পরীক্ষার জন্য সাতক্ষীরার উদ্দেশ্যে যাত্রা || ট্রেন জার্নি - চুয়াডাঙ্গা টু যশোর || দ্বিতীয় পর্ব

in hive-129948 •  2 years ago 

আজ - রবিবার

২৯ মাঘ, ১৪২৯ বঙ্গাব্দ
১২ ফেব্রুয়ারি, ২০২৩ খ্রিষ্টাব্দ


আসসালামু আলাইকুম



আমার বাংলা ব্লগ কমিউনিটিতে আপনাকে স্বাগতম

IMG_20221115_090259253_BURST0003.jpg




হ্যালো বন্ধুরা,

আপনারা সবাই কেমন আছেন? আশা করি, সৃষ্টিকর্তার অশেষ রহমতে অনেক অনেক ভালো রয়েছেন। আমিও আপনাদের দোয়ায় অনেক ভালো রয়েছি। 'আমার বাংলা ব্লগ'এর সকল ভাইবোন বন্ধুদের কে আমার পক্ষ থেকে সালাম এবং অভিনন্দন জানিয়ে শুরু করতে যাচ্ছি আজকের নতুন একটি পোস্ট। আজ আমি আপনাদের মাঝে তুলে ধরব চুয়াডাঙ্গা থেকে যশোর ট্রেন ভ্রমণের অনুভূতি। তাই চলুন আর দেরি না করে বিস্তারিত আলোচনার পূর্বে যাওয়া যায়।


'আমার বাংলা ব্লগ'
কোয়ালিটি সম্পন্ন পোস্ট



ফটোগ্রাফি সমূহ:


১ নং ফটোগ্রাফি

১৪ ই নভেম্বর ২০২২ যাত্রা করেছিলাম সাতক্ষীরা চারুকলা বিভাগে পরীক্ষা দিতে যাওয়ার উদ্দেশ্যে। যেহেতু ১৪ তারিখের রাত্রি আমি মেহেরপুরে বন্ধুদের সাথে ম্যাচে ছিলাম। তাই ১৫ তারিখ সকাল সাতটার সময় মেহেরপুর থেকে বাসে চড়ে চুয়াডাঙ্গা রেলস্টেশনে পৌঁছালাম আটটার পর পরে। যেহেতু আমাদের ট্রেন ছিল ৯ টার সময়। আমরা আটটার সময় রেল স্টেশনে পৌঁছে যেয়ে অপেক্ষা করতে হয়েছিল অনেকক্ষণ। যেহেতু আমরা তিন বন্ধু একসাথে চলছিলাম এবং ছবি উঠাছিলাম। আমরা স্টেশনে পৌঁছে আগে ফ্রেশ হতে গেলাম। আমরা তিন বন্ধু সহ মোট ২২ জন যাত্রা করেছিলাম সাতক্ষীরার উদ্দেশ্যে। স্টেশনে পৌঁছে আমার ধারণা ছিল না কোন দিক থেকে কোন দিকের লাইনে ট্রেন আসবে। পরবর্তীতে আমাদের বস রাজু ভাই জানালো ওপারে যেতে হবে। তাই আমরা তিন বন্ধু ফ্রেশ হয়ে দ্রুত ওপারে চলে যাওয়ার চেষ্টা করলাম। তবে যাওয়ার মুহূর্তে ফ্লাইওভারে উঠে এপাশ-ওপাশ সব দিকে ফটোগ্রাফি করার চেষ্টা করলাম।

IMG_20221115_084730_127.jpg

IMG_20221115_084739_614.jpg

IMG_20221115_090332_669.jpg

IMG_20221115_090326_689.jpg

IMG_20221115_090309844_BURST0003.jpg

IMG_20221115_084805249_BURST0006.jpg
Photography device: Infinix hot 11s
চুয়াডাঙ্গা রেল স্টেশন



received_305654148004402.webp


২ নং ফটোগ্রাফি

যেহেতু ৯ টার ট্রেন ছিল, তবে নয়টা বেজে যাওয়ার পরেও ট্রেন আসছিল না। আমরা যতক্ষণ দাঁড়িয়ে ছিলাম ততক্ষণ যেন সময় কাটছিল না তাই আমরা আমাদের বস রাজু ভাইয়ের নিকট থেকে টিকিট সংরক্ষণ করে নিলাম। ইচ্ছে ছিল তিন বন্ধু পাশাপাশি সিটে বসব। তবে যাই হোক এপাস-ওপাস ঘোরাফেরা, ফটোগ্রাফি, খাওয়া-দাওয়া করে অনেকক্ষণ পর ট্রেন যখন এলো আমরা তিন বন্ধু দ্রুত ট্রেনে উঠে পড়ার চেষ্টা করলাম। আমরা যখন স্টেশনে পৌঁছেছিলাম তখন তেমন লোকজনের ভিড় ছিল না। তবে ট্রেন আসার পূর্ব মুহূর্তে রেলস্টেশন জুড়ে এত মানুষ হয়ে গেল যেখানে পা ফেলার আর কোন সুযোগ ছিল না। তাই আমরা তিন বন্ধু একসাথেই থাকার চেষ্টা করেছিলাম।

