"টিনটিন বাবুর কাকার জন্মদিনের কিছু মুহূর্ত"

in hive-129948 •  2 years ago 

বন্ধুরা
আশা করি, আপনারা সবাই ভালো আছেন। সবাইকে শুভেচ্ছা জানিয়ে শুরু করছি। জন্মদিনটা সবার কাছে একটা স্পেশাল দিন। আর জন্মদিনের আনন্দটা কিন্তু অনেক। আমি নিজের জন্মদিনে যতটা না খুশি হই তার থেকে বেশি খুশি হই আমার পরিবারের মানুষ গুলোর জন্মদিনে। আপনারা আগেই জানেন আমি বিয়ের পর এই বাড়ীতে আসার পর থেকে ওকে কখনো দেবরের চোখে দেখি না। আমার ভাইয়ের মতোই ওকে দেখি। আর আমি কখনো ওর বৌদি হতে চাইনি। আমি সব সময় চেয়েছি ওর বোন হতে। ওর মতো দেবর পেয়ে সত্যি অনেক খুশি। ভাইবোনের মধ্যে অনেক সময় ভুল বুঝাবুঝি ও কথা কাটাকাটি হয়ে থাকে। তেমনি আমাদের
মধ্যে ও হয়। কিন্তু আমরা কখনো সেটা ধরে নিয়ে থাকি না। কেউ কার ও উপর বেশিক্ষণ রাগ করে থাকি না। প্রতি বছর ওর জন্মদিনটা আমি সেলিব্রেশন করার চেষ্টা
করি। আর আমি যতদিন বেঁচে থাকবো ততদিনই করার চেষ্টা করবো। আমি চাই আমার সবকিছু দিয়ে এই পরিবারের মানুষ গুলোকে ভালোবাসতে এবং তাদের আনন্দে রাখতে। জানিনা কতদূর করতে পারি। তবে চেষ্টা করি। ভুলত্রুটি তো সবার মাঝে থাকে তেমনি আমার ও অনেক সময় ভুল হতে পারে। আর আমি সবাইকে নিয়ে আনন্দে থাকার মজাই আলাদা।
সবাইকে নিয়ে থাকা আমার মা ও বাবা শিখিয়েছে। আমার মা সবসময় জীবন নিয়ে শিক্ষা দিতো। আমার মা বাবা যেমন ভালোবাসতো তেমনি শাসন করতো।

IMG_20230411_235648.jpg

IMG_20230411_235706.jpg
আমি চির কৃতজ্ঞ আমার শ্বশুর ও শাশুড়ি মায়ের কাছে। যাদের জন্য আমি ভাইয়ের মতো একটা দেবর পেয়েছি। তবে আমি যে ভাবে ওর জন্মদিনটা সেলিব্রেশন করতে চেয়েছিলাম সেভাবে করে উঠতে পারিনি। আমি চেয়েছিলাম বাড়ীতে ধুমধামে সেলিব্রেশন করার। কিন্তু সবাই বললো বাইরে গিয়ে খাওয়া দাওয়া করবো। এই গরমে কষ্ট করে রান্না করতে হবে না। তারপর আবার বাবুর স্কুল আছে।
আমি ওকে জন্মদিনের আগের দিন রাত ১২ টার পরে সারপ্রাইজ দিতে চেয়েছিলাম তাই আমি আগ থেকেই চুপি চুপি সবকিছু কিনে এনেছিলাম। আর নিলয় কে বলেছিলাম তুমি আমার সাথে থেকে আমাকে সাহায্য করতে। যথারীতি রাতে খাওয়া দাওয়া শেষ করে ঘর সাজাতে লাগলাম। অনেক বেলুন দেখে টিনটিন বাবু খুশি হয়ে দৌড়ে গিয়ে ১২ টা বাজতেই ওর কাকার ঘরে গিয়ে নাচতে নাচতে কাকাকে উইশ করেছে। পড়ে এসে আনন্দে কেক কাটার জন্য অপেক্ষা করছে কাকার জন্য।

IMG_20230411_235739.jpg
ওর কাকাকে দিতেই ৫ মিনিট পর চলে আসলো। কাকা ভাইপো দুজনে মিলে একসাথে খুবই আনন্দ করে কেক কাটলো। আমরা ওকে কেক খাইয়ে দিলাম। রাতে বেশ আনন্দই করেছিলাম।
সকালে তাড়াতাড়ি উঠে ওর জন্য প্রথমে পূজা দিয়ে পায়েস রান্না করলাম। আর সামান্য কিছু রান্না করলাম। কারণ আমাদের প্রোগ্রাম ছিলো বাইরে খাওয়ার। তাড়াতাড়ি রান্না শেষ করে ওকে বললাম স্নান করে নিতে।বলেই আমি চলে গেলাম বাবুকে স্কুল থেকে আনতে। আমি বছরে প্রতিবছর ওর জন্য ঠাকুরের কাছে ওর নামে পূজো দেই। তারপর ওকে আশীর্বাদ করে পায়েস খাওয়াই। বিয়ের পর থেকে আমি ওর জন্য পায়েস রান্না করি। আমার শাশুড়ি মা আমাকে বলছিলো এখন থেকে তুমি ওর জন্য পায়েস রান্না করে খাওয়াবে। এই দায়িত্ব তোমার। সেই থেকেই আমি পালন করে আসছি। আমার সবকিছু তুমি করবে। সেই থেকেই আমি ভাবি একটা মেয়ের কাছে এর থেকে আর বেশি কি চাওয়ার থাকে।সেইদিন থেকে তারা আমার উপর সবকিছু ছেড়ে তারা নিশ্চিন্ত। আমি তো আগেই বলেছি ওর মতো দেবর পাওয়া ভাগ্যের ব্যাপার। আমি না চাইতে ঈশ্বর আমাকে অনেক কিছু দিয়েছে। ও অনেক ভালো মনের একটা মানুষ। আমার দেবর এর মতো এ রকম মানুষ দেখা যায় না। আমার মুখ দেখলে ও বুঝে যায়। আমার ছোট
ছোট আবদার গুলো ওই পূরণ করে। কিন্তু আমার উপর রাগ করে থাকে না। এবার মাঝে মাঝে বড় ভাইয়ের মতো বুঝায়। তাই বছরে দুটো দিন আমার কাছে খুবই স্পেশাল।

IMG_20230412_133229.jpg

IMG_20230412_205247.jpg

IMG_20230412_205240.jpg

IMG_20230412_224742.jpg
আমরা ওর জন্মদিনে কলকাতার বড় ফাইভ স্টার হোটেল বুক করেছিলাম। পড়ে ওর কিছু বন্ধুসহ আমরা গিয়েছিলাম। বেশ মজা হয়েছিলো। আমরা খাওয়া দাওয়া শেষ রাত ১১ টার দিকে বাড়ির উদ্দেশ্যে রওনা দিয়েছিলাম। আমি হোটেলের বেশি কোন ছবি ইচ্ছা করেই তোলা হয়নি। টিনটিন বাবুর কয়েকটি ছবি তুলেছিলাম। তবে ভেতরের কোন ছবি তোলা হয়নি। তাই আপনাদের সাথে শেয়ার করতে পারলাম না।

আজ এই পর্যন্তই। আবার নতুন কোন বিষয় নিয়ে আবার আসবো। সবাই ভালো থাকবেন। আশা করি,আজকের পোস্টটি আপনাদের ভালো লাগবে।আপনাদের মতামতের অপেক্ষায় রইলাম।

Authors get paid when people like you upvote their post.
If you enjoyed what you read here, create your account today and start earning FREE STEEM!
Sort Order:  

প্রথমেই ছোট দাদার জন্য জন্মদিনের শুভেচ্ছা রইল। আপনি যেমন সৌভাগ্যবতী হয়েছেন সেই পরিবারের সদস্য হতে পেরে, আমি মনেকরি তারাও আপনাকে পেয়ে অনেকটাই খুশি। কারণ আপনি বেশ ভালো মানুষ,বৌদি। বেশ ভালই উপভোগ করলাম আপনাদের পারিবারিক মুহূর্ত। এই আনন্দ ও বন্ধন প্রাণবন্ত থাকুক সর্বদা, এমনটাই প্রত্যাশা ব্যক্ত করছি।

বেশ ভালো লাগলো বৌদি, আপনি সত্যি দারুন একটা পরিবার পেয়েছেন এবং ভালোবাসা দিয়ে পুরো পরিবারটিকে আগলে রেখেছেন। আসলে জীবন নিয়ে যাদের প্রকৃত শিক্ষা রয়েছে তারা জীবনকে সুন্দরভাবে সাজাতে পারে এবং পরিবারের সুখ ধরে রাখতে পারে। পরিবারের এই সুন্দর বন্ধন সর্বদা অটুট থাকুক এই প্রার্থনা করছি।

টিনটিন বেশ আনন্দ করেছে সেটা তার হাসি মুখ দেখেই বুঝা যাচ্ছে, হোটেলের চেহারাটা কেমন জানি পরিচিত পরিচিত লাগছে, হি হি হি। যাইহোক অনেক অনেক শুভেচ্ছা রইল ব্ল্যাকস ভাইয়ের প্রতি, এই রকম সুন্দর কাটুক জীবনের প্রতিটি দিন।

হ্যা ভাইয়া আপনারা এসে সেখানে গিয়েছিলেন। ওখানে যাওয়ার কথা ছিল আগে আমার। কিন্তু আমার আগে আপনারা গিয়েছিলেন। তবে আমি খুবই খুশি হয়েছিলাম আপনারা এসেছেন শুনে। কিন্তু আফসোস আমার একটু ভাইয়াদের সাথে দেখা হলো না।

এটা কিন্তু আমাদেরও আফসুস ছিলো, আপনাকে না দেখে দাদাকে জিজ্ঞেসও করেছিলাম বৌদি, সত্যি বলতে আপনাকে, টিনটিনকে এবং স্বাগতা দিদিকে বেশ মিস করেছি।

Hello mem your instagram id plz

বাহ ছোট দাদার জন্মদিনে দেখছি ভালই আয়োজন করেছেন। যদিও দাদার জন্মদিনে অ্যাটেন্ড করার সৌভাগ্য আমাদের হবে না। তবু আপনার পোস্টের মাধ্যমে কিছুটা হলেও অনুভব করতে পেরেছি। ধন্যবাদ বৌদি ভালো থাকবেন।

খুব ভালো লাগলো বৌদি আসলে এই যুগে এমন বোন পাওয়া সত্যিই ভাগ্যের ব্যাপার যে ভাইয়ের জন্য সব সময় এত সুন্দর ভাবে নিঃস্বার্থভাবে ভাবে। আর আপনার কাছ থেকেই বুঝা যায় যে আপনি ব্ল্যাক্স ভাইকে কতো বেশি ভালোবাসেন। আয়োজনটা ও সত্যিই খুব দারুণ ছিল।

ভাইয়ের মতো একজন দেবর পাওয়া সত্যি ভাগ্যের ব্যাপার। ছোট দাদার জন্মদিনে আপনি নিজের মতো করে সব কিছু অ্যারেঞ্জ করেছেন দেখে ভালো লাগলো। সত্যি বৌদি আপনি অনেক ভালো মনের একজন মানুষ। তাইতো সবাইকে খুশি রাখার চেষ্টা করেন। আপনার লেখা গুলো পড়ে অনেক ভালো লাগলো।

জন্মদিন পালনের মুহূর্তগুলো কিছুটা অনুভব করতে পারলাম এই ফটোগ্রাফি গুলো দেখার পরে। পরিবারের সদস্যদের কে নিয়ে এই ধরনের অনুষ্ঠান করলে সত্যিই সেটা অনেক ভালো লাগে।

বৌদি অর্থ অনেক সে হতে পারে একজন জননী মায়ের মতো ৷ হতে পারে একটি পরিবারের সমস্ত দায়িত্ব নিয়ে পরিবারের সবার প্রতি লক্ষ্য রাখা ৷ আমি তো বলব দাদা বৌদি হলো দ্বিতীয় মা বাবা ৷ যা হোক আপনার জন্মদিন উইস করার মুহূর্ত টা বেশ সুন্দর ছিল ৷ সেই সাথে এভাবেই যেন সুখে পরিবারের একে অপরে প্রতি ভালোবাসা অটুট থাকে এমনটাই প্রতার্শা করি ৷

আজীবন ভাইবোনের মাঝে এরকম সম্পর্ক টিকে থাকুক। দিনশেষে পারিবারিই সবকিছু। পরিবারের মানুষগুলো যখন ভালো থাকে তখন নিজের মধ্যেও শান্তি লাগে। ভালোবাসার বন্ধনে অটুট থাকুক পরিবারের সকলের সম্পর্ক।

টিনটিনের হাস্য উজ্জ্বল চেহারা দেখে বেশ ভালো লাগলো। ও খুব আনন্দে আছে দেখেই বোঝা যাচ্ছে।

তবে বৌদি ছবিগুলো দেখে এক সেকেন্ডও দেরি হলো না চিনতে এইখান থেকেই তো ঘুরে আসলাম দুদিন আগে। কিন্তু দুঃখের বিষয় টিনটিন বাবু আর প্রিয় বৌদির সাথে দেখা হলো না।

💝 পরিবারের সাথে ভালো থাকুন বৌদি 💝

আমাদের প্রিয় ছোট দাদার জন্মদিন উপলক্ষে আপনার পোষ্টের কথাগুলো পড়ে আমার খুবই ভালো লেগেছে বৌদি। আমি আমাদের প্রিয় ছোট দাদার জন্য প্রাণ খুলে আশীর্বাদ করি যেন আমাদের ছোট দাদার জীবন শান্তিতে পরিপূর্ণ হয়ে ওঠে। আমাদের ছোট দাদার জন্মদিন উপলক্ষে অনেক সুন্দর একটি পোস্ট শেয়ার করার জন্য বৌদি আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ।

আসলে পরিবারের সবাইকে নিয়ে একসাথে মিলে মিশে থাকার মতো আনন্দ আর কিছুতেই নেই। আপনাদের পারিবারিক বন্ধন দেখে মনটা ভরে গেল বৌদি। আশা করি সারাজীবন অটুট থাকবে এই বন্ধন। আমাদের ছোট দাদার জন্মদিনে সবাই মিলে বেশ মজা করেছেন দেখছি। টিনটিন বাবুর হাসিমাখা মুখটা দেখে বেশি ভালো লাগলো। ছোট দাদার জন্মদিন বার বার ফিরে আসুক এই কামনা করছি। যাইহোক এতো সুন্দর অনুভূতি আমাদের সাথে শেয়ার করার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ বৌদি। পুরো পরিবারের জন্য অনেক অনেক শুভকামনা রইল।