সাতক্ষীরা শহর থেকে সুন্দরবনের দিকে যাত্রা || পর্ব তৃতীয়

in hive-129948 •  last year 
আসসালামু আলাইকুম

IMG_20221117_123131108_BURST0006.jpg
Photography device: Infinix hot 11s
location





হ্যালো বন্ধুরা,

আপনারা সবাই কেমন আছেন? আশা করি, সৃষ্টিকর্তার অশেষ রহমতে অনেক অনেক ভালো রয়েছেন। আমিও আপনাদের দোয়ায় অনেক ভালো রয়েছি। 'আমার বাংলা ব্লগ'এর সকল ভাইবোন বন্ধুদেরকে আমার পক্ষ থেকে সালাম এবং অভিনন্দন জানিয়ে শুরু করতে যাচ্ছি আজকের নতুন একটি পোস্ট। আজ আমি আপনাদের মাঝে উপস্থিত হয়েছি সুন্দরবন ভ্রমণের তৃতীয় পর্ব নিয়ে। তাই চলুন আর দেরি না করে এ পর্বটি দেখে নেওয়া যাক।


ফটোগ্রাফি সমূহ:



সাতক্ষীরার শ্যামনগরে যশোরেশ্বরী কালী মন্দির বাজার দিয়ে আমরা তিন বন্ধু চলতে থাকলাম। এখানে এসে তিন রাস্তার মোড় আমরা বুঝতে পারছিলাম না সুন্দরবনে প্রবেশ করব কোন পথ দিয়ে। তবে তিনজন একটু ডান সাইডে হেয়ারিং রাস্তার দিকে হাঁটতে থাকলাম তারপর দেখতে পারলাম বিশাল সেই নদী। আর নদীর পাড়ে ঘেসে বাধা রয়েছে অনেকগুলো নৌকাও ট্রলার। জীবনে প্রথম নদীর পাশে এমন অপরূপ দৃশ্য দেখতে পেরে যেন মন ছুয়ে গেল। আমি পূর্বে কখনো এভাবে নদীর পাড়ে অবস্থান করিনি বন্ধুদের সাথে তাই সবচেয়ে বেশি ভালো লাগছিল আমার এই মুহূর্তটা। অচেনা জায়গায় হুট করে তিন বন্ধু সিদ্ধান্ত নিয়ে চলে আসলাম এবং আনন্দের সাথে নতুন জায়গা ঘুরে ঘুরে দেখতে থাকলাম তাই যেন মনের মধ্যে তিনজনার অনেক আনন্দ হয়েছিল এই মুহূর্তটা। আর সে আনন্দটা এতটাই বেশি ছিল যা লিখে প্রকাশ করা সম্ভব নয়। তবে নতুন একটি স্থান তাই কিছুটা আমাদের ভেতরে সংকোচ কাজ করছিল। আমরা কিছুটা সময় নদীর পাড়ের এই সুন্দর দৃশ্য চেয়ে চেয়ে দেখতে থাকলাম আর ভাবতে থাকলাম এত উপরে কাদা কেন? তখন বন্ধুরা তিনজন মিলে বলাবলি করছিলাম হয়তো জোয়ারের পানি এতদূর উঠে আসে কিন্তু এটা কিভাবে সম্ভব! নদীর পানি তখন যে জায়গায় দেখছিলাম সেই থেকে এটা তো অনেক উচা এতদূর জোয়ারের পানি ওঠে! ভাবতে যেন অবাক লাগছিল তিনজনের। হয়তো যখন জ্বরের পানি চলে আসে তখন অনেকেই নদী পার হয় ট্রলার অথবা নৌকায় চড়ে তাই এত মানুষের পায়ের ছাপ কাদার উপরে। তখন আমার আশেপাশে কোন মানুষজন দেখছিলাম না তাই ভাবছিলাম আমরা কিভাবে নৌকায় চড়ে সুন্দরবন ভ্রমণ করতে যাব? কিছুটা সময় তিন বন্ধু সেখানে দাঁড়িয়ে আমরা বলাবলি করলাম এবং ভাবলাম যে কোন একটি দোকানে যায় কিছুটা খেয়ে নিই এরপরে না হয় এখানকার স্থানে মানুষদের সাথে বলাবলি করে জেনে নেওয়া যাবে। কারণ দীর্ঘক্ষণ বাসে জার্নি করে আমরা সবাই ক্ষুধার্ত হয়ে গেছিলাম।

IMG_20221117_120806_891.jpg

IMG_20221117_121023_446.jpg

IMG_20221117_121027_896.jpg

IMG_20221117_121036_651.jpg
Photography device: Infinix hot 11s
location



তাই সেখানে অবস্থান করে আমরা তিন বন্ধু খুব দ্রুত কিছু সেলফি কিছু ফটোগ্রাফি করে একটু বাজারের দিকে চলে আসার চেষ্টা করলাম। তবে ফটোগ্রাফি করার মুহূর্তে একটু বেশি ভালো লাগছিল নতুন নতুন অচেনা গাছ দেখে আমি কখনো এই গাছগুলো স্বচক্ষে দেখি নাই এই প্রথম দেখলাম এবং গাছের আকৃতি অবস্থান সবকিছুই যেন আমার কাছে বেশ নতুন লাগছিল। শুধু সেখানে যে দাঁড়িয়েছিলাম ছবি উঠাচ্ছিলাম এটাই নয় আমরা সেই স্থানের সুন্দর দৃশ্য নিয়ে বলাবলি করছিলাম। আরে এ মুহূর্তে শুধু মনের মধ্যে একটি কথায় আমাদের হয়েছিল যেন সময় দ্রুত না যায় আমরা যেন অনেক কিছু দেখে যেতে পারি এবং ফটোগ্রাফি করে নিয়ে যেতে পারি। আর এভাবেই নতুন স্থান ক্যামেরা বন্দি করতে করতেই বাজারের দিকে চলে আসলাম।

IMG_20221117_121225100_BURST0012.jpg

IMG_20221117_121229621_BURST0003.jpg

IMG_20221117_121109_542.jpg

IMG_20221117_121115_165.jpg
Photography device: Infinix hot 11s
location



দিনটা বেশ রোদ গরম ছিল। যেহেতু এটা ছিল নভেম্বরের 17 তারিখ 2022 সাল। শীতের সময় সামনে ছিল তখন অবশ্য দিনে প্রচন্ড গরম রাতে হালকা ঠান্ডা অনুভব হতো তবে বেশি কাঁথা গায়ে দেওয়া লাগত না। ঠিক এমনই দিন ছিল তাই বাজারের দিকে আসতে লক্ষ্য করে দেখলাম অনেক মানুষ গাছের ছায়ায় বসে বিশ্রাম নিচ্ছে। প্রথমে আমরা তিন বন্ধু ভাবলাম যে গাছের ছায়ায় বসে থাকা লোকদের কাছে জানতে চাইবো নাকি দোকানে আগে কিছুটা নাস্তা করে নেব। বন্ধুরা সিদ্ধান্ত করলো এখানকার লোকজনদের চেয়ে সঠিক তথ্য বেশি দিতে পারবে স্থানীয় দোকানের মানুষেরা তাই এদের থেকে জানার প্রয়োজন নেই চলো আমরা দোকানে খাওয়া দাওয়া করে সেখান থেকেই জানি। তখন আবার আমরা চলে আসলাম দোকানের দিকে।

IMG_20221117_121538_695.jpg

IMG_20221117_121544_206.jpg
Photography device: Infinix hot 11s
location



আমরা তিন বন্ধু একটি দোকানে প্রবেশ করলাম সেখানে হালকা নাস্তা করার চেষ্টা করলাম চা সহ। ১০-১৫ মিনিট নাস্তা করার পর সমবয়সী একটি ছেলের কাছে জানতে চাইলাম আমরা কোন সাইট দিয়ে নৌকায় উঠবো নৌকা অথবা স্পিডবোটে সুন্দরবনে ঘুরতে গেলে কত খরচ হবে উনি প্রথমে আমাদের কাছে জানতে চাইলেন আমরা কোথা থেকে এসেছি এখানে কি প্রথম? আমরা তাকে বললাম আমরা সাতক্ষীরায় পরীক্ষা দিতে এসেছি। সাতক্ষীরা সদরে একটি আবাসিক হোটেলে উঠেছি আজকে পরীক্ষা নেই তাই চলে এসেছি সুন্দরবন দেখতে। তখন সে বলল বিস্তারিত কোন দিক দিয়ে নৌকায় করে সুন্দর বনে যেতে হবে। আমরা ছেলেটার কথা মোতাবেক সুন্দরবন দেখতে যাব এটাই সিদ্ধান্ত গ্রহণ করলাম তিন বন্ধু মিলে। ছেলেটা আমাদের বলে দিয়েছিল আপনারা এই ডান সাইডে রাস্তা দিয়ে চলে যান 'আকাশ নীলা ট্যুরিজম পার্কে'এরপর পার্কের মধ্যে লাস্টে দেখতে পারবেন নদীতে নামার জন্য সুন্দর সিঁড়ি রয়েছে ঠিক সেখানে আপনারা অবস্থান করলে দেখতে পারবেন দুই একজন মাঝি নৌকা নিয়ে চলাচল করছে। এই মাঝিদের মধ্যে 'সাগর মাঝি' বলে যে ব্যক্তি রয়েছে তার নৌকায় চড়ে সুন্দরবন ভ্রমণ করতে পারেন। আমারও তার কথা শুনে খুশি হলাম এবং একসাথে সেলফি উঠালাম।

IMG_20221117_123112_253.jpg

IMG_20221117_123124_542.jpg
Photography device: Infinix hot 11s
location



দোকানদার ভাইয়ের কথা মোতাবেক আমরা উত্তর দিকে চলতে শুরু করলাম। আমার দুই বন্ধু আমার আগে আগে চলতে থাকলো যেহেতু তারা তো ব্লগে কাজ করে না তাই বেশি একটা ফটো লাগবে বলে মনে করেছিল না কিন্তু আমি পিছু পিছু চলছিলাম এবং ফটোগ্রাফি করছিলাম। নতুন শহর ফটোগ্রাফি করতে বেশ ভালো লাগছিল। আর তাই আমি যেই স্থান দেখতে বেশি ভালো লাগছিল সেই দিকে ফটোগ্রাফি করতে থাকছিলাম। কিছুটা পথ অতিক্রম করে দেখলাম অনেকগুলো নৌকা থেমে রয়েছে জোয়ারের পানির আশায়,যখন জোয়ারের পানি আসবে তখন নৌকা গুলো ছেড়ে যাবে। এভাবেই দেখতে দেখতে আমরা আকাশ নীলা একটুরিজম পার্কের দিকে এগোতে থাকলাম। বিস্তারিত সামনের পোস্টে জানতে পারবেন।

IMG_20221117_123305_998.jpg

IMG_20221117_123642_734.jpg
Photography device: Infinix hot 11s
location


পোস্টটি পড়ার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ।

received_434859771523295.gif


পুনরায় কথা হবে পরবর্তী কোন পোস্টে, ততক্ষণ ভালো থাকা হয় যেনো। আল্লাহ হাফেজ।

TZjG7hXReeVoAvXt2X6pMxYAb3q65xMju8wryWxKrsghkLbdtHEKTgRBCYd7pi9pJd6nDf4ZPaJpEx3WAqvFVny2ozAtrhFXaDMnAMUAqtLhNESRQveVFZ7XHcED6WEQD48QkCkVTAvNg6.png

Authors get paid when people like you upvote their post.
If you enjoyed what you read here, create your account today and start earning FREE STEEM!