নদীর কূল কাবাব হাউজে হাঁস পার্টি || লাইফস্টাইল

in hive-129948 •  3 months ago 

আসসালামু আলাইকুম

বন্ধুরা, সবাই কেমন আছেন? আশা করি সবাই ভাল আছেন। আমিও আল্লাহর অশেষ রহমতে ভালো আছি। আমার বাংলা ব্লগ পরিবারের সকলের সুস্বাস্থ্য কামনা করছি। আজকে আমি আরেকটা নতুন ব্লগ নিয়ে আপনাদের সামনে হাজির হলাম।

IMG-20240621-WA0061-01.jpeg

https://w3w.co/groomed.pounce.stated

প্রতিদিনের কর্মব্যস্ততা প্রায় সময়ই বিরক্তিকর জীবন হয়ে দাঁড়ায়। মাঝে মাঝে অনেক ভালো কথাও ভালো লাগেনা। বন্ধুরা মিলে যদি একদিনও আড্ডা না দিতে পারি তাহলে পুরো সপ্তাহের ব্যস্ততার মাঝে নিজেকে রোবট মনে হয়। যান্ত্রিক এই শহরে নিজের মনের ভিতর একটু আনন্দ দেওয়া, সেটাও সম্ভব হয় না। চারিদিকে গাড়ির হর্ন, অফিসের চাপ, পরিবারের চাপ, সবকিছু মিলিয়ে কঠিন পরিস্থিতি হয়ে দাঁড়ায়। তাইতো মাঝে মধ্যে বন্ধুদেরকে নিয়ে আড্ডার জন্য দূর থেকে দুরান্তরে ছুটে বেড়াই। আড্ডার ছলে একটু নিজের হৃদয়ের প্রশান্তি অনুভব হয়। পুরো সপ্তাহের ক্লান্তি দূর হয়।

আমার বন্ধু ডাক্তার নুরুল আফসার হঠাৎ কল দিয়ে তার চেম্বারে ডাকলো। আজকে তার রোগীর চাপ কম। তাই সে দূরে কোথাও আমাকে নিয়ে আড্ডা দিবে প্লাস পেট পূজা করবে। তখন আমার সাথে আমার বন্ধু করিম ছিল। সাথে যোগ হলো আরেকজন বন্ধু। সর্বমোট আমরা চারজন একসাথে হলাম। বন্ধু আমাকে জিজ্ঞেস করল আমি কোথায় যেতে ইচ্ছুক? আজকে আমি যেখানে যেতে চাই সেখানেই সে যাবে। সেটা দূরে কোথাও অথবা কাছে। তাই আমি নদীর কল কাবাব হাউজে যাবো বলে সিদ্ধান্ত নিলাম। সেখানে অসাধারণ মুগ্ধতা রয়েছে। পাশে নদী, নদীর পাড়েই কাবাব হাউজ। চিন্তা করলাম প্রথমেই আড্ডা দিব এরপর কাবাব হাউজে ঢুকে পার্টি দিবো।

IMG-20240621-WA0051-01.jpeg

এই সিদ্ধান্তের উপর অটুট হয়ে সবাই ডাক্তারের চেম্বার থেকে বের হলাম। দুইটা মোটরসাইকেল নিয়ে রওনা হলাম নদীর কুল কাবাব হাউজের উদ্দেশ্যে। দাগনভূঞা বাজার থেকে এটা দূরত্ব প্রায় ১৫ কিলোমিটার হবে। ঈদের মৌসুমে একটু ব্যস্ততা ছিল রাস্তায়। তারপরও আমরা ধীরস্থিরভাবে এগিয়ে যাচ্ছিলাম নদীর কূল কাবাব হাউজের দিকে। মজা করতে করতে কাবাব হাউজের দিকে এগিয়ে যাচ্ছি। চার বন্ধু মিলে অবশেষে পৌঁছলাম নদীর কূল কাবাব হাউজে। সেখানে গিয়ে দেখলাম খুবই জাঁকজমক ভাবে সুসজ্জিত করে রাখছে কাবাব হাউজটি। দেখেই মুগ্ধ হলাম, মন আনন্দে মেতে উঠলো। কাবাব হাউজের সামনে আমরা কয়েকটা সেলফি তুললাম। কাবাব হাউজের গেটের কয়েকটি ছবি নিলাম। কাবাব হাউস টি নদীর ধারে হওয়া নিচের দিকে সিঁড়ি বেয়ে নিচে নামলাম।

প্রথমত সেখানে গিয়ে হাতমুখ ভালোভাবে ওয়াশ করলাম। ফ্রেশ হয়ে একটি হাউসে বসলাম। ওয়েটারকে ডাকলাম কি কি আইটেম আছে এই মুহূর্তে? সে আমাদেরকে ডিটেইলস জানালো। হালকা-পাতলা বৃষ্টি থাকায় সিদ্ধান্ত নিলাম হাঁসের মাংস খাব। তাই মাংসের অর্ডার দিলাম সাথে পরোটা এবং কোকাকোলার। অর্ডার দিয়ে ন্যূনতম আমাদের ১৫ মিনিট অপেক্ষা করতে হলো। এরই মাঝে আমাদের আড্ডা খুব ভালোভাবে জমলো। বিভিন্ন বিষয় নিয়ে কথা উঠলো যেন শৈশবে ফিরে গেলাম। স্কুল জীবনের অনেক স্মৃতি উপস্থাপিত হল। সাময়িক সময়ের জন্য যেন শৈশবে ফিরে গেলাম।

IMG-20240621-WA0059-01.jpeg

স্কুলের বিভিন্ন কর্মকান্ডগুলোর কথা স্মরণ করে খুবই মজার ছলে হাসাহাসি করলাম। কাকে কি বলে ডাকতাম সেসব বিষয় নিয়েও আলোচনার জমলো। এছাড়া আমাদেরকে শিক্ষক কি নামে ডাকতো সেটাও আমরা আলোচনার মধ্যে তুলে আনলাম। এত মজা অনুভব করছি যেটি বিগত সময়ে অনুভব করেনি। আড্ডা দিতে দিতে এক সময় অর্ডারের হাঁস এবং পরোটা নিয়ে আসলো। খাওয়ার সামনে আসার পর আমাকে দিল ডিস্ট্রিবিউট করতে। আমি আবার ছোট থেকেই সব সময় নেতৃত্বের ভূমিকা ছিলাম। স্কুল লাইফেও ক্লাস ক্যাপ্টেন ছিলাম। তাই সব ক্ষেত্রে আমাকেই সবচেয়ে বড় ভূমিকা রাখতে হতো। এসব কারণে আজকেও ডিস্ট্রিবিউট আমিও করলাম।

সবাইকে ডিস্ট্রিবিউট করার পরে খুব আনন্দ নিয়ে সবাই খেতে লাগলাম। এরই মাঝে কয়েকটি সেলফি তুলে নিলাম। স্মৃতিগুলোকে ধরে রাখার জন্যই মূলত সেলফি তোলা। সেলফি তুলতে গিয়েও শুরু হলো মজার কাহিনী। এক একজনের অঙ্গভঙ্গিমা একেক রকমের ছিল। ডিস্ট্রিবিউট করার পর খুব সুন্দর ভাবে সবাই সবার খাওয়ার শেষ করল। খুবই সুন্দর একটি আড্ডা জমলো। খাওয়া-দাওয়া শেষ করে নদীর ধারে গেলাম। রেস্টুরেন্টের কয়েকটা চেয়ার নিয়ে নদীর পাড়ে দীর্ঘক্ষণ বসে ছিলাম। খুবই সুন্দর বাতাস ছিল, এই গরমে কিছু স্বস্থি ফিরে পেলাম। নদীর পানি স্পর্শ করলাম, মন আনন্দে মেতে উঠেছিল। এটি খুবই ভালো লাগার একটি মুহূর্ত ছিল।

IMG-20240621-WA0060-01.jpeg

সব আনুষ্ঠানিকতার শেষ করে, বাড়ি ফেরার সময় হল। রেস্টুরেন্টে থাকা অবস্থায় বেজে গেল রাত ১২:০০ টা। তাই সিদ্ধান্ত নিলাম এখানে আর সময় ব্যয় করব না। এবার যাওয়ার সময় হয়েছে। তাই আবার পুনরায় মোটরসাইকেল নিয়ে বাড়ির উদ্দেশ্যে রওনা দিলাম। যেতে যেতে ১৫ কিলোমিটার পার করে ডাক্তারের চেম্বারে হাজির হলাম। সেখানে আরো কিছুক্ষণ সময় ব্যয় করলাম। সব শেষ করে ডাক্তার সহ বাড়িতে ফিরে আসলাম। ডাক্তার আমার জ্যাঠাতো ভাই হওয়া আমাদের একই বাড়ি। খুবই ভালো সময় ব্যয় করলাম। আজকে এখানে শেষ করলাম। এমন এক মুহূর্ত কাটাতে পেরে খুবই ভালো লাগলো।

IMG-20240621-WA0055-01.jpeg

আজকে এ পর্যন্তই। সবাইকে অন্তরের অন্তস্থল হতে মোবারকবাদ জানিয়ে এখানেই শেষ করছি। ফি আমানিল্লাহি ওয়া রাসুলিহিল কারীম সাল্লাল্লাহু তা'আলা আলাইহি ওয়াসাল্লাম।

নিজেকে নিয়ে কিছু কথা

1000106788.jpg

আসসালামু আলাইকুম, আশা করি সবাই ভালো আছেন। প্রথমেই সবাইকে আমার আন্তরিক অভিনন্দন। আমি তাহেরুল ইসলাম, আমার স্টিমিট ইউজার আইডি হল - @ti-taher। আমি ফেনী জেলায় জন্মগ্রহণ করেছি। বর্তমানে ফেনী শহরে অবস্থান করছি। আমি ফেনীতে পড়াশোনা করেছি এবং বড় হয়েছি। আমি একজন ভ্রমণপ্রিয় মানুষ, আমি ভ্রমণ করতে এবং ছবি তুলতে ভালোবাসি। নতুন জায়গায় ঘুরতে আগ্রহী, নতুন জায়গায় ঘুরতে এবং নতুন কিছু আবিষ্কার করতে ভালোবাসি। আমি বই পড়তেও ভালোবাসি, অনেকে আমাকে বই পোকাও বলে থাকে। আমি কবিতা, গল্প, উপন্যাস এবং বৈজ্ঞানিক বই সহ সব ধরনের বই পড়তে পছন্দ করি। আমার প্রিয় কবি "কাজী নজরুল ইসলাম"। প্রিয় কবিতা "বিদ্রোহী"।( ফি আমানিল্লাহ)


VOTE @bangla.witness as witness

witness_vote.png

OR

SET @rme as your proxy


witness_proxy_vote.png

Authors get paid when people like you upvote their post.
If you enjoyed what you read here, create your account today and start earning FREE STEEM!
Sort Order:  

আসলেই কাজের ফাঁকে ফাঁকে বন্ধুরে বন্ধুদের সাথে আড্ডা দিতে বেশ ভালোই লাগে, তাছাড়া বন্ধুদের সাথে সময় কাটালে পুরো শব্দ জুড়ে কাজ ও করতে ভালো লাগে। ভালোই হলো ওয়েদারের সাথে সাথে খাবারও জমে গেলো।ভালো লাগলো পোস্ট পড়ে।ধন্যবাদ

অসংখ্য ধন্যবাদ আপনাকে আমার পোস্টে মন্তব্য করার জন্য। পুরো সপ্তাহ ধরে কাজের ক্লান্তির অবসান হয় বন্ধুদের সাথে একটুখানি আড্ডায়।

বন্ধুদের সাথে আড্ডা দিলে মানসিক শান্তি পাওয়া যায়। হাঁস পার্টি দেখে তো আমারও ইচ্ছে করছে হাঁসের মাংস খেতে। ভাইয়া আপনি অনেক সুন্দর সময় কাটিয়েছেন আর মুহূর্তগুলো সবার মাঝে শেয়ার করেছেন এজন্য ধন্যবাদ জানাচ্ছি।

অসংখ্য ধন্যবাদ ভাইজান, আমার পোস্টে মহামূল্যবান মন্তব্য করার জন্য। হাঁস পার্টি দেয়ার মুহূর্তটা খুবই মজাদার ছিল। বন্ধুদের নিয়ে আড্ডাটা খুবই ভালোভাবে জমলো।

বন্ধুরা মিলে এমন আয়োজন করলে সত্যিই সেখানে অনেক ভাল সময় কাটে। হাঁসের মাংস আমার খুবই পছন্দের। আপনাদের পিকনিকের আয়োজন দেখে খুবই ভালো লাগলো। অসংখ্য ধন্যবাদ ভাইয়া হাঁস পার্টির সুন্দর মুহূর্ত আমাদের সাথে শেয়ার করার জন্য।

আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ আমার পোস্টে মূল্যবান মন্তব্য করার জন্য। হাঁস পার্টির আয়োজনটা অনেকের মজার ছিল। নদীর কূলের আড্ডাটাও ভালোভাবে জমলো।

এই কাবাব হাউজের দৃশ্যটা আমার খুব ভালো লাগে। এক সাইডে নদী অন্যদিকে কাবাব হাউস দারুণ সময় অতিবাহিত করতে পারবেন। আপনাদের দৃশ্য গুলো দেখলেই চলে যেতে ইচ্ছা করে সেখানে ঘুরতে। সব বন্ধুরা মিলে আড্ডা দেওয়ার সাথে খাওয়া-দাওয়া পার্টি। অনেক ভালো লাগলো আপনার শেয়ার করা মুহূর্তটি পড়ে।

অসংখ্য ধন্যবাদ আপনাকে আমার পোস্টে মন্তব্য করার জন্য। বন্ধুরা সবাই মিলে নদীর কূলে আড্ডা দিলাম। পানি স্পর্শ করলাম। আড্ডা শেষে হাঁস পার্টি দিলাম, খুবই ভালো লাগলো।

হালকা-পাতলা বৃষ্টি থাকলে, ওই ঠান্ডা ঠান্ডা ওয়েদারে হাঁসের মাংস খেতে সত্যিই অসাধারণ লাগে ভাই। তাই বলবো , ওই সময়টাতে আপনারা হাঁসের মাংস খাওয়ার সিদ্ধান্তটা ঠিকই নিয়েছিলেন। যাইহোক, এরকম খাওয়া-দাওয়া, তারপর নদীর ধারে গিয়ে সুন্দর সময় কাটানো, ওভারল খুব ভালো একটা মুহূর্ত আপনারা পার করেছিলেন সেটা আমি পোস্ট টি বুঝতে পারলাম। তাছাড়া বন্ধুদের সাথে আড্ডা দিতে দিতে শৈশবের স্মৃতি গুলো মনে করতে অনেক ভালো লাগে। আমরাও যখন বন্ধুরা মিলে আড্ডা দিই, শৈশবের অনেক কিছুই সামনে চলে আসে।

অসংখ্য ধন্যবাদ আপনাকে, আমার পোস্টে আপনার মহামূল্যবান মন্তব্য করার জন্য। হালকা হালকা বৃষ্টিতে অসাধারণ লেগেছে হাঁসের মাংস। তবে আড্ডাটা খুব ভালোভাবে জমলো।

নদীর কূল কাবাব হাউস এন্ড পার্টি সেন্টার এর দৃশ্যটা আমার কাছে খুব ভালো লেগেছে।বন্ধুদের সাথে মিলে এমন আয়োজন করলে সত্যি অনেক ভালো লাগে।আপনারা খুব সুন্দর একটি মুহূর্ত অতিবাহিত করেছেন।হালকা হালকা বৃষ্টির ভিতর হাঁসের মাংস সাথে ভুনা খিচুড়ি জাস্ট ওয়াও।হাঁসের মাংস আমার অনেক পছন্দের। আপনাদের পার্টি দেখে তো আমার ও এখন হাঁসের মাংস খেতে ইচ্ছে করছে। আপনাকে অনেক ধন্যবাদ সুন্দর একটি পোস্ট শেয়ার করার জন্য।