হ্যালো বন্ধুরা,
আপনারা সবাই কেমন আছেন? আশা করি, সৃষ্টিকর্তার অশেষ রহমতে অনেক অনেক ভালো রয়েছেন। আমিও আপনাদের দোয়ায় অনেক ভালো রয়েছি। 'আমার বাংলা ব্লগ'এর সকল ভাইবোন বন্ধুদেরকে আমার পক্ষ থেকে সালাম এবং অভিনন্দন জানিয়ে শুরু করতে যাচ্ছি আজকের নতুন একটি পোস্ট। আজকে আমি আপনাদের মাঝে উপস্থিত হয়েছি গতকালকের পাঙ্গাস মাছের বাচ্চার ট্রিটমেন্ট করার জন্য আমার কার্যক্রমের বিশেষ মুহূর্ত শেয়ার করতে। আশা করব এই ব্লগের মাধ্যমে আপনারা বেশ অনেক কিছু জানতে পারবেন এবং প্রতিনিয়ত পাঙ্গাস মাছের ভাইরাসের আক্রমণে আমাদের যে সমস্ত ভূমিকা পালন করে থাকি তার কিছু তথ্য। তাহলে চলুন ব্লগটি শুরু করি।
বেশ কিছুদিন ধরে আমাদের পাঙ্গাসের পোনায় ভাইরাস লেগেছে। শীতের আগে ভাদ্র মাসের দিকে পাঙ্গাসের ছোট্ট ছোট্ট পোনা যশোর থেকে ম্যানেজ করা হয়। এরপর শীতের আগ মুহূর্তে যতটুক সম্ভব খাওয়ায়ে বড় করতে হয়। এরপর ফাল্গুন মাসের শেষের দিকে পাঙ্গাস মাছের পোনা গুলো চাষে ফেলতে হয় অন্যান্য পুকুরে। আর এরই মধ্যবর্তী সময় গুলোতে বেশ ৩-৪ বার ভাইরাসে আক্রমণ করে থাকে পাঙ্গাসের পোনার। বেশ কিছুদিন আগে পাঙ্গাস মাছের বাচ্চা পুকুরে দেওয়া হয়েছে। তবে পুকুর খুব ভালোভাবে প্রস্তুত করা হয়েছিল বিভিন্ন ঔষধ দিয়ে। এরপরেও ভাইরাস লেগেছে। তাই এই জন্য ভাইরাস প্রতিরোধের ঔষধ আনতে যেতে হবে মরকা বাজারে। তবে এই মুহূর্তে আমার বাবুকে নানা বাড়িতে রেখে আসতে হবে। তাই ভাবলাম বাবুকে নানা বাড়িতে রেখে এসে তারপর এই বাজারে ঔষধ নিয়ে বাড়িতে এসে পুকুর গুলাতে ওষুধ দিব। যেমন চিন্তা ঠিক তেমনি কাজ বাস্তবায়ন করতেই শ্বশুরবাড়িতে আমার পরিবারকে রেখে আসলাম। আসতে পথে মোটরসাইকেলের তেল ফুরিয়ে গেল। শ্বশুরের পাশের গ্রাম থেকে তেল নিয়ে চলে আসলাম মড়কা বাজারের দিকে। কিন্তু এসে দোকান খোলা পেলাম না। সাইনবোর্ড থেকে মোবাইল নম্বর নিলাম, ফোন করে জানতে চাইলাম। বললেন আসতে একটু দেরি হবে। দোকানদার ভাই আসার আগ মুহূর্তে বসে থেকে লাভ কি, তাই এদিকে ওদিকে একটু ফটো ধারণ করলাম।
কিছুক্ষণ পর দোকানদার ভাই আসলেন। আমিও দোকানে যে উপস্থিত হলাম। এরপর দোকানের মধ্যে প্রবেশ করলাম। তার দোকানটার মধ্যে বেশি কিছু রাখেন না। পিছনে গোডাউন রয়েছে। সেখানে সকল জিনিস থাকে। যাই হোক উনাকে বিস্তারিত খুলে বললাম মাছের কেমন অবস্থা। দুইটা পুকুরে পাঙ্গাসের পোনা ৯ হাজার দেওয়া আছে। সবকিছু জেনে উনি দুইটা ঔষধ দিলেন। একটা গ্যাস না আসুক। আর একটা ভিটামিন সি। পাঙ্গাসের বাচ্চার দানা দান ভাসমান খাবারের সাথে ভিটামিন সি একটু পানি দিয়ে মিশিয়ে খাওয়াতে হবে। এদিকে মাইক্রোনিল টা পুকুরে গ্যাস না আসুক। তাই এটা পুকুরে দিতে হবে পানিতে গলিয়ে। ওটা সাথে সাথে পানিতে দিতে বলল। দুইটার দাম ৪৩০ টাকা পরিশোধ করলাম। আমি আর দেরি না করে দ্রুত বাড়ি চলে আসলাম পুকুরে দেওয়ার জন্য।
