একটি ছাগল ছানার গল্প || প্রথম পর্ব

in hive-129948 •  5 months ago 


আসসালামু আলাইকুম


IMG_20240307_081644_5.jpg

হাই বন্ধুরা!

আমার গল্পের রাজ্যে আপনাদের সকলকে জানাই স্বাগতম। পূর্বসপ্তার ন্যায় আজকে উপস্থিত হয়ে গেলাম সুন্দর একটি গল্প নিয়ে। যে গল্পের মাধ্যমে আপনারা জানতে পারবেন আমার জীবনে কোন একটা লুকিয়ে থাকা ঘটনা। একজনের জানা ঘটনা অন্য জনের মাঝে ব্যক্ত করার মধ্য দিয়ে প্রকাশিত হয় অজানা তথ্য। ঠিক তেমনি সুন্দর একটি গল্প নিয়ে উপস্থিত হয়েছি আজ। আশা করি স্মৃতিচারণ মূলক এই গল্প আপনাদের অনেক অনেক ভালো লাগবে। তাই চলুন আর দেরি না করে গল্পটা পড়ি এবং গল্প পড়ার আনন্দ উপভোগ করি।


একটি ছাগলছানার গল্প:



তখন আমি ইন্টারে পড়ি, তখন ২০১৩ সাল। আমাদের বাড়িতে একটি ছাগল ছিল। ছাগলের ধাড়িটা আমার টাকা দিয়ে কিনেছিলাম। আমি একটি জরিপের কাজ পেয়েছিলাম আট দিনের জন্য তিন গ্রামের। সেখানে ৪৩০০ টাকা দেওয়া হয়েছিল আমাকে। তার মধ্য থেকে তিন হাজার টাকা দিয়ে একটি ছাগল কিনেছিলাম। ছাগলের দুইটা বাচ্চা হয়েছিল। দুইটাই খাসী ছাগলের বাচ্চা। ছাগলের বাচ্চা দুটো দেখতে বেশ মানান হয়েছিল। খুব যত্ন সহকারে তাদের দেখাশোনা করতাম আমি। আর এভাবে দেখাশোনা করতে করতে তিন মাস পেরিয়ে গেল। ছাগলের বাচ্চা দুইটা ধাড়ির সাথে চরাই করতে গেছিল আমাদের পুকুরের অপজিট পাশে। যেখানে আমাদের একটি তালগাছ রয়েছে। আর তাল গাছের ওখানে ছিল খর-বাবলা গাছ। ছাগলের বাচ্চাগুলো ধাড়ির সাথে চরাই করতে গিয়ে একটু বেকায়দায় পড়েছিল। কোন কারণে ভয় পেয়ে দৌড়ে বাড়ি আসতে গিয়ে ছাগল ছাড়া দুইটার ভিতরে যেটা ছোট ছিল, তার চোখে খর-বাবলার কাটা হেনে যায়। এরপর সেই ছাগলছানাটা দিন দিন একটা চোখ হারাতে থাকে। যতদিন যেতে থাকল তত তার সেই কাঁটা হেনা চোখটা সাদা হয়ে গেল।


IMG_20240307_081645_6.jpg



আমার খুব ইচ্ছে ছিল ছাগল ছানা দুইটা বড় হবে, একসাথে বড় করে বিক্রয় করব। অনেক টাকা হবে আমার। আরো ইচ্ছে ছিল সেই সময় নতুন বা প্রথম অ্যান্ড্রয়েড মোবাইলের প্রচলন হলো গ্রামে। আমার মাথার মধ্যে একটাই চিন্তা ছিল অ্যান্ড্রয়েড মোবাইল কিনব। তাই আশা করতাম ছাগলছানা বড় হবে এক বছর দেড় বছর পার হবে, তখন ছাগল বিক্রয় করে এন্ড্রয়েড মোবাইল হবে। পাশাপাশি আরো টাকা আমার থাকবে। কিন্তু সেই চিন্তা নষ্ট হয়ে গেল ছাগলের বাচ্চার চোখে কাটা হিনে। তার এমন কষ্ট দেখতে কারোর ভালো লাগত না। এদিকে আব্বার অভাবের সংসার। তাই চোখে কাটা হেনা ছাগলের বাচ্চাটা বিক্রয় করে দেয়া হলো আমাদের এক ফুবুর ননদের কাছে। তার বাড়ি আমাদের গ্রামের ভিটাপাড়ায়।


IMG_20240307_080054_740.jpg



এরপর আমার সেই ছাগলের ধাড়িটা আর বড় বাচ্চাটা আমি খুব যত্ন সহকারে দেখাশোনা করতাম। যেন কোন প্রকার দুর্ঘটনা আর না হয়। বেশিরভাগ সময় ছাগলের বাচ্চাটা আমি রাস্তায় রাস্তায় পাতা খাওয়ায়ে নিয়ে বেড়াতাম। এক কথায় বলতে গেলে চোখে চোখে রাখতাম। ঠিক এভাবে যেন আরো তিন থেকে চার মাস কেটে গেল। তাহলে বুঝতে পারছেন ছাগলছানার বয়স ৬ থেকে ৭ মাস হয়ে গেছে। একদিন বিকেলে আমি রাস্তার উপরে কলার পাতা এবং কাঁঠালের পাতা ছিড়ে ছিড়ে আমার সেই খাসি ছাগলটাকে খাওয়াছিলাম। এমন মুহূর্তে ঠিক তার সমবয়সী একটি ছাগল কখন হুট করে আমার পাশে এসে উপস্থিত। বারবার আমার হাতের পাতা খেয়ে নিতে যাচ্ছে। আমি ছোট থেকে একটা শিক্ষা বেশি লালন করে আসি মনের মধ্যে, তা হচ্ছে "কোন কিছুর উপর নির্দয় হয় না"। কারণ আমার রক্ত মাংস দয়ার শরীল। আমি বারবার ওই ছাগলটিকে তাড়িয়ে দিচ্ছিলাম। কিন্তু কোন আঘাত না করে। বারবার লক্ষ্য করছি ও আমার ছাগলের খাবার কেড়ে খেয়ে নিতে যাচ্ছে অথবা আমার হাত থেকে খেতে যাচ্ছে। বিস্তারিত দ্বিতীয় পর্বে


IMG_20240307_080058_954.jpg


প্রথম পর্ব পড়ার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ।

received_434859771523295.gif

গুরুত্বপূর্ণ তথ্য
ফটোগ্রাফিছাগল
ফটোগ্রাফি ডিভাইসInfinix Hot 11s
লোকেশনজুগীরগোফা
বিষয়ছাগল নিয়ে অতীত ঘটনা
ঠিকানাগাংনী-মেহেরপুর, বাংলাদেশ


পুনরায় ফিরে আসবো দ্বিতীয় পর্ব নিয়ে। ততক্ষণ ভালো থাকুন সবাই, সবার জন্য শুভকামনা রইল। আল্লাহ হাফেজ।

TZjG7hXReeVoAvXt2X6pMxYAb3q65xMju8wryWxKrsghkLbdtHEKTgRBCYd7pi9pJd6nDf4ZPaJpEx3WAqvFVny2ozAtrhFXaDMnAMUAqtLhNESRQveVFZ7XHcED6WEQD48QkCkVTAvNg6.png

Authors get paid when people like you upvote their post.
If you enjoyed what you read here, create your account today and start earning FREE STEEM!
Sort Order:  

Upvoted! Thank you for supporting witness @jswit.

আসলে পশুপাখি লালন পালন করা গ্রামে যারা বেড়ে উঠেছে তাদের অনেক স্মৃতি রয়েছে। ছোট্ট ছাগলের বাচ্চা বিশেষ করে খাসি ছাগল যেগুলো আমার খুবই প্রিয় ছিল। তাদের খুব আমি আদর যত্ন করতাম যাদের ছাগলই হোক না কেন। আমার কাছে অনেক ভালো লাগতো। আপনার এই গল্পটি পড়ে খুবই ভালো লাগলো। সেই সময় অ্যান্ড্রয়েড ফোন কেনার জন্য ভালই কষ্ট করেছিলেন । আমাদের সাথে গল্পটি শেয়ার করার জন্য ধন্যবাদ।

আপনি একদম ঠিক বলেছেন।

আপনার ছাগলের ছানাগুলোর গল্পটি জানতে পেরে ভালো লাগবে। তবে জেনে খারাপ লাগলো একটি ছাগলের চোখে কাঁটা ফুটে যাওয়ার কারণে সেই ছাগলটা চোখ হারিয়েছিল এবং পরবর্তীতে সেটা বিক্রি করে দিতে হয়েছিল। যাই হোক আরেকটা ছাগলছানার কি অবস্থা হয়েছিল সেটা নিশ্চয়ই পরবর্তী পোস্টে জানতে পারবে। ধন্যবাদ ভাই এই পোস্টটি আমাদের মাঝে শেয়ার করার জন্য।

ভালো লেগেছে জেনে খুশি হলাম।

জরিপের টাকায় ছাগল কিনে আশায় ছিলেন ফোন কিনবেন। দুটো সুন্দর বাচ্চা ও হয়েছিলো কিন্তুু বাবলা গাছের কাঁটায় চোখ নষ্ট হয়ে যাওয়াতে এবং সংসারের টানাপোড়েনের কারণে বিক্রি করতে হলো জেনে খারাপ লাগলো ভাইয়া।আসলে অনেক সখ আমাদের এভাবে নষ্ট হয়ে যায়।পরবর্তীতে চোখে চোখে রাখতেনও নিজ হাতে রাস্তায় কলা পাতা ও কাঁঠাল পাতা খাওয়াতেন । পাতা খাওয়ানোর সময় অন্য ছাগল পাতা খেতো এবং আপনি না মেরে এমনিতেই তারিয়ে দিতেন। পরবর্তী পর্বের অপেক্ষায় রইলাম ভাইয়া গল্পটি বেশ ভালো লাগলো।এরকম গল্প হলে পড়তে খুব ভালো লাগে।ধন্যবাদ সুন্দর পোস্ট টি ভাগ করে নেয়ার জন্য।

হ্যাঁ আপু সম্পূর্ণ পড়েছেন দেখে ভালো লাগলো।

ছাগলছানা দুটিকে নিয়ে কত স্বপ্ন দেখে ফেলেছিলেন ভাইয়া। কিন্তু একটি ছাগলের চোখে কাটা বিধার কারণে আপনার স্বপ্ন ভেঙে গেল। বাকি ছাগলছানাটিকে তো খুব যত্ন করেই বড় করছেন। আশাকরি এটি ভালোভাবে বেড়ে উঠতে পারবে। কিন্তু যেখানে এসে গল্প শেষ করলেন মনে হচ্ছে এর পেছনে কোন একটি কাহিনী আছে। যাই হোক পরবর্তী পর্বের অপেক্ষায় রইলাম। ভালো লাগলো গল্পটি পড়ে।

হ্যাঁ আপু। শেষ পর্ব শেয়ার করেছি

আসলে ভাইয়া নিজের টাকায় কিছু কেনার আনন্দই আলাদা। আপনি নিজের টাকা দিয়ে ছাগল কিনেছেন দেখে নিজেই পালন করতেন।আসলে বিপদ কিভাবে আসে বুঝা মুশকিল। আপনি চোখ নষ্ট হয়ে যাওয়ায় ছাগটি বিক্রি করেছেন।আসলে ভাইয়া অন্য ছাগল গুলো তারিয়ে দেওয়া উচিত। সত্যি বলতে বোবা জিনিস এদের মারা ঠিক না।দেখা যাক পরবর্তী পর্ব কি হয়?

হ্যাঁ আমি আঘাত করি না

আসলে পশুপাখি পালন করতে আমার কাছে ও ভীষণ ভালো লাগে। তাছাড়া আপনি দুইটি ছাগল ছানা পালন করেছিলেন। তার মধ্যে একটি ছাগলের চোখে কাটা ফুটে যাওয়ার জন্য বিক্রি করে দিতে হয়েছে জেনে খুবই খারাপ লাগলো। তাছাড়া ছোট বেলায় আমিও এমন ছাগল পালন করতাম এবং কাঁঠালের পাতা পেড়ে খাওয়াতাম। আপনার পরবর্তী পর্বের অপেক্ষায় রইলাম। ধন্যবাদ পোস্টটি আমাদের মাঝে শেয়ার করার জন্য।

পরবর্তী পর্ব শেয়ার করেছি ভাইয়া।