মনে হয় যেন খাওয়ার জন্যই দুনিয়া

in hive-129948 •  last year 
আসসালামু আলাইকুম

IMG_20230615_062818555_BURST0009.jpg





হ্যালো বন্ধুরা,

আপনারা সবাই কেমন আছেন? আশা করি, সৃষ্টিকর্তার অশেষ রহমতে অনেক অনেক ভালো রয়েছেন। আমিও আপনাদের দোয়ায় অনেক ভালো রয়েছি। 'আমার বাংলা ব্লগ'এর সকল ভাইবোন বন্ধুদেরকে আমার পক্ষ থেকে সালাম এবং অভিনন্দন জানিয়ে শুরু করতে যাচ্ছি আজকের নতুন একটি পোস্ট। আশা করি আমার আজকের এই পোস্ট আপনাদের কাছে অনেক অনেক ভালো লাগবে, যেখানে আমি বিভিন্ন পর্যায়ের হালকা-পাতলা শুকনো খাবার খাওয়ার অনুভূতি তুলে ধরতে যাচ্ছি। আর এর পাশাপাশি বিভিন্ন পর্যায়ের বর্ণনা থাকবে প্রত্যেক ফটোগ্রাফির পাশে। তাই চলুন আর দেরি না করে মূল বিষয়ে যাওয়া যাক।


ফটোগ্রাফি সমূহ:



আ!ভজন বিলাসী মন আমার। পিচ্চি বাবা (রাজ) যখন কোলের মধ্যে বসে কলা খায় তখন অনেক ভালো লাগে পরিবারের সকলের। হাসিমুখে আনন্দের সাথে এটা সেটা বলে বসে আর কলা মুখে দেয়। বাপজান কলা খেতে বেশ পছন্দ করে, খেতে খেতে মাঝেমধ্যে আমার মুখে ধরে বসে আব্বা বলে হাত আগিয়ে দিয়ে মুখে টিপে দেয় আমার। সবেমাত্র তার কয়েকটা কথা বের হয়েছে মুখ দিয়ে খুব সুন্দর করে আব্বা বলে ডেকে ওঠে। ছোট্ট শিশুর এই মুখের মিষ্টি কথাগুলো জান প্রাণ ভরিয়ে দেয় তবে মাঝে মাঝে এমন দুষ্টামি করে বসে সহ্য করা কঠিন হয়ে যায়। তবুও কলিজার টুকরা সে মুখে মেনে নিতে হয় তার পাগলামি। আর যখন হাসিখুশি ভাবে কোলের মধ্যে বসে আনন্দ প্রকাশ করে জান প্রাণ জুড়িয়ে যায়। ফটোগ্রাফিতে আপনারা দেখতে পাচ্ছেন আপনাদের প্রিয় বিদ্যুৎ জিরো জিরো ওয়ান এর ছেলে অর্থাৎ আমার বড় ভাইয়ের একমাত্র ছেলে। অতিশয় চঞ্চল আর বুদ্ধিমান দোয়া করি যেন বাবাজান সুস্থ সবল অবস্থায় বড় হয় এবং অনেক জ্ঞানী গুণী হয়। আমি চাই আমাদের এই ছোট্ট শিশু যেন অনেক সচেতন সাহসী সততা বান হয়। আলহামদুলিল্লাহ বাবুটা অনেক কিছু খেতে পারে আপনারা দোয়া করবেন আমাদের এই ছোট্ট বাবুর জন্য এটা যেন আমাদের কলিজার টুকরা পরিবারের সকলের নয়নের মনি।

IMG_20230615_062803338_BURST0003.jpg



মাঝে মাঝে চানাচুর আর মুড়ি মাখানো খেতে বেশ ভালো লাগে আমার। প্রায় একদিন আমার শাশুড়ি আম্মা আমাকে ঝাল মুড়ি মাখিয়ে খাওয়াবে বলে অনেক কিছুর ব্যবস্থা করেছিল যেমন ঝালমুড়ি চানাচুর সিঙ্গারা গাজর সহ আরো অনেক কিছু। প্রায় ১৫ থেকে ২০ রকমের উপাদানের সংমিশ্রণে এই মুড়ি মাখিয়ে আমাদের তিনজনকে খেতে দিয়েছিল সেখানে আমি আমার স্ত্রী এবং আমার ছোট্ট শালিকা। বেশ ভালো লেগেছিল এই সুন্দর মুড়ি মাখানো খেতে। কারণ এ তো পূর্বে আমার শাশুড়ি জেনেছিল আমি ঝাল মুড়ি খাওয়ার জন্য সাত দশ কিলো দূরে চলে যায়। তাইতো এত সুন্দর করে ঝালমুড়ি মাখিয়ে দিয়েছিল আমাকে।

