গতকাল আমার বাড়ি লক্ষ্মী পূজার কিছু মুহূর্ত

in hive-129948 •  3 years ago 

Hello
বন্ধুরা
আপনারা সবাই কেমন আছেন? আশা করি, আপনারা সবাই ভালো আছেন। সবাইকে কোজাগরী লক্ষ্মী পূজার শুভেচ্ছা। গতকাল ২০ অক্টোবর ছিলো কোজাগরী লক্ষ্মী পূজা। কোজাগরী লক্ষ্মীর হলো দেবীর আর এক নাম। দূর্গা পুজো যেমন বারোয়ারী। তেমনি লক্ষ্মী পূজা গৃহস্থের পূজা। যে রাতে লক্ষ্মী পূজা হয় সেটি হলো কোজাগরী পূর্ণিমা।কো জাগরী - অর্থাৎ কে জেগে আছে - কথাটি থেকে কোজাগরী। কোজাগর মানে কে জাগে।কোজাগরী লক্ষ্মী পূজার রাতে জেগে থাকতে হয়। পুরাণে বর্ণিত আছে যে এই রাতে জেগে থাকে মা লক্ষ্মী তার ঘরে এসে বিরাজ করেন।

এটি বাঙালি হিন্দুদের জনপ্রিয় একটি উৎসব। লক্ষ্মী পূজা অধিকাংশ হিন্দুর ঘরেই অনুষ্ঠিত হয়। দুর্গাপূজার ঠিক চারদিন পর এই কোজাগরী লক্ষ্মী পূজা করা হয় এছাড়া অনেকেই প্রতি বৃহস্পতিবার লক্ষ্মী পূজা করে থাকে।

IMG_20211020_191916.jpg
গতকাল আমার প্রচন্ড ব্যস্ততার মাঝে কেটেছে। কাল বাড়ীতে লক্ষ্মী পূজা ছিল। আমার প্রতি বছর লক্ষ্মী পূজার দিন ব্যস্ততার মাঝে কাটে। ওই দিন আমি এক মিনিট বসার সময় পাই না। গতকাল ও ঠিক একই ভাবে কেটেছে। আমি গতকাল প্রায় ভোর ৫ টার দিকে ঘুম থেকে উঠেছি। সেই থেকে ঘরের যাবতীয় কাজ করেছি। ওইদিন আমার কাজের লোক টা আসে না। কারণ তার বাড়িতে ও পূজা। তাই সকল কাজ নিজে হাতে করেছি। প্রথমে ঘর ঝার দেওয়া থেকে শুরু করে ঘর মুছে ঠাকুরের থালা বাসন ধুয়ে পরিস্কার করছি। এরপর ৯ টার দিকে সকালের জন্য রান্না করলাম। এরপর টিনটিন বাবুর জন্য খাবার তৈরি করে রাখলাম। ও ঘুম থেকে উঠেই কান্না জুড়ে দেবে।

সবার জন্য সকালের খাবার টেবিলে রেখে আমি ১০.৩০ টার দিকে স্নান করতে গেলাম। স্নান করে এসে ঠাকুরের পূজা করে গেলাম লক্ষ্মী পূজার খাবার রান্না করতে। আর আমি তো উপোস রেখেছিলাম।তাই আর কিছু খায়নি। প্রায় ১২ টার দিকে টিনটিন বাবু ও আপনাদের দাদা উঠলো। ওই দুজন উঠলে আমার আর কোনো কাজ হয় না। এরপর টিনটিন বাবু কে হাতমুখ ধুয়ে পরিস্কার করে কিছু খেতে দিলাম। এরপর প্রিয়মানুষ টার করোলার জুস দিলাম তার কাজের টা গুছিয়ে দিলাম। তারপর আবার গেলাম রান্না করতে। লক্ষ্মী পূজার জন্য রান্না করছি। খিচুরী, বিভিন্ন সবজির লাবড়া, আলুর দম, লুচি ও ছোলার ডাল। এবার রান্না করলাম সুজির মোহনভোগ, চালের পায়েস, সাবুর পায়েস, নারকেলের নাড়ু, মুড়ির মোয়া, এগুলো তৈরি করতে আমার বিকাল ৫.০০ টা বেজে গেল। এরপর হাত মুখ ধুয়ে একটা শাড়ী পড়লাম আমার প্রিয় মানুষটার জন্য আলতা পায়ে পড়লাম সিধুর পড়ে একটু বাঙালি বধু সেজে ঘরে আলপনা এঁকে নিলাম। আপনাদের দাদা আমার শাড়ী পড়া বাঙ্গালী সাজ পছন্দ করে। কিন্তু আমার ভালো লাগে না শাড়ী পড়তে। তারপরও ওর ভালো লাগার জন্য পরি।

IMG_20211020_191930.jpg

IMG_20211020_191929.jpg

IMG_20211020_191828.jpg

IMG_20211020_191826.jpg

IMG_20211020_191817.jpg

IMG_20211020_191814.jpg

IMG_20210126_154355.jpg
এরপর সন্ধ্যা ৬.৩০ টার সময় পূজা শুরু হলো। ৭ টার দিকে পূজা শেষ হলো এরপর সবাইকে প্রণাম করে আমাদের ফ্ল্যাটের প্রতি প্রতি ঘরে ঘরে প্রসাদ দিয়ে আসলাম। তারপর সবকিছু গুছিয়ে রেখে ১০ টার সময় একটু বসলাম। তারপরও কালকের দিনটা খুবই আনন্দের ছিল। তারপর রাতে বসে বসে একটি কবিতা লিখছি। আজ সেটি ও আপনাদের সাথে শেয়ার করছি।কারন আপনাদের সাথে শেয়ার করতে না পারলে আমার ভালো লাগে না। আপনাদের সাথে শেয়ার করে আমি খুব আনন্দ পাই। আশা করি, আপনাদের ভালো লাগবে।

আজ এই শরতের পূর্ণ তিথিতে
এসো মা তুমি ভূমি তলে।
ধরিত্রী কে সাজিয়ে তোলো তুমি
শস্য-শ্যামলা ফুলে ফুলে।
গহীন অন্ধকার গোছাও তুমি
আলোয় ভরো ঘরে ঘরে।
অভাব দরিদ্র নির্মূল করে
খুশি করো তোমার সন্তাদের
প্রদীপ জ্বেলে আসন পেতে
রেখেছি মোর ঘরে।
মা নারায়নী তোমার আলতা রাঙা পায়
রাঙ্গাও মোর ঘরে।
তোমার করুণা য় মাগো
কেহ না থাকে অনাহারে।
এসো মা- আজি জ্যোৎস্না ভরা কোজাগরী পূর্ণিমা।।

Authors get paid when people like you upvote their post.
If you enjoyed what you read here, create your account today and start earning FREE STEEM!
Sort Order:  

বাহ বউদি খুবই সুন্দর ভাবে সাজিয়েছেন ঠাকুর ঘর ।এই প্রথম দেখলাম ।ধন্যবাদ বউদি

আপনাকেও ধন্যবাদ ভাইয়া।

বার বার আসুক এমন মুহূর্ত বউদি ।ধন্যবাদ

দিদি দেখে মনে হচ্ছে ধুমধাম করে কোজাগরী পূজা পালন করলেন। ধন্যবাদ দিদি আমাদের মাঝে শেয়ার করা জন্য।

না খুব একটা ধুমধাম করি নি। ওই সামান্য একটু আয়োজন করেছি। আপনাকেও ধন্যবাদ মন্তব্য করার শেয়ার করার জন্য।

বৌদির গোপন কথা কিন্তু জেনে গেলাম ,দাদা আর টিনটিন বাবা উঠলে আপনার কাজ হয়না দাঁড়ান দাদাকে আজকে ধরবো।হাহাহাহহাহাহাহ

টিনটিন এর পিছনে একজন মানুষ সব সময় লাগে। ও এখন খুব দুষ্টু হয়েছে।

😂😂😂😂😂
বাচ্চাদের এই দুষ্টামিগুলি ভালো লাগে।

হ্যা ভালো লাগে মাঝে মাঝে রেগে যাই।

রেগে যাওয়াটা স্বাভাবিক কথা ,তবে মারবেন না ভাবি এটা রিকোয়েস্ট রইল।

বাঙালি মেয়েদের শাড়িতে অনেক সুন্দর লাগে বৌদি। শাড়ি পড়ে আপনাকে অনেক সুন্দর লাগছে। আপনি মনে হচ্ছে লক্ষ্মী পূজার দিন খুব ব্যস্ত সময় কাটিয়েছেন। আপনার এই মুহূর্তগুলো আমাদের সাথে শেয়ার করার জন্য অনেক ধন্যবাদ বৌদি।

খুবই ব্যস্ত ছিলাম। আর সারাদিন না খাওয়া ছিলাম। আপনাকেও ধন্যবাদ আপু।

আপনাকে দেখে বোঝা যায় আপনি অনেক পরিশ্রমী একজন মানুষ। সারাদিন ঘরের এতগুলো কাজ সামলে, কোন লোক ছাড়াই তাও আবার একটা পুজো সামলে সবকিছু কত সুন্দর ভাবে গুছিয়ে নিয়েছেন আর দিনশেষে আপনার মুখে ক্লান্তির বদলে হাসির রেখা। যা আপনার সুন্দর মনের প্রতিচ্ছবি।

ধন্যবাদ আপনার মন্তব্যে শেয়ার করার জন্যে।

দিদি প্রথমে লক্ষী পুজোর শুভেচ্ছা জানায়।সারা দিন টা তো ছবিতেই ব্যাস্ত ভাবে ভেষে উঠেছে।অনেক টা পরিশ্রম করেছেন সারাদিনে।শেশের লাইন গুলো খুব সুন্দর ছিলো দিদি💖

ধন্যবাদ ভাইয়া।

বৌদি আপনাকেও কোজাগরী লক্ষ্মীপূজার শুভেচ্ছা।কাল আমাদের বাড়িতে ও আমি সারাদিন নির্জলা উপোস থেকে পুঁতি পড়ে লক্ষ্মীমায়ের পূজা করেছিলাম।দারুণ মুহূর্ত কেটেছিল।আপনার উপিস্থাপনা ও কবিতাটি খুবই সুন্দর হয়েছে।মালক্ষ্মী সর্বদা আপনাদের সুখে -শান্তিতে রাখুক সেই কামনায় করি।ভালো থাকবেন বৌদি।

ধন্যবাদ বোন।

বৌদি আপনার লেখাগুলো পড়ে খুব ভালো লাগলো আপনি খুব সুন্দর গুছিয়ে লিখতে পারেন। আর বৌদি আপনি পারেনও এত কাজ কিভাবে যে একা একা করেছেন তাও আবার একাই এতো সুন্দর করে আয়োজন করেছেন। আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ এত সুন্দর আয়োজন আমাদের সাথে শেয়ার করেছেন খুব সুন্দর করে আপনার জন্য শুভকামনা রইল সবসময়।

আপনাদের দাদা আমার শাড়ী পড়া বাঙ্গালী সাজ পছন্দ করে। কিন্তু আমার ভালো লাগে না শাড়ী পড়তে। তারপরও ওর ভালো লাগার জন্য পরি।

বৌদি আপনার এই লেখাগুলো পড়তে আমার এতো বেশি ভালো লাগে যে কি আর বলবো।দাদা আর আপনি দুজনেই ভাগ্যবান কারণ দুজনেই বেস্ট লাইফ পার্টনার পেয়েছেন।
সবসময় চাই আপনারা যেনো এভাবেই ভালো থাকেন।

ঠিক বলেছেন আপু। সত্যি আমি ভাগ্যবতী আপনার দাদাকে জীবন সঙ্গী হিসেবে পেয়ে।ধন্যবাদ আপু।

আর আমরা ভাগ্যবতী এমন দাদা বৌদি পেয়ে।

বৌদি আপনার লেখাগুলো পড়ে খুব ভালো লাগলো আপনি খুব সুন্দর গুছিয়ে লিখতে পারেন। আর বৌদি আপনি পারেনও এত কাজ কিভাবে যে একা একা করেছেন তাও আবার একাই এতো সুন্দর করে আয়োজন করেছেন। আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ এত সুন্দর আয়োজন আমাদের সাথে শেয়ার করেছেন খুব সুন্দর করে আপনার জন্য শুভকামনা রইল সবসময়।

ধন্যবাদ আপু।

বৌদি আপনার লক্ষ্মী পূজার দিনটি বেশ ভালোই ব্যস্ততার মধ্যে দিয়ে কেটেছে। কিন্তু আমিতো ভাবছি আপনি এত কিছু একা হাতে কিভাবে রান্না করলেন! সারাদিন এত ব্যস্ততার মধ্যে থেকেও আপনি রাত্রে এত সুন্দর একটি কবিতা লিখেছেন। কবিতাটি অনেক সুন্দর হয়েছে বৌদি। বৌদি আপনি সত্যিই দশোভূজা ।আপনার যত প্রশংসা করা হবে সেটা ততোই কম পড়ে যাবে আপনার জন্য। ধন্যবাদ বৌদি আপনাকে।

আপনাকেও ধন্যবাদ ভাইয়া। আপনার মূল্যবান মতামত শেয়ার করার জন্যে।

ধন্যবাদ দিদি

আপু, আমি আপনাদের ধর্ম সম্পর্কে মুটামুটি অনেক কিছুই জানি। কিন্তু আজ আপনার পোস্ট পড়ার পর আরও অনেক কিচ্ছু জানলাম। সত্যিই সবাই সবার ধর্মকে ভালবাসে। এটা অনেক ভাল লাগে। পোস্টের প্রতিটি ছবি খুব সুন্দর ভাবে তুলেছেন আপু যা অনেক বেশি ভাল লেগেছে। আর একটা কথা হচ্ছে আপু আপনি যেমন সুন্দর আপনার কবিতা গুলো তেমন অসাধারণ সুন্দর হয়। অনেক ধন্যবাদ আপু।

আপনাকেও ধন্যবাদ আপু।আপনার মূল্যবান মতামত শেয়ার করার জন্য।

কিছুটা আইডিয়া পেলাম কোজাগরী লক্ষ্মী পূজা সম্পর্কে। সেলফিটা কিন্তু দারুণ হয়েছে । শাড়িতে কিন্তু বৌদিকে অনেক সুন্দর লাগে, এই জন্যই বোধহয় দাদা শাড়ি পড়াটা পছন্দ করেন।

কবিতার কথাগুলো বেশ ভালেো ছিলো। ধন্যবাদ

খাবারগুলো বেশ সুন্দর সাজিয়েছেন, কখন খেতে আসবো বলেন।

আপনি যখনই আসবেন তখনই খেতে পারবেন ভাইয়া। আমার বাংলা ব্লগ এর সকল সদস্যদের জন্য রেখে দিয়েছি।

এই গেলুম আমি ভিসা কাটতে, হি হি হি

দিদি, আপনাকে লক্ষ্মী পূজার শুভেচ্ছা জানাই। লক্ষ্মী পূজা মানে বিরাট আনন্দ ও উৎসব। বাঙালি জাতি হিসেবে আমাদের উৎসবের শেষ নেই। দিদি লক্ষ্মী পূজা উপলক্ষে আপনার ফুলের ফটোগ্রাফি এবং প্রসাদের ফটোগ্রাফি গুলা সত্যি আমাকে মুগ্ধ করেছে। এক কথায় আপনার উপস্থাপন গুলো খুবই অসাধারণ ও অতুলনীয় হয়েছে। দিদি আপনার জন্য অনেক অনেক শুভকামনা রইল।

লক্ষ্মী পুজোর দিন সকাল থেকে সত্যিই অনেক চাপ সামলাতে হয় সকল বাড়ি লক্ষীকে। হীহীহি। তবে সব কাজের ভেতরেও পুজোর জোগাড় করার যে কাজগুলো থাকে তার ভেতরে একটা আলাদা আনন্দ ও ভালোবাসা খুঁজে পাওয়া যায় সব সময়।
আমি ভোগের রান্না খেতে ভীষণ ভালোবাসি বৌদি। পুজোর এত এত ভোগ দেখে নিজেকে সামলানো খুব কঠিন হয়ে পড়ছিল 🤗🥰🙏। মা লক্ষ্মী আমাদের সকলের কল্যাণ করুক এই শুভকামনা রইল।

সত্যি বলতে দিদি আমি কোনদিন লক্ষ্মী পূজার দেখি নাই আপনার প্রেজেন্টেশনে আজকে আমি লক্ষ্মী পূজা দেখার সুযোগ পেলাম খুবই চমৎকার করে আপনি উপস্থাপন করেছেন খুবই ভালো লাগলো লক্ষ্মী পূজার অনাবিল শুভেচ্ছা♥

লক্ষী পুজোর শুভেচ্ছা রইল বৌদি, আপনাদের পুরো পরিবারের জন্য।