গল্প: এক রাতে পুলিশের সম্মুখীন-প্রথম অংশ

in hive-129948 •  2 months ago 


আসসালামু আলাইকুম



হাই বন্ধুরা!

আমার গল্পের রাজ্যে আপনাদের সকলকে জানাই স্বাগতম। পূর্বসপ্তার ন্যায় আজকে উপস্থিত হয়ে গেলাম সুন্দর একটি গল্প নিয়ে। যে গল্পের মাধ্যমে আপনারা জানতে পারবেন আমার জীবনে কোন একটা লুকিয়ে থাকা ঘটনা। একজনের জানা ঘটনা অন্য জনের মাঝে ব্যক্ত করার মধ্য দিয়ে প্রকাশিত হয় অজানা তথ্য। ঠিক তেমনি সুন্দর একটি গল্প নিয়ে উপস্থিত হয়েছি আজ। আশা করি স্মৃতিচারণ মূলক এই গল্প আপনাদের অনেক অনেক ভালো লাগবে। তাই চলুন আর দেরি না করে গল্পটা পড়ি এবং গল্প পড়ার আনন্দ উপভোগ করি।

IMG_20240813_144220.jpg

photography device:
Infinix Hot 11s

What3words Location


গল্প: রাতে পুলিশের সম্মুখীন


আমরা পুকুর থেকে পাঙ্গাস মাছ প্রায় রাতে বিক্রয় করে থাকি। কারণ রাতে গাড়ি লোড হয়,আর সে সমস্ত পাঙ্গাস মাছের গাড়িগুলো দেশের বিভিন্ন আড়তে চলে যায়। সকাল ৬-৭ টার সময় বিভিন্ন আড়ৎ এর বেচাকেনা শুরু হয়ে যায়। আড়ৎ থেকে অনেকে মাছ কিনে বাজারে বিক্রয় করেন এবং অনেকে আড়ৎ থেকে মাছ কিনে নিয়ে যান বাসা বাড়ির জন্য। তাই আমরা জানি মাছের আড়তে সকাল ভরে বেচাকেনা শুরু হয়ে যায়। আর তাই পুকুর থেকে মাছ ধরতে হয় রাতে। ঠিক এমনই এক রাত এগারোটার সময় পাঙ্গাস মাছ এর গাড়ি লোড দেওয়া শুরু হলো। ৮ গাড়ি কি নয় গাড়ি জানো মাছ লোড হল। ৪০ থেকে ৪৫ মণ মাছ। দীর্ঘক্ষণ পুকুর থেকে জাল দিয়ে জেলে ভায়রা টানল এরপর স্কেলে মাছ মেপে বেপারীদের কাছে বিক্রয় করে দেয়া হলো। বুঝতে পারছেন স্কেলে ৩৩ কেজি করে মাছ মাপতে হলে ৪৫ মন মাছ ওজন দিতে কতটা সময় লাগে। আমাদের মাছ ধরার জন্য যে সমস্ত জেলে ভাইয়েরা আসছিলেন, তারা আমাদের গ্রামের এই মানুষ। তবে মাছগুলো ঠিক ঠাক ভাবে মেপে দেওয়ার জন্য আমার ভাই আর চাচাতো একটি বড় ভাই রয়েছেন উনি এই দায়িত্ব পালন করেন। চাচাতো বড় ভাইয়ের দায়িত্ব স্কেলে মাছ ঠিকভাবে মাপা আর আমার বড় ভাইয়ের দায়িত্ব ডাক ঠিক রেখে খাতায় ঠিক ভাবে উঠানো। আর আমি চেষ্টা করে থাকি আনুষঙ্গিক বিষয়গুলো মেন্টেন করার। ঠিক এভাবে রাত তখন প্রায় দেড়টা বেজে গেছে।

IMG_20240813_144221_1.jpg


মাছ ধরা কাজ সম্পন্ন হয়ে গেছে। গাড়িগুলো মাছ নিয়ে চলে গেছে। যারা মাছের ব্যাপারী ছিলেন তারাও তাদের মোটরসাইকেল নিয়ে বাড়িতে চলে গেলেন টাকার বিষয়টা পরবর্তী দিন সকালে বা বিকেলে দিয়ে দিবেন। হঠাৎ করে টাকা সব সময় নেয়া হয় না। এদিকে জেলে ভাইয়েরাও সব বাড়ি চলে গেছেন। কারণ তারা হালকা ঘুম দিবেন এরপর সকালেই আবার উঠে নিজেদের জন্য মাছ ধরবেন,তারা বাজার বিক্রয় করে থাকেন। তাই জেলে ভাইয়েরা তাদের কাজ দ্রুত সম্পন্ন করেই সব বাড়ি চলে গেছেন। এই মুহূর্তে নিজেদের খাওয়ার জন্য যে মাছ নেয়া হয়েছিল মাছের হাড়ি স্কেল লাইটের যে ব্যবস্থা করা হয়েছিল লাইট গুলো নিয়ে আমরা তিন ভাই মাঠের পুকুর থেকে রাস্তায় উঠে আসি। আমার আব্বা গাড়ির কাছে দাঁড়িয়ে ছিলেন, গাড়ি সব চলে গেছে। উনি একলা রাস্তায় দাঁড়িয়ে ছিলেন। আব্বাকে সাথে নিয়ে আমরা বাড়িতে চলে আসি। এরপর আমার চাচাতো ভাইকে একটা মাছ দেওয়া হল। চাচাতো ভাইয়ের বাড়ি আমাদের বাড়ি থেকে প্রায় হাফ কিলো পথ দুরে। আব্বা আমাকে বললেন তোমার ভাইয়াকে বাড়ি পৌঁছে দিয়ে আসো। কোথাও দাঁড়াবে না, গেট আটকাতে হবে। দ্রুত তোমার ভাইকে বাড়িতে রেখে এসে শুয়ে পড়ো, যগেট আটকাবো। যতক্ষণ না আসো, ততক্ষণ আমি জেগে আছি।