IMG_20230513_195557_020.jpg

IMG_20230513_200636_548.jpg



নারিকেল খেতে বেশ পছন্দ করি আমি। তাই তো মাঝেমধ্যে নিজেই ডাব গাছের মাথায় উঠে যায়। একদম পাকা নারিকেল আমার তেমন একটা পছন্দ নয় যেগুলো নরম নরম নারিকেল হওয়ার পথে সেগুলো বেশি পছন্দ করি। আর একটা বদ অভ্যাস রয়েছে গাছ থেকে যখন নারিকেল বাড়ি বা দমালা জাতীয় নারিকেল গুলো পড়ে থাকি পরিবারের সকলের জন্যই একটি একটি করে করার চেষ্টা করি অর্থাৎ ৬ থেকে ১০ টা তবে তার মধ্যে নিজের জন্য যে একটা ভেঙে রাখিস সেটা যেন পুরোটাই এক নিঃশ্বাসে খাওয়া হয়ে যায়। একটা নারিকেল খাওয়া আমার কাছে যেন ওয়ান টুর ব্যাপার। আলহামদুলিল্লাহ সাতটা গাছ রয়েছে সেখান থেকে যথেষ্ট পরিমাণে খাওয়ার সুযোগ আল্লাহ করে দিয়েছে।

IMG_20230721_180432_857.jpg

IMG_20230721_180529_742.jpg



মাঝে মাঝে নিজের কাছে মনে হয় খাওয়ার জন্য দুনিয়া। দুনিয়ার জন্য মানুষ না। দুনিয়ার বুক চিরে যত খাবার বের করে আনা যায় আর মুখের মধ্যে পুরা যায়। এই যে চকলেট গুলো দেখতে পারছেন এগুলো কুয়েত থেকে আমার কুটুম পাঠিয়েছিল শাশুড়ি বাড়িতে। আমরা সকলেই কম বেশি জানি যারা বিদেশে থাকে তারা বেশিরভাগ বিদেশ থেকে চকলেট পাঠিয়ে থাকে বাড়িতে। আবার অনেকে বলাবলি করে দেশের চকলেট খেতে তেমন ভালো লাগেনা বিদেশি চকলেট বেশ ভালো লাগে। বিয়ের পর থেকে কুয়েত থেকে আনা কমসেকম ১০০ চকলেট খাওয়া হয়ে গেছে। খেতেও বেশ ভালো লাগে শুধু ফটোগ্রাফিতে দেখছেন এই টাইপের গুলো নয় বিভিন্ন রকমের চকলেট রয়েছে গোল চকলেট লম্বা চকলেট চার কোন সাইজের চকলেট। বউ যেন জামাই আদর করে, যখন তখন চকলেট এনে আমাকে খেতে দেয়। ইচ্ছে যখন থাকে না তখনও যেন জোর করে খাওয়ানোর চেষ্টা করে। আবার না খাইতে চাইলে রাগ দেখায়। যেন এক মায়ার বন্ধন।

IMG_20230619_181035_525.jpg

IMG_20230619_181319_999.jpg



বিয়ের পরে জামাই আদর বেশি বাড়ে। পুরাতন হয়ে গেলে কমে যায়। আত্মীয়স্বজনেরাও চিনেও আছেন আর ভান করে থাকে। তবে বিয়ের পর কতটা ভক্তি শ্রদ্ধা করে খেতে দেয় ফটোগ্রাফিতে বুঝতে পারছেন। শ্বশুর কুলের আত্মীয়র বাড়ি বলে কথা। হয়তো আমার মত অনেকেই এমন জামাই আদর পেয়েছেন শ্বশুর কুলের আত্মীয় বাড়িতে। এরপরে শাশুড়ি আম্মা বলে জামাই আমার কিছু খায় না, জ্যান্ত মানুষ যা দেবো তাই খেয়ে নেবে, প্লেটে প্লেটে ভাত মাংস বাঁধিয়ে রাখে। অমুকের জামাই তিন প্লেট চার প্লেট খায় আমার জামাই যে কেমন হয়েছে।

