গতকাল স্বপ্নে এসেছিল সে, এসেছিল আমার মনের নায়িকা আয়েশা টাকিয়া (Sumoni F14) মনি। কেন তাকে আয়েশা টাকিয়া বললাম? ভারতের হিন্দি সিনেমার নায়িকা আয়েশা টাকিয়ার ফেস আর তার ফেসের মধ্যে কোন পার্থক্য ছিল না। যাকে মন প্রাণ দিয়ে ভালবেসেছি জীবন বন্ধনে আবদ্ধ হওয়ার পর। হৃদয় বন্ধনে আবদ্ধ হওয়ার পর বেশ মায়ার বৃষ্টিতে দেখেছি তাকে পাঁচটি বছর। কখনো খারাপ অনুভূতি মনের মধ্যে জাগ্রত হয়নি। শুধু মনের মধ্যে ছিল তার জন্য অগাধ ভালোবাসা আর মায়া, ছিল ভাই-বোনের ভালোবাসা। কারণ সে এক প্রকার অসহায় এবং ডিপ্রেশনে পতিত নারী। সত্যি তার মধ্যে ছিল এক পবিত্র মন এবং পবিত্রতা। সবচেয়ে বেশি ভালো লাগতো তার সততা আর সচেতন দৃষ্টিভঙ্গি। কারণ আমিও সেই দৃষ্টিভঙ্গিতে চলার চেষ্টা করি। বলতে পারেন আমার জীবন চলার পথে সচেতনতা সততা সাহসিকতার অন্যরকম সহযোগী ছিলেন সেই বড় বোনটা। যে আমাকে ন্যায় নীতি শিখিয়েছেন নতুন করে। একজন ছোট ভাইকে কতটা স্নেহ ভালোবাসা দিতে হয় এবং সঠিক পথে পরিচালনা করতে হয় সবটাই তার মধ্যে বিদ্যমান ছিল এবং পেয়েছিলাম। তার মধ্যে বিদ্যমান ছিল পবিত্র মন। আর এমন ডিপ্রেশনে ভোগা মানুষটা যখন ভাগ্যক্রমে আমার কাঁধে আসতে গেল তখন আমি নীরবেই তুলে নিলাম। কারণ পাঁচ বছর ধরে তাকে ভালোভাবেই জানি। আর ওই মুহূর্তে তার সময়টা ভালো যাচ্ছিল না। বিপদের বন্ধু প্রকৃত বন্ধু, আমিও সেই পরিচয় দিলাম তার।
ভাগ্যক্রমে দেড় দু'বছর পর জীবন থেকে সে হয়ে গেল বিলুপ্ত কিন্তু মন থেকে নয়। দুনিয়ার বুকে পূর্বে যেমন ছিল, ঠিক সে তেমনি আছে। আমিও আমার স্থানে আমার মত। শুধু নেই আর দুটি মনের ভালোবাসা; কাছে আসা; পথচলা, মনে মন রেখে গভীর প্রেমের অনুভূতি। অতি নিকটেই দুজনার অবস্থান। তবুও জেনো টাকার এপিঠ ওপিঠ। বাদ রাখি না হয় সে কথা, ফিরে আসি স্বপ্নের মাঝে।
মামা বাড়ির পুরাতন ঘরটা,যে রুমের খাটে নানা ঘুমাতেন। আমার 'মনি' নতুন সঙ্গীকে সাথে নিয়ে গল্প করছেন সেখানে। মানুষটার কোলে দেখলাম আমার মেয়ে সামিয়ার সমবয়সী একটি মেয়ে। স্বপ্নেই ভাবলাম মনির বিয়ে হয়ে গেছে! আবার বাচ্চা হয়েছে? এতদিনে কেউ আমাকে জানায়নি। মনি আমাকে দেখে পাশে এসে যেন একটু সাইডে দাঁড়ালো,চেষ্টা করছে কিছু একটা বলার জন্য। ইতোমধ্যে বাচ্চাটা তার সেই জীবনসঙ্গের কোলে দিয়েছে। আমি যেন তার বাচ্চাটাকে আদর করার জন্য বেশি উদ্বেগ। কিন্তু মনি আমাকে পাশের রুমের দিকে টেনে আনতে যাচ্ছে কিছু একটা বলার জন্য। আমি তার চোখে চোখ রাখলাম, দীর্ঘদিন কল্পনায় তার ফেসটা ভাসানোর চেষ্টা করেছি কিন্তু ভালোভাবে সবসময় ভাষাতে পারি না। কিন্তু স্বপ্নে তার ভরা যৌবনের সেই অঙ্গভঙ্গি চলাচল এবং মুখের চিত্র দেখতে পারলাম। যেন ভারতের হিন্দি সিনেমার নায়িকা আয়েশা টাকিয়া। সে প্রতিদিনই আমার মনে এসে কড়া নাড়ে, যখন আমার সামিয়ার মা আমাকে ভুল বুঝে দূরে থাকে, তখন যেন আরো একটু বেশি মনে পড়ে মনি'কে। এ কথা সত্য আমি পবিত্র দৃষ্টিতে তাকে অনেক ভালবেসেছি, আমার মনের ঘরে শ্রদ্ধার সর্বোচ্চ আসনে তাকে যেভাবে রেখেছিলাম ঠিক সেভাবেই স্নেহের সর্বোচ্চ আসনে ঠাই দিয়েছিলাম।
সে আমাকে সাইডে এনে বলল ও আমার হাজব্যান্ড। হৃদয়ে আঘাত লাগলো তার কথা। নিরবে শুইলাম। বলল সে একটু লেখাপড়া কম জানে। তুমি তাকে আমাদের কোন কিছু বলো না। আমি হাসিমুখের সবি মেনে নিলাম। সেই ছেলেটার কাছে উপস্থিত হলাম। মনির মেয়েটা, তার কাছ থেকে কোলে তুলে নিলাম। ছেলেটা বেশ আমার মত লম্বা কিন্তু একটু শ্যামলা। ছেলেটা হাসিমুখে তাদের মেয়েটাকে আমার কোলে তুলে দিল। মনির দুরে দাঁড়িয়ে থাকল, আরো কিছু বলবে আমায়। আমি বললাম আপনি আমাদের দুজনার পূর্ব ইতিহাস জানেন। ছেলেটা হাসিমুখে বলল জি ভাইয়া জানি আমি। আমি বললাম ভাগ্যক্রমে এখন এই বাচ্চার মামা আমি। আশা করব আপনি পিছনের কোন কথা নিয়ে আমার মনি কে কষ্ট দিবেন না। কারণ একদিন আমার বড় বোন ছিল, এরপর আমার জীবন সঙ্গী হয়েছিল। আজ সে আবার বড় বোনের স্থানে ফিরে গেছে। শুধু মাঝখানে আমাদের সুন্দর সম্পর্কটায় নষ্ট হয়েছে। কিন্তু নষ্ট হয়নি আমার মনের ভালোবাসা। ছেলেটা বলল, ভাইয়া কিছু মনে করবেন না আমিও তাকে অনেক ভালোবাসি(কথাটা শুনে আমার স্বপ্নের মাঝে আবারো আঘাত লেগে উঠলো, এরপর আঘাত কমে গেল যাক তার সাথে খারাপ আচরণ তো করে না) তাই আমি তার সাথে খারাপ ব্যবহার করিনা।
শুধু এটুকুই বললাম দোয়া করি আপনারা ভালো থাকবেন। দেখলাম নানা বাড়িতে কেন জানি আরো আত্মীয়-স্বজন এসেছে। রুমের মধ্যে প্রবেশ করছে ওই ছেলেদের পরিবারের লোকজন, অবশ্য বর্তমান সেই ঘরটা গোয়াল ঘরে পরিণত হয়েছে। যাই হোক, আমি আর এক পলক মনির পানে তাকালাম, সেও একটু দূরে দাঁড়িয়ে ছিল আমার দিকে তাকিয়ে; আমি নেমে যাওয়ার সময় আমার পানে দৃষ্টি রেখে নির্বাক তাকিয়ে। আমি আর তার পানে তাকালাম না। মনে মনে ভাবলাম আমার সামিয়ার মা আছে। আমার প্রাণপ্রিয় স্ত্রী মৌসুমী। আমি মন থেকে মৌসুমিকে অনেক ভালোবাসি। শুধু মাঝেমধ্যে তার কিছু বিষয় অপছন্দ হয়ে থাকে। তাই স্বপ্নেই যেন মনে মনে গর্ভ করলাম। আজ মনির দেওয়া ক্ষতস্থান মৌসুমী পূরণ করে রেখেছে। ছোট হয়ে বড় দায়িত্ব নিয়েছিলাম; সেটা যদি মনি বুঝতো, তাহলে আমাকে কষ্ট দিয়ে চলে যেত না। এরপর রুম থেকে নেমেই উঠানে যে সমস্ত মানুষগুলো ছিল, তাদেরকে বিদায় জানিয়ে মৌসুমিকে ভাবতে ভাবতে নানা বাড়ি বিদায় হয়ে চলে আসলাম। আর ভাবতে থাকলাম আমি মৌসুমিকে জান প্রাণ দিয়ে ভালোবাসবো। সারা জীবন ভালোবাসবো। কখনো অবহেলায় তাকে রাখবো না, রাগারাগি হলেও দ্রুত মিট করে নেব। আর এভাবেই ভাবতে ভাবতে যেন ঘুম ভেঙে গেল।
যখন ঘুম ভাঙলো তখন আমার বউ সিমরান জারা মৌসুমীকে খুব মিছ হচ্ছিল, মৌসুমী যদি আমার পাশে থাকতো তাহলে অনেক শান্তি পেতাম। তবে কতটা শান্তি তা বলতে পারব না, হয়তো তা সীমাহীন। কিন্তু সে অসুস্থতার জন্য মায়ের বাসায় গেছে। স্বপ্নটাকে নিয়ে ভাবলাম, বেশি একাকীত্ব বোধ করছিলাম। অনেকদিন পর মনিকে স্বপ্নে দেখলাম। স্বপ্নটা দেখার আগে রাতে আয়েশা টাকিয়ার দুইটা ভিডিও দেখেছিলাম ল্যাপটপে, আর একটু ভেবেছিলাম মনিকে, সম্ভবত ২০১৫ সালের একটি দিনের কথা। রাজশাহী সেনানিবাসে মালতি বিল্ডিং ৫৫/৯ ফ্লাটে অর্থাৎ তাদের কোয়াটারে বেড়াতে গিয়ে আমি হঠাৎ মনি আপুকে বলেছিলাম, আপু আপনাকে দেখতে একজন জনপ্রিয় মানুষের মত লাগে। তখন সে চট করে বলে দিয়েছিল ভারতের নায়িকা আয়েশা টাকিয়ার মত? আমি বললাম বুঝলেন কি করে। তখন উনি উত্তর দিয়েছিলেন আমার বান্ধবীরাও বলে, মাঝেমধ্যে তারা আমাকে আয়েশা টাকিয়া বলে সম্বোধন করতে। কোথায় গেল সেই সোনালী দিনগুলা। তবে এ কথা শুনেছি সে আজও বিয়ে করে নাই, দ্বিতীয় কাউকে স্বামী বলে গ্রহণ করবো না। সত্যিই আফসোস!
গল্পটি পড়ার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ।
গুরুত্বপূর্ণ | তথ্য |
---|---|
ফটোগ্রাফি | screenshot / Infinix hot 11s-50mp |
বিষয় | স্বপ্নের কথা ও বাস্তবতা |
লোকেশন | জুগীরগোফা |
অনুভূতি | কষ্ট বিরহের |
ঠিকানা | গাংনী-মেহেরপুর, বাংলাদেশ |
Upvoted! Thank you for supporting witness @jswit.
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
আপনার স্বপ্নের গল্প পড়তে গিয়ে সব কিছু যেনো চোখের সামনে ভেসে উঠছিল।মনে হচ্ছিল আমিও যেনো দর্শক হিসেবে সবটা দেখছি।এটা জেনে খারাপ লাগলো আপনার সেই প্রিয়জন এখনও কাউকে জীবন সঙ্গী হিসেবে বেছে নেয় নি।
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
এটাই জীবনের ট্রাজেডি।
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
আপনার স্বপ্নের গল্পটি পড়ে আপনার একজন প্রিয় বড় বোনের কথা জানতে পেলাম।যে কিনা দেখতে অনেকটা ভারতীয় নায়িকার মতো। তবে সে আজ ও বিয়ে করেনি এটা জেনে সত্যি ই ভীষণ খারাপ লাগলো।
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
কিছু জানতে পেরেছেন,বিস্তারিত বুঝতে পারেননি।
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit