তিন ঘন্টার জ্যামে আটকা পড়লাম ঢাকার পথে || লাইফস্টাইল

in hive-129948 •  5 months ago 

আসসালামু আলাইকুম

বন্ধুরা, সবাই কেমন আছেন? আশা করি সবাই ভাল আছেন। আমিও আল্লাহর অশেষ রহমতে ভালো আছি। আমার বাংলা ব্লগ পরিবারের সকলের সুস্বাস্থ্য কামনা করছি। আজকে আমি আরেকটা নতুন ব্লগ নিয়ে আপনাদের সামনে হাজির হলাম।

IMG-20240610-WA0018-01.jpeg

বাংলাদেশ একটি জনবহুল দেশ। জনসংখ্যার তুলনা সম্পদের পরিমাণ অনেক কম। প্রতিনিয়ত জনসংখ্যা বৃদ্ধির কারণে সম্পদের পরিমাণ কমছে ঠিক তেমনি প্রতিনিয়ত বিভিন্নভাবে নিত্য নতুন সমস্যার সম্মুখীন হতে হচ্ছে সবাইকে। এই জনসংখ্যা বৃদ্ধির কারণে গাড়ির পরিমাণও বৃদ্ধি পেল। পরিবহন অনুযায়ী রাস্তা এতটা প্রশস্ত নয়। আবার আইনের সঠিক প্রয়োগও নেই। যার কারনে পোহাতে হচ্ছে নানান সমস্যা। আমার বিশেষ একটি কাজে আমি ঢাকা যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছি। রাতে আমি স্টার লাইনের টিকিট কেটে নিলাম। আমার গাড়ি ছাড়বে ভোর ৬:৩০ মিনিটে।

IMG-20240610-WA0012.jpg

তাই ঘুম থেকে উঠলাম ৪:৩০ মিনিটে। ঘুম থেকে উঠে গোছল করলাম এবং আনুষঙ্গিক কাজ শেষ করলাম। সব কিছু ঠিক করে ঘর থেকে বের হলাম ৫:৫০ মিনিটে। দাগনভূঞা বাজারে গেলাম ৬:১০ মিনিটে। প্রথমে গিয়ে কাউন্টারে গেলাম। টিকেট রাতেই কেটে ফেললাম। যেন সকালে টিকেটের ঝামেলা পোহাতে হলো না। কাউন্টারের পাশে একটি চা দোকান ছিল, সেখানে সকালের নাস্তা করে ফেললাম। নাস্তার আইটেম ছিল এক কাপ রং চা আর একটি ৫ টাকা দামের পাউরুটি। গাড়ির জন্য অপেক্ষা রইলাম। ৬:২৫ মিনিটে গাড়ি আসলো। গাড়ি আসার সাথেসাথে গাড়িতে উঠলাম এবং সিটে বসলাম।

বরাবর ৭:৩০ মিনিটে গাড়ি ছাড়লো। আমি জানালার পাশে বসেছি। যেতে যেতে চারদিকের দৃশ্যগুলো উপভোগ করলাম। বেশ সুন্দরভাবেই গাড়ি চলছিল। নন স্টপে গাড়ি চলে গেল কুমিল্লা বিশ্বরোড। সেখানে যাওয়ার পর নাস্তা বিরতি দিল। তখন গাড়ি থেকে নামলাম এবং হোটেলে ঢুকলাম। সেখানে রুটি এবং মুরগির ঝাল ফ্রাই এর অর্ডার দিলাম। বেশ ভালো লেগলো মুরগির ঝাল ফ্রাই। ঝাল ফ্রাইটি খুবই সুস্বাদু ছিল। খাওয়া শেষ করে ফিরে এলাম গাড়িতে। যাত্রা বিরতি শেষে গাড়ি পূণরায় চলা শুরু করলো। কোন সমস্যা ছাড়াই আমরা সামনের দিকে এগিয়ে যাচ্ছি।

IMG-20240610-WA0022.jpg

IMG-20240610-WA0020.jpg

কুমিল্লা ক্যান্টনমেন্ট পার হয়ে যখন কাঁচপুরের কাছাকাছি গেলাম ঠিক তখনই রাস্তা প্রচুর জ্যাম। কোনভাবেই গাড়ি সামনের দিকে এগিয়ে যাচ্ছে না। খোঁজখবর নিয়ে দেখলাম, রাস্তা নাকি একটি অ্যাক্সিডেন্ট হয়েছে। যার কারনে এত জ্যাম বাঁধলো। তখন গাড়ি থেকে নিচে নেমে কিছুক্ষণ হাঁটাহাঁটি করলাম। গাড়ি টোটালি সামনের দিকে এগিয়ে যাচ্ছে না। তিন ঘন্টা জ্যামে দাঁড়িয়েছিলাম। জ্যামের কোন কূলকিনার পাচ্ছিনা। সেখানে কিছু ফটোগ্রাফি করে নিলাম।

বাংলাদেশের জনসংখ্যা এত বেশি বৃদ্ধি পেয়েছে যে, প্রতিনিয়ত গাড়ি বাড়ানো হচ্ছে। গাড়ির পরিমাণ অনুযায়ী রাস্তা বাড়ছে না। তাইতো প্রতিনিয়ত যানজট বেঁধেই আছে। ঢাকা বাংলাদেশের রাজধানী হওয়া, সবাই ঢাকা মুখী। বাংলাদেশের বড় বড় সরকারি, বেসরকারি প্রতিষ্ঠানগুলো ঢাকাতে রয়েছে। প্রতিনিয়ত চাকরির সন্ধানেও ঢাকা যাচ্ছে অনেক মানুষ। মানুষের তুলনা কর্মসংস্থান খুবই কম। তাই ঢাকার পথে সবসময় যানজট লেগে থাকে। এ সমস্যা থেকে কোনভাবেই যেন মুক্তি পাচ্ছেনা মানুষ। প্রতিনিয়তই হয়রানির শিকার হতে হচ্ছে সবাইকে।

20240607_230446.jpg

IMG-20240610-WA0017.jpg

যদি এর জন্য অন্যতম দায় হিসেবে আমরা দেখি, তাহলে বলবো আমাদের দেশের আইনশৃঙ্খলা বাহিনী এর জন্য অনেকাংশে দায়ী। ট্রাফিক পুলিশ তাদের দায়িত্ব সঠিকভাবে পালন করছে না। তাদের অনিয়ম গুলোই সবচেয়ে বেশি দৃশ্যমান। আমরা সকলেই জানি অনুন্নত দেশগুলোতে যানজটের পরিমাণ তুলনামূলক ভাবে বেশি থাকে। বাংলাদেশের তেমনি একটি দেশ। তবে আমরা যদি একটু সচেতন হই এ যানজট থেকে নিরসন হওয়া আমাদের জন্য সহজ হবে।

আমার মনে হয় হাইওয় রোডগুলো থেকে মিনি বাসগুলো উঠিয়ে দিয়ে সর্বনিম্ন ৫২ সিটের বাস রাখা উচিত। দোতলা বাস রাস্তা নামানো উচিত। তাহলে কিছুটা হলেও যানজট থেকে মুক্তি পাওয়া সম্ভব। সঠিক ডিসিপ্লিনতা মেনে যদি চলে তাহলে অনেক অংশে যানজট কমে যাবে। বিআইপি রোড গুলো বন্ধ করে দিলেও অনেক যানজটের নিরাশন হবে। যাইহোক, আমার ঢাকা পৌঁছাতে সাড়ে পাঁচ ঘন্টা লেগে গেল।

IMG-20240610-WA0015.jpg

IMG-20240610-WA0016.jpg

IMG-20240610-WA0013.jpg

আজকে এ পর্যন্তই। আগামী পোস্টে এর পরবর্তী অধ্যায় তুলে ধরব। সবাইকে অন্তরের অন্তস্থল হতে মোবারকবাদ জানিয়ে এখানেই শেষ করছি। ফি আমানিল্লাহি ওয়া রাসুলিহিল কারীম সাল্লাল্লাহু তা'আলা আলাইহি ওয়াসাল্লাম।

নিজেকে নিয়ে কিছু কথা

1000106788.jpg

আসসালামু আলাইকুম, আশা করি সবাই ভালো আছেন। প্রথমেই সবাইকে আমার আন্তরিক অভিনন্দন। আমি তাহেরুল ইসলাম, আমার স্টিমিট ইউজার আইডি হল - @ti-taher। আমি ফেনী জেলায় জন্মগ্রহণ করেছি। বর্তমানে ফেনী শহরে অবস্থান করছি। আমি ফেনীতে পড়াশোনা করেছি এবং বড় হয়েছি। আমি একজন ভ্রমণপ্রিয় মানুষ, আমি ভ্রমণ করতে এবং ছবি তুলতে ভালোবাসি। নতুন জায়গায় ঘুরতে আগ্রহী, নতুন জায়গায় ঘুরতে এবং নতুন কিছু আবিষ্কার করতে ভালোবাসি। আমি বই পড়তেও ভালোবাসি, অনেকে আমাকে বই পোকাও বলে থাকে। আমি কবিতা, গল্প, উপন্যাস এবং বৈজ্ঞানিক বই সহ সব ধরনের বই পড়তে পছন্দ করি। আমার প্রিয় কবি "কাজী নজরুল ইসলাম"। প্রিয় কবিতা "বিদ্রোহী"।( ফি আমানিল্লাহ)


VOTE @bangla.witness as witness

witness_vote.png

OR

SET @rme as your proxy


witness_proxy_vote.png

Authors get paid when people like you upvote their post.
If you enjoyed what you read here, create your account today and start earning FREE STEEM!
Sort Order:  

জরুরী কাজে ঢাকা গেলেন ভালো কথা। কিন্তু এই ঈদের সময় আপনি গেলেন আপনার তো বেশ খারাপ অবস্থা হবে জ্যামের জন্য। এমনিতে ঢাকা শহর মানে হচ্ছে জ্যামেরর শহর। এখানে মানুষ এত সহজেই যায় না যার কারণ হচ্ছে জ্যামের কারণে। যদিও আমাদেরকে বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ কাজে যেতে হয় কিন্তু করার কিছু থাকে না। দীর্ঘ জার্নির পর অবশেষে ঢাকা পৌঁছলেন আপনার জন্য শুভকামনা রইল।

প্রায় সময় সপ্তাহে দুইবারও যেতে হয় ঢাকাতে। এত বেশি জ্যাম আগে কখনো হয়নি। তবে এবার জার্নিটা অসম্ভবভাবেই বাজে ছিল।

এই সমস্যাটা খুবই বিরক্তিকর। একবার ইদে গ্রামে যাওয়ার সময় ভোরে রওনা দিয়েও পৌঁছাতে হয়েছে রাত ১২টার পর।। কবে যে এই সমস্যার সমাধান হবে আল্লাহই ভালো জানে।

আসলে বাংলাদেশের সিস্টেমের পরিবর্তন না হলে এ সমস্যা কখনোই সমাধান হবে না। এটি বরাবরই দুঃখজনক বিষয়।

আসলে আপু কোথায় ভ্রমণ করলে যদি জ্যামে পড়ে যাই তাহলে সত্যি খুবই বিরক্তি লাগে। আমি একবার ঢাকা থেকে বাসায় এসেছিলাম তখন আমি এভাবে একটানা ৬ ঘন্টার পথ আসতে আমার ১৮ ঘণ্টা লেগেছিল। সেখান থেকেই আমার কাছে এই জ্যামে পড়ে থাকাটা সত্যি খুবই খারাপ লাগে। আপনিও ঢাকার পথে ৩ ঘন্টা যাবৎ জ্যামে পড়েছিলেন সত্যি বিষয়টা খুবই কষ্টকর। আর এখন সামনে ঈদ যে কারণে ঢাকা শহরে এই জ্যামটা আরো বেড়ে গিয়েছে। তবে ধন্যবাদ আপনাকে পোস্টটি আমাদের মাঝে শেয়ার করার জন্য।

ওভারঅল বাংলাদেশের সিস্টেমের পরিবর্তন না হলে এই সমস্যা থেকে উত্তরণের কোন উপায় নেই। ডে বাই ডে আরও সমস্যা পোয়াতে হবে। ধন্যবাদ আপনার জীবনে ঘটে যাওয়া এমন জ্যামের কাহিনী আমাদের সাথে শেয়ার করার জন্য।

যতদিন যাবে তত জ্যাম বাড়তে থাকবে কারণ এটা ঢাকা শহর। সামনে ঈদের দিন চলে আসছে তাই মানুষ যে যার মত নিজের গ্রামে বাড়িতে যাওয়ার চেষ্টা করবে। এদিকে কেনাকাটার লোকজন আর চাকরিজীবী স্টুডেন্ট মানুষের ভিড় বাড়তে থাকবে। আর হয়তো এমনই কারণে জ্যামে আটকা পড়েছেন। সকল দিক বিবেচনা করে আমার কাছে মনে হয় গ্রামে খুব শান্তিতে আছি।

সঠিক বলেছেন আপনি। ঈদের মৌসুমে জ্যামের পরিমাণটা অনেক হারে বৃদ্ধি পায়। তবে আইনের সঠিক ব্যবহার না থাকায় এটি অনেক বড় প্রভাব বিস্তার করেছে। বাংলাদেশে যানবাহনের ডিসিপ্লিনতার অনেক ঘাটতি রয়েছে।