IMG_20240813_144235.jpg


চাচাতো বড় ভাইয়ের হাতে কোন লাইট ছিল না। রাতে একলা তাকে বাড়িতে পাঠানো বোকামি ছাড়া কিছুই হবে না। কারণ তার বয়স 45 ঊর্ধ্বে। এদিকে আপনারা অনেকেই জানেন আমি রাতে পুকুর পাহারা দিয়ে থাকি একা। রাত সাড়ে দশটা এগারোটার দিকে পুকুরে চলে যাই ফজরের আজানের আগে বাড়ি ফিরে আসি। ঠিক সেই সময় নিয়মিত পুকুর পাহারা করতাম। এইজন্য গামবুট জুতা পরিধান করতাম যেগুলো হাঁটু পর্যন্ত হয়ে থাকে। জিন্স প্যান্ট পরা থাকতো, আর আমি সব সময় টি শার্ট ব্যবহার করি। রাতে পুকুরে চলাচল করি তাই কালো টি শার্ট গুলো বেশি ব্যবহার করি। ঠিক তেমনি সাজগোজ রয়েছে। সাথে শুধু মোবাইলটা নিলাম আর কিছুই নয়। ভাইয়ের সাথে বেশ কিছু বিষয় নিয়ে গল্প করতে করতে তার বাড়ি পর্যন্ত পৌঁছে দিয়ে আসলাম। মিয়া ভাই বললেন সাবধানে বাড়ি যাস সুমন। অনেক মাছ বিক্রয় করা হলো তো কার মনে কি থাকে তা তো ঠিক নাই। উনি বলতে চাইলেন, আমি যেন একা রাত করে আর পুকুরের দিকে না যায়। অনেক মাছ বিক্রয় করা হলো। হয়তো কোন চোর সন্ত্রাসী আমাকে গুম করে দিতে পারে চান্দা নেওয়ার জন্য। আমি হাসি খুশি হবে ভাইকে বলে দিলাম ভয় পাইয়েন না নিশ্চিন্তে বাড়িতে যেয়ে ঘুম দেন।

গল্পটি পড়ার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ।

received_434859771523295.gif

গুরুত্বপূর্ণ তথ্য
ফটোগ্রাফিমাছ
বিষয়পুলিশের সম্মুখীন
ফটোগ্রাফি ডিভাইসInfinix Hot 11s
ঘটনার লোকেশনজুগীরগোফা
ব্লগারSumon
ঠিকানাগাংনী-মেহেরপুর, বাংলাদেশ


পুনরায় ফিরে আসবো নতুন কোন গল্প নিয়ে। ততক্ষণ ভালো থাকুন সবাই, সবার জন্য শুভকামনা রইল। আল্লাহ হাফেজ।

TZjG7hXReeVoAvXt2X6pMxYAb3q65xMju8wryWxKrsghkLbdtHEKTgRBCYd7pi9pJd6nDf4ZPaJpEx3WAqvFVny2ozAtrhFXaDMnAMUAqtLhNESRQveVFZ7XHcED6WEQD48QkCkVTAvNg6.png

Authors get paid when people like you upvote their post.
If you enjoyed what you read here, create your account today and start earning FREE STEEM!
Sort Order:  

Upvoted! Thank you for supporting witness @jswit.

আপনারা দুই ভাই রাতে মাছ বিক্রি করার জন্য যখন পুকুরে থাকেন তখন বেশ চিন্তায় থাকতে হয়। সঠিকভাবে মাছ ধরা হচ্ছে ফেনা লোকজন এসেছে কিনা কত রকমের টেনশন মাথায় কাজ করে। যাইহোক তেমনই এক রাতে মাছ ধরার বিষয় উল্লেখ করেছেন। তাই আপনার মাধ্যমে বেশ কিছু জানার সুযোগ হলো।

মন্তব্য করার জন্য ধন্যবাদ, টেনশনের কোন কারণ নাই।