শাকসবজির বাজার নিয়ে কিছু কথা

in hive-129948 •  2 days ago 


আসসালামু আলাইকুম




হাই বন্ধুরা!

কেমন আছেন সবাই? আশা করি, সৃষ্টিকর্তার অশেষ রহমতে অনেক অনেক ভালো রয়েছেন। আমিও আপনাদের দোয়ায় অনেক ভালো রয়েছি। 'আমার বাংলা ব্লগ'এর সকল ভাই-বোন বন্ধুদেরকে আমার পক্ষ থেকে সালাম এবং অভিনন্দন জানিয়ে শুরু করতে যাচ্ছি আজকের নতুন একটি পোস্ট। আজকে আমি শাক সবজির বাজার নিয়ে গুরুত্বপূর্ণ আলোচনা করব। আশা করব বিষয়টা সম্পর্কে আপনারা অবগত হবেন।


IMG_20241122_172111_5.jpg

photography device:
Infinix Hot 11s

বামুন্দি বাজার


ফটোগ্রাফি সমূহ:


২০২৪ সাল,বাঙ্গালীদের জন্য স্মরণীয় একটি বছর। ইতিহাসের পাতায় এ বছরটা জাগ্রত হয়ে থাকবে। একদিকে ছাত্র আন্দোলন ও সরকার পতন। এরপর দেশ সংস্কারের জন্য অনেক প্রচেষ্টা। এর মধ্যে রয়েছে দেশের ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি। তবে সেই সমস্ত বিষয়গুলো জনগণের জীবনে কতটা প্রভাব ফেলেছে তা ইতিহাস সাক্ষী। সরকার পতনের পর দেশের নিত্য প্রয়োজনীয় জিনিসের চাহিদা এত গুণ বেড়ে যায় যে দুবেলা দুমুঠো ভাত তরকারি জোটাতে গিয়ে মানুষের চোখের পানি ঝরাতে হয়েছে। আমার যথেষ্ট শাকসবজি রয়েছে তবুও অনেক কিছু তো কেনাকাটা করতে হয়। শুধু যে শাকসবজি থাকলেই দিন চলে যাবে তা কিন্তু নয়। প্রয়োজনীয় জিনিসের তালিকা অনেক বড়। তাই কেনাকাটা করার উদ্দেশ্যে বামুন্দিবাজারে উপস্থিত হতে হয়। বামুন্দি বাজারে উপস্থিত হয়ে যেন মানুষের হাহাকার আর নিত্য প্রয়োজনীয় জিনিসের ঊর্ধ্বগতি দেখে নিজেও অবাক হয়ে যেতাম। বিশেষ করে জুলাই মাসের পর থেকে টানা নভেম্বর মাসের শেষ পর্যন্ত আমি লক্ষ্য করে দেখেছি মানুষের এই হাহাকার ময় অবস্থা। সরকার পতনের আগ থেকেই শুরু হতে থাকে নিত্য প্রয়োজনীয় জিনিসের ঊর্ধ্বগতি। এরপর দেশে ব্যাপক বৃষ্টিতে ডুবে যায় অনেক ফসল, নষ্ট হয়ে যায় সমস্ত ফসল। যেন হাহাকারের উপর হাহাকার এসে স্থান করে নেয়।

