মেহেরপুর শহর ভ্রমণ ও অতীত স্মৃতিচারণ

in hive-129948 •  last year 
আসসালামু আলাইকুম




হ্যালো বন্ধুরা,

আপনারা সবাই কেমন আছেন? আশা করি, সৃষ্টিকর্তার অশেষ রহমতে অনেক অনেক ভালো রয়েছেন। আমিও আপনাদের দোয়ায় অনেক ভালো রয়েছি। 'আমার বাংলা ব্লগ'এর সকল ভাইবোন বন্ধুদেরকে আমার পক্ষ থেকে সালাম এবং অভিনন্দন জানিয়ে শুরু করতে যাচ্ছি আজকের নতুন একটি পোস্ট। আজ আমি আপনাদের মাঝে আমাদের মেহেরপুর শহর ভ্রমণ এর কিছু ফটোগ্রাফি এবং অতীতের কিছু স্মৃতি তুলে ধরতে চলেছি। আশা করি আপনাদের অনেক ভালো লাগবে তথ্যগুলো পড়ে। যেখানে থাকবে সুন্দর বর্ণনা বিভিন্ন স্থানকে কেন্দ্র করে। তাই চলুন আর দেরি করে লাভ কি এখনই বিস্তারিত বর্ণনা পড়ি এবং তথ্য গ্রহণ করি।


ফটোগ্রাফি সমূহ:



প্রথমে আপনারা দেখতে পাচ্ছেন মেহেরপুরে পানি সাপ্লাই লাইন। এই সাপ্লাই লাইন থেকে মেহেরপুরের সর্বস্থানে পানি সরবরাহ করা হয়। আমি প্রথম যখন ২০১৪ সালে বন্ধুদের ম্যাচে উপস্থিত হয়েছিলাম। তখন হাত মুখ ধোয়ার জন্য যে টেপের পানি ব্যবহার করেছিলাম সেখান থেকে জানতে পেরেছিলাম এই পানিগুলো এই সাপ্লাই লাইন থেকেই সরবরাহ হয়। তবে প্রথম অবশ্যই সাপ্লাই লাইন টা দেখেছিলাম হাতমুখ ধোয়ার অনেক আগেই। কারো মেহেরপুরে ভর্তি হতে যাওয়ার আগে আমার বন্ধু মারুফের সাথে ঘুরতে গিয়েছিলাম ২০১৩ সালে। আর সেই সময় মারুফ আমাকে চিনিয়েছিল এই সমস্ত জায়গাগুলো। তবে আমার জানা ছিল না যে এইখান থেকে সারা মেহেরপুরে সব জায়গায় আমি সরবরাহ করা হয় আমি তখন ভেবেছিলাম হয়তো সরকারি বিশেষ বিশেষ প্রতিষ্ঠানে এখান থেকে পানি সাপ্লাই হয়। কিন্তু বন্ধুদের ম্যাচে যখন উপস্থিত হয়েছিলাম তারপর থেকে জানছিলাম সারা মেহেরপুরে সর্বস্থানে পানি সাপ্লাই করা হয় এখান থেকে। আর এরপর থেকেই জানতে পারলাম সারাদেশে এমন সাপ্লাই লাইন অনেক রয়েছে সমস্ত জায়গায় এভাবে পানি সরবরাহের ব্যবস্থা রয়েছে যেখানে বাসা বাড়ি স্থানে পানি সাপ্লাইয়ের কার্যক্রম চলে।

IMG_20230806_095127_541.jpg
Photography device: Infinix hot 11s
location



এটা মেহেরপুরের সিনেমা হল। যে সিনেমা হলে একদিন মানুষ হাজার হাজার উপস্থিত হতো সিনেমা দেখার জন্য। এখন শুনি সিনেমা হলে তেমন লোকজন হয় না বললেই চলে। আধুনিকতার ছোঁয়া সর্বস্থানের ছড়িয়ে পড়েছে তাই আগেকার মত মানুষের সিনেমা হলে ডাট নিয়ে এসে বসে থাকতে ভালোবাসে না। আগেকার দিনে এই সমস্ত সিনেমা হল গুলো ছিল বড়লোকের প্রাণকেন্দ্র সিনেমা দেখতে আশাকে মনে করত নিজের অন্যরকম গৌরব। এখন আর সেই গৌরব চলে না। যাইহোক এখানেও আমি সর্বপ্রথম 2013 সালে এসেছিলাম অনেক ছবি তুলেছিলাম সেই সময় মারুফের একটা মোবাইলে অবশ্য মোবাইলটা নষ্ট হয়ে গেছে তবে মোবাইলে সেই মেমোরিটা এখনকার মোবাইলের মধ্যে ব্যবহার করা যায় না যদি এ সমস্ত মোবাইল ব্যবহার করা যেত হয়তো ছবিগুলো উদ্ধার করতে পারতাম। তবে মেহেরপুর গভমেন্ট কলেজে যখন ভর্তি হয়েছিলাম এরপর নতুন বন্ধুদের সাথে মাঝে মধ্যে প্রয়োজনীয় প্রয়োজনে ঘোরাঘুরি করতে এসেছি এই সমস্ত জায়গা গুলোতে। এইতো মাসখানেক আগে এই ফটোগ্রাফি যখন করেছিলাম সমস্ত স্মৃতিগুলো চোখের সামনে ভেসে আসতে লাগলো বন্ধুদের সাথে একত্রে চলেছি, আজ একা।

IMG_20230806_095143_436.jpg
Photography device: Infinix hot 11s
location



২০১৩ সালে মারুফ আমাকে প্রথম এই পৌরসভা চিনিয়ে দিয়েছিল যেহেতু আমি গাংনীর পৌরসভা চিনি কিন্তু মেহেরপুরের পৌরসভা কেমন তা চিনতাম না। আমাদের গাংনীর পৌরসভাটা বেশ অনেক জায়গা জুড়ে। যাইহোক মেহেরপুর শহর কিন্তু আমার অনেক প্রিয়। হতে পারে নিজের জেলা তারপরেও জায়গায় জায়গায় সুন্দর সুন্দর দৃশ্য মন কেড়ে নেয়। তাইতো যখন অনার্স মাস্টার্স কমপ্লিট করেছি এই শহরে দীর্ঘদিনের চলাচল ছিল আমার এই পথ দিয়ে। হয়তো আমাদের কলেজ টা এ রোডে নয়, তবুও এদিকে যেন এমনিতেই বন্ধুর সাইকেল নিয়ে ঘোরাঘুরি করেছি।

IMG_20230806_094236_374.jpg
Photography device: Infinix hot 11s
location



আমার প্রাণ প্রিয় বন্ধু জুলহাস। সে মুজিবনগর থানার সন্তান আমি মেহেরপুরের গাংনী থানা সন্তান। অনার্সে ভর্তি হয়েছে ২০১৪ সালে তার সাথে পরিচয়। সে থেকে আমার নিবিড় সম্পর্ক আজ পর্যন্ত। কতদিন তার সাথে চলেছি তার ম্যাচে খাওয়া-দাওয়া করেছি সাথে সাথে একত্রে পরীক্ষা দিতে বিভিন্ন জায়গায় গিয়েছি। আমাদের বন্ধুত্বের বন্ধন আজও যেন অটল রয়েছে। যখন অনেকদিন পরমেহেরপুর শহরে উপস্থিত হয়েছি এ কথাটা তাকে বলার সাথে সাথেই প্রাইভেট পড়ানো বাদ দিয়ে এক কিলো পথ অতিক্রম করে চলে এসেছে তার ম্যাচের সামনে। যেহেতু কোথায় প্রাইভেট পড়া সেটা তো আমার জানা নেই বলেছিলাম তোমাদের ম্যাচের সামনে আমি উপস্থিত হব কিছুক্ষণ পর এ কথা শুনেই সে ম্যাচের সামনে এসে দাঁড়িয়ে রয়েছি আমার অপেক্ষায়। আমার বন্ধুর জন্য সবাই দোয়া করবেন সে নিবন্ধনে পাশ করেছে। সে যেন দ্রুত একটা হাই স্কুলের চাকরি পেয়ে জীবন সেট করে নিতে পারে। আরো দোয়া করবেন তার পায়ে সমস্যা রয়েছে আল্লাহ যেন এ সমস্যাটা দূর করে তাকে ভালো রাখে।

IMG_20230806_095904811_BURST0017.jpg
Photography device: Infinix hot 11s
location



চির চেনা মেহেরপুরের সেই পথ। যেই পথ ধরে বন্ধুদের সাথে পরীক্ষা দিতে গিয়েছিলাম মহিলা কলেজে। একটা দিন নয় পাঁচবারের ফাইনাল পরীক্ষা দিতে গিয়েছিলাম মেহেরপুর গভমেন্ট কলেজ থেকে মেহেরপুর মহিলা গভমেন্ট কলেজে। এখানেই পাশে আমাদেরকে নামিয়ে দিত এখান থেকে রিক্সা অথবা অটো রিক্সায় চড়ে চলে যেতাম মাঝেমধ্যে বন্ধুরা একসাথে পায়ে হেঁটেছি কত গল্প আড্ডা। এছাড়াও আমি আমার বন্ধু জুলহাস আর মিলন তিনজন মিলে এই পথে প্রয়োজনীয় অপ্রয়োজনে বাজারের দিকে যেতাম স্টেডিয়ামের দিকে যেতাম। আমাদের হাসি আনন্দ মাখা অনেক স্মৃতি পড়ে রয়েছে এই পথে।

IMG_20230806_095652_1.jpg
Photography device: Infinix hot 11s
location



এটা মেহেরপুরের বড় বাজারের একটা অংশ। এই পথ দিয়ে আমি যেতাম নদী ইলেকট্রনিক্সে। কখনো এ পথে যদি পা রাখতাম তার বড় একটা উদ্দেশ্য থাকতো নদী ইলেকট্রনিক্স এ যাওয়ার। কারণ সেই দোকানটাতে বিভিন্ন প্রকার ইলেকট্রনিক্সের জিনিস কম দামে কিনতে পারতাম। অবশ্য সে দোকানটা আমাকে মারুফ চিনিয়ে দিয়েছিল। আমার আগে মারুফ এখানে টেকনিক্যালে ভর্তি হয়েছিল ৪ বছরের কোর্স করার জন্য। তাই আমার পূর্ব থেকেই সে এই শহরটা ভালো করে চিনে নিয়েছিল মেট্রিক পাশ করে সে পলিটেকনিকেলে ভর্তি হয় ওদিকে আমি মেট্রিক পাশ করার পর ইন্টারে ভর্তি হয়েছিলাম গাংনী কলেজে। তাই বলতে পারেন সে আমার চেয়ে দুই বছর অ্যাডভান্স মেহেরপুর সম্পর্কে।

IMG_20230806_095249_529.jpg
Photography device: Infinix hot 11s
location



একদিন ছাত্রলীগের মিছিলে, আমি আসবো না এরপরেও জোর করে সবাইকে নিয়ে আসা হয়েছিল কলেজের ভেতর থেকে। সুপরিচিত আমরা যে পাঁচ সাত জন বন্ধু ছিলাম অতঃপর সবাই মন থেকে রাজি হলাম কিছু করার নেই যেতেই হবে তবে আমরা সবাই একসাথে থাকব। সেই কলেজ থেকে বের হয়ে এসে মিছিলটা এই পর্যন্ত আসার পর একটু ঝামেলা হয়েছিল। আর এই ঝামেলার মাঝখান থেকে আমরা যে কয়জন বন্ধু ছিলাম এখানে সাইট কেটে একটা গলি দিয়ে পার হয়ে চলে গেছিলাম। এই সেই জায়গাটা যেন ভুলবার নয়। তবে দলীয় এই সমস্ত মিছিল গাড়ি ভাঙচুর পথ অবরোধ করা মোটেও আমি পছন্দ করি না। এ সমস্ত কার্যক্রম আমার দিয়ে মোটেও সম্ভব নয়। আমি শান্ত মনের নিরিবিরি মানুষ। যেখানে মানুষের ক্ষতি সেখান থেকে আমি অনেক দূরে। তবুও পথ চলতে কত ভুলভ্রান্তি হয়ে যায় তার নেই ঠিক।

IMG_20230806_095559_724.jpg
Photography device: Infinix hot 11s
location



এটা মেহেরপুরের পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি। আমি যখন মেহেরপুর শহর চিনা শুরু করেছিলাম প্রথম কিন্তু এটাই চিনেছিলাম। কারণ এই দিকে গাংনীর পল্লী বিদ্যুতে কারেন্টের বিল দিতে আসতাম। আর সেখান থেকেই যেন অন্যান্য প্রতিষ্ঠানের চেয়েও পল্লী বিদ্যুৎ প্রতিষ্ঠানের প্রতি একটা অন্যরকম মনোযোগ আসতো। তাই মেহেরপুরে যখন বাসে চড়ে আসতাম বেশি লক্ষ্য রাখতাম পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি পার হলাম কিনা। যখনই দেখতাম মেহেরপুর পল্লী বিদ্যুৎ পার হয়ে আসছি তখনই জানতাম হ্যাঁ মেহেরপুরের মধ্যে প্রবেশ করলাম। আর এভাবেই মেহেরপুরের বিভিন্ন স্থান নিজের আয়ত্তে আনা কোন প্রতিষ্ঠান কোন জায়গায় রয়েছে। আশা করি আপনাদের খুবই ভালো লাগলো স্মৃতিচারণমূলক মেহেরপুর শহর ভ্রমণ।

IMG_20230806_101408_522.jpg
Photography device: Infinix hot 11s
location


পোস্টটি পড়ার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ।

received_434859771523295.gif


পুনরায় কথা হবে পরবর্তী কোন পোস্টে, ততক্ষণ ভালো থাকা হয় যেনো। আল্লাহ হাফেজ।

TZjG7hXReeVoAvXt2X6pMxYAb3q65xMju8wryWxKrsghkLbdtHEKTgRBCYd7pi9pJd6nDf4ZPaJpEx3WAqvFVny2ozAtrhFXaDMnAMUAqtLhNESRQveVFZ7XHcED6WEQD48QkCkVTAvNg6.png

Authors get paid when people like you upvote their post.
If you enjoyed what you read here, create your account today and start earning FREE STEEM!
Sort Order:  

মেহেরপুর শহরে আমি বেশ কয়েকবার গিয়েছি সেখানকার সৌন্দর্যগুলো বারবার আমাকে মুগ্ধ করে তুলেছে।
বিশেষ করে মেহেরপুরের বৈদ্যনাথ তলার স্মৃতি তো সবারই জানা।
আজ আপনার পোষ্টের মাধ্যমে আপনার শহরের সৌন্দর্য এবং বর্ণনা জানতে পেরে খুবই ভালো লাগলো।

ধন্যবাদ ভাইজান আমাদের শহর ঘুরে দেখার জন্য।