হ্যালো বন্ধুরা,
আপনারা সবাই কেমন আছেন? আশা করি, সৃষ্টিকর্তার অশেষ রহমতে অনেক অনেক ভালো রয়েছেন। আমিও আপনাদের দোয়ায় অনেক ভালো রয়েছি। 'আমার বাংলা ব্লগ'এর সকল ভাইবোন বন্ধুদেরকে আমার পক্ষ থেকে সালাম এবং অভিনন্দন জানিয়ে শুরু করতে যাচ্ছি আজকের নতুন একটি পোস্ট। কিছুটা আবেগ অনুভূতি ও জাগ্রত বিবেক দিয়ে দেশপ্রেমের অনুভূতি প্রকাশ করলাম।
বেশ কিছুদিন ধরে ছোটবেলার ঈদের দিনের কথা মনে পড়ছে। মোবাইলের গ্যালারি চেক করে দেখলাম ঈদের দিনের ধারণ করা বেশ কিছু ফটো রয়েছে। এগুলো এবার রোজার ঈদের ফটোগ্রাফি। কোরবানির ঈদে গ্রামে ঈদ করতে পারি নাই। আর এর পাশাপাশি মনে পড়ছে একই গায়ে একই সামিয়ানার নিচে অথবা খোলা আকাশের নিচে গ্রামের সর্বস্তরের মুসলিম সালাত আদায় করেছি। আসলে এই ধর্ম আমাদের শিক্ষা দেয়, ধনী গরিব নির্বিশেষে শোহাদ্দপূর্ণ আচরণ নিয়ে একই কাতারবদ্ধ হয়ে সালাত আদায় করার। আর এই একটি শিক্ষা মানুষের জীবনে বিভিন্ন ক্ষেত্রে একই রকম ভূমিকা পালন করে থাকে। আমরা যে যেখানেই থাকি না কেন সবার সাথে একই আচরণ বজায় রাখতে হবে যেটা অন্যের মনে আঘাত দিবে না। অন্যের দুঃখগুলো আমাদের অনুভবে বুঝতে হবে। কিন্তু আজকের যে পরিস্থিতি দুনিয়ার বুকে বিরাজমান, সেক্ষেত্রে এই শিক্ষাটা একান্ত প্রয়োজন। শুধু শিক্ষা জানলে হয় না সেগুলো মনে লালন করতে হয়। ভেবেচিন্তে দেখা যায় এভাবেই কাতারবদ্ধ অনেক মানুষ আমরা সালাত আদায় করেছি একসাথে চলেছি, একসাথে অনেক কিছুতে ওয়াদাবদ্ধ করেছি কিন্তু আজ কিছু স্বার্থের টানে অনেক সময় একে অন্যের মনে আঘাত দিয়ে থাকি। মনে থাকলেও ভুলে যাই এই শিক্ষার কথা শুধু স্বার্থের জন্য।
ছোটবেলায় ঈদগায় যখন আমরা সালাত আদায় করতে যেতাম তখন প্রাইমারির বন্ধুদের সাথে দেখা হলে পারে কত সুন্দর হাসি আনন্দের কথা বলেছি। এক পাড়ায থেকে আরেক পাড়া ঈদগা। বাড়ি থেকে বের হওয়ার পূর্বে মনে মনে ভাবতাম আমাদের ওই বন্ধুর সাথে দেখা হলেই হয়। এই যে মনের টান এ সমস্ত মনের টান গুলো কবে কখন যেন মানুষের মন থেকে দূর হয়ে যায়। ঠিক তেমনি দূর হয়ে যায় নৈতিক শিক্ষা। যদি ছোটবেলার মতো সবার মনের মধ্যে ভালোলাগা মায়ার বন্ধন থাকতো তাহলে কেউ কাউকে আঘাত দিতে পারতো না। বেশ কিছুদিন ধরে আমরা দেশে এক অন্যরকম অরাজকতা লক্ষ্য করে চলেছি। সত্যি এগুলো মনকে কষ্ট দেয়। আমরা বাঙালি শান্তি প্রিয় মানুষ। আমরা রুচিশীল বিনোদন পছন্দ করি, মারামারি পছন্দ করি না। আমরা একে অপরের সাথে সুন্দর আচরণ পছন্দ করি,হিংসা পছন্দ করি না। আমরা চাই সবাই মিলে নির্বিশেষে দেশটাকে সুন্দর পর্যায়ে গড়ে তুলি। কিন্তু কিছু নোংরা শ্রেণীর মানুষ থেকে থাকে যারা নিজেদের স্বার্থের জন্য পাশের মানুষটার বুকে লাথি দিতেও কম করে না।
ঈদগাহে যেমন আমাদের দুইটা ভাইকে একসাথে দেখছেন, ঠিক তেমনি এখনো একসাথে চলাচল। ইনশাল্লাহ দীর্ঘদিন এভাবেই চলব ভাই ভাই কাঁধে হাত রেখে। তবে অনেকেই আমাদের দুইজনার একসাথে চলাচল দেখে বলে থাকেন এদের মধ্যে এত মিল। যারা মেয়েরা ছিল পাড়া প্রতিবেশী, বিয়ে হয়ে অন্য গ্রামে চলে গেছে। বহুদিন পর মায়ের বাসায় এসে দেখলে একই রকম দেখে, তাই বলে দুইটা ভাই মিল রয়েছে, একই সাথে চলে। ঠিক আমি মনে করি আমাদের সবার মনের মধ্যে এমন মিল তাল মৃত্যুর আগ পর্যন্ত রাখা প্রয়োজন, কারণ দুনিয়ার জীবন ছোট। কত জায়গায় দেখা যায় ভাইয়ে ভাইয়ে হানাহানি মারামারি জমির জন্য অর্থের জন্য স্বার্থের জন্য। অনেকে ভাই-বোন আপনজনদের খুন করতেও দ্বিধা করে না। সমজাতি ভাই-বোনরাও একইভাবে ক্ষতি করে চলেছে নিজের জাতি ভাইকে। তখন কি একটু বিবেকে বাঁধে না, আমরা না একই কাতারে সালাত আদায় করি, একই সাথে উঠবস চলাচল বসবাস খাওয়া-দাওয়া, একই ওয়াদায় আবদ্ধ। তারপরে কিভাবে নির্মম হত্যাকাণ্ড করে থাকি।
যে সমস্ত মানুষগুলো দেশের বিভিন্ন স্থানে লেখাপড়ার জন্য থাকে অথবা চাকরি করে, ঈদের সময় আমরা লক্ষ্য রাখতাম ওই মানুষটা ঈদে বাড়ি আসতে পেরেছে কিনা। তাকে না দেখলে আমরা বলাবলি করতাম অমুক জন বাড়িতে আসতে পারে নাই। যদি তাকে দেখতাম খুবই আনন্দ লাগতো ঈদে সবাই একত্রে ঈদগায়ে এসেছি বা গ্রামে ঘোরাঘুরি করছি। তবে বর্তমান দেশের পরিস্থিতি মোতাবেক আমাদের অনুভূতিটা যেন অন্যরকম হয়েছে, পাড়াগাঁয়ের যে সমস্ত ছাত্ররা এখনো বাড়ি ফিরেনি, প্রথমত চিন্তা হয়েছিল, বলাবলি হয়েছিল অমুক জন এখনো বাড়ি ফিরতে পারল না। তার কোন বিপদ হলো নাকি। যে গ্রামে কোন স্টুডেন্ট লাশ হয়ে আসছে তাহলে এত মায়া মমতায় ভরা গ্রামের মানুষ কিভাবে তা সইবে। আমার বাংলা ব্লগ কমিউনিটিতে আমরা যারা ডিস্কোড চ্যাটিং এ থাকি, নেট বন্ধের মুহূর্তে বুঝতে পেরেছিলাম যাদেরকে দেখি নাই; চিনি না;তারপরে কতটা আন্তরিকতা; ভালোবাসা আর মনের টান সৃষ্টি হয়েছে। আর সেখানে একই শহরে অবস্থান করা মানুষগুলো কিভাবে একে অন্যের বুকে আঘাত দেয়। বন্ধ হোক মানুষের মনের এই কুলাঙ্গার অনুভূতি, জাগ্রত হোক বিবেক,জাগ্রত হোক জাতি। একে অন্যের প্রতি মায়া মমতার দৃষ্টি নিয়ে ফিরে আসুক, ফিরে আসুক এদেশে আবার শান্তি শৃঙ্খলা। ঈদের সালাতের মত কাতারবদ্ধ হোক নিজ নিজ কর্মক্ষেত্রে, রাজনৈতিক স্বার্থ ভুলে। সুন্দর শান্তি শৃংখল স্বাধীন একটি মাতৃভূমি আমাদের কাম্য, যেখানে আমরা মুক্তমনে মনের ভাব প্রকাশ করতে পারবো, স্বাধীনভাবে পারব চলতে। একে অন্যের ব্যথায় ব্যথিত হব,সকল রাগ অহংকার ভুলে। এমনই একটা সোনার বাংলা কামনা করি। জয় হোক মানবতার, জয় হোক মনুষত্ববোধের, ফিরে আসুক শান্তি-শৃঙ্খলা বাংলার ঘরে ঘরে।
বিষয় | অনুভূতি প্রকাশ |
---|---|
ফটোগ্রাফি ডিভাইস | Infinix Hot 11s |
লোকেশন | গাংনী-মেহেরপুর |
ব্লগার | @sumon09 |
দেশ | বাংলাদেশ |
পোস্টটি পড়ার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ।
পুনরায় কথা হবে পরবর্তী কোন পোস্টে, ততক্ষণ ভালো থাকুন সবাই। আল্লাহ হাফেজ। |
---|
সত্যি আপনাদের দুই ভাইয়ের অনেক মিল। দোয়া করি সারাটা জীবন যেন এরকম মিলেমিশে থাকতে পারেন। এখন তো বেশিরভাগ পরিবার এই ভাই ভাই অনেক ঝামেলা চলে। তবে এখন বর্তমান দেশের অবস্থা খুবই খারাপ। এমন ভাবে চারিদিকে অত্যাচার হচ্ছে ভাই ভাই কেন মা-বাবাকে মনে হয় ছাড়ছে না। যাইহোক সব ভুলে আবার সবাই শান্তির পথে ফিরে আসুক এটাই কামনা করি। সবকিছু আবার আগের মত ঠিক হয়ে যাক।
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
দোয়া করবে যেন এই মিল থাকা সর্বদা।
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
এই দিনটা আসলেই আমাদের সকলের জন্য খুশির একটা দিন। এই দিনে আমরা সকলেই আমাদের ছোট বেলার সেই বন্ধুদের সাথে দেখা করার সুযোগ। সত্য কথা বলতে সকলের সাথে এমন সময় অতিবাহিত করতে পারে খুবই ভালো লাগে ।
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
একদম ঠিক
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
অনেক ভালো লাগলো ভাইয়া আপনার আজকের লেখা এই সুন্দর গুরুত্বপূর্ণ রাইটিং। মানুষ দুনিয়াতে দুদিনের কিন্তু তার মধ্যে কত ভেদাভেদ মারামারি হিংসা বিদ্বেষ। সবাই যদি একটু সচেতনভাবে বোঝার চেষ্টা করে তাহলে কিন্তু এগুলো হয় না।
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
হ্যাঁ এগুলা বন্ধ হওয়া প্রয়োজন
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit