প্রিয় বন্ধুগন, সবাই কেমন আছেন? আজকে আপনাদের মাঝে একটি নাটক রিভিউ নিয়ে হাজির হলাম। আশা করছি নাটক রিভিউটি পড়ে আপনাদের ভালো লাগবে।
নোয়াখাইল্লা জামাই বনাম বরিশাইল্লা বউ। |
---|
ইউটিউব থেকে স্ক্রিনশট নেওয়া।
নাটকের গুরুত্বপূর্ণ কিছু তথ্য |
---|
নাটকের নাম | নোয়াখাইল্লা জামাই বরিশাইল্লা বউ |
---|---|
পরিচালক | মহিন খাঁন |
অভিনয় | রাশেদ সিমান্ত, অহনা রহমান, নীলা ইসলাম, আমিন আজাদ, রেশমা আহমেদ আরো অনেকেই |
ভাষা | বাংলা |
মুক্তির তারিখ | ১০ জুলাই ২০২৪ |
আজকে খুবই আনকমন একটি নাটকের রিভিউ নিয়ে আপনাদের সামনে হাজির হলাম। নাটকটি খুবই চমৎকার একটি নাটক। বিনোদনের জন্য এ নাটকটি খুবই পারফেক্ট একটি নাটক। বাংলাদেশের নাটকগুলো খুবই আলোচিত হয়ে থাকেন। বিনোদনমুখর নাটকগুলো দেখতে অনেক বেশি ভালো লাগে। এই নাটকটির নাম শুনেই আশা করছি বুঝতেছেন নাটকটি কেমন হবে। এ নাটকটি শুরু থেকে বিনোদনমুখর হলেও ফিনিশিংয়ের রয়েছে একটি শিক্ষা। যার কারনে বাংলাদেশের নাটক গুলোর মধ্যে আলাদা একটা সৌন্দর্য বিরাজ করে। যাইহোক কথা না বাড়িয়ে এবার শুরু করা যাক-
ইউটিউব থেকে স্ক্রিনশট নেওয়া।
নাটকের শুরুতে নায়ক নায়িকাকে বিয়ে করে নোয়াখালীতে ফিরে আসে। তখন নায়ক নায়িকার মধ্যে অনেক কথোপকথন হচ্ছে। কথোপকথানের মধ্য দিয়ে বাড়িতে যখনই গেল, তখন নায়ক, নায়কের মাকে ডাক দিল। নায়কের মা বের হয়ে নায়িকা কে দেখে চমকে উঠলো। মন্তব্য করতে লাগলো এটি মানুষ না পরি, এত সুন্দর মেয়ে বিয়ে করল ছেলে। এ নিয়ে মা অনেক হতবাক হয়ে গেল এবং মেয়েকে অনেক আদর আপ্যায়ন করতে লাগলো। এরই মাঝে বের হয়ে এলো নায়কের বড় ভাই এবং তার ভাবী। ভাবী এসে মন্তব্য করলো মেয়ের কোন খুদ আছে, না হলে এত সুন্দর মেয়ে কালো ছেলেকে বিয়ে করতো না।
এ নিয়ে বাহিরে শুরু হলো ঝগড়াঝাটি। যখন মেয়ের পরিচয় জানতে চাইলো তখন মেয়ে বলল আমার বাড়ি বরিশাল। এ বরিশালের কথা শুনে মা, ভাই এবং ভাবী মেয়েকে মারার জন্য উঠে পরে লেগেছিল। কারণ বরিশাইল্লা মেয়ে মানেই সমস্যা। বরিশালের মানুষ অনেক প্যাঁচালো এবং ভেজালে হয়। এ নিয়ে শুরু হলো তর্ক-বিতর্ক। তখন ছেলে এবং বউকে মা বাড়ি থেকে বের করে দেয়। তখন ছেলের বউ ছেলেকে বলল আমি কোথাও যাবো না আমি বাড়িতে থাকব। এ বলে নায়ক বউকে নিয়ে চলে গেলো ঘরে। ক্ষুদার চোটে ভাত খেতে গিয়ে খাবার চুরি করে খেতে লাগলো। তখন মা এবং বড় ভাইয়ের কাছে হাতেনাতে ধরা পড়লো। তখন বউকে চোর বলে উপাধি দিল।
ইউটিউব থেকে স্ক্রিনশট নেওয়া।
পরেরদিন বউ তার বাড়িতে কল দিয়ে মা এবং দুলাভাইকে ডাক দিয়ে আনলো। তারা এসে শুরু করলো হট্টগোল। মেয়ের মা এসে শুরু করল চিল্লাপাল্লা, নোয়াখালীর মানুষ মানেই খারাপ। নোয়াখালীর মানুষের কাছে মেয়ে বিয়ে কখনোই দিত না, কিন্তু তারা চুরি করেই বিয়ে করে ফেলল। এরই মাঝে শুরু হল ছেলের পক্ষ এবং মেয়ের পক্ষের মধ্যে তুমুল ঝগড়াঝাটি। একে অন্যকে মারধর করতে লাগলো। মাইরের এক পর্যায়ে ছেলের মা এবং বড় ভাই অনেক বেশি আহত হয়ে পড়লো। এরপর মেয়ের মা দুলাভাই দুজনেই ঘর দখল করল। জোরপূর্বক তাদের দ্বারা খাওয়া-দাওয়া রান্না করানো এবং মেয়ের মা একাই সব খেয়ে ফেলল। কারণ মেয়ের মা অনেক মোটা ছিল জলহস্তির মত।
এভাবে তাদের নিয়মিত ঝগড়াঝাটি শুরু হল খাওয়া দাওয়া থেকে শুরু করে সব কিছু নিয়ে ঝগড়া। এই দিকের নায়েকের ভাবী গর্ভবতী ছিল। নোয়াখালীর সঙ্গে স্পর্শে থাকলে তাদের গর্বের সন্তানের অমঙ্গল হবে বলে ধারণা করছে। এসব বিষয়গুলো নাটকে অনেক বেশি বাড়াবাড়ি। নোয়াখালীর মানুষ মানেই খুবই খারাপ বরিশালের দৃষ্টিতে। আবার বরিশালের মানুষ মানেই খারাপ নোয়াখালীর দৃষ্টিতে। এর মাঝে এলাকার মধ্যে তুমুল হট্টগোল সৃষ্টি হল। মেম্বার আসলো বরিশালের পরিবারকে বিদায় দিতে। মেম্বারও এটা নিয়ে অনেক বেশি ঝামেলা শুরু করলো। তখন তাদের মধ্যে একটা চুক্তি হলো বিতর্ক অনুষ্ঠানের।
শুরু হলো বিতর্ক অনুষ্ঠান, নোয়াখালীর পক্ষ থেকে বিতর্ক শুরু হল। বাংলাদেশের মধ্যে নোয়াখালীর অবদানগুলো তারা ক্রমান্বয়ে তুলে ধরল। বরিশাল তা অস্বীকার করে তারা বরিশালের অবদানগুলো তুলে ধরল। সেখানে তুমুল এক বিতর্ক সৃষ্টি হল। এই বিতর্কের মধ্য দিয়ে বিচারকেরা বিপাকে পড়ে গেলো। তখন সকল বিচারক ওদের একটা সিদ্ধান্ত দিল স্বস্ব স্থান থেকে প্রতিটা জেলায় গুরুত্বপূর্ণ। কারো অবদান অস্বীকার করার মত নয়। বিচারক মন্ডলীরা উভয় জেলাকেই বিজয়ী ঘোষণা করলো। এতে করেও কারো মধ্যে সমঝোতা আসলো না। শুরু হলো আরও বেশি শত্রুতা। বিতর্ক শেষে আবার সবাই ঘরে ফিরে গেল।
এর মাঝে নায়করে ভাবীর ডেলিভারির সময় হলো গভীর রাতে। ডেলিভারির ব্যথা কাতরাচ্ছে নায়কের ভাবি। নায়েকের বউ স্পর্শ করতে আসলে কোনভাবেই শাশুড়ি এবং নায়েকের বড় ভাই দিচ্ছিল না। এভাবে অনেক ঝামেলার পর নায়িকাও জোর করে প্রবেশ করলো এবং সবাইকে ঘর থেকে বের করে দরজা আটকে দিল। বাহির থেকে বিভিন্ন মন্তব্য করতে লাগলো নায়িকার নামে। একটা সময় ভাবীর ডেলিভারি হলো এবং সন্তান এবং মা সুস্থ থাকলো। তখন সবার ভুল বুঝে সবাই। মানুষের মধ্যে ভেদাভেদ নেই সেটা উপলব্ধি করে। এর মাঝে সবার সাথে সবার একটা ভালো সম্পর্ক গড়ে উঠলো। তাদের মধ্যে আর ঝগড়াঝাটি থাকলো না।
আমার ব্যক্তিগত মতামত।
নাটকটির নামের সাথে কাজের মিল রয়েছে, এদিক থেকে ঠিক আছে। তবে এ নাটকে কিছুটা ওভার অ্যাক্টিং করলো। তবে খুব সুন্দরভাবে পরিচালক নাটকটি উপস্থাপন করলো। অভিনেতা-অভিনেত্রীদের অসাধারণ অভিনয়ের দক্ষতার পরিচয় দিলো। নাটকটি দেখে খুবই ভালো লাগলো। আপনাদের সময় সুযোগ যদি হয় তাহলে নিচে লিঙ্ক দেওয়া আছে নাটকটি দেখে নেবেন।
আমার ব্যক্তিগত মতামত অনুসারে নাটকের রেটিংঃ |
---|
৮.৯৯/১০
সমাপ্ত
ধন্যবাদ জানিয়ে আজকের মত এখানে বিদায় নিচ্ছি।আগামিতে অন্য কোন নাটকের রিভিউ নিয়ে আবারও হাজির হবো। ভালো থাকবেন সবাই। আর কষ্ট করে রিভিউটি যারা পড়ছেন তাদেরকে ধন্যবাদ।
সবার সুস্বাস্থ্য কামনা করে এখানেই শেষ করছি।
নিজেকে নিয়ে কিছু কথা
আসসালামু আলাইকুম, আশা করি সবাই ভালো আছেন। প্রথমেই সবাইকে আমার আন্তরিক অভিনন্দন। আমি তাহেরুল ইসলাম, আমার স্টিমিট ইউজার আইডি হল - @ti-taher। আমি ফেনী জেলায় জন্মগ্রহণ করেছি। বর্তমানে ফেনী শহরে অবস্থান করছি। আমি ফেনীতে পড়াশোনা করেছি এবং বড় হয়েছি। আমি একজন ভ্রমণপ্রিয় মানুষ, আমি ভ্রমণ করতে এবং ছবি তুলতে ভালোবাসি। নতুন জায়গায় ঘুরতে আগ্রহী, নতুন জায়গায় ঘুরতে এবং নতুন কিছু আবিষ্কার করতে ভালোবাসি। আমি বই পড়তেও ভালোবাসি, অনেকে আমাকে বই পোকাও বলে থাকে। আমি কবিতা, গল্প, উপন্যাস এবং বৈজ্ঞানিক বই সহ সব ধরনের বই পড়তে পছন্দ করি। আমার প্রিয় কবি "কাজী নজরুল ইসলাম"। প্রিয় কবিতা "বিদ্রোহী"।( ফি আমানিল্লাহ)
VOTE @bangla.witness as witness
OR
SET @rme as your proxy
https://x.com/titaherul/status/1811998018503344425?t=QBZ5_3EJqo9-yGbUmSXt4Q&s=19
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
Upvoted! Thank you for supporting witness @jswit.
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
এই নাটকটির শেষে একটি শিক্ষণীয় পার্ট ছিল। যা খুবই ভালো লেগেছে আমার কাছে। কারণ কোন মানুষের মধ্যে ভেদাভেদ নেই। যদিও নায়কের ভাই এবং মা তার বউকে ভাবির ডেলিভারিতে ঢুকতে দিচ্ছিল না। নায়িকা জোর করে এই ভুলটি দূর করতে পেরেছিল। ভালো লাগলো নাটকটির রিভিউ পড়ে। ধন্যবাদ ভাইয়া।
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
আপনি আজকে যে নাটকটার রিভিউ আমাদের মাঝে শেয়ার করেছেন, এই নাটকটা যেমন সুন্দর ছিল তেমনি অনেক বেশি শিক্ষনীয় ও ছিল। মানুষে মানুষে কোনো ভেদাভেদ নেই এটা এরকম মানুষগুলো বুঝতে চায় না। তবে নাটকের শেষটা দেখে আমার কাছে অনেক ভালো লেগেছে। সবাই নিজেদের ভুল বুঝতে পেরেছিল এটি দেখে অনেক ভালো লাগলো। যারা বাস্তবে এরকম করে থাকে তাদের উচিত এই নাটকটা দেখা। তাহলে তারা এই নাটকটার থেকে শিক্ষা নিতে পারবে।
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
আপনি সুন্দর একটি নাটকের রিভিউ আমাদের মাঝে শেয়ার করছেন।নাটকের রিভিউ টা পড়ে খুবই ভালো লাগলো।তবে নাটকটি এখনো দেখা হয়নি,সময় করে নাটকটি দেখে নেওয়ার চেষ্টা করবো।ধন্যবাদ ভাইয়া পোস্টটি সুন্দর ভাবে আমাদের মাঝে শেয়ার করার জন্য।
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
আমার কাছে নাটক দেখতে অনেক বেশি ভালো লাগে। আর সুন্দর সুন্দর নাটকগুলোর রিভিউ পোস্ট পড়তেও আমি অনেক পছন্দ করি। আর ঠিক তেমনি ভাবে আমার কাছে আপনার আজকের শেয়ার করা নাটকটার রিভিউ খুব ভালো লেগেছে। আসলে মানুষ এই ধরনের কিছু বিষয় নিয়ে একটু বেশি বাড়াবাড়ি করে থাকে। তবে শেষ পর্যায়ে সবার সব ভুল ভেঙ্গেছে এটা দেখে আমার কাছে অনেক ভালো লেগেছে। নায়িকাও জোর করে পেরেছে সবার সব ভুল ভেঙ্গে দিতে। পুরো রিভিউ টা সুন্দর করেই শেয়ার করলেন দেখে ভালো লাগলো।
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
এই টাইপের নাটকগুলো দেখতে ভালোই লাগে। তবে যখন ওভার অ্যাকটিং হয়ে যায় তখন সত্যি অনেক বিরক্ত লাগে। নোয়াখাইল্লা জামাই বরিশাইল্লা বউ নাটক রিভিউ সুন্দর করে উপস্থাপন করেছেন দেখে অনেক ভালো লাগলো ভাইয়া।
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
বাহ নাটকটা তো বেশ শিক্ষনীয়। যদিও এর আগে দেখা হয়নি তবে নাটকের রিভিউ পড়ে খুব ভালো লাগলো। আসলে এখন সময় স্বল্পতার কারণে নাটক দেখা তেমন একটা হয়না। তবুও মাঝে মাঝে সবার রিভিউ পোস্ট পড়ে কিছুটা হলেও আনন্দ পাওয়া যায়। ধন্যবাদ ভাইয়া ভালো থাকবেন।
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit