🌿👰আমি তানহা তানজিল তরসা। আমি বাংলাদেশ 🇧🇩 থেকে বলছি। আমার স্টিমিট আইডির নাম @tanha001।
প্রিয় ভাই-বোনেরা..............
কেমন আছেন সবাই? আশা করি সবাই ভালো আছেন। আমিও আল্লাহর অশেষ রহমতে অনেক ভালো আছি।আশা করি আপনারাও আপনাদের পরিবার-পরিজনদের কে নিয়ে অনেক ভালো আছেন। আমার পরিবারের সকল সদস্য ও আল্লাহর অশেষ রহমতে অনেক ভালে আছে। আজ আমি আপনাদের মাঝে নতুন একটি পোস্ট নিয়ে হাজির হয়েছি। আমি প্রতি সপ্তাহে ভিন্ন ভিন্ন পোস্ট করার চেষ্টা করি, সেই সূত্র আজ আমি আপনাদের মাঝে একটি ক্রিয়েটিভ রাইটিং পোস্ট শেয়ার করবো।ক্রিয়েটিভ রাইটিং পোস্ট লিখতে এবং পড়তে দুইটাই আমি অনেক পছন্দ করি। আশা করি আমার লেখা ক্রিয়েটিভ রাইটিং পোস্ট আপনাদের কাছে অনেক ভালো লাগবে। চলুন তাহলে শুরু করা যাক।
"অভিশপ্ত রাতের জাদুঘর"
শহরের মাঝখানে অবস্থিত একটি প্রাচীন জাদুঘর। শত বছর আগে নির্মিত এই জাদুঘরটি দীর্ঘদিন ধরে জনশূন্য পড়ে ছিল। কিন্তু সাম্প্রতিক সময়ে শহরের মানুষ আবার এটি খুলে দেয়ার সিদ্ধান্ত নিল। যদিও অনেকেই বিশ্বাস করত, এই জাদুঘরটিতে অতিপ্রাকৃত কিছু আছে যা মানুষের দৃষ্টির আড়ালে লুকিয়ে থাকে।
রাতের আঁধার নেমে এলে, কয়েকজন উৎসাহী ইতিহাসবিদ ও পর্যটক দল জাদুঘরটি পরিদর্শনে গেল। তাদের বিশ্বাস ছিল জাদুঘরটি সম্পর্কে প্রচলিত কুসংস্কার কেবল পুরনো গল্প মাত্র। তারা মশাল হাতে জাদুঘরের ভেতরে প্রবেশ করল। প্রথমে কিছুই অস্বাভাবিক মনে হচ্ছিল না। কিন্তু ধীরে ধীরে তারা এক অদ্ভুত অনুভূতি টের পেতে শুরু করল, যেন কেউ বা কিছু তাদের প্রতিটি পদক্ষেপ নজরে রাখছে।
প্রথমে তারা জাদুঘরের প্রধান গ্যালারিতে প্রবেশ করল। সেখানে রাখা ছিল বিভিন্ন পুরাতন ভাস্কর্য, পেইন্টিং এবং আর্টিফ্যাক্টস। প্রতিটি শিল্পকর্ম যেন তাদের দিকে তাকিয়ে আছে তাদের ভেতরের অতৃপ্ত আত্মা দেখতে পাচ্ছে। একজন ইতিহাসবিদ একটি পুরনো পেইন্টিংয়ের সামনে দাঁড়িয়ে পড়ল। পেইন্টিংটিতে ছিল একটি অচেনা রমণীর প্রতিকৃতি, যার চোখের চাহনি অতল গহ্বরের মতো গভীর। হঠাৎ করেই সেই পেইন্টিংটির চোখে একটি অদ্ভুত ঝিলিক দেখা গেল, যেন তা জীবিত হয়ে উঠল।
অন্য একজন পর্যটক তখন পুরাতন একটি আয়না পরীক্ষা করছিল। আয়নাটির গায়ে ঝাপসা ধুলোর স্তর জমে ছিল। সে আঙ্গুল দিয়ে আয়নাটি মুছে ফেলতেই, আয়নার ভেতরে নিজের প্রতিচ্ছবি দেখে চমকে উঠল। কারণ সেখানে সে শুধু নিজেকে নয়, পেছনে আরেকটি ছায়ামূর্তি দেখতে পেল। কিন্তু পেছনে ফিরে তাকালে সেখানে কিছুই ছিল না। এই ভৌতিক অনুভূতি তাকে আতঙ্কিত করে তুলল।কিছুক্ষণ পরে পুরো দলটি জাদুঘরের নীচতলার দিকের একটি সেকেলে বদ্ধ ঘরে প্রবেশ করল। ঘরটি অন্যান্য স্থান থেকে অনেক বেশি ঠাণ্ডা ছিল। ঘরের মাঝখানে রাখা একটি পুরাতন কাঠের বাক্স যা দেখতে সাধারণ কোনো বস্তু নয়, বরং এটি যেন কারো গোপনীয়তা কোনো অন্ধকার ইতিহাস লুকিয়ে রেখেছে।
একজন সদস্য কৌতূহলবশত সেই বাক্সটি খুলতে গেল। বাক্সটি খুলতেই এক প্রচণ্ড বাতাসের ঝাপটা পুরো ঘর জুড়ে ছড়িয়ে পড়ল এবং ঘরের বাতি সব একে একে নিভে গেল। পুরো ঘরটা ঘুটঘুটে অন্ধকারে ঢেকে গেল। সেই মুহূর্তে ঘরের এক কোণ থেকে এক বিষণ্ণ কণ্ঠস্বর ভেসে এলো তোমরা এখানে কি চাও।সেই কণ্ঠস্বর এতটাই শীতল ও ভীতিকর ছিল যে সবাই আতঙ্কিত হয়ে চারদিকে তাকাতে লাগল। কিন্তু তারা কাউকেই দেখতে পেল না। হঠাৎ ঘরের ভেতর রাখা প্রতিটি প্রাচীন সামগ্রী জীবন্ত হয়ে উঠল। ভাস্কর্যগুলো তাদের চোখের সামনে নড়তে শুরু করল, দেয়ালের পেইন্টিংগুলো থেকে চিত্রগুলো যেন বেরিয়ে আসছে। তারা সবাই বুঝতে পারল, এই জাদুঘর শুধুমাত্র একটি প্রাচীন স্থাপনা নয় এটি একটি অভিশপ্ত স্থান যেখানে অতৃপ্ত আত্মারা আটকে আছে।সবাই পালানোর চেষ্টা করল কিন্তু দরজা যেন কোথায় হারিয়ে গিয়েছে। একের পর এক অদ্ভুত ঘটনা ঘটতে লাগল কেউ কেউ অনুভব করল তাদের পায়ে কে যেন টানছে, কেউ শুনল কান্নার আওয়াজ, কেউ আবার দেখল আয়নার ভেতর থেকে কেউ বেরিয়ে আসছে।
সবাই যখন প্রায় আশা ছেড়ে দিয়েছে তখন হঠাৎ ঘরের এক কোণে থাকা একটি মূর্তি নড়ে উঠল। সেই মূর্তির চোখ দুটি লাল রঙে জ্বলজ্বল করতে লাগল। মূর্তিটি ধীরে ধীরে তাদের দিকে এগিয়ে আসতে শুরু করল। ভয়ে সবাই জায়গায় স্থবির হয়ে দাঁড়িয়ে রইল। মূর্তিটি তাদের সামনে এসে দাঁড়ালো তারপর এক ভৌতিক হাসি হেসে বলল, এখান থেকে যাওয়ার কোনো উপায় নেই। তোমরা চিরদিনের জন্য এখানে বন্দি হয়ে থাকবে।
তারপরই, পুরো ঘরটি ধ্বংস হয়ে যেতে লাগল দেয়ালের গায়ে ফাটল দেখা দিতে শুরু করল, এবং মাটির নিচ থেকে এক ভয়ঙ্কর আওয়াজ উঠল। সবাই আতঙ্কে চিৎকার করে উঠল। জাদুঘর যেন নিজেই তাদের ভেতরে আটকে ফেলার চেষ করছিল। তাদের মনে হল চারদিকে অন্ধকার ঘনিয়ে আসছে, তারা ধীরে ধীরে সেই অন্ধকারের ভেতরে ডুবে যাচ্ছে।
শেষ পর্যন্ত, যখন পরের দিন সকালে জাদুঘর খোলা হল কোনো সদস্যেরই কোনো হদিস পাওয়া গেল না। শুধু সেই পুরানো ঘরটির মাঝখানে পড়ে ছিল সেই বাক্সটি আবার সিলমোহর করা। কেউই আর কখনো জানতে পারল না তারা কোথায় গেল কীভাবে হারিয়ে গেল। জাদুঘর আবারও বন্ধ করে দেয়া হলো, এবং এটি নিয়ে কোনো আলোচনা করার সাহস আর কেউ করল না।কিন্তু শহরের মানুষ আজও বিশ্বাস করে যে রাতের আঁধারে সেই জাদুঘরের দিকে কেউ পা বাড়ায়, সে আর কখনোই ফিরে আসে না।
মূলভাব:
গল্পের মূলভাব হলো এক প্রাচীন অভিশপ্ত জাদুঘর, যা অতিপ্রাকৃত শক্তির দ্বারা আচ্ছন্ন। শহরের কিছু কৌতূহলী ইতিহাসবিদ এবং পর্যটক দল এই জাদুঘর পরিদর্শনে গেলে তারা ভৌতিক ঘটনার সম্মুখীন হয়। জাদুঘরের প্রাচীন সামগ্রীগুলো ধীরে ধীরে জীবন্ত হয়ে ওঠে এবং তাদের ওপর আতঙ্ক ছড়িয়ে দেয়। তারা বুঝতে পারে যে এই জাদুঘরটি অভিশপ্ত এবং এটি থেকে পালানোর কোনো উপায় নেই। শেষ পর্যন্ত, তারা জাদুঘরে আটকা পড়ে যায় এবং কেউই আর তাদের খুঁজে পায় না। জাদুঘরটি আবারও বন্ধ করে দেয়া হয় এবং এটি নিয়ে কথা বলার সাহস কেউ আর করে না।
পোস্টের বিষয় | ক্রিয়েটিভ রাইটিং |
---|---|
পোস্টকারী | তানহা তানজিল তরসা |
ডিভাইস | রেডমি নোট ১১ |
লোকেশন | পাবনা |
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
এ ধরনের গল্প গুলো আমার কাছে অনেক ভালো লাগে পড়তে। যে গল্প গুলোর মধ্যে অনেক রহস্য লুকিয়ে থাকে, সেগুলো একটু বেশি ভালো লাগে। অভিশপ্ত রাতের জাদুঘর গল্পটা খুব সুন্দরভাবে শেয়ার করেছেন আপনি। অভিশপ্ত জাদু ঘরে কেউ গেলে সেখান থেকে আর ফিরে আসতে পারে না। এটা তো ভেবেই আমার অনেক বেশি ভয় লাগছে। এরকম জাদুঘর বন্ধ করে দিলেই ভালো। এত সুন্দর করে আপনি গল্পটা লিখেছেন, এটা দেখে অনেক বেশি ভালো লেগেছে আপু।
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ আপু আপনার মূল্যবান মতামত শেয়ার করে পাশে থাকার জন্য।
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit