বাসের মাধ্যমে ফল রিসিভ করার অভিজ্ঞতা

in hive-129948 •  3 months ago 


আসসালামু আলাইকুম




হ্যালো বন্ধুরা,

আপনারা সবাই কেমন আছেন? আশা করি, সৃষ্টিকর্তার অশেষ রহমতে অনেক অনেক ভালো রয়েছেন। আমিও আপনাদের দোয়ায় অনেক ভালো রয়েছি। 'আমার বাংলা ব্লগ'এর সকল ভাইবোন বন্ধুদেরকে আমার পক্ষ থেকে সালাম এবং অভিনন্দন জানিয়ে শুরু করতে যাচ্ছি আজকের নতুন একটি পোস্ট। যেখানে নতুন একটি অভিজ্ঞতা শেয়ার করতে চলেছি। হয়তো অনেকের কাছে পুরাতন তবে আমার কাছে বিষয়টা খুবই নতুন। কারণ কখনো গ্রাম থেকে শহরে কোন কিছু এভাবে পাঠানো হয়নি বা রিসিভ করা হয়নি।

IMG_20240604_121647.jpg


ফটোগ্রাফি সমূহ:


অনেকে জানেন মায়ের অপারেশনের জন্য ঢাকায় অবস্থান করেছিলাম। আর এই দীর্ঘ দিনের মধ্যে বাড়ির গাছগুলোতে বিভিন্ন ফল পাকা শুরু হয়ে যায় যেমন কাঁঠাল আম জাম ইত্যাদি। এদিকে তালগাছে তাল শাঁস শক্ত হয়ে যাওয়ার পথে। যেহেতু ৩৫ দিন মতো অবস্থান করেছিলাম তাই এর মধ্যে অনেক ফল কমে যাওয়ার পথে ছিল। ওদিকে ডাক্তারের প্রতিনিয়ত আম্মার জন্য ডাব খাওয়ার কথা বলেছিল। ঢাকা শহরের ডাবের দাম অনেক বেশি। একশ কুড়ি থেকে দেড়শ টাকা পর্যন্ত পিস। তাই বাড়িতে একদিন ভাইয়ের সাথে আলোচনা করলাম সে বস্তা ভর্তি করে ফল কিভাবে পাঠাবে। আমি তাকে এসবি কাউন্টারের নম্বর ম্যানেজ করে দিলাম। ভাই বাড়ি থেকে গাংনীর বাসস্ট্যান্ডে গিয়ে এস বি কাউন্টারের সাথে কথা বলল। সেখানে বাসের বক্সের মধ্যে ফল পাঠাতে ৩০০ টাকা নেবে বলেছিল। ঠিক এভাবে ভাই যোগাযোগ করে এক বস্তা আম তাল ডাব সহ বিভিন্ন ফল পাঠিয়ে দিল। এদিকে বাসের কন্টাকটার আমার মোবাইল নম্বরে ফোন দিচ্ছে দুপুর 2 টার আগেই তারা ঢাকায় পৌঁছে যাবে। আমি যেন ঢাকা সাভার বিশমাইল ফ্লাইওভারের কাছে এসে দাঁড়ায়। তাই আমি আবার রেডি হয়ে খালাম্মার বাসা থেকে বের হয়ে পড়লাম।

IMG_20240604_121411.jpg

IMG_20240604_121435.jpg

IMG_20240604_121653.jpg


যাওয়ার পথে জাহাঙ্গীরনগর এরিয়া থেকে দেখার মত বিভিন্ন কিছু ফটো ধারণ করতে থাকলাম। এরপর বিশমাইলের ফ্লাই ওভার। আমি ফ্লাইওভারের ওখানে এসে তাদের সাথে যোগাযোগ করলাম। উনারা বললেন ফ্লাইওভারের পূর্বে এসে আপনার ফোন দেওয়া হবে। আর ঠিক এভাবেই গাড়িটা জায়গামতো এসে পৌঁছে গেল। এরপর তারা আমার মোবাইলে ফোন দিয়ে যাচাই করে নিল ঠিক ব্যক্তি আছি কিনা। এরপর দ্রুত বক্সের মধ্য থেকে ফলের বাচ্চাটা নামিয়ে দিলেন। ফলের বস্তা যে এত ভারী বহন করা বেশ কঠিন। ঠিক ওই মুহূর্তে একটি অটো রিকশায় এসে উপস্থিত হলো আমার পাশে। কারণ ফ্লাইওভারের নিচে বাস থামার নিয়ম ছিল না। এখানে পুলিশের বেশ ঝামেলা করে। ফ্লাইওভারের নিচে একটি পুলিশ বক্স ছিল। যাইহোক, কোন সমস্যার সম্মুখীন ছাড়াই বস্তাটা তারা নামিয়ে দিল এরপর অটো রিক্সায় উঠিয়ে রওনা দিলাম খালাম্মার বাসার দিকে।

IMG_20240604_121719.jpg

IMG_20240604_121747.jpg

IMG_20240604_125113.jpg


তবে যাওয়ার সময় অপজিট পাশ দিয়ে যেতে হলে আরেক সমস্যা। কারণ উল্টাপাশ দিয়ে গাড়ি চালানো ঠিক না, যে কোন মুহূর্তে বিপদ হওয়ার সম্ভাবনা থাকে। তবুও ডাইভার ভাই বললেন আমি এখানকার স্থানীয় মানুষ, গাড়ি চালানোর অভ্যাস রয়েছে। খালাম্মার বাসার ঠিকানা সব বলে দিলাম। উনি গাড়ি ঘুরিয়েই ক্যান্টনমেন্টের পাশ দিয়ে গাড়ি টানা শুরু করলেন। আর এই সুযোগে আমিও বেশ কয়েকটা ফটো ধারণ করার চেষ্টা করলাম এই দিনটাকে স্মরণ রাখার জন্য। দিলটা ছিল জুন মাসের ৪ তারিখ। জীবনে প্রথম এমন একটা অভিজ্ঞতার সম্মুখীন হলাম। আর এই কথাগুলো অটো চালক ভাইয়ের সাথে বলাবলি করছিলাম। তিনি বলছিলেন এমন অভিজ্ঞতা গ্রামের মানুষের কমই থাকে। তবে শহরে যারা লেখাপড়া করে তারা প্রতিনিয়তই কমবেশি বাড়ি থেকে এভাবে জিনিস সংরক্ষণ করেন। চাল ডাল থেকে শুরু করে ফল অনেক কিছু গ্রাম থেকে শহরে পাঠায়।

IMG_20240604_125257.jpg

IMG_20240604_125404.jpg

IMG_20240604_125404_1.jpg

IMG_20240604_125317.jpg


এ মুহূর্তে আমি অটো রিক্সার ভেতর থেকে বাইরের দিকে কিছু ফটো ধারণ করার চেষ্টা করলাম। আমার এই ফটো ধারণ করা দেখে উনি বললেন শহর দেখে আপনার মনে হয় ভালো লাগছে তাই আপনি ফটো ধারণ করছেন। কিন্তু আমি তাকে কিছুই বললাম না কেন ফটো ধারণ করছি কিবা করব। শুধু এটাই বললাম এসেছি যখন, আবার কবে আসবো না আসবো তার নাই ঠিক, কিছুটা ফটো ধারণ করে রাখি। দেখা যাচ্ছে আমি মাঝে মধ্যে মোবাইল থেকে দেখা যাবে, ভাবতে ভালো লাগবে। আর এভাবেই বিশ মাইল অতিক্রম করে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের হলের পাশ দিয়ে পানধোয়া বাজারের দিকে অগ্রসর হলাম,অতঃপর খালাম্মার বাসায় পৌঁছে গেলাম। এরপর বস্তা থেকে ফলগুলো বের করে আম্মার জন্য ও খালাম্মাদের বাসার সবাইকে খাওয়ার জন্য বললাম। আর এভাবেই নতুন একটা অভিজ্ঞতার সম্মুখীন হয়েছিলাম সেই দিন।

IMG_20240604_125408.jpg

IMG_20240604_125412.jpg

IMG_20240604_125413.jpg


পোস্টটি পড়ার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ।

received_434859771523295.gif

পোস্ট বিবরণ


বিষয়কেনাকাটা
লোকেশনLocation
ফটোগ্রাফি ডিভাইসHuawei P30 Pro-40mp
ফটোগ্রাফার@sumon09
দেশবাংলাদেশ


পুনরায় কথা হবে পরবর্তী কোন পোস্টে, ততক্ষণ ভালো থাকুন সকলে। আল্লাহ হাফেজ।

TZjG7hXReeVoAvXt2X6pMxYAb3q65xMju8wryWxKrsghkLbdtHEKTgRBCYd7pi9pJd6nDf4ZPaJpEx3WAqvFVny2ozAtrhFXaDMnAMUAqtLhNESRQveVFZ7XHcED6WEQD48QkCkVTAvNg6.png

Authors get paid when people like you upvote their post.
If you enjoyed what you read here, create your account today and start earning FREE STEEM!
Sort Order:  

শুধু খালাম্মাকে একা ফল খাওয়াবেন। আমরাতো বোন আমাদের খাওয়াবেন না। আমাদের জীবনে অনেক অভিজ্ঞার প্রয়োজন আছে। এই যে আজ আপনার বাসের মাধ্যমে ফল রিসিভ করার অভিজ্ঞতা হলো। হ্যাঁ ঢাকা শহরগুলোতে ব্রিজের নিচে বাস থামালে পুলিশ বাস আটকে দেয়। যাই হোক আপনার এই পোস্টে বর্ণনার পাশাপাশি জাহাঙ্গির নগর বিশ্ববিদ্যালয়ে এলাকার বেশ কিছু ফটোগ্রাফিও দেখতে পেলাম।

অবশ্যই আপু, দোয়া করেন যেন আপনাদের খাওয়াতে পারি।