"আমার বাংলা ব্লগ" প্রতিযোগিতা || কচুর ফুলের চপ এবং ভাতের পাকোড়া রেসিপি।

in hive-129948 •  5 months ago 

1722879934992.jpg

হ্যালো বন্ধুরা,

আসসালামু আলাইকুম, কেমন আছেন সবাই? আশা করি সবাই ভালো আছেন। আমিও আল্লাহর রহমতে ভালো আছি। প্রতিদিনের মত আজকেও আপনাদের সামনে এসে হাজির হলাম। আজকে আমি আপনাদের সামনে অনেক সুন্দর একটা রেসিপি নিয়ে এসেছি। আজ আমি আপনাদের সাথে শেয়ার করবো কচুর ফুলের চপ এবং ভাতের পাকোড়া রেসিপি। তবে এবারে এত সুন্দর একটা প্রতিযোগিতা দেওয়ার জন্য আমাদের তানজিরা আপুকে জানাই অনেক অনেক ধন্যবাদ। আসলে প্রতিযোগিতায় সব সময় জয়েন করতে ভীষণ আনন্দ লাগে।

20240804_171044.jpg

কিন্তু এমন পরিস্থিতিতে আসলে কোন কিছুই ভালো লাগতেছে না। কিন্তু আমাদের আসলে কিছুই করার নেই। তবুও চেষ্টা করেছি এবারের প্রতিযোগিতায় জয়েন করার জন্য। এমনিতে আমার কাছে রেসিপি পোস্টগুলো বেশি ভালো লাগে। তাছাড়া বৃষ্টির সময় পাকোড়া কিংবা চপ খেতে সবথেকে বেশি ভালো লাগে। কিন্তু এর আগে যত ধরনের ইউনিক চপ অথবা পাকোড়া ছিল সেগুলো আমরা তৈরি করে ফেলেছি। তাই জন্য এবারের ইউনিক কিছুই খুঁজে পাচ্ছিলাম না। এজন্য অনেক চিন্তা ভাবনা করে বের করলাম কচুর ফুলের চপ তৈরি করবো।

20240804_170635.jpg

এমনিতে আমার কাছে কচুর ফুল রান্না করলে খেতে বেশি ভালো লাগে। যেহেতু এই রেসিপিটা কখনো ট্রাই করিনি, তাই ভাবলাম এইভাবে এই চপ তৈরি করি। তবে এই চপগুলো কিন্তু খেতে খুবই ভালো লেগেছে। তার সাথে তৈরি করলাম ভাতের পাকোড়া। আসলে ভাতের পাকোড়ার কথা অনেক শুনেছি কিন্তু কখনো তৈরি করা হয়নি। তাই জন্য ভাবলাম এটাই ট্রাই করে দেখি। সত্যি বলতে এই রেসিপিটা তৈরি করার পর অনেক বেশি মজা লেগেছিল। ভাতের পাকোড়া এত বেশি মজা হয় এটা আমি হলে বুঝতে পারিনি। দুটো রেসিপি আমার কাছে বেশ ভালো লেগেছে। আশা করি আপনাদের কাছেও রেসিপি গুলো ভালো লাগবে।

20240804_171217.jpg

তো চলুন,
এই রেসিপিটি তৈরি করতে আমার কি কি উপকরণ লাগলো এবং আমি পুরো রেসিপি কিভাবে তৈরি করলাম তার বর্ণনা নিচে প্রতিটা ধাপে উপস্থাপন করলাম। আশা করি আমার আজকের রেসিপি আপনাদের ভালো লাগবে।

20240804_170414.jpg

20240804_171017.jpg

কচুর ফুলের চপ রেসিপি :

প্রয়োজনীয় উপকরণ :

উপকরণপরিমাণ
কচুর ফুল৬ টা
মসুরের ডাল১/২ কাপ
মাছছোট কয়েক রকমের।
আলু সেদ্ধকয়েকটি
ব্রেড ক্রাম্ব২ কাপ
পেঁয়াজ কুচি১ কাপ
রোসন বাটা১ টেবিল চামচ
কাঁচামরিচ কুচি২ টেবিল চামচ
ধনিয়া পাতা কুচি২ টেবিল চামচ
হলুদের গুঁড়া২ টেবিল চামচ
মরিচের গুঁড়া২ টেবিল চামচ
মসলা গুড়া১ টেবিল চামচ
লবনপরিমাণমতো
তেলপরিমাণমতো

IMG_20240805_233107.jpg

রান্নার বিবরণ :

ধাপ - ১ :

প্রথমে আমি কচুর ফুলগুলোকে কেটে এরপর ধুয়ে পরিষ্কার করে নিলাম।

IMG_20240805_111630.jpg

ধাপ - ২ :

এরপর আমি চুলায় একটি কড়ায় বসিয়ে দিলাম। এরমধ্যে কিছুটা পরিমাণের তেল দিয়ে পেঁয়াজ কুচি এবং রসুন বাটা দিয়ে দিলাম। এবং সবগুলো মসলা এবং মাছ দিয়ে দিলাম। এগুলো কিছুক্ষণের ছেড়ে রান্না করবো।

IMG_20240805_111659.jpg

ধাপ - ৩ :

এরপর এর মধ্যে দিয়ে দিলাম মসুর ডাল এরপরে নেড়ে ছেড়ে এর মধ্যে দিয়ে দিলাম কিছুটা পরিমাণে পানি।

IMG_20240805_111722.jpg

ধাপ - ৪ :

এরপর এর মধ্যে দিয়ে দিলাম কচুর ফুল। এগুলো দিয়ে ঢাকনা দিয়ে ঢেকে বেশ কিছুক্ষণ রান্না করবো। উপলক্ষে একদম গলে যাওয়া পর্যন্ত নেড়েচেড়ে রান্না করবো।

IMG_20240805_111753.jpg

ধাপ - ৫ :

এরপরে এই ফুলগুলো একদম গলে গেলে এগুলোকে বেশ কিছুক্ষন চুলায় রেখে শুকনো পর্যন্ত অপেক্ষা করব। এরপর একদম শুকিয়ে গেলে চুলা থেকে নামিয়ে নিলাম।

IMG_20240805_111811.jpg

ধাপ - ৬ :

এরপর সিদ্ধ করা আলু দিয়ে দিলাম রান্না করা কচুর ফুলের সাথে ম্যাশ করে।

IMG_20240805_111828.jpg

ধাপ - ৭ :

এরপর এর মধ্যে পেঁয়াজ কুচি , শুকনা মরিচ কুচি এবং লবণ দিয়ে দিলাম। এরপর ধনিয়া পাতা দিয়ে হাত দিয়ে ভালোভাবে সবকিছু মিশিয়ে নিবো।

IMG_20240805_111840.jpg

ধাপ - ৮ :

এরপরে আমি হাত দিয়ে সব গুলোকে গোলগোল করে কতগুলো তৈরি করে নিলাম।

IMG_20240805_111854.jpg

ধাপ - ৯ :

এরপর একটি বাটিতে আটার সাথে কিছুটা পরিমাণে পানি নিয়ে মিশিয়ে নিলাম। এরপর এই মিশ্রণে একটা চপ দিয়ে এরপর আবারো ব্রেড ক্রাম্বে গড়িয়ে নিলাম। একই রকম ভাবে সবগুলো করে নিলাম।

IMG_20240805_111910.jpg

ধাপ - ১০ :

এরপর আমি চুলায় একটি কড়াই বসিয়ে দিলাম। এরপর এরমধ্যে পরিমাণ মতো তেল দিয়ে দিলাম। এরপর একটা একটা করে চপ দিয়ে দিলাম। এরপরে উল্টেপাল্টে ভেজে নিবো। ভাজা হয়ে গেলে চুলা থেকে নামিয়ে নিবো।

IMG_20240805_111922.jpg

শেষ ধাপ :

এরপর পরিবেশন করলাম। আশা করি আমার আজকের রেসিপি আপনাদের ভালো লাগবে। পরবর্তীতে আবারও দেখা হবে নতুন কিছু নিয়ে। সবাই ভালো থাকবেন।

20240804_170505.jpg

20240804_170710.jpg

20240804_170720.jpg

20240804_170635.jpg

20240804_170414.jpg

20240804_170619.jpg

20240804_170420.jpg

ভাতের পাকোড়া রেসিপি :

উপকরণপরিমাণ
ভাত২ কাপ
বেসন১/২ কাপ
পেঁয়াজ কুচি১ কাপ
রোসন বাটা১ টেবিল চামচ
শুকনো মরিচ কুচি২ টেবিল চামচ
ধনিয়া পাতা কুচি২ টেবিল চামচ
চাট মসলা গুড়া১ টেবিল চামচ
লবনপরিমাণমতো
তেলপরিমাণমতো

IMG_20240805_233249.jpg

ধাপ - ১ :

প্রথমে আমি একটি বাড়িতে কিছুটা পরিমাণে ভাত নিয়ে নিলাম। এর পরের মধ্যে পেঁয়াজ কুচি দিয়ে দিলাম।

IMG_20240805_111952.jpg

ধাপ - ২ :

এরপরের মধ্যে শুকনা মরিচ কুচি, ধনিয়া পাতা করছি লবণ দিয়ে ভালোভাবে মেখে নিলাম।

IMG_20240805_112005.jpg

ধাপ - ৩ :

এরপর এর মধ্যে চাট মসলা এবং বেসন দিয়ে দিলাম। এগুলো দিয়ে সবগুলো ভালোভাবে মেখে নিলাম।

IMG_20240805_112016.jpg

ধাপ - ৪ :

এরপর এই মিশ্রণ থেকে হাতে নিয়ে গোল করে সবগুলো তৈরি করে নিলাম।

IMG_20240805_112028.jpg

ধাপ - ৫ :

এরপরে চুলায় একটি কড়াই বসিয়ে দিলাম। তেল দিয়ে তেল গরম হয়ে গেলে এর মধ্যে পাকড়াগুলো দিয়ে দিলাম। এগুলোকে উল্টেপাল্টে ভালোভাবে ভেজে নিবো। ভাজা হয়ে গেলে চুলা থেকে নামিয়ে নিলাম।

IMG_20240805_112108.jpg

এরপর পরিবেশন করলাম। আশা করি আমার আজকের রেসিপি আপনাদের ভালো লাগবে। পরবর্তীতে আবারও দেখা হবে নতুন কিছু নিয়ে। সবাই ভালো থাকবেন।

20240804_171044.jpg

20240804_171023.jpg

20240804_170929.jpg

20240804_171028.jpg

20240804_170851.jpg

20240804_171227.jpg

20240804_171217.jpg

20240804_171017.jpg

পোস্ট বিবরণ

শ্রেণীরেসিপি
ডিভাইসRedmi note 9
ফটোগ্রাফার@tasonya
লোকেশনফেনী

আমার পরিচয়

DSC00912.jpg

আমার নাম তাসলিমা আক্তার সনিয়া। আমি বাংলাদেশী। বাংলা ভাষা আমাদের মাতৃভাষা বলে আমি অনেক গর্বিত। আমি গ্রেজুয়েশন কমপ্লিট করেছি। আমি ছবি আঁকতে ভালোবাসি। বিশেষ করে যে কোন ধরনের পেইন্টিং করতে পছন্দ করি। যখনই অবসর সময় পায় আমি ছবি আঁকতে বসে পড়ি। এছাড়াও আমি ভ্রমণ করতে পছন্দ করি। কিছুদিন পর পর বিভিন্ন জায়গায় ভ্রমণ করার চেষ্টা করি। এছাড়াও আমি বিভিন্ন ধরনের কারুকাজ করতে পছন্দ করি। রান্না করতেও আমার খুব ভালো লাগে। আমি বিভিন্ন ধরনের রেসিপি তৈরি করতে পছন্দ করি। আমি যখনই সময় পাই আমার পরিবারের সবাইকে বিভিন্ন ধরনের রেসিপি তৈরি করে খাওয়াই। আমি সব সময় নতুন নতুন কিছু করার চেষ্টা করি।

🎀 ধন্যবাদ সবাইকে 🎀

আসুন সবাই মন খুলে বাংলায় ব্লগিং করি

IMG-20220501-WA0005.jpg

Authors get paid when people like you upvote their post.
If you enjoyed what you read here, create your account today and start earning FREE STEEM!
Sort Order:  

আপনার বানানো রেসিপি গুলো আসলেই অনেক মজার।সকল মানুষের কাছেই এই খাবার গুলো খুবই পছন্দের হয়ে থাকে।বাহিরে ঘুরতে বের হলেও আমরা এই জাতীয় খাবার গুলো খেয়ে থাকি।

কচুর ফুলের চপ এবং ভাতের পাকোড়া রেসিপি তৈরি করে আপনি আমাদের মাঝে শেয়ার করেছেন আপু। এ ধরনের রেসিপি গুলো খেতে আসলেই অনেক বেশি ভালো লাগে আপু। আপনি যেভাবে লোভনীয় পদ্ধতিতে তৈরি করেছেন তা দেখেই খেতে ইচ্ছা করছে।

ইউনিক চপ এবং পাকোড়া তৈরি করতে পেরে আমার কাছেও খুব ভালো লেগেছে।

দারুন দুইটা রেসিপি শেয়ার করেছেন আপু। কচুর ফুল দিয়ে পকোড়া তৈরি করেছেন দেখে বেশি ভালো লাগছে। সত্যি বলতে আমাদের চিন্তাভাবনা গুলো অনেক সময় মিলে যায়। তবে এটাও ভালো লাগলো যে আপনি দুই রকমের পকোড়া এবং চপ তৈরি করেছেন। আর এই সময়ে পকোড়া খেলে কিন্তু খুব ভালো লাগে। তার পাশাপাশি চপ হলেও মন্দ নয় কিন্তু। প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করার জন্য অনেক অনেক শুভেচ্ছা এবং অভিনন্দন রইল আপু।

হ্যাঁ এই সময় পাকোড়া খেলে খুব ভালোই লাগে। হ্যাঁ চপ হলেও মন্দ হয় না। অনেক মজা করে খেয়েছিলাম সবাই।

বাহ অনেক সুন্দর হয়েছে। কচুর ফুলের চপ এবং ভাতের পাকোড়া রেসিপিটা আমাদের কাছে দারুন লেগেছে। দুইটাই আনকমন জিনিষ দিয়ে তৈরী করেছেন। এই দুইটার একটিও খাওয়া হয়নি। বাসায় ট্রাই করে দেখতে হবে। ধন্যবাদ।

আমার তৈরি করা ইউনিক চপ এবং পাকোড়া রেসিপি আপনার কাছে দারুণ লেগেছে শুনে খুশি হলাম।

কচুর ফুল বেশ কিছুদিন আগে খেয়েছিলাম। আমার কাছে কেন জানি গলায় ধরেছিল। আর ভাতের পাকোড়া আমি বেশ কয়েকবার খেয়েছি। আমার কাছে ভালোই লেগেছে আপু। আপনার রেসিপি দারুন হয়েছে আপু। রেসিপির পরিবেশন খুবই সুন্দর হয়েছে।

তবে আমরা এগুলো খাওয়ার পর গলায় ধরেনি। আপনার কাছে ভালো লেগেছে শুনে খুশি হলাম।

অনেকগুলো উপকরণ নিয়ে আপনার রেসিপিটা তৈরি করা দেখে আমার কাছে অনেক অনেক ভালো লেগেছে। আপনার এই রেসিপি তৈরি করার ক্ষেত্রে মাছ ও মসুরের ডালের ব্যবহারটা আমার কাছে অনেক ভালো লেগেছে। এছাড়া আলু এর ব্যবহারটাও অসাধারণ ছিল। প্রতিটা ধাপ খুব সুন্দরভাবে ব্যাখ্যা করেছেন আপনি। মজাদার একটা রেসিপি আপনি আমাদের মাঝে শেয়ার করার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ আপনাকে।

চেষ্টা করেছি পাকোড়া এবং চপ তৈরি করার পদ্ধতি সবার মাঝে সুন্দর করে তুলে ধরার জন্য। যেন কেউ চাইলে তৈরি করতে পারে এই চপ এবং পাকোড়া।

কচুর ফুলের চপ এবং ভাতের পাকোড়া রেসিপি দেখে সুস্বাদু মজাদার মনে হচ্ছে। আপনি খুবই ইউনিক রেসিপি তৈরি করেছেন। রেসিপির পরিবেশনটা আমার কাছে অনেক ভালো লেগেছে। শেয়ার করার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ।

চপ এবং পাকোড়া দুটোই অনেক সুস্বাদু হয়েছে। আর দুটোই খুব মজা করে খেয়েছি।