অসুস্থ অবস্থায় পবিত্র ঈদুল ফিতরের সালাতে অংশগ্রহণ

in hive-129948 •  2 years ago 

আজ - শনিবার

০৯ বৈশাখ, ১৪৩০ বঙ্গাব্দ
২২ এপ্রিল, ২০২৩ খ্রিষ্টাব্দ


আসসালামু আলাইকুম

IMG_20230422_074311214_BURST0005.jpg





হ্যালো বন্ধুরা,

আপনারা সবাই কেমন আছেন? আশা করি, সৃষ্টিকর্তার অশেষ রহমতে অনেক অনেক ভালো রয়েছেন। আমিও আপনাদের দোয়ায় অনেক ভালো রয়েছি। 'আমার বাংলা ব্লগ'এর সকল ভাইবোন বন্ধুদেরকে আমার পক্ষ থেকে সালাম এবং অভিনন্দন জানিয়ে শুরু করতে যাচ্ছি আজকের নতুন একটি পোস্ট। অসুস্থ অবস্থায় থাকার পরেও ঈদগাহে উপস্থিত হয়ে গ্রামবাসীর সাথে ঈদুল ফিতরের সালাত আদায় করতে পেরেছি তাই হাজার শুকরিয়া। আর ঈদুল ফিতরের জামাত আদায় করার পূর্ব ও পরবর্তী মুহূর্তের কিছু ফটোগ্রাফি ও ভিডিও আপনাদের মাঝে তুলে ধরতে এসেছি। আশা করি ঈদের দিনের এই সুন্দর আনন্দ মুহূর্তটা আপনারাও মন থেকে গ্রহণ করবেন।


ফটোগ্রাফি সমূহ:



আপনারা অনেকেই জানেন আমি বেশ ১৫-২০ দিন ধরে অসুস্থ অবস্থায় রয়েছি। অনাকাঙ্খিতভাবে পায়ে একটি ইনফেকশন হওয়ায় খুবই কষ্টে দিন পার করেছি। তাই মনে হয়েছিল যে আমি এই ঈদুল ফিতরের সালাতে গ্রামবাসীর সাথে একসাথে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে ঈদগাহের মাঠে নামাজে অংশগ্রহণ করতে পারবোনা। তবে আমার এই পায়ের সমস্যার মধ্যে থেকেও আমার বাংলা ব্লগ কমিউনিটিতে সুপার অ্যাক্টিভে রয়েছে এটা আল্লাহর নিকট অশেষ শুকরিয়া। প্রতিদিন প্রতিবেলায় আমাকে ১ হাজার পাওয়ারের ওষুধ খাওয়া লেগেছে। যার জন্য শারীরিক দিক থেকে খুবই দুর্বলতা বোধ করছি। যাই হোক আমাদের ঈদগাহ আমাদের বাসা থেকে অনেক দূরে যেহেতু গ্রামটা খুব বড়। তাই মারুফকে সকালে বললাম তুই যদি আমাকে নিয়ে যেতে পারিস তাহলে ঈদের নামাজ আমার কপালে জুটবে আর যদি না নিয়ে যেতে পারিস তাহলে আর ঈদের নামাজের আশা করে লাভ নেই। মারুফ আমার এই কথা শুনা মাত্র বলল রেডি হয়ে নে আমি এসে নিয়ে যাব নামাজ বাদ দেওয়া যায়। সত্যি তখন মনটা আনন্দে ভরে উঠল কিন্তু মনের ভিতর চিন্তা জাগলো নামাজ তো পড়তে যাব নামাজ পড়বো কিভাবে আমার তো পায়ে সমস্যা! তারপরে মনোবল সবচেয়ে পড়লাম নামাজ পড়তে যাব। আমি মারুফ আর তার বড় ছেলে মোটরসাইকেলে উঠে চলে গেলাম ঈদগাহের দিকে।

