প্রেমের গল্প " সেই মায়াবী চোখ"(পর্ব - ১)

in hive-129948 •  2 years ago  (edited)

বন্ধুরা
আপনারা সবাই ভালো আছেন? আশা করি, আপনারা সবাই ভালো আছেন। আজ নতুন কিছু আপনাদের সাথে শেয়ার করবো। বেশ কিছুদিন ধরে ভাবছি একটা গল্প লিখবো কিন্তু কি লিখবো বুঝে উঠে পারছি না। কয়েকদিন আগে দেখছিলাম "আমার বাংলা ব্লগ" অনেকে প্রেমের গল্প লেখে। সেই সব গল্প পড়তে পড়তে ভাবলাম আমি একটু লেখার চেষ্টা করি। কিন্তু কি ভাবে কোথা থেকে শুরু করবো বুঝতে পারছিলাম না। আসলে আমি কোনদিন প্রেমের গল্প সেভাবে পড়া হয়নি এমনকি কোনদিন লিখতে ও যায়নি। এটাই আমার প্রথম লেখা। আমার কাছে প্রেমের গল্প কেমন একটা একঘেয়ে লাগে। তাই কখনো পড়ার ইচ্ছা হয় না। আমার সবথেকে ভালো লাগে ভূতের গল্প, ছোটদের গল্প, শিক্ষনীয় গল্প, আর রহস্যজনক গল্প এবং সবথেকে বেশি ভালো লাগে
রূপকথার বই। তবে বই পড়ার সময় খুব একটা পাই না বললেই চলে। তবুও মাঝে মাঝে পড়ার চেষ্টা করি। আশা করি, আমার লেখা গল্পটি আপনাদের ভালো লাগবে।তাহলে চলুন শুরু করা যাক।

IMG-20220718-WA0000.jpg

শ্রাবণী কে আমি পড়াই। প্রায় দুই বছর ধরে পড়াই, নিরুপমার বয়স ছিল ১৪ বছরের মেয়ে, এখন তার বয়স ১৬। কিন্তু ওর ঠাকুরদা বলেন, এই সবে বারো পেরিয়ে তেরোয় পা দিল।
কেমন যেনো সেই সনাতনী ভাব ওর বাপ - ঠাকুরদার। যতক্ষণ শ্রাবনীকে পড়াই ততক্ষণ সেই পুরনো আমলের শাসক ও প্রহরী রূপে সেখানে মোতায়েন থাকে, মাঝে মাঝে ও ঠাকুর দা নাতনিকে দেখতে আসেন। আর নিরুপমা তখন মুখ আরো নত করে রাখে। শীতে ও গ্রীষ্মে তাকে পুরোহাত জামা পড়তে দেখি। আর সে শরীরে এমনভাবে শাড়ি দিয়ে ঢাকা থাকে যে তার আঙ্গুল ছাড়া আর কিছুই দেখা যায় না।আর মুখখানা এত নিচু করে রাখে যে টানা টানা ভুরুর তলায় ফোলা ফোলা দুটি চোখের পাতা আর সরু নাকটি শুধু চোখে পড়ে। ্্্্্্্কি অদ্ভুত ছাত্রী আমার। এরকম বোবাকে পড়ানো যে কি দুঃসাধ্য সাধন তা কেবল আমি জানি। অনেকদিন বিরক্ত হয়ে কাজ ছেড়ে দিতে চেয়েছি। কিন্তু মন থেকে সায় পাইনি। মাস গেলেই দুই হাজার টাকা পাই। অতএব লজ্জাই স্ত্রী লোকের ভূষণ বলে শ্রাবনীকে দু বছর যাবৎ কেবল ক্ষমা করে আসছি। শ্রাবনীর ঠাকুরদা বলেন, তাদের শ্রাবনীর বয়স ১৩ হলে কি হবে দেখতে সে বেজায় বড় হয়ে গেছে, যদি ভালো ছেলে টেলে খুঁজে থাকে - আমি মুখে বলি" নিশ্চয় নিশ্চয়", আর মনে মনে ভাবি ওই বোবা কে বিয়ে করতে বয়ে গেছে মানুষের। এমন অশিক্ষিত লজ্জার স্তূপ নিয়ে মানুষ করবে কী? বাঁকা চোখে দেখি তার মুখের ভাব কিছু বদলালো নাকি, কিন্তু আশ্চর্য, চোখের পাতাটি পর্যন্ত তার নড়ে না।
আমার নাম আকাশ । থার্ড ইয়ারে উঠেই এই টিউশনি টা পেয়েছিলাম। বাবা টাকা পয়সার মালিক করে যাননি। বিধবা মাকে নিয়ে জ্যাঠার আশ্রয়ে দিন কাটাছিল। আমারে স্কলারশিপের টাকায় পড়া চলতো, এই টিউশনি টা পেয়ে হাতের স্বর্গ পেলাম। শ্রাবনীর বাবা সদানন্দ বাবু আমার বাবাকে চিনতেন এবং আমাদের বর্তমান অবস্থা জানতেন বলেই আমার ভাগ্য খুলছিলো।নয়তো আমার মতো একজন যুবক যে তাদের। মেয়ের মাস্টার করছে এটাই আমার জন্য অনেক।আমি রোজ সকাল ৭ বাজতেই পড়াতে যাই। গেলেই সর্বপ্রথম ঠাকুরদা উঁকি দেন, তারপর আসে শ্রাবনীর আমার ছোট ভাই নীরব - অবশেষে বই আর কাপড়ের স্তূপ সামলাতে সামলাতে এসে আমার উল্টো দিকে চেয়ারে বসে। লজ্জা যেনো ছোঁয়াচে,আমার ও যেন চোখ তুলে তাকাতে লজ্জা করে তবুও গলা- খাঁকারি দিয়ে নড়ে চড়ে বসি। নিঃশব্দে শ্রাবণী, হোম ওয়ার্ক এর খাতার বের করে, আর আমি সেটা টেনে নিয়ে ভুল থাকলে শুদ্ধ করি। ততক্ষণে শ্রাবণী ইংরেজি বইয়ের নির্দিষ্ট পাতায় চোখ ডুবিয়েছে। নির্ভুল গতিতে চলে এই নিয়ম।

Authors get paid when people like you upvote their post.
If you enjoyed what you read here, create your account today and start earning FREE STEEM!
Sort Order:  

Upvoted! Thank you for supporting witness @jswit.

বৌদি আপনার লেখা গল্পটির এবারের পর্বটি কিন্তু দারুণ হয়েছে। সত্যি বৌদি আপনার লিখার ধরন অনেক ভালো। আপনি কিন্তু দারুন লিখেন। আপনার লেখা কবিতা যেমন অসাধারণ হয় তেমনি গল্পটিও অসাধারণ হয়েছে। শ্রাবণী ও আকাশের গল্পটি শেষ পর্যায়ে কেমন হবে তা ভাবতেই আগ্রহ বেড়ে যাচ্ছে। সত্যি বৌদি গল্প পড়ে যদি সেই গল্পের প্রতি পাঠকের আগ্রহ বেড়ে যায় এবং জানার ইচ্ছা বেড়ে যায় তাহলে একটি গল্প লেখা সার্থক হয়। পরবর্তী পর্বের জন্য অপেক্ষায় রইলাম বৌদি। আশা করছি খুব শীঘ্রই পরবর্তী পর্ব শেয়ার করবেন। আর তর সইছে না😍।

বৌদি দেখি কবিতার মত করে গল্পও ‍খুব গুছিয়ে সুন্দর করে লেখেন। শ্রাবনী আত্নীয় বলেই আকাশ তাকে পড়ানোর টিউশন টা পেয়েছে। শ্রাবনীর মত লাজুক মেয়ে গুলো মাষ্টার মশাইয়ের কাছে পড়তে বসলেই মুখ লাল লাল হয়ে যায়। সুন্দর ছিল আজকের পর্বটি। আগামী পর্ব পড়ার অপেক্ষায় রইলাম।

বৌদি আপনার লিখার হাত কিন্তু বেশ ভালো। গল্পটা কিন্তু বেশ চমৎকার গুছিয়ে উপস্থাপন করেছেন প্রথম পর্ব। আশাকরি পরবর্তী পর্বগুলো আরো দারুন হবে 👌 শ্রাবনী এবং আকাশকে ঘিরে সামনে কি অপেক্ষা করছে জানার আগ্রহ সত্যিই বেড়ে গেছে। অপেক্ষায় রইলাম পরবর্তী পর্বের জন্য।

দিদি গল্পটি বেশ গুছিয়েই এগিয়ে নিয়েছেন।আমিও গল্প লেখা শুরু করেছি। আপনার গল্পে শ্রাবনী আর আকাশকে নিয়ে কি হতে যাচ্ছে, তাই এখন জানার অপেক্ষা করছি। আপনি কবিতা সুন্দর লিখেন, তাই নিঃসন্দেহে গল্পটা ও ভালো ই লিখবেন। আপনার উপস্থাপনা বেশ ভাল হয়েছে।আপনার মত আমিও ছোটদের গল্প, রহস্যজনক গল্প,ভুতের গল্প ও শিক্ষনীয় গল্প পছন্দ করি পড়তে। তবে রোমান্টিক গল্প, কবিতা পড়তেও আমার বেশ ভাল লাগে।দিদি আপনার পরবর্তী গল্পের অপেক্ষায় রইলাম। আশাকরি খুব শীঘ্রই পড়েতে পারব।অনেক ধন্যবাদ গল্পটি শেয়ার করার জন্য। অনেক অভিনন্দন আপনাকে। 💞🥰

বৌদি আপনার লেখার গল্পটির পর্বটি কিন্তু দারুন হয়েছে। বৌদি আপনার লেখা ধরন খুবই সুন্দর। আপনি কিন্তু দারুণ লিখেছেন আপনার আপনার লেখা গল্প অনেক অসাধারণ হয়েছে। কোন গল্প পড়তে যদি মজা লাগে তাহলে সেই গল্প পড়ে শেষ না করা পর্যন্ত মনের কাছে ভালো লাগে না। তাই আশা করছি শেষ পর্বটি অতি শীঘ্রই আপনি আমাদের মাঝে শেয়ার করবেন।

আমারও ভূতের গল্প,ও কাল্পনিক গল্প পড়তে ভালো লাগে।শ্রাবনী অনেক লাজুক প্রকৃতির মেয়ে।বয়স তার ১৩ বছর। এখনই বিয়ে দিবে, আগের দিনে এমনই হতো।যাই হোক মনে হচ্ছে প্রেম ভালোবাসার গন্ধ পাচ্ছি😜

দিদি প্রেমের গল্প " সেই মায়াবী চোখ"পর্ব - ১ এতো চমৎকার করে উপস্থাপন করেছেন যা পরে আমি মুগ্ধ না হয়ে পারলাম না।বৌদি গল্প লেখা আপনার দারুন একটি প্রতিভা যা ইতিমধ্যে আজকের এই গল্পটি পড়ে বুঝতে পারলাম।শ্রাবনী আত্নীয় বলেই আকাশ তাকে পড়ানোর টিউশন টা পেয়েছে। আসলেই শ্রাবনীর মত লাজুক মেয়েরা মাষ্টার মশাইয়ের কাছে পড়তে বসলেই মুখ কেমন যেন লাল লাল হয়ে যায়। এত চমৎকার একটি গল্প আমাদেরকে উপহার দেয়ার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ প্রিয় দিদি। আগামী পর্ব পড়ার অপেক্ষায় থাকলাম।♥♥

প্রেমের গল্প পড়তে আমার কাছে বেশ ভালো লাগে, কারন তাতে অনুভূতিগুলো আরো একটু চঞ্চল হওয়ার সুযোগ পায়। গল্পের শুরুটা ভালোই হয়েছে, মনে হচ্ছে আকাশের আকাশে রংধনুর বাতাস লাগবে, পড়তে হবে পরের পর্ব। ধন্যবাদ