আসসালামু আলাইকুম
হাই বন্ধুরা,
আপনারা সবাই কেমন আছেন? আশা করি সকলেই অনেক অনেক ভাল আছেন। আমি @sumon09 আপনাদের দোয়ায় অনেক ভালো রয়েছি। আমার পক্ষ থেকে 'আমার বাংলা ব্লগ' এর সকল সদস্যগণকে জানাই আন্তরিক শুভেচ্ছা।
আজ আমি আপনাদেরকে অর্জুন গাছের বর্ণনা ও ফটোগ্রাফি করে দেখাতে চাই। চলুন তাহলে এখন শুরু করা যাক। |
---|
অর্জুন গাছ,নামটি বেশ পরিচিত। আমরা ছোট থেকেই এই গাছ সম্পর্কে কমবেশি জেনে আসতেছি। এই গাছের গুনাবলী অনেক। এই গাছের বাকল দিয়ে বিভিন্ন প্রকার রোগ নিরাময় করা যায়। হেকিমি কবিরাজি সহ নানা শ্রেণীর মানুষ এই গাছের বাকল দিয়ে অনেক প্রকার রোগ দূর করে থাকে। প্রতিনিয়ত অনেক ব্যক্তির বিভিন্ন প্রকার প্রকাশ্য বা গোপনীয় সমস্যা দূর হচ্ছে এই গাছের বাকলের দ্বারা। উপকৃত হচ্ছে জনগণ।
যে জন্য আমি আজকে এই গাছের ফটোগ্রাফি করেছি তার মূল উদ্দেশ্য জনগণ উপকৃত হচ্ছে এই গাছ দ্বারা কিন্তু জনগণ তার বিনিময় কি দিচ্ছে এই গাছের। আমি এই লোকেশনে যত গাছ ফলো করলাম,প্রত্যেকটি অর্জুন গাছের বাকল তুলা নিচ থেকে উপর পর্যন্ত।
পৃথিবীতে জন্মগ্রহণ করে প্রত্যেকটি জীব জন্তু জানোয়ার বা গাছপালার অধিকার রয়েছে নিজের স্বাধীন ভাবে টিকে থাকার। এর মধ্যে অনেক প্রকার বাধা-বিঘ্ন ঝড়-ঝাপটা অথবা অত্যাচারীর অত্যাচার সহ্য করে টিকে থাকতে হয়। জীবন সর্বদা সংগ্রামী। সংগ্রামী জীবন কাটিয়ে অনেকেই চায় স্বাধীন জীবন যাপন করতে,বেচে থাকতে।
আলোকচিত্র তোলার তারিখ : ২০ই ডিসেম্বর ২০২১
স্থান : করমদি, গাংনী-মেহেরপুর।
Camera: itel vision 1 -8mp
তবে সকল প্রকার সংগ্রামী মুখর জীবন কাহিনী কে দূরে রেখে সামনে নিয়ে এলাম অর্জুন গাছের জীবন কাহিনী। এ কেমন বেঁচে থাকা? এ কেমন জীবন? আমরা চিরজীবন শুনে আসছি পরের উপকার করলে, নিজের ক্ষতি। হয়তো এই কথাটি কখনোই কর্ণপাত করতাম না বিশ্বাস করতাম না মন থেকে। কিন্তু আজ এই অর্জুন গাছের নিচে দাঁড়িয়ে অর্জুন গাছের পানের চেয়ে দেখে, যে ভাবনা ভাবতে ভাবতে মনে হলো সত্যিই বাস্তবতা বড়ই কঠিন।
যে অন্যের জন্য নিজের জীবন বিলিয়ে দেয় তার জন্য কেউ কখনো ভাবনা করে না। করে না দুঃখ প্রকাশ। করে না সহানুভূতি প্রকাশ। করে না কোনো উপকার। সত্যি স্বার্থপর এই দুনিয়া। স্বার্থপর এই দুনিয়ার উপকারভোগীরা লোকেরা। শুধু নিজের স্বার্থ উদ্ধার করতে পারলে ভুলে যাই উপকারি ব্যাক্তির উপকারের কথা।
আলোকচিত্র তোলার তারিখ : ২০ই ডিসেম্বর ২০২১
স্থান : করমদি, গাংনী-মেহেরপুর।
Camera: itel vision 1 -8mp
- স্মৃতিতে ঘনিয়ে আসে অনেক প্রকার ঘটনা তবে সেদিকে লক্ষ্য না দিলেই ভালো হতো। মনটা হয়ে উঠছে আবেগি, বিবেক কেন্দ্র করেই বলতে চাই সবার মাঝে বাস্তবতাকে নিয়ে। আবেগকে দূরে ঠেলে দিতে হবে, আবেগ দ্বারা কোনো কাজের সমাধান নেই, নেই কোনো উপকার। দুনিয়াকে যারা প্রতিষ্ঠা করেছিল যুগ যুগ ধরে, অনেকে জ্ঞান অর্জন করে সেই জ্ঞান অন্যের মাঝে বিলিয়ে স্বার্থক হয়েছে।
আলোকচিত্র তোলার তারিখ : ২০ই ডিসেম্বর ২০২১
স্থান : করমদি, গাংনী-মেহেরপুর।
Camera: itel vision 1 -8mp
- আপনারা অর্জুন গাছের পানে চেয়ে ভালোভাবে লক্ষ্য করে দেখতে পারেন অর্জুন গাছের নিচের অংশ থেকে যেকোনো পাশে। সর্বস্থানে ছাল তুলে নিয়ে গেছে আপনার আমার মত মানুষ কিন্তু কোনো উপকারে আসেনি অর্জুন গাছের জন্য। বিবেক দিয়ে কখনো ভাবে নাই। একজনের গায়ের চামড়া তুলে নিয়ে যাচ্ছি। না জানি কত কষ্ট আঘাত লাগবে তার। সে আঘাত প্রতিটি ক্ষণে ক্ষণে হয়তোবা আমার দ্বারা নয়তো বা অন্য কারোর দ্বারা হচ্ছে।
আলোকচিত্র তোলার তারিখ : ২০ই ডিসেম্বর ২০২১
স্থান : করমদি, গাংনী-মেহেরপুর।
Camera: itel vision 1 -8mp
- এভাবে প্রতিনিয়ত আঘাতের পর আঘাত চলতে আছে তার গায়ে। অনেক মানুষের প্রতিনিয়ত আঘাত করে তুলে নিয়ে যাচ্ছে বাকল। নিয়ে যাচ্ছে তাদের উপকারের জন্য, করছে অপকার। একটি দণ্ডায়মান গাছের সাথে যে কিনা কখনো কারো আঘাত করতে জানেনা। কাউকে আঘাত করতে শেখে নাই, শুধু উপকার করতে, বিধাতার নিয়ম মেনে মুখ বুজে নিশ্চুপ দাঁড়িয়ে রয়েছে।
আলোকচিত্র তোলার তারিখ : ২০ই ডিসেম্বর ২০২১
স্থান : করমদি, গাংনী-মেহেরপুর।
Camera: itel vision 1 -8mp
- আপনার আমার মাঝে যুগ যুগ ধরে অনেকেই এভাবে নিজের জীবনকে বিলিয়ে দিয়েছে পর উপকারের জন্য। হয়তো ভেবে বা কল্পনা করতেই পারব না। এমন কাজ দুনিয়ার বুকে কতজন মেনে নিয়েছে। এখনো বা কত রয়েছে এমন অর্জুনগাছ। বোবার মতো দাঁড়িয়ে নিজের শরীরের চামড়া গুলো বিলিয়ে দিয়ে যাচ্ছে জনগণের স্বার্থে । জনগণের উপকারের জন্য। কিন্তু মানব জাতি কখনো সেই অর্জুন গাছ কে নিয়ে কি কখন একটু ভেবেছে? কখনো কেউ অর্জুন গাছের নিচে দেখেছে তার মনের দুঃখ? ভেবেছে কি নিজের শরীর থেকে এভাবে চামড়া তুলে কতটা আঘাত পায়? নিষ্ঠুর দুনিয়া' ভাবার তো সময় নাই । আমার প্রয়োজন অর্জুন গাছের ছাল,তাই বাড়ি থেকে ছুরি এনে বসিয়ে দিলাম ওর গায়ে। বুকে ছুরি আঘাত দিয়ে তুলে নিয়ে গেলাম। এভাবে প্রতিনিয়ত হয়ে আসছে নতুন আর কি? তবে আমাদের বিবেক করা উচিত। যার মধ্যে আমার উপকার রয়েছে, তার গায়ে আঘাত করা কতটা নিষ্ঠুরতা কতটা নিম্নমানের কাজ।
আলোকচিত্র তোলার তারিখ : ২০ই ডিসেম্বর ২০২১
স্থান : করমদি, গাংনী-মেহেরপুর।
Camera: itel vision 1 -8mp
- অনেক ব্যক্তি রয়েছেন প্রতি সপ্তাহে সপ্তাহে অর্জুন গাছের ছাল উঠিয়ে যাচ্ছে। তাদের উদ্দেশ্যে বলতে চাই, অর্জুন গাছ থেকে আপনি এত উপকার পাচ্ছেন তার বিনিময়ে কি দিচ্ছেন অর্জুন গাছকে? আজকে দিতে পারেন বা নাও পারেন চাইলে তো এমন একটি অর্জুনগাছ আপনি নিজেই লাগিয়ে জাতির কল্যাণের জন্য আসতে পারেন। দেশ ও জাতির কল্যাণের জন্য হাত বাড়িয়েছেন হয়তো বা তাও করেন নাই। কখন করবেন আপনার তো সময় নাই। শুধু ইচ্ছে রয়েছে মনের মাঝে, গাছ লাগানোর জায়গা নেই, সময় নেই।ভাই এই জন্য তো বলি আমরা বাঙালি জাতি সুবিধাবাদী। ভোগ করতে শিখেছি স্বার্থপরের মত।
আলোকচিত্র তোলার তারিখ : ২০ই ডিসেম্বর ২০২১
স্থান : করমদি, গাংনী-মেহেরপুর।
Camera: itel vision 1 -8mp
- মানব জাতি বড়ই স্বার্থপর ভুলে যায় উপকারীর উপকার এর কথা। অর্জুন গাছের চারিপাশ থেকে উঠিয়ে নিয়ে যেও শান্ত হয় না, গাছে চড়ে বসে উপর থেকে ডাল থেকেই ছাল তুলে নিয়ে চলে যায়। মানুষ যদি এত কিছু করতে পারে তবে পশুপাখিরা কেন করবেনা। গ্রামগঞ্জের ছাগলেও চেষ্টা করে। দেখেনতো, আমার মেসেজটির জন্য যদি কোন মহান ব্যক্তি একটু ভেবে পশু পাখির হাত থেকে রক্ষা করার উদ্দেশ্যে গাছ রাখার চেষ্টা করে তাও জানতাম যে, হ্যাঁ অর্জুন গাছের উপকার করার জন্য দুনিয়াতে মানুষ রয়েছে। অর্জুন গাছের উপকারিতা সম্পর্কে বলে শেষ করবার নয়। অর্জুন গাছের প্রাণ আছে কিন্তু আপনার আমার মত কোনো রাগ নেই। তেমন লক্ষ্য করা যায় না বুক ভরা অভিমান। নেই কোন গাছের সেবা নিরাপত্তা। তুলে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে গাছের গা থেকে বাকল। কেউ বা কখন গাছ কেটে নষ্ট করে দিতে পারে অর্জুন গাছে। এর মধ্য দিয়ে মানব জাতির মাঝে ম্যাসেজ দিতে চাই আমার অনেক উপকার ভোগ করে চলেছি প্রতিনিয়ত,তার বিনিময়ে হলেও উপকারী ব্যক্তিদেরকে নিয়ে একটু ভাবি। তাদের পাশে দাঁড়াই। তাদের উপকার ভোগ করার জন্য কি জবাব দেব সৃষ্টিকর্তার নিকট? আপনার জগতের সৃষ্টি সব কিছুর মধ্য থেকে উপকার পাওয়ার প্রত্যাশা নিয়ে দিন কাটিয়েছি। কিন্তু কখনোই উপকার করতে যায় নাই। তখন থাকবে কোথায় আমাদের এই মুখ? আর বেশি কথা বাড়াবো না, এই মুহূর্তে সবার জন্যই বলতে চায়, শুধু লোকের উপকার পাওয়ার প্রত্যাশা নয়,লোকের জন্য কিছু করতে হবে আমাদের। উপকারিদের জন্য আমাদের হাত বাড়িয়ে দিতে হবে উপকার করার জন্য।
আলোকচিত্র তোলার তারিখ : ২০ই ডিসেম্বর ২০২১
স্থান : করমদি, গাংনী-মেহেরপুর।
Camera: itel vision 1 -8mp
- যেখানে একটি অর্জুন গাছ হাজার জনকে উপকার করে চলেছে সেখানে দশটি অর্জুন গাছ রোপন করে অর্জুন গাছের সংখ্যা বৃদ্ধি করতে হবে আমাদের। আমাদের প্রকৃতির ব্যালেন্স/ভারসাম্য বজায় রাখতে হবে । একটি অর্জুনগাছ কতজনকে সেবা দিতে পারে সেখানে হয়তো দশটি অর্জুন গাছ থাকলে একটি অর্জুন গাছের এতো কষ্ট সইতে হবে না। দশটি অর্জুন গাছ থেকে মানুষের কাজ হয়ে গেলে একটি গাছের প্রতি চাপ সৃষ্টি হবে না। দশের লাঠি একের বোঝা। এক জনের আশা করলে হয়তো সেই একজনের জীবনটা বরবাদ হয়ে যেতে পারে। তাই আমার লাস্ট মেসেজ এটাই যে, আসুন অর্জুন গাছ থেকে আমরা যেভাবে সুবিধা গ্রহণ করে চলেছি তার বিনিময়ে হলেও প্রতিবছর না পারি পাঁচ বছরে অত্যন্ত একটি অর্জুন গাছ লাগাই। দুনিয়ার মাঝে বেঁচে থাকার সুযোগ করে দেয় ক্ষতবিক্ষত গাছগুলোকে। আল্লাহ হাফেজ। ভালো থাকা হয় যেন।
আলোকচিত্র তোলার তারিখ : ২০ই ডিসেম্বর ২০২১
স্থান : করমদি, গাংনী-মেহেরপুর।
Camera: itel vision 1 -8mp
আমি মোঃ নাজিদুল ইসলাম (সুমন)@sumon09
বাংলা মাস্টার্স ফার্স্ট ক্লাস মেহেরপুর গভমেন্ট কলেজ। আমার বাসা গাংনী-মেহেরপুর। বর্তমান প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষা সমাপ্ত করে,চাকরি প্রত্যাশায় বেকার-স্টাডিতে! নিয়োজিত। ইলেকট্রনিক্সের যন্ত্রপাতি মেরামত ও প্রাকৃতিক দৃশ্য ফটোগ্রাফি করা আমার সবচেয়ে বড় ভালোলাগা। বাংলার স্টুডেন্ট হওয়াই,রূপ রস ছন্দ অলংকার সম্মিলিত কবিতা লেখা যথেষ্ট পারদর্শী।
আপনার অনুভূতিঃ |
---|
আশা করি,আমার এই পোস্টটি পড়ে আপনি অনেক বিষয় সম্পর্কে জানতে বুঝতে ও শিখতে পেরেছেন। পোস্টটি উপস্থাপনা কেমন ছিল এবং এ বিষয়ে আপনার অনুভূতি কেমন,আমাকে জানাতে ভুলবেন না। আপনার জন্য শুভকামনা রইলো।
পোস্টটি পড়ার জন্য আপনাকে জানাই ধন্যবাদ।
@sumon09🇧🇩
🌺💞💞🌺
আমার পরিচিতি | কিছু বিশেষ তথ্য |
---|---|
আমার নাম | @sumon09🇧🇩🇧🇩 |
ফটোগ্রাফি ডিভাইস | মোবাইল |
ব্লগিং মোবাইল | itel vision 1 |
ক্যামেরা | Al dual camera-8mp |
আমার বাসা | মেহেরপুর |
আমার বয়স | ২৫ বছর |
আমার ইচ্ছে | লাইফটাইম স্টিমিট এর 'আমার বাংলা ব্লগ' এ ব্লগিং করা |
বাহ ভাই অনেক সুন্দরভাবে অর্জুন গাছের বর্ণনা দিয়েছেন এবং গাছ গুলোর ফটোগ্রাফি অনেক সুন্দর ভাবে ধারন করেছেন। দেখে অনেক ভালো লাগলো আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ এরকম একটি পোস্ট আমাদের মাঝে শেয়ার করার জন্য।
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ ভাইয়া। খুব সুন্দর একটি মন্তব্য করেছেন আমার অর্জুন গাছের ফটোগ্রাফি নিয়ে।
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit