" আম ডাঙ্গা করুণাময়ী কালী মন্দিরের ভ্রমণ ও ইতিহাস"

in hive-129948 •  3 years ago 

Hello
বন্ধুরা
আপনারা সবাই কেমন আছেন? আশা করি, আপনারা সবাই ভালো আছেন। আজকে আমি আপনাদের সাথে কোনো রেসিপি শেয়ার করবো না। আজ আমি আপনাদের সাথে শেয়ার করব আমার পছন্দের একটি জায়গা সম্পর্কে। আর তা হলো "আম ডাঙ্গা করুণাময়ী কালী মন্দির" । এটি আমার পছন্দের জায়গা গুলোর মধ্যে একটি। আমি দুটি ধর্মীয় স্থানে বেশি যাই পূজা করতে।
১. দক্ষিণেশ্বর কালীবাড়ি
২. আম ডাঙ্গা করুণাময়ী কালী মন্দির।
আমি প্রথম যখন আম ডাঙা কালী মন্দিরে যাই পূজা দিতে। সেই থেকে আমার ভালো লাগে।আমি ছেলেবেলা থেকে কালী মন্দিরে যেতাম। আর আমার মন খারাপ হলে ধর্মীয় গান শুনলে মন ভালো হয়ে যায়। তাই একটি সময় পেলে আমি পূজা দিতে যেতাম। এবারও তাই মনের কালিমা দূর করতে অতিপ্রাচীন আম ডাঙ্গা করুণাময়ী কালী মন্দির গেলাম। আমি আমাদের গাড়ি নিয়ে গিয়েছিলাম। গ্রাম্য পরিবেশে এমন নিরি বিলি স্থানে মন্দির টি কালী সাধকদের পরম শান্তির স্থান। শহুরের কোলাহল থেকে বিচ্ছিন্ন। কলকাতার এত কাছে এই কালী মন্দির। এটি অনেক প্রাচীন কালী মন্দির।এই মন্দিরের প্রতিটি স্তাম্ব দেখলে বোঝা যায়। এইবার গিয়ে আমি সেটি জানতে পারলাম। আগে আমি জানতাম না এর পুরানো ইতিহাস। এবার পূজা দিতে গিয়ে জানতে পারলাম। তাই ভাবলাম সেই ইতিহাস আপনাদের সাথে ও শেয়ার করি।আমি বেশি জানি না যেটুকু জানি সেটি আপনাদের সাথে শেয়ার করি।

IMG_20210209_155158.jpg
এই মন্দির টি বর্তমানে তারকেশ্বর মঠ মন্দির এর অন্তর্গত। প্রতি বছর ৯ পৌষ ২৫ শে ডিসেম্বর মন্দিরের বাৎসরিক অনুষ্ঠান ও পৌষ পার্বণ অনুষ্ঠিত হয়। এবং অনেক বড় মেলা হয়। মন্দির খোলা থাকে সকাল ১০ টা থেকে দুপুর ১ টা পর্যন্ত।আর বিকাল ৪ টা থেকে রাত নয়টা পর্যন্ত।এখানে মনসা তলা ও আছে। আর মা মনসার মূর্তি আছে। এখানে গিয়ে শুনছি এই মনসা তলায় দুধ ও কলা দিয়ে পূজা করলে তাকে আর সাপে কামড়ায় না। এখন যাওয়া যাক মূল ইতিহাসে।মুঘল আমলে তখন সিংহাসনে বসলেন হুমায়ূনের পুত্র আকবর। তার লক্ষ্য ছিল বিশাল এক সাম্রাজ্য বিস্তার করার। বাংলাদেশের এক বিশাল পরাক্রমশালী জমিদার ছিলেন যশোরের প্রতাবাদিত্ত। তার মনে ভক্তি ছিল অসীম। তিনি ছিলেন একজন নিষ্ঠাবান ও ধার্মিক জমিদার।তার আরাধ্য দেবী ছিলেন যোষ্রেশরী দেবী।সেই জমিদার কে পরাজিত করতে বাংলায় আছেন সেলিম। বিশাল সেনা বাহিনী নিয়ে আছেন আক্রমণ করতে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত সেলিম পরাজিত হয়ে ফিরে যান। তারপর আকবর এর কাছে যান রাজা মানসিংহ। মান সিংহ জানতে পারেন প্রতাবাদিত্তর আরাধ্য দেবীর কথা। এই কথা জানতে পেরে সেই দেবীকে চুরি করে আসেন। আর তখন জমিদার তার প্রধান পুরোহিতকে রামান্দকে তাড়িয়ে দেয়। রামানন্দ মনের দুঃখে পাগল হয়ে পথে পথে ঘুরে বেড়ায়। তখন মানসিংহ স্বপ্নে আদেশ পান। সেই অনুযায়ী রামানন্দকে খুঁজে বের করে মা করুণাময়ী কালী মন্দির প্রতিষ্ঠা করেন। এবং মন্দির প্রতিষ্ঠা করে মানসিংহ বাংলা ছেড়ে চলে যান।আর সেই পুরোহিত এর নাম অনুসারে রাম ও নন্দ অনুযায়ী নদী দেওয়া হয়। পরে সেটি পরিবর্তন করে আম ডাঙ্গা করুণাময়ী কালী মন্দির করা হয়।
১৭৬৫ সালে এ মন্দির পুনরায় প্রতিষ্ঠা করা হয়।এখানে আছে একটি পঞ্চোমুন্ড আসন। আরো আছে ১৪ টি শিব মন্দির। আরো আছে একটি বড় পুখুর।এটি একটি পুরনো ও জাগ্রত কালী মন্দির। প্রতিদিন বহুদূর থেকে অনেক লোক আছে এখানে পূজা দিতে।

IMG_20210209_153540.jpg

IMG_20210209_163408.jpg

IMG_20210209_155212.jpg

IMG_20210209_153648.jpg
পূজা দিয়ে ফিরে আসার সময় টিন টিন বাবু জেড ধরে বসলো ও গাড়ি চালাবে। আর আমি সেই পুকুর পাড়ে দাঁড়িয়ে কিছু ছবি তুলে নিলাম। টিনটিন বাবুর দুষ্টুমিতে আমাদের ভ্রমণ অনেক মজার হয়েছিল।
IMG_20210209_163405.jpg

Authors get paid when people like you upvote their post.
If you enjoyed what you read here, create your account today and start earning FREE STEEM!
Sort Order:  

খুব ভাল্লাগলো আপনার লেখনি পড়ে আর বেয়াহ অনেক কিছু জানতেও পারলাম।

বাবুটাকে অনেক কিউট লাগছে আজ, খুব দুষ্টমি করে না। খুব সুন্দরভাবে মন্দিরের ইতিহাসটি তুলে ধরেছেন। তবে পুকুর ঘাটে আপনার ফটোটি অসম্ভব সুন্দর লাগছে।

ধন্যবাদ, সুন্দর মন্তব্যের জন্য।

মন্দিরের পুরানো অতীত ইতিহাসটা উপস্থাপন করার জন্য ধন্যবাদ বৌদি । ছবি গুলো সুন্দর হয়েছে ।শুভেচ্ছা রইল।

আপনাকেও ধন্যবাদ

মন্দিরের ইতিহাস পড়ে ভালো লাগলো দিদি এবং ছবিগুলোও সুন্দর ছিল।ধন্যবাদ

খুব সুন্দর জায়গায়, আপনার লিখা এবং ছবিগূলোর মধ্যদিয়ে উপভোগ করলাম।

ছবিগুলি খুব সুন্দর।মন্দিরটি খুবই ভালো লাগলো দেখে। মন্দির ভ্রমণটি নিশ্চয়ই খুবই মজার ছিল।ধন্যবাদ বৌদি।

পোস্টটা অনেক ভালো হয়েছে। ছবিগুলো খুব সুন্দর হয়েছে। ধন্যবাদ শেয়ার করার জন্য।

সুন্দর ফটোগ্রাফির সাথে ব্যাখ্যাটি দারুন ছিলো, সহজেই সব জানা গেলো। তবে তার চেয়ে বেশী সুন্দর ছিলো টিনটিন বাবুর দৃশ্যগুলো। ধন্যবাদ