হ্যালো বন্ধুরা,
আপনারা সবাই কেমন আছেন? আশা করি, সৃষ্টিকর্তার অশেষ রহমতে অনেক অনেক ভালো রয়েছেন। আমিও আপনাদের দোয়ায় অনেক ভালো রয়েছি। 'আমার বাংলা ব্লগ'এর সকল ভাইবোন বন্ধুদেরকে আমার পক্ষ থেকে সালাম এবং অভিনন্দন জানিয়ে শুরু করতে যাচ্ছি আজকের নতুন একটি পোস্ট। আজ আমি আমার একটি সন্ধ্যা কালীন মুহূর্তের দারুন অনুভূতি শেয়ার করতে চাইছি। হয়তো অনুভূতিটা করলে আপনারা খুঁজে পাবেন ভাললাগার সুখ। তাই চলোনা দেরি না করে, শুরু করি।
চাকরিজীবী মানুষ যেমন নিজের কর্মক্ষেত্র থেকে বাসায় ফিরতে রাত হয়ে যায়, ঠিক তেমনি অনেক চাকরিজীবী মানুষ রয়েছে তাদের উপর মহলের হুকুম পালন করতে রাত্রী কালীন মুহূর্তে বের হয়ে যেতে হয় কর্মক্ষেত্রে। তবে মানুষ যে যার মতন নিজ পেশায় নিয়োজিত থাকে এবং সময় দেয় তার কর্ম ক্ষেত্রে। আর তার মধ্যে নিজের ভালোলাগা খুঁজে নিতে হয়। ঠিক তেমনি একটি বিষয় আজ আমি আপনাদের মাঝে তুলে ধরতে চলেছি। বিষয়টা হচ্ছে আপনারা অনেকেই জানেন আমরা দুই ভাই অনেকগুলো পুকুরে মাছ আবাদ করে থাকি। আর এই মাছের খাবার দেওয়ার জন্য সকাল এবং বিকালে খাবার নিয়ে যায়। তবে মাঝেমধ্যে বিভিন্ন কারণে 19-20 হয়ে যায়। বিভিন্ন ব্যস্ততার ফলে খাবার দেওয়ার টাইম একটু দেরি হলে সেদিন আবার দেখা যায় বিকেল মুহূর্তে দেরি করে গেলে রাত হয়ে গেছে। তবুও হাজার হাজার মাছের মুখের খাবার জুটাতে হয়। ঠিক এমন একদিন সন্ধ্যাকালীন মুহূর্তে মাছের খাবার দিতে গেছিলাম আর তাই খাবার দিতে দিতে মাগরিবের আজানের প্রায় আধাঘন্টা বেশি পার হয়ে গেছিল। অনেক মানুষ রয়েছে একা থাকতে কাজ করতে পছন্দ করে না আবার আমার মত যারা একা কাজ করে অভ্যস্ত হয়ে গেছে তারা তার মধ্যেই ভালোলাগা খুঁজে পেতে চেষ্টা করে। তাই তেমন একটি মুহূর্তে মাছের খাবার দেয়া শেষ করে চারিদিকে তাকিয়ে দেখি কখন জানি ঘন কালো আঁধারে ঢেকে গেছে চারিপাশ। এই তো কিছুক্ষণ আগে আমার সবজি বাগানের মধ্যে দিয়ে নেমে মাছের খাবার দিলাম দিনের আলোয় কত সুন্দর সবকিছু দেখতে পারছিলাম কিন্তু সামান্য কয়েক মিনিটের ব্যবধানে অন্ধকার নেমে এসেছে এটাই সন্ধ্যাকালীন মুহূর্ত। এখন আর স্বচক্ষে সবকিছু পরিষ্কার দেখা যাচ্ছে না,মোবাইলের আলো জেলেই দেখতে হচ্ছে। তাই ওই মুহূর্তে মনের মধ্যে সুন্দর অনুভূতি জাগলো অন্ধকারে টর্চ জ্বালিয়ে কিছুটা না হয় ফটোগ্রাফি করি আমার সবজি বাগানের। আর তাই বেশ কিছু সুন্দর সুন্দর ফটোগ্রাফি ধারণ করলাম।
বর্তমান পুকুর পাড়ে আমার সবজি বাগানের বড় আকর্ষণ পুঁই শাক এর বান। একাধিক গাছ থাকাই সুন্দর সুন্দর ভাবে ব্যবস্থা করে দিয়েছি তাই নতুন নতুন খুশি গুলো যেন আকর্ষণ করে। আমি ছোট থেকে এই শাক খেতে বেশি পছন্দ করি তাই সবজি বাগানে চেষ্টা করে থাকি বেশি বেশি পুঁই শাক তৈরি করার। রাতের মুহূর্তে ফটোগ্রাফি করতে বেশ ভালো লাগছিল অন্ধকারের মধ্যে সুন্দর ফটো হচ্ছে। আর নিজে তৈরি করা কোন কিছু আরেকজনের মাঝে তুলে ধরতে আমি বেশ আনন্দ বোধ করি। দিনটা ছিল বেশ প্রচন্ড গরম তাই মাছের খাবার দেওয়া শেষে শাকের গাছের পাশে বসে পড়লাম। ঝিরিঝিরি হালকা বাতাস বয়ে চলল। হিমেল হাওয়াই যেন প্রাণটা জুড়িয়ে গেল সারাদিনের ক্লান্তি কিছুটা হলেও দূর হওয়ার মতো। এদিকে পরিবার মোবাইলে ডাকছে আমায় রাত হয়ে গেছে বাড়ি আসছে না কেন। প্রিয়জন ভালোভাবে কথা বললে জানে যেমন শান্তি লাগে ওই মুহূর্তে ঠিক তেমন শান্তি অনুভব করছিলাম দুই দিক থেকে একদিকে হালকা বাতাস অন্যদিকে প্রিয়জনের মায়াময়ী অনুভবে ডাকা। যেন দুই দিক থেকে শান্তি অনুভব করতে থাকলাম। মনে হচ্ছিল প্রিয়জন যদি এই মুহূর্তে বাড়িতে না থেকে আমার পাশে থাকতো তাহলে জগতের সবচেয়ে সেরা সুখ ভোগ করতাম এখানে। কিছুদিন আগেও সে বিকেল টাইমে আমার সাথে এখানে উপস্থিত ছিল কিন্তু এতটা ভালো লাগা অনুভব করছিলাম না। সত্যি ক্লান্তির পরে যদি একটু ঠান্ডা শীতল বাতাস আর প্রিয়জনের মিষ্টি কথা কানে আসে তাহলে তার চেয়ে সুখ হয়তো দুনিয়ায় আর কিছু হতে পারে না। আমি তাকে বললাম একটু ওয়েট কর আমি কিছুক্ষণ পরে বাড়িতে আসছি একটু ঠান্ডা বাতাসে গা লাগাতে দাও।
হঠাৎ মোবাইল থেকে চোখ সরিয়ে আকাশের দিকে তাকিয়ে দেখলাম কখন জানি চাঁদ উঠে গেছে আকাশে বেশ তাদের আলো শুরু হচ্ছে এমন মুহূর্ত। আকাশের দিকে তাকিয়ে দেখলাম দেখলাম আর ভাবলাম মাঝেমধ্যে আমি আর আমার বন্ধু মারুফ পুকুর পাড়ে বসে অনেক গল্প করি তবে আমাদের এই পুকুর পাড়ে না হাফ কিলো দূরে এক পুকুর পাড়ে। তবে প্রতিনিয়ত সেখানে যাওয়া হয়না মাঝেমধ্যে সুযোগ পেলে। এই মুহূর্তে যদি মারুক আমার সাথে বসে এখানে গল্প করত জীবনের বিভিন্ন স্মৃতি নিয়ে ভালো লাগতো। অথবা আমার স্ত্রী যদি আমার পাশে এখানে বসে একসাথে গল্প করত তার শৈশবের স্মৃতিগুলো তুলে ধরতো আমার কাছে হয়তো অনেক খুশি হতাম। যাই হোক সুন্দর অনুভূতির মাঝে চাঁদের আলো যেন মনটাকে রাঙিয়ে তুললো কিছু রোমান্টিক অনুভূতিতে। কিছুটা সময় বসে থাকতে থাকতে হঠাৎ মাথায় ভয় আসলো এখন প্রচন্ড গরমের সময় এখানে বিষধর কুলিম সাপ;কালাই বুড়া সাপ এর সমস্যা বেশি। ভেবে দেখলাম বেশি সুখ হয়তো সইবে না। বাড়িতে গেলেই আমার প্রিয়জন পথ চেয়ে রয়েছে হয়তো সুখ সেখানেই। প্রাকৃতিক সুখ যতটাই ভোগ করলাম এটাই এনাফ। এরপর সিদ্ধান্ত নিলাম চারিপাশে লাইটের আলো মেরে দ্রুত বাড়ির দিকে চলে যায়। এরপর আরো কিছু ফটোগ্রাফি ধারণ করলাম আমার মোবাইলে।
চলতি পথে বাঁশ বাগান অতিক্রম করতে হয়। অন্ধকার রাতে বাঁশ বাগান দিয়ে চলাচলের অভ্যাস আমার রয়েছে। এই বাগান দিয়ে আমি দীর্ঘদিন চলাচল করি রাত একটা দুইটা তিনটা দেখা দেখি নাই। তবে পথে চলতেও জানো রোমান্টিক মুড অনুভব হচ্ছিল আমার মাঝেমধ্যে পূর্ব দিকে চাঁদের আলো চোখে লাগছে এতেই যেন ভালোলাগা হারো বৃদ্ধি পাচ্ছে। এদিকে আবার প্রাণপ্রিয় স্ত্রী আবার মোবাইল করে আমাকে স্মরণ করছে তুমি এখনো বাসায় ফিরছ না কেন রাতে সাপ পোশাক ভয় দ্রুত বাড়িতে আসো কাজ করো অনলাইনে। সত্যিই জীবন চলার পথে প্রিয়জনের সচেতন অনুভূতি ভালোবাসা স্নেহ মায়া মমতা মানুষকে নতুন করে বাঁচতে শেখায়, জানে শান্তি দেয়। বেশ ভালো লাগছিল দ্রুত চলছিলাম না ধীরে ধীরে বাড়ির দিকে যাচ্ছিলাম আর অনুভব করছিলাম আমার খোঁজ খবর নেওয়ার সত্যিই মানুষ রয়েছে। মনে পড়তে থাকলো রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের ভালোলাগা কিছু গল্প ও কবিতা। যেন অফুরন্ত এক ভালোলাগা মনের মধ্যে কাজ করছিল তখন।
পোস্টটি পড়ার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ।
পুনরায় কথা হবে পরবর্তী কোন পোস্টে, ততক্ষণ ভালো থাকা হয় যেনো। আল্লাহ হাফেজ। |