IMG_20241122_170043_494.jpg

IMG_20241122_170057_715.jpg

IMG_20241122_172037_7.jpg

IMG_20241122_172117_3.jpg

IMG_20241122_172142_2.jpg


সকল বাধা-বিপত্তি কাটিয়ে আমাদের দেশের কৃষকেরা অনেক দ্রুত শাকসবজি উৎপাদন করতে সক্ষম হয়েছে। কিন্তু সে সমস্ত শাকসবজি বাজারে পৌঁছাতে দেখা গেছে উর্ধ্বগতি মূল্যে। যদি বাজারে ১০ জন মানুষের শাকসবজি দেখা গেছে সেখানে মানুষজন উপস্থিত হয়েছে বিশ জন। এজন্য শাকসবজির দাম জানো আরো ব্যাপক আকারে বাড়তে থেকেছে। আমি মূলত নভেম্বর মাসটাকে বেশি অনুভব করেছি। যখনই কাঁচা বাজারে উপস্থিত হয়েছি তখনই দেখেছি সামান্য মুলার দাম ৬০ থেকে ৮০ টাকার কেজি। এখন হয়তো দু পাঁচ টাকা কেজি হতে পারে। কিন্তু যখন মানুষের প্রয়োজন ছিল অত্যাধিক তখন মানুষ এক কেজি বা দেড় কেজি মুলা কিনতে ১০০ টাকা খরচ করতে হয়েছে। একটি ফুলকপি ৫০ টাকার উপরে কেনা লেগেছে। কিন্তু এখন ফুলকপির পাঁচ টাকা পিস পাওয়া যায়। হয়তো এই মূল্য আর থাকবে না ব্যাপক পরিমাণ ফুলকপি চাষ হওয়ায়, মূল্য না পেয়ে মানুষে নষ্ট করেছে।

IMG_20241122_172235_3.jpg

IMG_20241122_172149_2.jpg

IMG_20241122_172239_5.jpg

IMG_20241122_172325_2.jpg


যেদিন এই ফটোগুলো ধারণ করেছিলাম। তখন ২০২৪ সালের নভেম্বর মাস চলছিল। তখন সবজির বাজারে সবজির দাম যেন আকাশ ছোঁয়া। বাজারের শাকসবজি যেমন ডালা ভর্তি নিয়ে এসেছিল বিক্রেতারা তেমন ডালা ভর্তি রয়ে গেছিল। আমি লক্ষ্য করে দেখেছিলাম আমাদের মত ক্রেতা মানুষেরা শুধু ব্যাগ হাতে ঘুরছে আর দাম জিজ্ঞেস করছে। তবে আগের মত বাজারে পরিপূর্ণ মানুষ ছিল না। তার একটাই কারণ অত্যাধিক সবজির দাম থাকায়। এরপর আস্তে আস্তে ডিসেম্বরের মাঝামাঝি থেকে শেষের দিকে দেখলাম যথেষ্ট শাকসবজির দাম হাতের নাগাল এর মধ্যে চলে এসেছে। তবে কিছু কিছু শাক সবজির দাম এতটাই হাতের নাগালে এসেছে যেন কৃষকেরা বাজারে সবজি না তুলে মাঠেই নষ্ট করছে। যদি দেশের এই সমস্ত কাঁচাবাজারের মূল্যটা একটু নিয়ন্ত্রণের মধ্যে থাকে একদিকে কৃষকেরাও বাঁচে আরেক দিকে আমাদের মতো যারা কিনে খায় তারাও বাঁচে। কিন্তু বাংলাদেশের বাজার এমন হয়,একদিকে না খেয়ে মরতে হয়। আবার আরেক দিকে অত্যাধিক উৎপাদন হওয়ায় নষ্ট করে ক্ষতিগ্রস্ত হতে হয়। ফটোগ্রাফি দিন থেকে আজকের দিনের যদি সবজি বাজার নিয়ে তুলনা করি। তবে বলতে পারি ঐ দিন ৮০ টাকা কেজি আলুর মূল্য ছিল এখন 40/45 টাকা কেজি। ফুলকপি ৫০ টাকার ঊর্ধ্বে ছিল এখন ৫ টাকা। এই যে হঠাৎ মূল্য বেশি হয়ে যাওয়া আবার হঠাৎ একদম কমে যাওয়া এগুলো কিন্তু ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতির কারণ। না জানি আবারো বাজার দ্রুত বেড়ে যায়। আর এই ক্ষয়ক্ষতির মাশুল আমাদেরই দিতে হবে। তাই দেশের সবজি বাজার সুন্দর একটা নিয়মের মধ্যে আসলে আমাদের জন্যই ভালো। আশা করব সর্বশ্রেণীর মানুষ কিছুটা হলে খেয়ে পরে বাঁচতে পারবে।

IMG_20241122_172328_8.jpg

IMG_20241122_172333_7.jpg

IMG_20241122_172422_2.jpg

IMG_20241122_172431_7.jpg

IMG_20241122_172435_9.jpg


তবে কৃষক যখন মার খেয়ে যায়, তখন কিন্তু অনেক জিনিস চাষ করা বন্ধ হয়ে যায়। বিশেষ করে শাকসবজি জাতীয় জিনিস। এখন শীতকাল, এই সময় অনেক মানুষের তামাক আবাদ করে থাকে। আমি মনে করি আমাদের দৈনন্দিন প্রয়োজন যে সমস্ত শাকসবজি, কৃষি জমিগুলো সেই কাজ করা বেশি প্রয়োজন। কিন্তু কৃষক যখন হতাশ হয়ে যায় তখন কৃষি কাজে শাকসবজি উৎপাদন বাদ রেখে তামাক এর মত অর্থকারী ফসল চাষ করাই ব্যস্ত হয়ে যায়। তখন আবার দেখা যায় শাক সবজির ঊর্ধ্বগতি শুরু হয়ে গেছে। তাই আমি মনে করি দেশে এমন নিয়ম-শৃঙ্খলা তৈরি করতে হবে, যেন কৃষকরা স্বস্তি পাই। তাদের পাশাপাশি আমাদের মত ক্রেতা কাস্টমাররাও স্বস্তি পায়। আমি বেশ কিছুদিন এলাকার মধ্যে ঘোরাঘুরি করে দেখলাম ব্যাপক তামাক উৎপাদন হচ্ছে। যে সমস্ত জমিগুলোতে শাকসবজি উৎপাদন করলে আমাদের সকলের জন্য ভালো হতো। শুনেছি তামাকের জন্য অনেক কোম্পানি সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দিয়েছে। যদি শাকসবজি উৎপাদনে বিভিন্ন কোম্পানির সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দিত তাহলে সর্ব শ্রেণীর মানুষ খেয়ে পরে বাঁচার সুযোগ পেতো। তাই আমাদের দৈনন্দিন জীবনের প্রয়োজনীয় বিষয়ের প্রতি বেশি গুরুত্ব আরোপ করতে হবে এবং শাকসবজি উৎপাদন ও বাজারজাতকরণের দিকে কর্তৃপক্ষদের বিশেষ দৃষ্টি রাখতে হবে। তাহলে সুন্দর একটা ব্যালেন্স আসবে, যাতে কেউ হতাশ হবে না এবং আমাদের দেশের কৃষি ব্যবস্থা ও শাকসবজি উৎপাদন বাজারজাতকরণ, বেচাকেনা সবকিছু মানুষের হাতের নাগালের মধ্যে থাকবে।

IMG_20241122_172436_7.jpg

IMG_20241122_172455_0.jpg

IMG_20241122_172458_8.jpg

IMG_20241122_172509_1.jpg

IMG_20241122_172509_9.jpg


পোস্টটি পড়ার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ।

received_434859771523295.gif

পোস্ট বিবরণ


ব্লগারsumon09
ডিভাইসInfinix Hot 11s
লোকেশনবামুন্দি বাজার
ক্যামেরা50mp
দেশবাংলাদেশ


পুনরায় কথা হবে পরবর্তী কোন ভ্রমণ বিষয়ক পোস্টে, ততক্ষণ ভালো থাকবেন সবাই। সকলের জন্য শুভকামনা রইল,আল্লাহ হাফেজ।

TZjG7hXReeVoAvXt2X6pMxYAb3q65xMju8wryWxKrsghkLbdtHEKTgRBCYd7pi9pJd6nDf4ZPaJpEx3WAqvFVny2ozAtrhFXaDMnAMUAqtLhNESRQveVFZ7XHcED6WEQD48QkCkVTAvNg6.png



6VvuHGsoU2QBt9MXeXNdDuyd4Bmd63j7zJymDTWgdcJjnzpQii6mQVp5A4gDGCDR68W9RxwfgYXDkuSdrT6M7Y7xaaSUX484gjnbdCNf4usUnqiHpgSG4y2v9nUyHY.png

Authors get paid when people like you upvote their post.
If you enjoyed what you read here, create your account today and start earning FREE STEEM!
Sort Order:  

Upvoted! Thank you for supporting witness @jswit.

আমি একটা জিনিস দেখেছি একবার কোন জিনিসের দাম বেড়ে গেলে সেই দাম কিন্তু সহজে কমেনা। গতকাল একটা ফুলকপি কিনে এনেছি রায় দেড় কেজি ওজন, ফুলকপিটা নিল ৯০ টাকা। মূল্যবৃদ্ধি কিন্তু এখন সর্বত্রই। শুধু আপনাদের দেশে বলে তা নয়। শাকসবজির বাজার যদি ছেড়েও দিই অন্যান্য জিনিসপত্রের দাম এত বেশি বেড়েছে এমনকি স্কুল পড়াশুনা টিউশন সবকিছু আমরা রীতিমতো হিমশিম খেয়ে যাই । এই অবস্থা খুব একটা নাগালের মধ্যে আসবে বলে আমার মনে হয় না কারণ জনসংখ্যা বেশি হওয়ার কারণে চাহিদা অনুযায়ী জিনিসপত্র কিন্তু কম।

আমাদের এখানে এখন ৫ টাকা পিস।

ঠিকই বলেছেন ভাইয়া, ২৪ সালটা সারা জীবন মনে থাকবে। জুলাই থেকে নভেম্বর পর্যন্ত দ্রবমূল্যের দাম আসলেই অনেক ছিল। আমরা তো মেসে থাকি। নিজের জন্য বাজার করতে গিয়ে বিষয়টা খুব ভালোভাবে উপলব্ধি করেছি। এই এক মাস হলো বাজারে দ্রব্যমূল্যের দাম অনেকটা কমে গেছে। সেদিন বাজারে গিয়ে দেখি ১০ টাকায় তিনটা করে ফুলকপি দিচ্ছে। একসময় ফুলকপি ৬০ টাকা করে কিনেছি। এখানেই বোঝা যায় দাম কতটা কমেছে। তবে এরকম প্রতিবছরই হয়। প্রত্যেক বছর এই সময় উৎপাদন বেড়ে যায় আর সবজির দামটা অনেক কমে যায়। সবজির দাম কমলে আমাদের মত মধ্যবিত্ত মানুষদের মনে স্বস্তি আসে।

হ্যাঁ ফুলকপির এই দাম কিন্তু বেশিদিন থাকবে না, আবারো বেড়ে যাবে।

আপনি একদম ঠিক বলেছেন ২০২৪ সাল সবার কাছে একদম স্মরণীয় হয়ে থাকবে। কিছুদিন আগে শাকসবজির যে এত দাম বৃদ্ধি পেয়েছিল মনে হচ্ছিল মনে হয় আর শাকসবজি খাওয়া হবে না। তবে এখন শাকসবজির দাম অনেক কম। এতে কিন্তু মানুষের বেশ ভালই হয়েছে। কিন্তু সবজির দাম এত কম থাকাতে কৃষকের ক্ষতি হয়ে যাচ্ছে। আপনি শাকসবজির বাজার নিয়ে অনেক কথা বলেছেন। আপনার পোস্ট পড়ে বেশ ভালই লাগলো।

এজন্য একটা ভালো পরিবেশ দরকার যেটা কৃষকদের জন্য আবার ক্রেতাদের জন্য গ্রহণযোগ্য হবে

09-01-25

Screenshot_20250109-175402.jpg

Screenshot_20250109-132418.jpg

Screenshot_20250109-132251.jpg