জেনারেল রাইটিং: অশিক্ষিত শিক্ষিত মূর্খ জ্ঞানী

in hive-129948 •  8 months ago 


আসসালামু আলাইকুম


হাই
বন্ধুরা!

আপনারা সবাই কেমন আছেন? আশা করি, সৃষ্টিকর্তার অশেষ রহমতে অনেক অনেক ভালো রয়েছেন। আমিও আপনাদের দোয়ায় অনেক ভালো রয়েছি। 'আমার বাংলা ব্লগ'এর সকল ভাইবোন বন্ধুদেরকে আমার পক্ষ থেকে সালাম এবং অভিনন্দন জানিয়ে শুরু করতে যাচ্ছি আজকের নতুন একটি পোস্ট। প্রথমে বলে রাখি,
মানুষ ভুলের উর্ধ্বে নয়, ভুল ত্রুটি হলে ক্ষমার দৃষ্টিতে দেখবেন।
আজকে আমি খুব গুরুত্বপূর্ণ একটি বিষয় নিয়ে আপনাদের সাথে আলোচনা করব। আশা করি আমার এই আলোচনার মাধ্যমে আপনাদের অনেক বিষয় ক্লিয়ার হয়ে যাবে। যেখানে শিক্ষিত-অশিক্ষিত মূর্খ আর জ্ঞানী মানুষের পার্থক্য নিয়ে আমরা খুব কম বুঝে থাকি। এই বিষয়ে আমি আমার মতামত পেশ করব। তাহলে চলুন আর দেরি না করে বিস্তারিত আলোচনা শুরু করি।


ei_1714281912205-removebg-preview.png



আলোচনার বিষয়:
অশিক্ষিত শিক্ষিত মূর্খ জ্ঞানী


অশিক্ষিত: অশিক্ষিত বলতে আমরা সেই সমস্ত ব্যক্তিদের বুঝি যাদের প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষা নেই। আবার অনেক সময় একে অন্যের উপর রাগ করেও শিক্ষিত মানুষকে অশিক্ষিত বলে থাকে। তবে অশিক্ষিত কে?

এ বিষয়ে আমি অনেক বিবেচনা করে দেখেছি, যা বিস্তারিত আপনাদের মাঝে লিখলাম না। তবে বিবেচনার পর যা মনে হয়েছে। আমার কাছে মনে হয়েছে অশিক্ষিত বলতে তাদেরই বোঝানো হয় পাতিষ্ঠানিক শিক্ষা থাকুক বা না থাকুক যাদের আচরণ ভালো নয়, তাদেরকে অশিক্ষিত বলে।


কারণ প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষা না থাকলেও অনেক মানুষ রয়েছে, মহত্বের পরিচয় দিয়ে গেছে দুনিয়ার বুকে। এখনো মহৎ মানুষের পরিচয় দিয়ে চলেছে অনেক প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষা হীন মানুষ।


কিছু মানুষ রয়েছে যাদের পারিবারিক নৈতিক শিক্ষার অভাব, প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষার অভাব। তবে তাদের আচরণ অনেক ভালো যা, একজন শিক্ষিত মানুষের চেয়েও বেশি। আবার অনেকে এই সমস্ত মানুষগুলোকে মূর্খ বলে থাকি। তবে মূর্খ বলার পিছনে আমার একটা প্রশ্ন থেকে যায় তারা কি আদৌ মূর্খ? মূর্খ বলতে আমরা কতটা বুঝি? প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষা নেই বলে তাকে মূর্খ বলব? সম্পূর্ণ ভুল ধারণা। আমি মনে করি এই সমস্ত মানুষগুলোকে যারা মূর্খ বলে তারাই উলটা মূর্খ




শিক্ষিত: প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষা গ্রহণ করেছে যারা তাদেরকে আমরা শিক্ষিত বলে জানি। আদৌ কি তারা সকলে শিক্ষিত?

আমার কাছে মনে হয় না। কেন মনে হয় না জানেন? প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষা গ্রহণ করলে শিক্ষিত হওয়া যায় না। হয়তো সার্টিফিকেট অর্জন করা সম্ভব। একজন পরিপূর্ণ মানুষের মধ্যে যে সমস্ত গুনাবলী থাকা প্রয়োজন সকল শিক্ষিত মানুষের মধ্যে সেগুলো থাকে না। মাঝেমধ্যে দেখা যায় বেশিরভাগ প্রাতিষ্ঠানিকভাবে শিক্ষিত মানুষেরা পশুর পরিচয় দিয়ে চলেছে প্রতিনিয়ত। তাহলে তারা আর কিসের শিক্ষিত হলো। মানুষ না শিক্ষা লাভ করলে মানুষত্বের পরিচয় দেয়ার কথা। কিন্তু প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষা লাভ করে যদি পশুর পরিচয় দিয়ে যায়,তারা আর কিসের স্বশিক্ষিত মানুষ। আর এমন মানুষ ডাইনে-বায়ের চারিপাশেই লক্ষণীয়। কিন্তু অনেক সময় দেখা যায়, যে সমস্ত মানুষ শিক্ষা গ্রহণ করেনি তার মধ্যে সেই মহৎ গুণের গুণাবলী রয়েছে। যা আমরা শিক্ষিত মানুষের কাছ থেকে আশা করি।




মূর্খ: প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষা নেই যার, আমরা তাদেরকে মূর্খ বলে গণ্য করি। আসলে কি কথাটা সত্য? আমি তো বিশ্বাস করি না।

আমার দৃষ্টিতে এটা ভুল ধারণা। প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষা গ্রহণ করলে শিক্ষিত বা জ্ঞানী হওয়া যায় না। শিক্ষিত বা জ্ঞানী হতে হলে নিজের মধ্যে সেই বিশেষ জ্ঞান ও দক্ষতা থাকা প্রয়োজন রয়েছে। যেখানে নৈতিক শিক্ষা, সততা, সচেতনতা, মানবতা থাকবে। ধর্মের কথা বাদ রাখলাম, প্রত্যেকটা ধর্ম মানুষকে নিজের অবস্থান থেকে সঠিক পথ দেখায়। যাদের মধ্যে মানবিকতা রয়েছে, মানবতা রয়েছে, নৈতিক শিক্ষা রয়েছে। এই সমস্ত মানুষদের মূর্খ বলা আমার মতে অন্যায়। যারা তাদেরকে মূর্খ ভাববে আমি মনে করি সেই আসল মূর্খ।




জ্ঞানী: যারা প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষা লাভ করে বড় বড় ডিগ্রী অর্জন করে আমরা অনেকে তাদেরকে জ্ঞানী বলে জানি। এটা কি সত্য ধারণা?

আমার কাছে সম্পূর্ণই ভুল ধারণা। কারণ বড় বড় সার্টিফিকেট অর্জন করলে জ্ঞানী হওয়া যায় না। জ্ঞানী হতে হলে অবশ্যই তার মধ্যে বিবেক থাকা লাগে, জাগ্রত বিবেক। যে জাগ্রত বিবেকের কর্ম দেখে ১০ জন মানুষ সন্তুষ্টি হয়। উদাহরণ: আপনার আমার দৃষ্টিতে জ্ঞানী বলে বিবেচিত এমন হাজারো জ্ঞানী ব্যক্তি দুর্নীতির দায়ে জেলে বন্দি। তাহলে তারা জ্ঞানী হলো কিভাবে। তাদের বড় বড় ডিগ্রির কি মূল্য। যাদেরকে নিয়ে একটা জাতি আশা করে, কিন্তু সেই শিক্ষিত সমাজের অধিকাংশ মানুষ যখন নিজের স্বার্থ নিয়ে ব্যস্ত তারা শিক্ষিত নামের কলঙ্ক।



সকল দৃষ্টিকোণ থেকে আমার মতামত:



প্রথম কথা, আমরা কাউকে অপমান করবো না; অপমান করা গোমূর্খের ধর্ম। প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষা নেই এমন মানুষকে আমরা অক্ষরহীন অথবা অশিক্ষিত বলে ধারণা নিতে পারি তবে কখনো ভুল করে মূর্খ বা অশিক্ষিত বলতে যাব না। এমনকি মুখের উপর অশিক্ষিত বলাটাও অন্যায়। অনেকে মুখের উপর মূর্খ বলে অপমান করে, আমি মনে করি যিনি বলছেন তিনি মূর্খ কারণ তারও যদি জ্ঞান থাকতো সে কখনো মুখের উপর কাউকে অপমান করত না। আবার প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষা আছে এমন মানুষকে শিক্ষিত বা জ্ঞানী বলে কখনো তাদের কাছে মাথা নিচু করতে যাব না, কারণ তাদের দ্বারা যে কোন মুহূর্তে ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার সম্ভাবনা থাকে। তাই সব কথার এক কথা হবে যাদের মধ্যে মানবতা রয়েছে নৈতিকতা রয়েছে সততা রয়েছে সুন্দর ব্যবহার ও কর্ম যা ১০ জন মানুষের মধ্যে ৮ জনকে মুগ্ধ করে চলে সর্বদা তাদেরকে আমরা জ্ঞানী বলে বিবেচনা করব এবং তাদের প্রতি অনুগত্য স্বীকার করব, কারণ আশা করা যায় সেই সমস্ত মানুষ এর দ্বারা একটি জাতির উজ্জ্বল ভবিষ্যৎ। তাছাড়া বর্তমান সময়ের প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষিত মানুষ এর মাধ্যমে একটা উন্নত জাতি আশা করা যায় না। কারণ তারা নিজেরাই তাদের নিজেদের শিক্ষার আসন ধরে রাখতে পারেনা দিতে পারেনা জ্ঞানের পরিচয়। শিক্ষিত হয়েও পশুর পরিচয়, মূর্খের পরিচয় দিয়ে চলে। তাই তারাই সফল শিক্ষিত বা জ্ঞানী মানুষ যাদের দ্বারা একটা জাতির মান-সম্মান রক্ষা ও উন্নতির আশা করা যায়। হতে পারে সে প্রাতিষ্ঠানিক বা অপ্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষায় জাগ্রত বিবেক ও জ্ঞান সম্পন্ন। আর এই জ্ঞানী ব্যক্তি গুলোই একটি জাতির সম্পদ। যারা একটি স্বাধীন রাষ্ট্রের স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্ব রক্ষা করতে সর্বদা প্রস্তুত।


পোস্ট বিবরণ


বিষয়জাগ্রত দৃষ্টিভঙ্গি
ফটোগ্রাফি ডিভাইসInfinix Hot 11s
Photo editing appremove background
লোকেশনগাংনী-মেহেরপুর
ব্লগার@sumon09
দেশবাংলাদেশ


পোস্টটি পড়ার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ।

received_434859771523295.gif


পুনরায় কথা হবে পরবর্তী কোন পোস্টে, ততক্ষণ ভালো থাকুন সবাই। আল্লাহ হাফেজ।

TZjG7hXReeVoAvXt2X6pMxYAb3q65xMju8wryWxKrsghkLbdtHEKTgRBCYd7pi9pJd6nDf4ZPaJpEx3WAqvFVny2ozAtrhFXaDMnAMUAqtLhNESRQveVFZ7XHcED6WEQD48QkCkVTAvNg6.png

Authors get paid when people like you upvote their post.
If you enjoyed what you read here, create your account today and start earning FREE STEEM!
Sort Order:  

Upvoted! Thank you for supporting witness @jswit.

আপনি বেশ দারুন একটি বিষয় নিয়ে আমাদের মাঝে লিখে উপস্থাপন করেছেন। আসলে অনেক অশিক্ষিত অর্থাৎ যারা কখনো প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষা লাভ করেনি কিন্তু তাদের মধ্যে দেখা যায় অনেকেই এত সুন্দর আচরণ করে যেটা দেখে মন ভরে যায়। আবার দেখা যায় অনেক শিক্ষিত অর্থাৎ যাদের বড় বড় ডিগ্রি ঠিকই আছে কিন্তু তাদের আচরণ খুবই বাজে। আসলে শিক্ষিত মানুষের আচরণ যদি বাজে হয়ে থাকে তাহলে সেই শিক্ষিত হয়ে লাভ কি। যাই হোক ধন্যবাদ ভাই আপনাকে সব মিলিয়ে সুন্দর পোস্টটি আমাদের মাঝে শেয়ার করার জন্য।

সুন্দর মন্তব্য করার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ ছোট ভাই।

অনেক গুরুত্বপূর্ণ একটি বিষয় নিয়ে আপনি পোষ্ট লিখেছেন। আপনার পোস্ট পড়ে আমার সত্যি অনেক অনেক ভালো লেগেছে। আমি এমনিতেই জানি আপনি সজাগ ও সচেতন একজন ব্যক্তি। ঠিক তেমনি সুন্দর চিন্তাধারা দিয়ে লেখা আপনার আজকের এই পোস্ট। একদম মনের মত কথা বলেছেন আপনার এই পোষ্টের মাঝে। আমরা সবাই যদি এভাবে চিন্তাধারা করি তাহলে সমাজটা খুব সহজে সুন্দরভাবে পরিবর্তন করতে পারবো।

সহমত পোষণ করার জন্য ধন্যবাদ

আপনার লেখার বিষয়টি খুবই সুন্দর।আসলে আমরা পার্থক্য খুঁজতে অনেক সময় ভুল করে ফেলি।প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষায় শিক্ষিত হলেই তাকে প্রকৃত শিক্ষিত বলা যাবে না কারন তারাই বেশি খারাপ কাজে লিপ্ত থাকে।কিন্তু পারিবারিক শিক্ষা এবং নিজের বিবেক দ্বারা শিক্ষিত মানুষ সমাজের কল্যাণ সাধন করে।দারুণ উপস্থাপন করেছেন,ধন্যবাদ ভাইয়া।

আপনার সহমত পোষণ করতে দেখে খুশি হলাম।