দূষিত শহরে যেভাবে ফ্রেশ বাতাস পাবেন

in hive-129948 •  2 years ago 

আসসালামু আলাইকুম।
এই লেখাটা যখন লিখছি তখন গ্লোবাল এয়ার কোয়ালিটি র‍্যাংকিংয়ে ঢাকা অবস্থান করছে ৬ নম্বরে। গত কয়েকদিন আগেই ছিল এক নম্বরে। দিল্লী কিংবা লাহোরের চেয়েও বাতাসের অবস্থা খারাপ ছিলো।
এখন কিঞ্চিৎ র‍্যাংকিং কমেছে, তবে অবস্থা ভালো নয়। যখন কোনো এলাকায় একিউআই স্কোর ১০১ থেকে ১৫০-এর মধ্যে থাকে, তখন তা সংবেদনশীল মানুষের জন্য অস্বাস্থ্যকর বলে ধরে নেওয়া হয়। সেখানে ঢাকার একিউআই স্কোর এখন ২১৪! যাকে বলা হচ্ছে চরম অস্বাস্থ্যকর।
এখন এর সামষ্টিক অনেক সমাধান থাকতে পারে। কিন্তু আপনি নিজের জন্য কি করবেন?
তাই নিয়েই মুলত এই লেখা।
কিছুদিন আগে যখন বায়ুদূষণের কারণে দিল্লীতে একরকম অচলাবস্থার সৃষ্টি হয়েছিল তখন দেখেছিলাম কিছু উদ্যোক্তারা সমাধানে কাজ করছিলেন। সেখান থেকেই দুটো আইডিয়া দেখাচ্ছি-

১। বাড়িতেঃ মুলত এই চরম বায়ুদুষণের ব্যাপারটা সামনে এসেছে তখন আমরা কি করেছি? মাস্ক ব্যাবহার করা শুরু করেছি, কেউ এয়ার পিউরিফায়ার কিনেছি কিংবা বাসা থেকে বেরোনো কমিয়ে দিয়েছি। বায়ুদূষণের কথা মাথায় আসলেই আমরা ভেবে নিই ইটভাটার ধোঁয়া, গাড়ির ধোঁয়া কিংবা রাস্তার ধুলো। কিন্তু আপনি জানেন কি, বাইরের বাতাসের চেয়ে আপনার ঘরের বাতাস ৫ গুণ বেশী বিষাক্ত? গড়ে একজন সাধারণ ব্যাক্তি দিনে ১২ ঘন্টা তার ঘরেই কাটান, আর ছুটির দিনে সারাদিন। সুতরাং বাইরে না বেরিয়ে নিজেকে মোটেও নিরাপদ মনে করার কারণ নেই।
তো এই ঘরেই বিশুদ্ধ বাতাস পেতে কি করবেন? দুটো জিনিস-

ক) বাতাস বিশুদ্ধকারী গাছঃ

নাসার মতে তিনটা গাছ যা ঘরে ফ্রেশ বাতাস পেতে সাহায্য করে।

Areca palm (দিনের বেলার জন্য) - সুপারি টাইপের একটা গাছ। ছবি দেখলে চিনবেন। যেকোনো নার্সারিতে পাবেন। এটি ক্রমাগত ঘরের কার্বন ডাই অক্সাইডকে অক্সিজেনে রুপান্তর করে। এটি বেডরুমেই রাখতে পারেন এবং সপ্তাহে একবার পানি দিলেই চলে। তাত্ত্বিক ভাবে প্রতিজনের জন্য ৪টি গাছ হলেই হবে।

image.png

Snake plant(রাতের বেলার জন্য) -আগেরটার মত একই কাজ করে। একটু দামী। বনায়ন ডটকমে দেখতে পারেন- http://www.bonayon.com/Snake-Plant-Indoor-Plant-with-Ceramic-Pot

image.png

Money Tree- জী টাকার গাছ। এটি ফর্মালডিহাইড ও অন্যান্য ক্ষতিকারক উপাদান থেকে রক্ষা করবে।

image.png

এটি লাগানোর বাংলা গাইড দেখুন-

খ) এয়ার পিউরিফায়ারঃ

যদিও গাছগুলোই যথেষ্ট, কিন্তু আপনি যদি অতি দূষিত এলাকায় থাকেন তাহলে এয়ার পিউরিফায়ার কিনতে পারেন। কিন্তু কেনার আগে অবশ্যই দেখে নিবেন HEPA ফিল্টার আছে কিনা। এটা সে ফিল্টার যা অতিক্ষুদ্রকণাকে আটকায়। নাহলে অল্প দামে সস্তা কিছু কিনে টাকাই নস্ট হবে শুধু।

২। বাইরে-মাস্কঃ

আপনি যদি ১৫-২০ টাকার মাস্ক কিনে ভেবে বসে থাকেন আপনি নিরাপদ, তাহলে ভুল করছেন। যদিও এর উপকার আছে, কিন্তু খুবই সামান্য। মাস্ক কেনার আগে অবশ্যই দেখে নিবেন এতে Particulate Matter 2.5 ফিল্টার আছে কিনা, এটাই মুলতঃ ক্ষতিকারক জিনিস। বাংলাদেশের অনলাইন শপে এক জায়গাতেই পেলাম এরকম একট্‌ আপনারা বিভিন্ন জায়গায় দেখতে পারেন- (এটা ভাবার কিছু নেই যে আমি কিছু বেচার প্লান করছি, আমি লিখছি সদকায়ে যারিয়ার জন্য)

এই মোটামুটি। তবে মুল সমাধান হলো দূষিত এলাকা থেকে নিরাপদ কোথাও শিফট করা।
আরেকটা জিনিস, এটা উদ্যোক্তাদের জন্য ভালো কিছু ব্যাবসার পথ খুলে দিতে পারে।
মাআ'সসালাম।
(লেখাটি প্রথম আমার বাংলা ব্লগেই প্রকাশিত হলো)

Authors get paid when people like you upvote their post.
If you enjoyed what you read here, create your account today and start earning FREE STEEM!
Sort Order:  

স্বাস্থ্য সচেতনতা মূলক একটা দরকারি লেখা উপহার দেয়ার জন্য আপনাকে ধন্যবাদ।
বায়ুদূষণের ফলে অনেক রোগে আক্রান্ত হচ্ছেন মানুষ। আমরা যারা ইট-কাঠ-পাথরের শহরে বসবাস করি তারা দূষণের শিকার হচ্ছি বেশি। উন্নয়নের নামে প্রকৃতি ধবংস আমরা এখন ফ্রেস অক্সিজেন খুজে বেড়াচ্ছি!