ওয়াজ মাহফিলের মেলা থেকে জিলাপি খাওয়ার অনুভূতি

in hive-129948 •  last month 


আসসালামু আলাইকুম




হাই বন্ধুরা!

কেমন আছেন সবাই? আশা করি, সৃষ্টিকর্তার অশেষ রহমতে অনেক অনেক ভালো রয়েছেন। আমিও আপনাদের দোয়ায় অনেক ভালো রয়েছি। 'আমার বাংলা ব্লগ'এর সকল ভাই-বোন বন্ধুদেরকে আমার পক্ষ থেকে সালাম এবং অভিনন্দন জানিয়ে শুরু করতে যাচ্ছি আজকের নতুন একটি পোস্ট। ভ্রমণ করতে কার না ভালো লাগে। আমরা সবাই অজানা অচেনা স্থানগুলোকে দেখার জন্য ছুটে চলি সুযোগ পেলেই। তবে হঠাৎ করে চেনা পরিচিত স্থান নতুন ভাবে সাজিয়ে তোলা যায়, তাহলে মানুষের আকর্ষণ সৃষ্টি হয়। হ্যাঁ বন্ধুরা ঠিক তেমনি সুপরিচিত একটি স্থানে ওয়াজ মাহফিলের আয়োজন এবং বিভিন্ন খাবার সামগ্রী মেলা বসানো দেখতে খুবই ভালো লাগে। ঠিক তেমনি আজকের এই ভ্রমণ স্থান, যেখানে উপস্থিত হয়েছি এবং আপনাদের জন্য ফটো ধারণ করে এনেছি। পাশাপাশি থাকবে দারুন দারুন অনুভূতি বেশ কয়েকটা পর্বে। আজকের বিষয়টা থাকবে জিলাপি খাওয়ার অনুভূতি।

IMG_20241117_195343_827.jpg

photography device:
Infinix Hot 11s

What3words Location


ফটোগ্রাফি সমূহ:


কাল বিকেল মুহূর্তে নিকটস্থ হাট বোয়ালিয়া বাজারে উপস্থিত হয়েছিলাম। যাওয়ার পথে নিজেদের গ্রাম অতিক্রম করে করিম মোড় এরপর বাতান পাড়া নামাক স্থানের মাদ্রাসা প্রাঙ্গণে লক্ষ্য করে দেখলাম ওয়াজ মাহফিলের আয়োজন চলছে। আমি ওয়াজ মাহফিলের মেলাগুলো ভ্রমণ করতে পছন্দ করি। যাওয়ার কথা মনে মনে ভাবলাম সন্ধ্যা বেলায় আসতে পারি কিনা। এরপর হার্ট বোয়ালিয়াতে কাজ সেরে বাড়ির দিকে রওনা দিলাম। আসতে পথে হেমাতপুর বাজারে গাড়ি যানজটের কারণে মোটরসাইকেল স্লো করলাম। সেখানে দেখলাম খুব সুন্দর জিলাপি ভাজা চলছে। খাওয়ার ইচ্ছে হলো। গাড়ি রাখার ঝামেলায় আর থামা হলো না খাওয়া হলো না। তাই মনে মনে ভাবলাম রাত্রে অবশ্যই ওয়াজ মাহফিলের এখানে আসবো এবং জিলাপি খাব। তবে আমি একা বাইরে তেমন চলি না। ভালোলাগার বিষয়গুলো আমার বন্ধু মারুফের সাথে শেয়ার করি একসাথে চলি। বাড়িতে আসলাম সন্ধ্যা হল,মাগরিবের পর বন্ধুকে ফোন দিলাম। মারুফ রাজি হয়ে গেল, বলল এখন যাবি না পরে। বললাম এখনি যাবো। বন্ধু চলে আসলো। আমার মোটরসাইকেল টা বের করে তাকে দিলাম চালাতে। এরপর কাঙ্ক্ষিত ওয়াজ মাহফিলের মেলার মধ্যে চলে গেলাম।

IMG_20241117_194856_518.jpg

IMG_20241117_195144_995.jpg

IMG_20241117_195152_697.jpg


দুজনার মাথাতে রয়েছে জিলাপি খাওয়ার বিষয়টা। বন্ধু মারুফকে বললাম মোটরসাইকেলটা একটু সাইড করে রাস্তার কোন পাশে রাখতে। এরপর মেলাগুলো ঘুরে ঘুরে দেখতে থাকলাম আর সুন্দর সুন্দর ফটো ধারণ করলাম। ততক্ষণে মারুক তার বাচ্চাদের জন্য খেলনা জাতীয় জিনিস কেনার চেষ্টা করছে। এদিকে আমিও ফটো ধারণ করছি এভাবে সামনের দিকে এগিয়ে গেলাম। সামনের দিকে এগিয়ে যেয়ে দেখলাম অনেক মানুষের উপস্থিতি। ওয়াজ মাহফিলের প্যান্ডেলে বক্তা মাইক ধরে বকবক করছেন বিভিন্ন বিষয় নিয়ে কিন্তু মানুষের কর্ণপাত সেদিকে নেই। সবাই যেন মেলা ঘুরে ঘুরে এটা সেটা খাওয়া-দাওয়া কেনাকাটায় ব্যস্ত। যুবক ছেলে মেয়ের আবির্ভাব বেশি বৃদ্ধ মানুষ বয়স্ক মানুষের সংখ্যা খুবই কম। সবকিছু অতিক্রম করে চলে গেলাম কোথায় জিলাপি ভাজা হচ্ছে। লক্ষ্য করে দেখলাম অনেক সুন্দর ফুচকা,বারো ভাজ, ঝাল মুড়ি, রঙিন পান, সহ আরো অনেক খাবারের আইটেম বিক্রয় চলছে। আমাদের দুই বন্ধুর টার্গেট জিলাপি, জিলাপি খাওয়ার পরে অন্য কিছু।

IMG_20241117_195208_696.jpg

IMG_20241117_195114332_BURST0001_COVER.jpg

IMG_20241117_195348_354.jpg


গ্রামের সুপরিচিত জিলাপি তৈরি করা এক ব্যক্তির জিলাপি ভাজতে দেখলাম। তার কাছ থেকে হাফ কেজি গুড়ের এবং হাফ কেজি চিনির জিলাপি ১৬০ টাকা দিয়ে কিনে ফেললাম। এরপর চিন্তা আসলো কোথায় বসবো আর কিভাবে খাব। কারণ এরা বসার কোন ব্যবস্থা করেনি। অন্যদিকে দেখলাম যারা ফুচকা বিক্রয় করছে তারা বেশ অনেক করে চেয়ার নিয়ে এসেছে। ঝাল জাতীয় জিনিস পরবর্তীতে খাওয়ার চিন্তা ছিল। যায় হোক, চিন্তা করলাম বাতানপাড়া মাদ্রাসা থেকে একটু পশ্চিমে অর্থাৎ আমাদের গ্রামের রাস্তার মোড়েই রয়েছে বেশ কিছু দোকান। সে দোকানের বসার জায়গায় বসে খাওয়া দাওয়া করে নাই। সেখানে দুইটা পানি খাওয়ার টিউবওয়েল রয়েছে। যেমন চিন্তা, তেমনি কাজ।

IMG_20241117_195342_763.jpg

IMG_20241117_195346_142.jpg


বন্ধুকে বললাম, খাওয়ার বিষয় বসে খাওয়াই ভালো। তাই দোকানের ওখানে চলে গেলেই ভালো হয়। মোটরসাইকেল টান দিল চলে আসলাম করিম মোড়ের দোকানে। এরপর দুই বন্ধু বসে পড়লাম। মারুফ বলেছিল এত জিলাপি দুইজন খাওয়া সম্ভব নয়। সাথে একটু বারো ভাজা অর্থাৎ ঝাল জাতীয় জিনিস নিয়ে যায়। একটা না মিষ্টি জাতীয় জিনিস খাওয়াটা আমার পক্ষেও সম্ভব হয় না। যাই হোক দুই বন্ধু বসে পড়লাম। কিছুটা সময় ধরে বিভিন্ন বিষয় নিয়ে আলাপ-আলোচনা করতে থাকলাম আর খেতে থাকলাম ইচ্ছে মতো। বয়স ৩০ হয়ে গেল কিন্তু লাইফটাকে এনজয় করতে শিখলাম না। বিবাহ করে সন্তানের বাবা হয়ে গেলাম তারপরেও এনজয় বুঝলাম না। তাই বন্ধুর সাথে এই নিয়ে অনেক কথা হলো। মন থেকে ইচ্ছে যখন যেটা হবে সেটাই পূরণ করার চেষ্টা করব। যেহেতু হাতে মোটরসাইকেল রয়েছে, যখন তখন তেল লোড করব আর এলাকার বিভিন্ন জায়গায় ঘুরে বেড়াবো ফটো ধারণ করব। কিছুটা হলেও তো মন প্রশান্তিতে থাকবে। যাই হোক মারুফ বলল আমি ভাবিনি, তুই আমাকে সাথে নিয়ে এসে এভাবে এক কেজি জিলাপি কিনে খাওয়াবি। কারণ আমি জিলাপি তেমন একটা খাই না। কিন্তু এ বছর যেন জিলাপি খাওয়ার প্রতি বেশ মন মানসিকতা সৃষ্টি হয়েছে। আর সে জায়গায় নিজের বন্ধুকে খাওয়াবো না, তাহলে খাওয়াবো কাকে?

IMG_20241117_200530_525.jpg

IMG_20241117_200630_533.jpg

IMG_20241117_200632_095.jpg


বিভিন্ন গল্পে গল্পে বড়জোর হাফ কেজি পর্যন্ত জিলাপি খেতে পারলাম দুইজন। এরপর বাকি হাফ কেজি মতো গুড় ও চিনি দিয়ে তৈরি করা জিলাপি থেকে গেল। কি আর করার। দোকানের পাশের টিউবওয়েল থেকে পানি পান করে মোটরসাইকেলে বাকি জিলাপি বাঁধিয়ে রাখলাম। এরপর আবার দুজন চলে আসলাম ওয়াজ মাহফিলের মেলাগুলোর মধ্যে। এরপর সেখান থেকে ফুচকা, বারো ভাজ, ডিম সিদ্ধ সহ বেশ কিছু জিনিস খাওয়া দাওয়া করলাম। আরো ঘুরাঘুরি করলাম কিছুটা সময়ের জন্য। অবশেষে কয়েকটা প্রয়োজনীয় জিনিস কিনে দুই বন্ধু বাড়ির দিকে রওনা দিলাম।

IMG_20241117_202655_162.jpg

IMG_20241117_202929_886.jpg

IMG_20241117_195405_537.jpg




পোস্টটি পড়ার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ।

received_434859771523295.gif

পোস্ট বিবরণ


ব্লগারsumon09
ডিভাইসInfinix Hot 11s
লোকেশনWhat3words
ক্যামেরা50mp
দেশবাংলাদেশ


পুনরায় কথা হবে পরবর্তী কোন ভ্রমণ বিষয়ক পোস্টে, ততক্ষণ ভালো থাকবেন সবাই। সকলের জন্য শুভকামনা রইল,আল্লাহ হাফেজ।

TZjG7hXReeVoAvXt2X6pMxYAb3q65xMju8wryWxKrsghkLbdtHEKTgRBCYd7pi9pJd6nDf4ZPaJpEx3WAqvFVny2ozAtrhFXaDMnAMUAqtLhNESRQveVFZ7XHcED6WEQD48QkCkVTAvNg6.png

Authors get paid when people like you upvote their post.
If you enjoyed what you read here, create your account today and start earning FREE STEEM!
Sort Order:  

Upvoted! Thank you for supporting witness @jswit.

শীতের দিনে গ্রামীণ পরিবেশে মেলা কিংবা ওয়াজ মাহফিলে বেশ জমে যায়। কারণ সেখানে গ্রামীন নাস্তাগুলো খেতে খুবই ভালো লাগে। বিশেষ করে শীতের দিনে গরম গরম জিলাপি খেতে আমার খুবই পছন্দের। আপনার শেয়ার করা ফটোগ্রাফি এগুলো এবং মুহূর্তটি পড়ে খুবই ভালো লাগলো।

এবার আশেপাশের ওয়াজ মাহফিল গুলোতে ইচ্ছে মত জিলাপি খাব।

মিষ্টি খাবার আমার তেমন একটা পছন্দের না। তবু ও জিলাপি খেতে বেশ ভালোই লাগে আমার কাছে। আপনি দেখছি ওয়াজ মাহফিলের মেলায় ঘোরাঘুরি করছেন এবং জিলাপির দোকান থেকে জিলাপি খেয়েছেন। বর্তমান সময়ে প্রতিটি ওয়াজ মাহফিলের মেলা থেকেই জিলাপি পাওয়া যায়। জিলাপি গুলো দেখে মনে হচ্ছে বেশ মজাদার ছিল।

হ্যাঁ ভাই জিলাপি সহ আরো অনেক কিছু পাওয়া যায়।

এই সময় বিভিন্ন জায়গায় মাহফিল হচ্ছে। আর মাহফিলে যেতেও অনেক ভালো লাগে। আপনি মাহফিলে গিয়ে জিলাপি খেয়েছেন জেনে ভালো লাগলো ভাইয়া। গরম গরম জিলাপি খেতে সত্যি অনেক ভালো লাগে।

হ্যাঁ একদম ঠিক বলেছেন। একদম গরম গরম নিয়েছিলাম।

দুই বন্ধু মিলে জিলাপি খাওয়ার দারুন অনুভূতি শেয়ার করেছেন। জিলাপি বিক্রেতা কয়েকটা চেয়ার রাখলে বেশ ভালই হতো। আপনাদের আর কষ্ট করে করিমমরে এসে খেতে হতো না। তবে ওয়াজ মাহফিলের মেলা থেকে জিলাপি খাওয়ার দারুণ অনুভূতি শেয়ার করেছেন।

তবে নিরিবিরি জায়গায় খেতে পেরেছি

শীতকাল মানেই মাহফিলের আসর, শীতে সিজেনে বেশি বেশি ওয়াজ মাহফিল হতে দেখা যায়। ওয়াজ মাহফিল শুনতে গিয়ে গরম গরম জিলাপির খাওয়ার মজাই অন্যরকম। আপনার পোস্টটি পড়ে অনেক ভালো লাগলো ভাই ধন্যবাদ অনেক সুন্দর একটি পোস্ট শেয়ার করবেন।

হ্যাঁ এই সময় বৃষ্টির সম্ভাবনা থাকে না তাই।