IMG_20230422_071957_256.jpg

IMG_20230422_072001431_BURST0005.jpg
Photography device: Infinix hot 11s
লোকেশন


আমরা ঈদগাহে পৌঁছানোর পূর্বেই অনেক মানুষ উপস্থিত হয়ে গেছে। আগে পরে অনেক মানুষ ঈদগাহে আসছিল। আমি ধীরে ধীরে হৃদয়ের গেটে প্রবেশ করে ভেতরে যাওয়ার চেষ্টা করলাম যেহেতু পা এখনো সঠিভাবে ঠিক হয়নি। হয়তো অসুস্থ অবস্থায় খুঁড়িয়ে খুঁড়িয়ে ভেতরে প্রবেশ করেছিলাম তারপরে খুব শান্তি লাগছিল আমি একদম হতাশ হয়ে গেছিলাম যে এবার নামাজ হয়তো পড়তে পারবো না তার পরেও ঈদগাহে পৌঁছাতে পারলাম এটাই সৃষ্টিকর্তার নিকট হাজার শুকরিয়া।

IMG_20230422_072248_944.jpg

IMG_20230422_072507236_BURST0015.jpg
Photography device: Infinix hot 11s
লোকেশন


আমাদের গ্রামে মোট চারটি মসজিদ রয়েছে, তার মধ্যে তিনটা মসজিদে জুমার নামাজ আদায় করা হয় অর্থাৎ তিনজন ইমাম রয়েছেন এছাড়াও মক্তব রয়েছে একটি মাদ্রাসা রয়েছে, তবে ঈদগাহে ঈদের নামাজ পড়ানোর দায়িত্ব আমার বড় আব্বার মেজো ছেলের তিনি আমাদের উত্তরপাড়া জামে মসজিদের ইমাম। উনি ঘোষণা করলেন সবাই একটু উঠে দাঁড়াই এরপরে ঠিকভাবে বসি যেন লাইন শৃঙ্খলা বিন্যাস হয়। আমরা তার কথা মত সকলে উঠে দাঁড়ালাম তখনও পেছনে লোকে করলাম অনেক মানুষ গেটের বাইরে এখনো আসছেন। ঈদের নামাজের সময় দেওয়া ছিল সকাল সাড়ে সাতটা। যাই হোক যে যার মত এসে উপস্থিত হতে থাকলো এবং কাতারবদ্ধভাবে দাঁড়ালো। আমার বাংলা ব্লগ কমিউনিটির সদস্য হিসেবে পাশাপাশি বসে ছিলাম আমি, মারুফ,মুস্তাফিজুর, আমার বড় ভাই বিদ্যুৎ এবং জাহিদ। তুহিন ভাই কোথায় ছিল তা আমার জানা নেই। যাইহোক পাশাপাশি বসে ফটো ভিডিও করার চেষ্টাও করেছিলাম নিচে লক্ষ্য করলে তা দেখতে পারবেন।
IMG_20230422_072459_100.jpg

IMG_20230422_074637_110.jpg

IMG_20230422_072814_4.jpg


Photography device: Infinix hot 11s
লোকেশন


নির্ধারিত সময়ে নামাজ হয়ে গেল এরপর ইমাম সাহেব খুতবা পড়া শুরু করলেন। আমরা যে যার মত মনোযোগ সহকারে ইমামের কথা শোনার চেষ্টা করলাম আর খুতবা শেষে প্রত্যেক লাইন থেকে নির্ধারিত মানুষেরা টাকা আদায় করল আমরা যে যার সাধ্যমতো ১০০ থেকে ১০০০০ করে টাকা জমা করলাম। পরবর্তীতে ইমাম ঘোষণা করলো আজকের ঈদের জামাত শেষে ঈদগাহে কালেকশন হয়েছে প্রায় এক লাখের মতো। কেউ সরাসরি নগদে টাকা দিয়েছে, কেউ লাইনের টাকা দিয়েছে, আবার ওয়াদাবদ্ধ হয়েছে এভাবেই প্রায় এক লাখ টাকা কালেকশন কথাটা শুনে খুব খুশি লাগলো আমার। যা ঈদগাহের উন্নয়নের জন্য পরবর্তীতে কাজে লাগবে।

IMG_20230422_075855_947.jpg

IMG_20230422_072916912_BURST0010.jpg
Photography device: Infinix hot 11s
লোকেশন

নামাজ শেষে আমারা যে সমস্ত বাংলা ব্লগের ব্লগাররা রয়েছি একসাথে উপস্থিত ছিলাম তারা চেষ্টা করলাম একসাথে ফটো ও সেলফি তোলার জন্য। এই মুহূর্তে আমাদের সবার মনে খুব ভালো লাগছিল। তবে সবাই একটু আফসোস করছিল আমার পায়ের সমস্যার জন্য। যাই হোক সৃষ্টিকর্তার অশেষ মেহেরবানীতে অনেক ওষুধ খাওয়া ও শরীরের সমস্যা হওয়ার পরেও আজ অনেকটা স্বাভাবিক ও সুস্থ অবস্থায় ফিরে এসেছি ইনশাল্লাহ কয়েক দিনের ভিতরে পুরাপুরি সুস্থ হয়ে যাব আশা করি। আর এভাবেই ঈদগাহের সুন্দর একটি আনন্দঘন মুহূর্তে নামাজ আদায় করে বাড়ির দিকে পুনরায় রওনা দিলাম। আমাদের ঈদগাহের দৃশ্য আপনাদের মাঝে তুলে ধরার জন্য ফটোগ্রাফির পাশাপাশি ভিডিও ধারণ করেছি আশা করি আপনারা দেখে নিবেন।

IMG_20230422_082523_630.jpg

IMG_20230422_082559314_5.jpg


Photography device: Infinix hot 11s
লোকেশন


পোস্টটি পড়ার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ।

received_434859771523295.gif


পুনরায় কথা হবে পরবর্তী কোন পোস্টে, ততক্ষণ ভালো থাকা হয় যেনো। আল্লাহ হাফেজ।

TZjG7hXReeVoAvXt2X6pMxYAb3q65xMju8wryWxKrsghkLbdtHEKTgRBCYd7pi9pJd6nDf4ZPaJpEx3WAqvFVny2ozAtrhFXaDMnAMUAqtLhNESRQveVFZ7XHcED6WEQD48QkCkVTAvNg6.png

Authors get paid when people like you upvote their post.
If you enjoyed what you read here, create your account today and start earning FREE STEEM!
Sort Order:  

আবহাওয়ার এই বৈশ্বিক পরিস্থিতিতে অনেকেই অসুস্থ হয়ে পড়েছে হঠাৎ করে রোজা ভাঙ্গার পরে।।
বিশেষ করে জ্বর বমি এবং ডায়রিয়ার মত রোগে বেশি আক্রান্ত হচ্ছে মানুষ।।
যাহোক আপনার সুস্থতা কামনা করছি এবং ঈদের খুশি ভালোভাবে সবার সাথে শেয়ার করে নিন।।

হ্যাঁ বিভিন্নভাবে বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত হচ্ছে

প্রথমে আপনার সুস্থতা কামনা করছি ।আসলে অসুস্থ হলে কোন কিছুই ভালো লাগেনা ।আপনি প্রথমে ভেবেছিলেন আপনি ঈদগাহে যেতে পারবেন না। কিন্তু পরবর্তীতে আল্লাহর অশেষ রহমতে ঈদের নামাজ সম্পন্ন করতে পেরেছেন আপনাকে অনেক ধন্যবাদ।

সবকিছু আপনাদের দোয়া আপু

ঈদগাহ মাঠে নামাজ পরার মজা আলাদা। অনেক দিন হলো এভাবে নামাজ পরা হয়ে উঠেনা। ঈদুল ফিতরের সালাতে অংশগ্রহণ করেছে দেখে ভালো লাগলো। দোয়া করি তারাতারি সুস্থ হয়ে উঠবেন।

ঈদের নামাজ ঈদগাহ ছাড়া মানায় না ভাই

ভাইয়া আপনি অসুস্থ আছেন শুনে খুবই খারাপ লাগলো। অনেক কষ্ট করে ঈদগাহে গেছেন নামাজ আদায় করতে। সবাই এক সাথে ঈদগাহে নামাজ আদায় করে অনেক গুলো ফটো তুলেছন। এক ফ্রেমে আমার বাংলা ব্লগের তিনজন মেম্বারকে দেখতে পেলাম। ধন্যবাদ ভাইয়া।

তিনজন নয় ভাই পাঁচজনই বাংলা ব্লগের মেম্বার