এরপর বাড়িতে এসে দ্রুত মোটরসাইকেল রেখে, হাঁড়ি একটি থালা আর গ্যাস নাশক ঔষধটা নিয়ে মাঠের পুকুরে চলে গেলাম। যেহেতু বাড়ির একটা পুকুরে পাঙ্গাস মাছের বাচ্চা রয়েছে। মনে করলাম আগে মাঠের পুকুর দিয়ে আসি। কারণ বাড়ি থেকে ভেজা গা নিয়ে মাঠের পুকুরে যাওয়া ঠিক হবে না। তাই সে দিক থেকেই তা সম্পন্ন করে আসি। মাঠের পুকুরে উপস্থিত হয়ে হাঁড়িটা পুকুরে নামিয়ে নিলাম এবং আদা হাড়ি পানি নিলাম। এরপর সে হাড়ের মধ্যে গ্যাস নাশক ঔষধটা অর্ধেকের একটু বেশি পরিমাণ দিলাম।
ওষুধ হাঁড়ির পানির মধ্যে দেওয়ার সময় একটা জিনিস লক্ষ্য করলাম কেমন জানি পানির সাথে মিশে যাওয়ার সময় বিক্রিয়া হচ্ছে। এরপর আমি থালা দিয়ে পানির সাথে ভালোভাবে মিক্সড করে দিলাম। তারপর সারা পুকুর ঘুরে ঘুরে চারিপাড় এবং মধ্যবর্তী স্থান অর্থাৎ সম্পূর্ণ পুকুরে থালা দিয়ে সিটিয়ে দিলাম। আর ঠিক এভাবে মাঠের পুকুর ও বাড়ির পাঙ্গাস এর ছোট বাচ্চার পুকুরে গ্যাস নাশোক দিয়ে দিলাম। এখন একমাত্র ভরসা মহান সৃষ্টিকর্তার উপর। জানো দ্রুত মাছের রোগ প্রতিরোধ করে দেন। আর ভিটামিন সি টা আমি ভাসমান খাবারের সাথে তিন বেলায় পানি দিয়ে মিশিয়ে খাওয়ানোর চেষ্টা করব। কারণ এই মাছকে কেন্দ্র করে সারা বছরের মাছ চাষ হয়ে থাকে। মাছ চাষের বিশেষ ভূমিকা থেকে থাকে পাঙ্গাস মাছের উপর। কারণ পাঙ্গাস মাছ চাষের পাশাপাশি অন্যান্য মাছগুলো হয়ে থাকে। অন্যান্য মাছের আলাদা বাড়তি খাবারের প্রয়োজন হয় না। যাই হোক পরবর্তীতে মাছ চাষ নিয়ে আরও ব্লগ শেয়ার করব।
বিষয় | মাছের ট্রিটমেন্ট |
---|---|
ফটোগ্রাফি ডিভাইস | Infinix Hot 11s |
লোকেশন | গাংনী-মেহেরপুর |
ব্লগার | @sumon09 |
দেশ | বাংলাদেশ |
পোস্টটি পড়ার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ।
পুনরায় কথা হবে পরবর্তী কোন পোস্টে, ততক্ষণ ভালো থাকুন সবাই। আল্লাহ হাফেজ। |
---|
পাঙ্গাস মাছ খেতে আমি তো ভীষণ পছন্দ করি। আপনি আজকে পাঙ্গাস মাছের পোনার ট্রিটমেন্টের প্রতিটি ধাপ অনেক সুন্দর ভাবেই শেয়ার করেছেন। যারা পাঙ্গাস মাছ চাষ করবে তাদের জন্য এই পোস্টটা খুবই জরুরী। আপনার পোষ্টের মাধ্যমে আমিও কিছুটা শিখে গেলাম। ধন্যবাদ শেয়ার করার জন্য।
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
সুন্দর মন্তব্য করার জন্য ধন্যবাদ।
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit