পাঙ্গাস মাছের খাবার তৈরি করার অনুভূতি

in hive-129948 •  4 months ago 


আসসালামু আলাইকুম




হ্যালো বন্ধুরা,

আপনারা সবাই কেমন আছেন? আশা করি, সৃষ্টিকর্তার অশেষ রহমতে অনেক অনেক ভালো রয়েছেন। আমিও আপনাদের দোয়ায় অনেক ভালো রয়েছি। 'আমার বাংলা ব্লগ'এর সকল ভাইবোন বন্ধুদেরকে আমার পক্ষ থেকে সালাম এবং অভিনন্দন জানিয়ে শুরু করতে যাচ্ছি আজকের নতুন একটি পোস্ট। আজকে আমি ধারণা দিতে চলেছি মাছের খাবার বানানোর অনুভূতি পাশাপাশি মাছ বিক্রয়ের কিছুটা সঠিক তথ্য। আশা করব আমার এই পোষ্টের মধ্য দিয়ে আপনারা বেশ অনেক কিছু ধারণা লাভ করবেন মাছ চাষ বিষয়ে। তাহলে চলুন আর কথা না বাড়িয়ে, এখনই বিস্তারিত আলোচনার পর্যায়ে চলে যায়।

IMG_20240505_085023029_BURST0005.jpg


ফটোগ্রাফি সমূহ:


আপনারা জানেন আমরা পাঙ্গাস মাছ চাষ করে থাকি। আর এই পাঙ্গাস চাষ করার পিছনে আমাদের অনেক পরিশ্রম করতে হয়। পাঙ্গাস মাছের খাবার তৈরি করতে আমাদের যেতে হয় নিকটস্থ "16 টাকা" নামক গ্রামের অটো মিলে। আগে রেডি খাবার খাওয়ানো হতো। কিন্তু রেডি খাবারে অনেক খরচ হয়ে যায়। মাছের বাজার একটু পড়ে গেলে অনেক লসে পড়ে যেতে হয়। তবে বিভিন্ন জায়গা থেকে খাবার সংরক্ষণ করে এনে এই অটো মিলে যদি তৈরি করা হয় তাহলে লসের পরিমাণটা কম হয় আবার যদি বাজার একটু ভালো থাকে তাহলে লাভবান হওয়া যায়। এক কথায় বলতে গেলে নিজেদের সুবিধার্থে অনেক মাছ চাষি রয়েছে তারা এই থেকে মাছের খাবার তৈরি করে থাকে। তবে লোডশেডিং এর সমস্যা হলে বেশ বিভ্রান্তিকর মুহূর্তে পড়তে হয় অনেক মানুষের। কারণ দূরদূরান্ত থেকে মানুষ এখানে খাবার তৈরি করতে আসে। তবে কারেন্ট থাকলে সবার জন্য বসার সুবিধা রয়েছে, রয়েছে ফ্যানের বাতাসের ব্যবস্থা। এখানে চারিপাশ ফুল গাছ দারা মনোরম পরিবেশ তৈরি করা। রয়েছে ফুলের বাগান এবং একটি প্রাতিষ্ঠানিক মসজিদ। সকল মানুষের জন্য উন্মুক্ত করে দেয়া হয়েছে এই মসজিদে নামাজ পড়ার ব্যবস্থা। যাই হোক আমি মাছের খাবার তৈরি করতে গেলেই একটা বিষয় লক্ষ্য করে থাকি তারা খুব সুন্দর ব্যবহার করে থাকে সকল মানুষের সাথে। যে ব্যবহার মানুষকে মুগ্ধ করে।

IMG_20240505_085531_803.jpg

IMG_20240505_084846_238.jpg


আমাদের মত অনেক মাছ চাষী রয়েছেন যারা বাইরে থেকে খাবারের উপাদান সুলভ মূল্যে কিনে এনে এখানে জমা রাখেন। এখানে কোন ভাড়া দেওয়া লাগে না। একমাত্র তারাই জমা রাখতে পারবে যারা এখান থেকে খাবার তৈরি করবেন। তাই আগে আমরা একটা সমস্যার সম্মুখীন হতাম,তা হচ্ছে বিভিন্ন জায়গা থেকে খাবারের উপাদান ম্যানেজ করে নিজের বাড়িতে জমা রাখতে হতো। এইজন্য বাড়িতে অতিরিক্ত ইঁদুরের উৎপাত বেড়ে যেত। এখন অটো মিলে রাখায় আর সে সমস্যার সম্মুখীন হতে হয় না। বাড়ি থেকে মিলে নিয়ে যাওয়ার আলাদা খরচ রয়েছে গাড়ি ভাড়ার সে থেকেও সেভ পাওয়া যায়। এখানে খাবারগুলো নির্দিষ্ট সিরিয়াল মত জায়গায় জায়গায় জমা রাখা হয় যেই মাছ চাষী জমা রাখেন তার নাম লিখে। এদিকে খাতাতেও তুলে রাখা হয় কে কত টন খাবার রেখে গেছেন। এক কথায়, খাবার রেখে দেওয়ার ব্যবস্থা রয়েছে এখানে।

IMG_20240505_085226_840.jpg

IMG_20240505_085136_728.jpg


এদিকে খাবার তৈরি করার মুহূর্তে সিরিয়াল মোতাবেক খাবার তৈরি হয়। আর এ খাবারের উপাদানগুলো জমা করা হয় মেশিনের যে জায়গায় ঢালা হয়। দেখতেই পাচ্ছেন খুব সুন্দরভাবে জায়গায় জায়গায় খাবার রেডি করে রাখা হয়েছে। নির্দিষ্ট ব্যক্তির নাম অনুসারে এখানে খাবার গুলো জমা করা হয়। এরপর একজনের পর আরেকজনের খাবারগুলো তৈরি করে প্যাকেট করে নির্দিষ্ট একটু সাইডে রেখে দেন। এরপর আমাদের মত মানুষগুলা গাড়ি ভাড়া করে নিয়ে যান অথবা মিলে থাকা গাড়ি ভাড়া করে সেখানে খাবার তুলে বাড়িতে নিয়ে আসা হয়। খাবার বাড়িতে নিয়ে আসার সুবর্ণ সুযোগ রয়েছে। তাই তেমন কোন টেনশন করা লাগেনা। শুধু অর্ডার করে দিলেই তারা খাবার তৈরি করে দেন।

IMG_20240505_085005_333.jpg


তবে এই অটো মিলের মধ্যে একটা জিনিস লক্ষ্য করা যায়, তা হচ্ছে মানুষের পাশাপাশি পাখির আবির্ভাব। অনেক শালিক পাখি এসে থাকে খাবার খাওয়ার আশায়। আবার কিছু কবুতর রয়েছে এখানেই বাসা বেধেছে। অটো মিলের উপরের অংশে জায়গায় জায়গায় পাখির বাসা। যখনি উপস্থিত হই, তখনই লক্ষ্য করে থাকি বিভিন্ন পাখির চলাচল। বেশ ভালো লাগে পাখি গুলো দেখে। এছাড়াও দেশের বিভিন্ন স্থানের মাছ ব্যবসিকেরা তাদের কার্ড রেখে যান এখানে। তবে তা একটা দুইটা কার্ড নয়। অনেকগুলো কার্ড রেখে যান যেন আমাদের মত মাছ চাষীদের হাতে পৌঁছায়। যেদিন খাবার তৈরি করতে যাই দেখি নতুন নতুন ব্যবসায়িকেরা এভাবেই কার্ড রেখে গেছেন অটো মিলে। এক কথায় লেনদেনের আরেকটা পর্যায় চলে আসে এখানে। আমরাও আড়তগুলো সম্পর্কে খুব সহজেই ধারণা নিতে পারি ফোন দিয়ে। মাছ বিক্রয়ের আগে এই সমস্ত কার্ডে কথা বলার চেষ্টা করি দেশের বিভিন্ন আড়তে, যে আড়তে মাছের দাম বেশি থাকে সেখানে যোগাযোগ রাখি। তবে বিশেষ করে ফরিদপুরের ভাঙ্গা এলাকায় ব্যাপক মাছ যায় আমাদের এখান থেকে। আবার সেখান থেকে দেশের বিভিন্ন জায়গায় সাপ্লাই হয় আমাদের গাংনী মেহেরপুরের পাঙ্গাস মাছ। তাহলেই বুঝতে পারছেন মাছ চাষের পেছনে কত কিছুই রয়েছে। সাথে থাকুন এবং দেখতে থাকুন মাছ বিষয়ের বিভিন্ন ধারণা সম্পূর্ণ পোস্ট।

IMG_20240505_090356_389.jpg

IMG_20240505_085329_363.jpg

PB8ro82ZpZP35bVGjGoE93K3E4U5KX8KtMBJ2rhmkyLqtRRZvVw9YH8hEBg7DJQKSJLWf7VJRhnjGRYSDmuGDMSHAPBRbiRis5HV4ATHTF7QvLHc.png

পোস্ট বিবরণ


বিষয়মাছের খাবার তৈরি করার অনুভূতি
ফটোগ্রাফি ডিভাইসInfinix Hot 11s
লোকেশনগাংনী-মেহেরপুর
ব্লগার@sumon09
দেশবাংলাদেশ


পোস্টটি পড়ার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ।

received_434859771523295.gif


পুনরায় কথা হবে পরবর্তী কোন পোস্টে, ততক্ষণ ভালো থাকুন সবাই। আল্লাহ হাফেজ।

TZjG7hXReeVoAvXt2X6pMxYAb3q65xMju8wryWxKrsghkLbdtHEKTgRBCYd7pi9pJd6nDf4ZPaJpEx3WAqvFVny2ozAtrhFXaDMnAMUAqtLhNESRQveVFZ7XHcED6WEQD48QkCkVTAvNg6.png

Authors get paid when people like you upvote their post.
If you enjoyed what you read here, create your account today and start earning FREE STEEM!
Sort Order:  

Upvoted! Thank you for supporting witness @jswit.

যেহেতু আমি গ্রাম অঞ্চলে বসবাস করি এবং মাছ চাষের সাথে খুবই ভালোভাবে জড়িত তাই আপনার এই অনুভূতিটা আমি ভালোভাবেই অনুভব করতে পারছি। আমিও এই জায়গাটিতে কয়েকবার মাছের খাবার তৈরি করতে গিয়েছি অনেক সুন্দর ভাবে খাবার তৈরি করে দেয় এরা।

হ্যাঁ একদম ঠিক কথা

আসলে যে কোন ধরনের মাছ চাষ করলে অনেক বেশি পরিশ্রম করতে হয়।আর আপনারা পাঙ্গাশ মাছ চাষ করেন, জেনে বেশ ভালো লাগলো আমার।আর আপনাদের পাশ্ববর্তী গ্ৰামে মাছের খাবার তৈরি করার জন্য মিল রয়েছে, এটা জেনে খুশি হলাম। আপনি দেখছি মিল থেকে আপনার পুকুরের মাছের জন্য বেশ কিছু খাদ্য সরবরাহ করেছেন।

দীর্ঘদিন ধরে চাষ করি ভাই

আমাদের এখানে অনেক জনে পাঙ্গাস মাছ চাষ করে। তবে এটি শুনে বেশ ভালো লাগলো আপনারা ওখানে মাছের খাবার গুলো রাখতে পারেন। মূল যারা ওখানে খাবার রেডি করে মাছের জন্য তাদের জন্য এই সুবিধা। তবে এটি ঠিক মাছের দাম পড়ে গেলে তখন লসের সম্ভাবনা থাকে। আর মাছের খাবার তৈরি করা যায় সেটি কিন্তু জানতাম না। আমি তো মনে করলাম বাজারের রেডিমেট খাবার গুলো পাঙ্গাস মাছকে খাওয়ানো হয়।ধন্যবাদ আপনাকে সুন্দর করে পোস্টে আমাদের মাঝে শেয়ার করার জন্য।

হ্যাঁ গোডাউনে রাখতে পারি

আমাদের এদিকে অনেকে বলে রেডি খাওয়ার গুলোর দাম নাকি একটু বেশি। এই কারণে এখানেও অনেকজন মাছের খাবারগুলো তৈরি করার চেষ্টা করে। আপনি দেখতেছি 16 টাকা নামক গ্রামে অটো মিল গিয়ে খাবার রেডি করতেছেন মাছের। তবে বর্তমান সময়ে পাংকাস মাছ অনেক জায়গাতে মানুষ বেশি শ্বাস করে। আর এগুলোর মধ্যে কষ্ট আছে টাকাও খরচা করতে হয়। আর কোন কারণে কিছু হলে লস হওয়ার সম্ভাবনা থাকে। পাংকস মাছের খাবার তৈরি করার অনুভূতি পোস্ট অনেক সুন্দর করে আমাদের মাঝে উপস্থাপনা করেছেন।

রেডি খাবারের দাম অনেক বেশি। ২৫ কেজির বাচ্চা ১৭/১৮০০ টাকা

লোডশেডিং এর সমস্যা বর্তমানে অনেক বেড়ে গেছে। প্রয়োজনীয় কাজ করতে গেলে অনেক সময় লাগছে। মাছের খাবার তৈরির অভিজ্ঞতা আমাদের মাঝে শেয়ার করেছেন এজন্য ধন্যবাদ জানাচ্ছি।

হ্যাঁ ভাই লোডশেডিং অনেক।