ট এর মধ্য দিয়েই পাঙ্গাস মাছের বাচ্চাগুলোকে বাঁচিয়ে রাখার চেষ্টা চলে। এরপর শীতের শেষে ফাল্গুন মাসে আবার একটি ভাইরাস আক্রান্ত হয়ে থাকে। অতঃপর যদি চাষে ফেলা হয়।

IMG_20240911_153909_013.jpg

IMG_20240911_153941_7.jpg

IMG_20240911_153946_7.jpg

IMG_20240911_153955_3.jpg


পুকুরের জাল দিয়ে ঘেরা করা দেখে বুঝতে পারছেন কতটা যত্ন সহকারে মাছগুলো চাষ করা হয়। একদিকে রোগের কারণ আরেকদিকে পাখিতে সাপে শিকার করে খেয়ে ফেলে অনেক। সবকিছুর থেকে বাঁচিয়ে মাছ চাষ করতে হয়। আপনারা দোয়া করবেন আমাদের এই ছোটখাটো বিজনেসটা যেন ভালোভাবে চালিয়ে যেতে পারি। বিভিন্ন সংস্থা থেকে লোন গ্রহণ করে মাছ চাষ করা হয়। মাছ মারা গেলে পরে ব্যাপক ক্ষতি হয়ে যায় এবং দিনায় পড়তে হয়। তাই বেশ যত্নবান হয়ে আমরা আমাদের কাজ চালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করি।

IMG_20240911_154003_6.jpg

IMG_20240911_154045_1.jpg

IMG_20240911_154052_7.jpg


পোস্ট বিবরণ


বিষয়মাছের ট্রিটমেন্ট
ফটোগ্রাফি ডিভাইসInfinix Hot 11s
লোকেশনগাংনী-মেহেরপুর
ব্লগার@sumon09
দেশবাংলাদেশ


পোস্টটি পড়ার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ।

received_434859771523295.gif


পুনরায় কথা হবে পরবর্তী কোন পোস্টে, ততক্ষণ ভালো থাকুন সবাই। আল্লাহ হাফেজ।

TZjG7hXReeVoAvXt2X6pMxYAb3q65xMju8wryWxKrsghkLbdtHEKTgRBCYd7pi9pJd6nDf4ZPaJpEx3WAqvFVny2ozAtrhFXaDMnAMUAqtLhNESRQveVFZ7XHcED6WEQD48QkCkVTAvNg6.png


PUSS_VILLA.png

Authors get paid when people like you upvote their post.
If you enjoyed what you read here, create your account today and start earning FREE STEEM!
Sort Order:  

আমের বিষয়টা লক্ষ্য করে দেখেছি শীতকাল আসার সাথে সাথে বিভিন্ন ধরনের মাছের রোগ লক্ষ্য করা যায়। শীতকাল আসার সাথে সাথেই আপনি পাঙ্গাস মাছের বাচ্চাদেরকে ট্রিটমেন্ট করতে শুরু করেছেন এটা দেখে খুবই ভালো লাগলো। যারা বিষয়টা সম্পর্কে ধারণা লাভ করেছিল না তারা এই বিষয়টা সম্পর্কে ভালোভাবে জানতে পারল আপনার এই পোষ্টের মাধ্যমে।

বিষয়টা ভালোভাবে জানার জন্য ধন্যবাদ।

আপনার পুকুরে দেখছি অনেক মাছ রয়েছে। আর মাছগুলোর খুবই যত্ন করেন। আপনি খুবই সুন্দর ভাবে পাঙ্গাস মাছের বাচ্চার ট্রিটমেন্টের কিছু ফটোগ্রাফি ও বর্ণনা দিয়েছেন। এইতো কয়েকদিন আগে আমাদের বাড়ির পাশে একজনার পাঙ্গাস মাছের গায়ে কেমন জানি লালচে লালচে রোগ হয়েছিল। ওনারা হয়তোবা ডাক্তার দেখিয়েছে। তবে সব সময় পুকুরে যাতায়াত এবং সতর্ক থাকতে হবে।

হ্যাঁ ভাইরাস

বাপরে পাঙ্গাস মাছের জন্য এত যত্ন নিতে হয়? আমিতো জানতাম এইসব মাছ এমনিই বেড়ে ওঠে! আসলে আমাদের বাড়ির একটা পুকুরে অনেকগুলো পাঙ্গাস মাছ ছাড়া হয়েছিল। তারা অবশ্য বাড়ির মুরগি ফার্মের মুরগি গুলো মরে গেলে সেইগুলো খেয়ে উদ্ধার করে। মানে পাঙ্গাশ মাছের চাষটাই এই কারণে হয়েছে। কিন্তু তার জন্য যে এতোখানি ট্রিটমেন্ট করে তা আগে জানতাম না। আপনার পোস্ট দেখে অনেক কিছুই জানলাম।

না,সঠিক চাষ এমনটাই।

07-01-25

Screenshot_20250107-191510.jpg

Screenshot_20250107-092847.jpg

Screenshot_20250107-093014.jpg

পাঙ্গাশ মাছ চাষ আমি কখনো দেখিনি আজকে আপনি চমৎকার করে বর্ণনা ও মাছের ফটোগ্রাফি দিয়েছেন যা দেখে ভীষণ ভালো লাগলো। মাছের খাবার গুলো বেশ দানাদার দেখেই বোঝা যাচ্ছে এসব খাবারে অনেক পুষ্টি। আসলে পুষ্টিকর খাবার খেলে মাছের রোগবালাই সহজে হয় না।বেশ ভালো লাগলো পোষ্টটি পড়ে ও মাছের ফটোগ্রাফি গুলো দেখে।ধন্যবাদ ভাইয়া সুন্দর পোস্ট টি আমাদের সাথে ভাগ করে নেয়ার জন্য।

পাশে থাকলে আরো কিছু জানতে পারবেন আপু।