মাছ বিক্রয়ের জন্য চুয়াডাঙ্গা আড়তের উদ্দেশ্যে যাত্রা || চতুর্থ পর্ব

in hive-129948 •  last month 


আসসালামু আলাইকুম




হাই বন্ধুরা!

কেমন আছেন সবাই? আশা করি, সৃষ্টিকর্তার অশেষ রহমতে অনেক অনেক ভালো রয়েছেন। আমিও আপনাদের দোয়ায় অনেক ভালো রয়েছি। 'আমার বাংলা ব্লগ'এর সকল ভাই-বোন বন্ধুদেরকে আমার পক্ষ থেকে সালাম এবং অভিনন্দন জানিয়ে শুরু করতে যাচ্ছি আজকের নতুন একটি পোস্ট। আজকে আমি আপনাদের মাঝে উপস্থিত হলাম চুয়াডাঙ্গা আড়তে মাছ বিক্রয় করতে যাওয়ার চতুর্থ পর্ব নিয়ে। আশা করব এ পর্বে আপনারা অনেক কিছু জানতে পারবেন। তাহলে চলুন আর দেরি না করে এখনই বিস্তারিত শুরু করি।

IMG_20240823_140617_9.jpg

photography device:
Infinix Hot 11s

What3words Location


মাছ বিক্রয়ের উদ্দেশ্যে যাত্রা:


আমাদের মাছের গাড়ি আসমান খালি বাজার পার হয়ে সামনের দিকে এগিয়ে চলল। আসমান খালি বাজারটা পানের জন্য বিখ্যাত। এলাকায় এত বড় পানের বাজার কোথাও আছে বলে মনে হয় না। দীর্ঘদিন আমি এই বাজারটা চিনি এবং এই বাজার দিয়ে চলাচল করেছি। কারণ মাছ বিক্রয়ের জন্য আজ দীর্ঘদিন এই রাস্তা দিয়ে চলাচল আমার। বিশেষ করে চুয়াডাঙ্গা সরোজগঞ্জ ঝিনাইদহ জীবননগর মহেশপুর যশোর চাঁচড়া বিভিন্ন স্থানে চলাচল করতে হয়েছে এই পথ ধরে। তাই এলাকাটা আমার কাছে বেশ সুপরিচিত লাভ করেছে। এই রাস্তাগুলো আমার কাছে বেশি ভালো লাগে এই জন্য যে ভেতরে ভেতরে দু-একটা ব্যাক থাকতে পারে তারপরে রাস্তাগুলো অনেক সাট। গ্রামের মধ্য দিয়ে রাস্তা এত সুন্দর বেশ দেখার মত। যাইহোক আমরা অগ্রসর হতেই রয়েছি এদিকে সকাল হয়ে মানুষের আনাগোনা বেড়ে গেছে পথেঘাটে গরু ছাগল সব গৃহপালিত পশুপাখির আবির্ভাব ঘটতে শুরু করেছে। ইতিমধ্যে ড্রাইভার বললেন আরও সকাল করে বের হতে পারলে ভালো হতো ছাগল গরু সামনে বেধতো না। আমিও খেয়াল করে দেখলাম কথা সত্যি তো। এতক্ষণ ফ্রি ভাবে রাস্তায় গাড়ি টানছিল একটু জোরে যেতে পারছিল কোন জায়গায় ব্রেক করতে হচ্ছিল না। আর এখন যেকোনো জায়গায় বাড়ির আশপাশ অথবা বাজারের সামনে মানুষের উপস্থিতি পশুপাখির সব উপস্থিতির কারণে ব্রেক ধরতে হচ্ছে এতে বেশি বিভ্রান্তি মনে হচ্ছিল আমার কাছে। কারণ জায়গায় জায়গায় গাড়ি বের করা মাছের দামের উপর বসে থাকা বেশ ঝামেলার। মাঝেমধ্যে ড্রামের মধ্য থেকে পানি ছিটকিয়ে গায়ে পড়ছে আবার অনেক সময় নিজেই পড়ে যাওয়ার মত ভয় হচ্ছে। আর এভাবেই পাশের গ্রাম বড় গাংনী পার হয়ে এলাম।

IMG_20230712_074130_3.jpg

IMG_20230712_074242_0.jpg

IMG_20230712_074228_2.jpg

IMG_20230712_073046_8.jpg

IMG_20230712_073152_0.jpg

photography device:
Infinix Hot 11s

What3words Location


বড় গাংনী নামক স্থানটা পার হয়ে দীর্ঘ মাঠ এর রাস্তা। এরপর আন্দিপুর গ্রাম চিতলা গ্রাম। এলাকাগুলোর নাম শুনেছি গ্রামের মধ্য দিয়ে চলাচল করি কিন্তু কোনদিন এদিকে সেভাবে থামা হয়নি। তাই মাঝেমধ্যে ইচ্ছে হয় মোটরসাইকেল চালিয়ে এলাকাগুলো ঘুরে দেখে আসব। কিন্তু আজ পর্যন্ত মোটরসাইকেলের কাগজ পাতি ঠিকঠাক করতে পারি নাই যার জন্য ইচ্ছে থাকা সত্ত্বেও ঘুরতে যাওয়া হয় না এ সমস্ত এলাকায়। কারণ পাশের এলাকাগুলো ঘুরে ঘুরে দেখার মজা আলাদা। এরপর আমাদের গাড়ি আরো সামনের দিকে যখন এগিয়ে যেতে থাকলো খেয়াল করে দেখলাম ভালাইপুর পাঁচ কিলো দূরে। ভালাইপুরে উঠতে পারলে মেহেরপুর থেকে চুয়াডাঙ্গার হাইরোড। ভালাইপুর মোড় থেকে চুয়াডাঙ্গা বেশি দূরে নয়। ১০ মিনিটের মধ্যে পৌঁছে যাওয়া যায় মেন বাজারে। তবে এই এলাকার মধ্যে আমি একটা বিষয় লক্ষ্য করে দেখেছি গ্রামের এই হাই রাস্তার পাশে তেমন বেশি একটা জনবসতি নেই। আর রাস্তার পাশ দিয়ে জায়গায় জায়গায় বেশি পানের বরজ। এই এলাকাটা পানের জন্য বিখ্যাত। আমি লক্ষ্য করে দেখেছি আমার শ্বশুরের এলাকা অর্থাৎ হাট বোয়ালিয়া থেকে শুরু করে এই ভালাইপুর পর্যন্ত শুধু পানের বরজ আর কলাবাগান।

IMG_20230712_073217_0.jpg

IMG_20230712_073347_5.jpg

IMG_20230712_073424_0.jpg

IMG_20230712_073516_3.jpg

IMG_20230712_073557_0.jpg

photography device:
Infinix Hot 11s

What3words Location


একটা মুহূর্তে এই পথ অতিক্রম করতে লক্ষ্য করে দেখলাম সকাল সাতটা আটটা বেজে যাচ্ছে আর পথে ঘাটে অন্যান্য গাড়ি চলাচল শুরু হয়ে গেছে। ছাত্র-ছাত্রীরা স্কুলের দিকে প্রাইভেটের উদ্দেশ্যে চলছে। কর্মজীবী মানুষেরা তাদের কর্ম ক্ষেত্রে পৌঁছে গেছে। ফসলের মাঠে অনেক মানুষের উপস্থিতি হয়ে গেছে। লক্ষ্য করে দেখলাম জায়গাতে জায়গাতে অনেক মানুষ কাজে লেগে পড়েছে। আর এদিকে গাছে গাছে আম কাঠালে পরিপূর্ণ। যেন সকালের সজীবতা কমতে থাকলো। এদিকে পূর্ব দিগন্তে সূর্য মামা জেগে উঠেছে। কপালে রোদ লাগতে থাকলো। গাড়ির উপরে বসে থাকা যেন আস্তে আস্তে বিরক্তি কর হতে থাকলো। কারণ বুঝতেই পারছেন একটানা গাড়ির ড্রামের উপর বসে থাকা আর গাড়ির ইঞ্জিনের পছন্দ আওয়াজ যেন বিরক্তির মাত্রা বাড়িয়ে দিতে থাকে। এদিকে আবারো আড়ত থেকে মাছের মহাজন ফোন দিচ্ছেন। গাড়ির ড্রাইভার কোনরকম তাদেরকে ঠেকিয়ে নিচ্ছেন আর বেশি সময় লাগবে না আমরা খুব শীঘ্রই পৌঁছে যাব। এভাবে একটা মুহূর্তে আমরা তিতলা গ্রাম পার হয়ে কয়রাডাঙ্গা গ্রাম পার হতে চললাম। কয়রাডাঙ্গা গ্রামের সুপরিচিত একটি স্টেডিয়ামের নাম লালটু স্টেডিয়াম। এটা এক বীর মুক্তিযোদ্ধার নামে স্টেডিয়াম টা তৈরি করা হয়েছে। কিন্তু এখানে স্টেডিয়ামের কিছুই নেই শুধুমাত্র একটি খেলার মাঠ। তবে এই কয়রাডাঙ্গা গ্রামটা অনেক বড়। এই গ্রামের অনেক গল্প এর আগে শুনেছি। একটা মুহূর্তে এই গ্রামের চোর ডাকাতে আড্ডা খানা হত দীর্ঘ মাঠ থাকায়। ঠিক এমনই অনেক গল্প শুনেছি এই গ্রামকে কেন্দ্র করে। যেন এই গ্রামের মধ্য দিয়ে চলার মুহূর্তে সেই সমস্ত গল্পের কথা বারবার মনে আসতে থাকলো। আর এভাবে আমাদের গাড়ি সামনের দিকে এগিয়ে যেতে থাকলো।(চলবে)

IMG_20230712_073656_2.jpg

IMG_20230712_073739_9.jpg

IMG_20230712_073829_4.jpg

IMG_20230712_074151_7.jpg

photography device:
Infinix Hot 11s

What3words Location


পোস্টটি পড়ার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ।

received_434859771523295.gif



পোস্ট বিবরণ


বিষয়মাছ বিক্রয়
ব্লগারsumon09
ডিভাইসInfinix Hot 11s-50mp
লোকেশনWhat3words
দেশবাংলাদেশ


পুনরায় কথা হবে পরবর্তী কোন ভ্রমণ বিষয়ক পোস্টে, ততক্ষণ ভালো থাকবেন সবাই। সকলের জন্য শুভকামনা রইল,আল্লাহ হাফেজ।

TZjG7hXReeVoAvXt2X6pMxYAb3q65xMju8wryWxKrsghkLbdtHEKTgRBCYd7pi9pJd6nDf4ZPaJpEx3WAqvFVny2ozAtrhFXaDMnAMUAqtLhNESRQveVFZ7XHcED6WEQD48QkCkVTAvNg6.png

Authors get paid when people like you upvote their post.
If you enjoyed what you read here, create your account today and start earning FREE STEEM!
Sort Order:  

Upvoted! Thank you for supporting witness @jswit.

আমরা সবাই জানি আপনি পুকুরে মাছ চাষ করেন। আর সেই মাছ বিক্রয় করতে চুয়াডাঙ্গা আড়ত সহ বিভিন্ন আড়তের উদ্দেশ্যে যাত্রা করেন। আসা যাওয়ার পথে প্রচুর ফটোগ্রাফিও করে থাকেন। ভালোই অভিজ্ঞতা আপনার। ধন্যবাদ।

দীর্ঘক্ষণ বসে থাকা কষ্টকর তাই ফটোগ্রাফি করার মধ্য দিয়ে সময় অতিক্রম হয়।