IMG_20221115_091457_642.jpg

IMG_20221115_091500_252.jpg

IMG_20221115_091503_964.jpg

IMG_20221115_091509_056.jpg

IMG_20221115_090949825_BURST0002.jpg

IMG_20221115_091511_377.jpg
Photography device: Infinix hot 11s
চুয়াডাঙ্গা রেল স্টেশন



received_305654148004402.webp


৩ নং ফটোগ্রাফি

ট্রেন আসার পরে আমরা আমাদের নির্দিষ্ট বগিতে উঠে বসলাম এবং নিজের সিট বুঝে নিলাম। আমাদের মোট বাইশটা সিট ছিল। তবে দুইটা সিট অন্য মানুষেরা এসে বসেছিল যাদের টিকিট ছিল না। বারবার করে বলা হচ্ছিল যাদের সিট নেই তারা আমাদের সিট ছেড়ে দিন, ওরা বলছিল এ সিট আমাদের। তবে তারা কোন প্রকার টিকিট দেখাতে পারছিল না। ট্রেন যখন রানিং হলো অনেকক্ষণ পর তারা ভুল স্বীকার করে চলে গেল। এরপর আমরা আমাদের মত নির্দিষ্ট সিটে বসে যশোরে উদ্দেশ্যে পাড়ি জমালাম। আর এভাবেই দীর্ঘক্ষণ পরে আমরা যশোরের নিকটবর্তী হলাম। তবে ট্রেনের মধ্যে তেমন কোন ঝামেলার সম্মুখীন আমাদের হতে হয়নি। ট্রেনে চললে আমার সবচেয়ে সমস্যা বোধ করতে হয় হিজড়ার দলের জন্য। তারা এসে সত্যি খুব বিরক্ত করে। আমি এমন একটি বিরক্ত সম্মুখিন হয়েছিলাম রাজশাহীতে যাওয়ার পথে। এক হিজড়া তো মনে হয় কলে চড়ে বসবে এমন অবস্থা করে ফেলছিল। সামান্য ১০০ টাকার লোভের। যাইহোক সে কথা বাদ রাখলাম,তবে যে ভয়ে ভয়ে ছিলাম তাই ট্রেন জার্নিটা একটু ভীতু মনের মধ্যে পার হয়েছিল। যাইহোক যশোরে এসে যখন পৌঁছে গেলাম তখন আবারো ফ্লাইওভার পার হতে হয়েছিল। তবে এই ফ্লাইওভার আমার সুপরিচিত। কারণ যশোর চাচড়া বাজারে পাঙ্গাস মাছের পোনা নিতে আসতে হয়। বিভিন্ন মানুষের ভিড়ের মধ্যে যেন নিজেকে হারিয়ে ফেলতে লাগলাম। রাজু ভাই আমাদের নির্দেশ করে বলে দিল ফ্লাইওভার পার করে পূর্ব সাইডে চলে যাও সবাই।

IMG_20221115_093825_687.jpg

IMG_20221115_104203_499.jpg

IMG_20221115_105344_658.jpg

IMG_20221115_105431_791.jpg
Photography device: Infinix hot 11s
চুয়াডাঙ্গা রেল স্টেশন



received_305654148004402.webp


৪ নং ফটোগ্রাফি

যেহেতু সাতক্ষীরায় পরীক্ষা দিতে যাচ্ছি তাই আমার কাছে বড় একটা ব্যাগ ছিল। যার মধ্যে আমার বই জামাকাপড় ছিল। পুরা ব্যক্তি বহন করার জন্য আমি আমার বন্ধু মিলনের হাতে তুলে দিলাম। পরিচিত স্থান পায় আমি চেষ্টা করলাম সেখানে ফটোগ্রাফি করার জন্য। অনেক লোকের ভিড়ে আমাদের সঙ্গীরা সব এলোমেলো হয়ে গেল এক একদিকে। অবশ্য আমার দুই বন্ধুর পরিচিত ছিল না যশোর রেল স্টেশন। আমি তাদের বললাম নির্দিষ্ট একটি স্থানে দাঁড়ানোর জন্য। আমি তাদের দেখিয়ে দিলাম রেলস্টেশনের ওই পাশে 'হোটেল শাহনাজ' রয়েছে। তবে ওদিকে না যেয়ে তার পূর্বে তিন রাস্তার মোড়ে দাঁড়াতে বললাম। আর এভাবেই আমাদের ট্রেন জার্নির সমাপ্ত হলো ওই দিনের। এবার আমরা মাইক্রো সন্ধান করলাম যশোর থেকে সরাসরি সাতক্ষীরায় চলে যাওয়ার জন্য। বিস্তারিত সামনের পর্বে পেয়ে যাবেন, আশা করি ততক্ষন সাথে থাকবেন।

IMG_20221115_105716293_BURST0002.jpg

IMG_20221115_105703113_BURST0004.jpg

IMG_20221115_105654_641.jpg

IMG_20221115_110157_910.jpg

IMG_20221115_110225509_BURST0001_COVER.jpg

IMG_20221115_110229877_BURST0004.jpg
Photography device: Infinix hot 11s
যশোর রেল স্টেশন



received_305654148004402.webp

R6TbvATub8MquGoqJZ4SE2UCpaUQzmNnWQxvJGwvYApXWE4KsVzC8vNNXWgtz7hrfoYPSrjupZgj7VtKhrH935ua1PLs4Vr7KiYnVAy3oD...tCNiac63XNuwJJZPbTjHfGPYJH4BJoHgX8HdohSPrSasKvArV8wiiFV7ntYqz66tLZiqG67BKrPAveZFRs3vaqucpJgsaE3qA6Rwasb2fYDx3U5dXGLwwRdyH8.png


আশা করি,আমার এই পোস্টটি পড়ে আপনি অনেক বিষয় সম্পর্কে জানতে বুঝতে ও শিখতে পেরেছেন, সেই সাথে নতুন জ্ঞান অর্জন করতে পেরেছেন। পোস্টটি উপস্থাপনা কেমন ছিল এবং এ বিষয়ে আপনার অনুভূতি কেমন, অবশ্যই কমেন্ট বক্সে আমাকে জানাতে ভুলবেন না। আপনার জন্য আমার পক্ষ থেকে শুভকামনা রইলো।

💌আমার পরিচয়💌


আমি মোঃ নাজিদুল ইসলাম (সুমন)। বাংলা মাস্টার্স ফার্স্ট ক্লাস মেহেরপুর গভমেন্ট কলেজ। আমার বাসা গাংনী-মেহেরপুর। মড়কা বাজার, গাংনী,মেহেরপুর এ গ্রীনরেইন ল্যাবরেটরি স্কুল নামক প্রি-ক্যাডেট স্কুলের সহকারি শিক্ষক । ইলেকট্রনিক্সের যন্ত্রপাতি মেরামত ও সৌর প্যানেল নিয়ে রিসার্চ করতে পছন্দ করি। প্রাকৃতিক দৃশ্য ফটোগ্রাফি করা আমার সবচেয়ে বড় ভালোলাগা। দীর্ঘদিনের আমি পাঙ্গাস মাছ চাষী এবং বিরহের কবিতা লেখতে খুবই ভালোবাসি।




পোস্টটি পড়ার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ।

received_434859771523295.gif

image.png

image.png

আমার পরিচিতিকিছু বিশেষ তথ্য
আমার নাম@sumon09🇧🇩🇧🇩
ফটোগ্রাফি ডিভাইসমোবাইল
ব্লগিং মোবাইলInfinix hot 11s
ক্যামেরাcamera-50mp
আমার বাসামেহেরপুর
আমার বয়স২৬ বছর
আমার ইচ্ছেলাইফটাইম স্টিমিট এর 'আমার বাংলা ব্লগ' এ ব্লগিং করা

zr7XQBzuvvkjgjjPxunUtP5k84gxgWc4mR8PqdBj5rx8AtXSSugGPwSy7JKyM3rgX4k3arRVPC2wT66DqiAYg2UuYrHpE94NCJsYEnjKP7Erbg.png


পুনরায় কথা হবে পরবর্তী কোন পোস্টে, ততক্ষণ ভালো থাকা হয় যেনো। আল্লাহ হাফেজ।

TZjG7hXReeVoAvXt2X6pMxYAb3q65xMju8wryWxKrsghkLbdtHEKTgRBCYd7pi9pJd6nDf4ZPaJpEx3WAqvFVny2ozAtrhFXaDMnAMUAqtLhNESRQveVFZ7XHcED6WEQD48QkCkVTAvNg6.png

Authors get paid when people like you upvote their post.
If you enjoyed what you read here, create your account today and start earning FREE STEEM!
Sort Order:  

অনেক সময় নির্দিষ্ট টাইমে ট্রেন আসে না। আর সেই সময় অনেকটা অপেক্ষা করতে হয়। আবার যখন ট্রেন চলে আসে তখন অনেক লোকের সমাগম দেখতে পাওয়া যায়। আর অনেক লোক আছে যারা টিকিট ছাড়াই ট্রেনে ভ্রমণ করে। আর বলে এটা তাদের সিট। যাইহোক আপনার ভ্রমণের পোস্ট পড়ে ভালো লাগলো।

এবার আপনাদের মাঝে মাইক্রো জার্নি তুলে ধরব

পরীক্ষা দিতে যাওয়ার সময় অনেকগুলো ফটোগ্রাফি করেছেন দেখছি। প্রত্যেকটা ফটোগ্রাফি সুন্দর হয়েছ। আর আপনার পরীক্ষা ভালো হোক এই কামনাই কর। ধন্যবাদ আপনার জার্নি করার অনুভূতি আমাদের সাথে শেয়ার করার জন্য।

আশা করি পরবর্তী পোস্ট পড়বেন

ট্রেন নির্দিষ্ট সময়ে খুব একটা আসে না এটাই স্বাভাবিক। অন্য দেশে কেমন হয় তা জানি না কিন্তু আমাদের দেশে এটা স্বাভাবিক হয়ে গিয়েছে। যাই হোক না কেন ট্রেন ভ্রমণ করতে আমার দারুন লাগে। এজন্য আপনার ভ্রমণ কাহিনীটা পড়ে খুবই ভালো লাগলো।

এটা বাংলাদেশ তাই স্বাভাবিক

প্রথমেই আপনার তিন বন্ধুর জন্য অসংখ্য শুভ কামনা রইলো। আসলে বাংলাদেশের যোগাযোগ ব্যবস্থা অনেকটাই দুর্বল। তাই তো নির্দিষ্ট সময়ে ট্রেন আসে না,, বাস পাওয়া যায়না তারপরও সঠিক ভাবে আপনি আপনার গন্তব্যে পৌঁছাতে পেরেছেন জেনে খুশি হলাম।

সবকিছু আপনাদের দোয়া। তাই সঠিক সময় গন্তব্য পছন্দ হয়েছে

ট্রেন জার্নি আমার কাছে খুব উপভোগ্য লাগে। যদিও লং জার্নিতে কোথাও যাওয়ার হয়নি।আর ভাই আমাদের এখানে টাইমে কোন ঠিক নেই।তাই যাত্রীদের প্রায়ই ভোগান্তি পড়তে হয়।যাইহোক, আপনি ট্রেনে পরীক্ষার জন্য সাতক্ষীরার পথে নিশ্চয়ই অনেক উপভোগ করেছেন। যা আপনার ফটোগ্রাফি দেখেই বোঝা যাচ্ছে। পরবর্তী পর্বের অপেক্ষায় রহিলাম। ভালো থাকবেন।

জীবন বন্ধু সকল একসাথে থাকলে যা হয় আর কি

আপনাদের তিন বন্ধুর ট্রেন যাত্রার গল্প শুনে বেশ ভালো লাগলো ভাই। ট্রেনে উঠলে যে বিষয়টা আপনার বিরক্তি লাগে বললেন, সে বিষয়টা মাঝে মাঝে সবার সাথেই ঘটে ট্রেনে উঠলে। তবে ভাই হিজরাও মানুষ । প্রত্যেকেই সম্মান করা উচিত। যদিও অনেকে আছে যারা একটু অতিরিক্ত করে, তাদের জন্য বলার কিছুই নেই। তারাও তাদের সিচুয়েশনের শিকার।

একদম ঠিক কথা বলেছেন ভাই

আপনারা তিন বন্ধু মিলে ট্রেনে করে পরীক্ষা দেওয়ার জন্য গেলেন। আসলে অনেক সময় নির্দিষ্ট টাইমে ট্রেনগুলো আসে না এই কারণে অনেক বিরক্ত লাগে। আর স্টেশনে অনেক সময় হিজলা গুলো অনেক বিরক্ত করে। তবে আপনাদের ফটোগ্রাফি দেখে বোঝা যাচ্ছে কষ্ট হলেও খুব সুন্দর সময় উপভোগ করলেন। পরের পর্ব খুব তাড়াতাড়ি আমাদের মাঝে শেয়ার করবেন। আশা করি ভালোই পরীক্ষা দিবেন।

বন্ধুর জন্য দোয়া করবেন