IMG_20230515_124334_672.jpg



এখানে লটকন আর ড্রাগন ফল। দুইটাই বেশ দামি ফল। শ্বশুর বেশি ভালোবেসে কিনে দিয়েছিল। এদিকে শাশুড়ি আম্মা ধুয়ে কেটেকুটে এনে দিয়েছে সামনে। এদিকে শ্বশুর-শাশুড়ির মেয়ে আমাকে খাওয়ানোর জন্য অপেক্ষা করছিল যতক্ষণ না রুমে প্রবেশ করেছিলাম। তবে ড্রাগন ফল তেমন একটা সাধের ছিল না তাই শ্বশুরমশাই বেশ আফসোস করেছিল। সুদুর কুষ্টিয়া থেকে কিনে এনেছি জামাই মেয়েকে খাওয়াবো বলে আর ফলটা মিষ্টি লাগছে না এটা কি মেনে নেওয়া যায়। শশুর জামাই আদর করতে বেশি ভালোবাসে এটার জন্যই আমি বেশি খুশি খাওয়াটা বড় কথা নয়।

IMG_20230619_181850_907.jpg



আজ সন্ধ্যা থেকে বৃষ্টি হচ্ছে তাতে কি আসে যায় হয় হোক এই বছর যেন বৃষ্টি হয় না মনে হয় বৃষ্টির পা ধরে দিতে হবে বাড়িতে আনার জন্য কত দিন ধরে আছে বৃষ্টি হতে চাই না আর সন্ধ্যা বেলা থেকে টিপটিপ বৃষ্টি শুরু হয়েছে জোরে সরে নয় আর বৃষ্টির মুহূর্তে প্রিয়জন পাশে থাকলে সবচেয়ে বেশি আনন্দ লাগে আর একটা বিষয় রয়েছে সেটা হচ্ছে চানাচুর মুড়ি খেতে পারলে জানে তৃপ্তি লাগে কি আর করব একা রুমে বসে রয়েছি আমার পরিবার তার মার বাড়িতে রয়েছে এই বৃষ্টির মুহূর্ত যখন বসে ডিসকোটে চ্যাট করছিলাম মুস্তাফিজুরের সাথে তার কিছুক্ষণ আগে থেকে ভাবছিলাম চানাচুর মুড়ি মাখাবো আর মনে মনে ভাবছিলাম একটি পোস্ট করব বিভিন্ন কিছু খাওবার নিয়ে। মনকে বুঝালাম মন বুঝে ফেলল তাইতো চানাচুর মুড়ি চিবাতে চিবাতে পোস্ট লিখছি এখন। কোনদিন অবশ্য এমন ভাবে পোস্ট লিখিনি চ্যাটিং করেছে খুব। আজকে না হয় পোস্ট করার অভিজ্ঞতা হয়ে যাক। এমন টিপ টিপ বৃষ্টির সন্ধ্যাকালীন মুহূর্তে। চানাচুর মুড়ির মধ্যে সরিষার তেল একটু বেশি করে নিয়েছি তো, নাকে বেশ সুন্দর বাসনা লাগবে। বলতে পারেন বাসনায় বাসনায় পোস্ট লিখছি। তবে আগের মত তাড়াহুড়া করে পোস্টে লিখছে না মনের আনন্দে ধীরে সুস্থে পোস্টে লিখছি। এটার কিন্তু দুইটা কারণ রয়েছে তা হচ্ছে বউ যথেষ্ট অসুস্থ ছিল তার মনটা খারাপ ছিল কিছুক্ষণ আগে মেসেজ করে জানিয়ে দিল আমি আজকে খুব সুস্থ আছি এবং ভালোভাবে খেতে পারছি আরেকটি কারণ হচ্ছে বৃষ্টির মুহূর্তে কিন্তু কারেন্ট থাকে না বৃষ্টি পড়ার আগেই কারেন্ট চলে যায় নি আধা ঘন্টা এক ঘন্টা ধরে বৃষ্টি হচ্ছে কারেন্ট চলে যায় যাক গা তাতে কি হয়েছে এখন আনলিমিটেড ওয়াইফাই লাইন পাব কারেন্ট না থাকলেও চলবে। যাই হোক ঝাল মুড়ি খেতে খেতে প্লেট যখন খালি হয়ে আসতে লাগলো ঠিক তখনই আমার পোস্ট লেখাও শেষ হয়ে আসতে লাগলো। মাঝখানে পরিবারের সাথে ইমু কলে কথা হয়েছে এদিকে রকি ভাইয়ের সাথে চ্যাটিং হয়েছে। সবকিছু মিলে ই সুন্দর ভোজন মুহূর্ত শেষ করলাম।

IMG_20230807_191016_188.jpg

IMG_20230807_193057_866.jpg


পোস্টটি পড়ার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ।

received_434859771523295.gif


পুনরায় কথা হবে পরবর্তী কোন পোস্টে, ততক্ষণ ভালো থাকা হয় যেনো। আল্লাহ হাফেজ।

TZjG7hXReeVoAvXt2X6pMxYAb3q65xMju8wryWxKrsghkLbdtHEKTgRBCYd7pi9pJd6nDf4ZPaJpEx3WAqvFVny2ozAtrhFXaDMnAMUAqtLhNESRQveVFZ7XHcED6WEQD48QkCkVTAvNg6.png

Authors get paid when people like you upvote their post.
If you enjoyed what you read here, create your account today and start earning FREE STEEM!
Sort Order:  

হ্যাঁ ঠিক বলেছেন খাওয়াই জীবন, পৃথিবীতে যদি খাবার প্রয়োজন না হতো, তাহলে হয়তো বা মানুষ এতটা আধুনিক হত না। কোনভাবে নিজের জীবনটা পার করে দিত, শুধুমাত্র খেতে হবে বলেই মানুষ কাজ করছে আস্তে আস্তে এতটা উন্নত হল। ঝালমুড়ি যে আপনার এত পছন্দ সেটা জেনে খুব ভালো লাগলো উপকরণগুলো কিন্তু চমৎকার ছিল।

ঝালমুড়ি আমার খুবই ফেভারিট ভাইজান

তাই তো দেখছি খাওয়ার জন্যই তো মনে হচ্ছে দুনিয়া। আপনি এত লোহনীয় খাবারগুলো যেভাবে আমাদের মাঝে প্রদর্শন করেছেন তা দেখে তো আমারও ইচ্ছে হচ্ছে এখনই খেতে শুরু করে দিতে।

সাবলীল ভাষায় মন্তব্য করার জন্য ধন্যবাদ

আপনার পোষ্টের টাইটেলটি মজার হলেও সত্য।আসলেই খাওয়া ছাড়া কোনো প্রাণী বাঁচতে পারে না।বাচ্চাদের আধো আধো কথা শুনতে বেশ ভালো লাগে।আর মুড়ি চানাচুর মাখাটি বেশ লোভনীয় ছিল।নতুন জামাইয়ের আদর একটু বেশি হবে এটাই স্বাভাবিক।তবে লটকন ফলটি আমার কখনো খাওয়া হয় নি, আমাদের এখানে পাওয়া যায় না।খাওয়ার মাঝে দারুণ সময় পার করেছেন, ধন্যবাদ ভাইয়া।

বাস্তব কিছু তুলে ধরার চেষ্টা করেছি

একেকবার একেক খাবার এবং সেই সম্পর্কে কিছু তথ্য আমাদের সাথে শেয়ার করেছেন। শ্বশুরবাড়িতে বেশ আদর আপ্যায়ন পাচ্ছেন বুঝেই যাচ্ছে। আর আপনি খেতে না চাইলে আপনার স্ত্রী জোর করে চকলেট খাওয়ায় এটাই আসলে মহব্বত। আপনার শাশুড়ি লটকন ও ড্রাগন ফল কেটে দিয়েছে। আসলে একেকবার একেক খাবার খাচ্ছেন মানুষ বেঁচে থাকার জন্য খাবার খেতেই হবে এটাই স্বাভাবিক।

বেশ ভালোবাসে সে আমাকে