ঢাকা থেকে গ্রামের গিয়ে হালকা কিছু খাবার দাবাড় তৈরী করার অনুভূতি।।

in hive-129948 •  2 months ago 

আসসালামু আলাইকুম ওয়া রাহমাতুল্লাহ
পরম করুণাময় অসীম দয়ালু মহান সৃষ্টিকর্তার নামে শুরু করিতেছি
-

1000002119.jpg

হ্যালো আমার প্রিয় বাংলা ব্লগবাসি বন্ধুরা। আপনারা সবাই কেমন আছেন। আশা করি আপনারা সবাই সৃষ্টিকর্তার অশেষ রহমতে অনেক ভালো আছেন।আজকে আমি আপনাদের সাথে নতুন একটি ব্লগ নিয়ে হাজির হয়েছি। আমার দেবর বিদেশ থেকে আসার পরে প্রথম দিনের হালকা কিছু খাবারের আয়োজন করার অনুভূতি শেয়ার করতে যাচ্ছি।

গত সোমবারে আমার দেবর দীর্ঘ প্রায় ছয় বছর পরে সৌদি আরব থেকে বাংলাদেশে এসেছে। আমি যতটুকু শুনেছি ২০১৯ সালের শেষের দিকে তিনি সৌদিআরবে গিয়েছিলেন। যদিও আমাদের আত্মীয়-স্বজন অনেক মানুষ সৌদি আরবে রয়েছে। ইউরোপ আমেরিকাতে আমাদের আত্মীয়-স্বজন তেমন একটা নাই। মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলোতেই আমাদের আত্মীয়-স্বজন বেশি থাকে। তো আমার দেবরকে এয়ারপোর্ট থেকে রিসিভ করার জন্য গ্রাম থেকে আমার শ্বশুর, আমার ননদ ও ননদের মেয়েরা গাড়ি ভাড়া করে গিয়েছিল। আমি আর আমার হাজবেন্ড নারায়ণগঞ্জ থেকে এয়ারপোর্টে গিয়েছিলাম। আমার শশুর শাশুড়ি আগেই বলে রেখেছিল যেন তাদের সাথে আমি গ্রামে চলে আসি।

তো আমার দেবর সকাল ১১ টার ফ্লাইটে হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে নেমেছিল। বারোটার মধ্যে আমরা সবকিছু নিয়ে গাড়িতে উঠে পড়ি। যেহেতু ঢাকা শহরে বর্তমানে প্রচুর জান জট, সেজন্য গাড়ির ড্রাইভার ৩০০ ফিট দিয়ে কাঞ্চন ব্রিজ হয়ে ঢাকা থেকে বের হয়েছিল। তারপর নারায়ণগঞ্জের উপর দিয়ে কুমিল্লার কোম্পানীগঞ্জ দিয়ে আমরা ব্রাহ্মণবাড়িয়াতে এসেছিলাম। মাঝখানে একটি রেস্টুরেন্টে আমরা সবাই একসাথে লাঞ্চ করেছিলাম। সেখানে আমাদের প্রায় এক ঘন্টার মত সময় অতিবাহিত হয়েছিল। তারপর আমাদের বাসায় আসতে আসতে প্রায় সন্ধ্যা ছয়টা বেজে গেছিল।

বাসায় আসার পরে আমার শাশুড়ি একা রাতেরবেলার জন্য তেমন কিছু রান্না করে নাই। সেজন্য আমি বাবুকে রেখে তাড়াহুড়া করে কিছু রান্নাবান্নার আয়োজন করলাম। অল্প সময়ের মধ্যে যতটুকু সম্ভব রান্নাবান্না করার চেষ্টা করেছি। সময়ের অভাবে আলাদা আলাদা ভাবে খাবারের ফটোগ্রাফি গুলো করা হয়নি। ওই দিনের মেনু তো ছিল পোলাও ভাত, ঢেরস ভাজি, চিংড়ি মাছ ভর্তা, ডিম ভাজা, পাবদা মাছ ভুনা ও মাংস। আমি ঢাকা থেকে এসে তাড়াহুড়া করে এই আইটেমগুলো করেছিলাম।

1000002116.jpg

আমার শাশুড়ি বলেছিল যেহেতু আমি অনেকটা পথ জার্নি করে এসেছি। রাতের বেলা শটকাট কিছু রান্না করে ফেলার জন্য। আমি ক্লান্ত অবস্থায় যতটুকু সম্ভব চেষ্টা করেছি আমার সাধ্যমত ভালো কিছু রান্না করার জন্য। তো রাত্রেবেলা সবাই খাবার দাবাড় গুলো খেয়ে আমার অনেক প্রশংসা করেছে। তাছাড়া আমার দেবর এই প্রথম আমার হাতের রান্না করা খাবার খেয়েছে। আমার যখন বিয়ে হয়েছিল আমার দেবর তখন বিদেশে ছিল। তারপর আমি বেশ কয়েকমাস গ্রামে থেকে ছিলাম, তখন তিনি বাড়িতেও ছিল না।

আমার শ্বশুর বাড়িতে আমার খাবার-দাবাড় রান্নার অনেক প্রশংসা হয়। বিশেষ করে আমার শ্বশুর-শাশুড়ি আমার রান্নার খুবই প্রশংসা করে। আমি আমার বাবার বাড়িতে তেমন রান্নাবান্না করি নাই। যতটুকু প্রয়োজন ঠিক ততটুকুই রান্না বান্না করেছি। তাছাড়া আমাদের বাড়িতে সব সময় গ্যাসের মাধ্যমে রান্না করা হয়। কিন্তু আমার শ্বশুর বাড়িতে মাঝে মাঝে মাটি চুলা দিয়ে ও রান্না করা হয়। আমার শাশুড়ি গ্যাসের চুলার রান্না তেমন একটা খায় না। তিনি সবসময় লাকড়ির চুলা দিয়ে রান্না করে খাই। যাই হোক রান্নাবান্না করে সবাইকে খাবার দাবার খাইয়ে নিজে খেয়ে ঘুমাতে ঘুমাতে প্রায় এগারোটা বেজে গিয়েছিল। ঢাকা থেকে ঘুমাতে ঘুমাতে বাবু গ্রামে এসেছিল। সন্ধ্যার পরে বাবু ঘুম থেকে উঠে আর ঘুমাতে চাচ্ছিল না। আমারও শরীর খুবই ক্লান্ত ছিল। গ্রামে আসলে অবশ্য বাবুকে আমার তেমন কুলে নিতে হয় না। আমার শ্বশুর শাশুড়ি আমার ছোট দেবর ননদ সবাই বাবুকে কুলে নিয়ে রাখে। এ এদিক দিয়ে আমি একটু ছাড় পাই। যাইহোক ঐদিন তাড়াহুড়ো করে কিছু খাবার দাবাড় রান্না করেছিলাম সেগুলোর অনুভূতি আজকে আপনাদের সাথে শেয়ার করলাম।

আশা করি আমার ব্লগটি আপনাদের সবার কাছে ভালো লাগবে। আজকে আর কথা বাড়াচ্ছি না। এখান থেকেই বিদায় নিতে চাই। আপনারা সবাই ভাল থাকবেন, সুস্থ থাকবেন। আবার আগামীকাল দেখা হবে ইনশাআল্লাহ। সবাই সবার জন্য দোয়া করবেন।

সবাইকে অনেক অনেক ধন্যবাদ,আল্লাহ হাফেজ।।

ফটোগ্রাফির বিবরণ:

2gsjgna1uruv8X2R8t7XDv5HGXyHWCCu4rKmbB5pmEzjYSj1ATxRsaEvyH89EyziiK3D1ksn1tTDvDwLCveqrhctVcDnDqtNbsqFMtuqD1RetzrgjG.png

ডিভাইসমোবাইল
মডেলরেডমি নোট-৮
শিরোনামঢাকা থেকে গ্রামের গিয়ে হালকা কিছু খাবার দাবাড় তৈরী করার অনুভূতি ।।
স্থানকসবা, ব্রাহ্মণবাড়িয়া, বাংলাদেশ।
তারিখ২৮-১০-২০২৪
কমিউনিটিআমার বাংলা ব্লগ
ফটোগ্রাফার@titash

2gsjgna1uruv8X2R8t7XDv5HGXyHWCCu4rKmbB5pmEzjYSfQKFP87GjNCaLdCLKkYFWdxRmYuKurkfDpnYWoUUypXiwgziwKKNP24nNC65i32Am8Fp.png

JvFFVmatwWHRfvmtd53nmEJ94xpKydwmbSC5H5svBACH7xbS7ungTbMjNMsQ7fPnm8uUBT2bU8Azf8zCDQrq3tkzHjjCFyraxJQeY79tPTN45w8XxU9wtvaFmWRaLhgHSy5GYKQ6bg.png

আমার পরিচিতি

আমি মোছাঃ মুসলিমা আক্তার নীলা। স্টিমিট প্লাটফর্মে আমি @titash নামে পরিচিত। আমার জন্মস্থান চট্রাগ্রাম বিভাগের ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার ভাদুঘর গ্রামে। আমি বর্তমানে ব্রাহ্মণবাড়িয়া সরকারি মহিলা কলেজে অনার্স তৃতীয় বর্ষে বাংলা বিভাগ নিয়ে পড়াশোনা করতেছি। আমি বিবাহিত,আমার একটি কন্যা সন্তান আছে। আমি আমার হাসবেন্ডের সাথে ঢাকা বিভাগের অন্তর্গত নারায়নগঞ্জ জেলায় বসবাস করছি। আমি আমার হাসবেন্ডের মাধ্যমে স্টিমিট প্লাটফর্ম সম্পর্কে জানতে পারি। প্লাটফর্মটার বিষয়ে জেনে আমি এখানে কাজ করার আগ্রাহ প্রকাশ করি। তারপর ২০২৩ সালের ফ্রেব্রুয়ারী মাসে আমার বাংলা ব্লগের মাধ্যমে স্টিমিট প্লাটফর্মে যুক্ত হয়। আমি ভ্রমন করতে,মজার মজার রেসিপি করতে,বই পড়তে, নতুন নতুন বিষয় সম্পর্কে জ্ঞান লাভ করতে ও সৃজনশীল জিনিষ তৈরী করতে ভালোবাসি। আমি বাঙ্গালী জাতি হিসাবে ও আমার বাংলা ব্লগের সদস্য হতে পেরে নিজেকে নিয়ে গর্ববোধ করি।

2N61tyyncFaFVtpM8rCsJzDgecVMtkz4jpzBsszXjhqan9uuNWjCEgJj5LnknUa3pWA9yop6dT9GDfEUZtz2oDgA9ocMHrCEtkFpngXowo13q8Mn1YvzEMh5bSRg1SNaKSZwbsLwb3YA.png

mCz6aUXpYgcE9hndDxJeFHNCvijWNENnxm5KqcEUM3o1siCoMX3by8iWdE4qYzWA7pZHzh4KthdoHPj2eEciPaXhHTdxhx5dKApkU8hxE3mUrybeUbtQCvbs4JC247APSjksrR6prneL2GBtrunMiz4r5CiYySVGKj1e3nT19qBCX5ekz5F.png

5QqP4NVdsPNcDeePyfoZLTLv8efTACU5P6GADTBgMgfXR7uJx5fN91AE46tFfFA7GwMq22wjUwwY5XDyUBMksyZSJGUEyK1Re6UWVZ1PqVR2ntgu73qAW8iDh6yPt8YVsiJ7enc87gmY874JVVHPQo6hSZvUs47FymTjqs43bSUF1Wvtd8T.jpg

4gZTTLyoV1msFb1u1BdB14ZHSP5sNg8hbP9cbJyTmUqfzL1as2zt5nA5iP9iEBmXtJKZZD3SHGtdFKZ13Up5EmSAxpDYtwYvvxyhsR48F5wdZ6ZhgEKtW9w1csKVawJHrqc3fgSkcpz8WsTY1MvhswZsey8zNe3vkwTdKjCivA3Z6dpaPre.png

image.png

image.png

Authors get paid when people like you upvote their post.
If you enjoyed what you read here, create your account today and start earning FREE STEEM!
Sort Order:  

পোষ্টের টাইটেল একটু ভালোভাবে পড়বেন আপু। তাহলে ভুল হওয়ার সম্ভাবনা কম থাকবে। পোস্টের টাইটেলে যদি ভুল থাকে তাহলে পাঠক পোস্টটি পড়ার প্রতি আগ্রহ হারিয়ে ফেলে। গ্রামের বাড়িতে গেলে অনেক রকমের খাবার দাবার তৈরি করা হয় আপু।

সত্যি বলেছেন আপু গ্রামের বাড়িতে অনেক কিছু রান্না বান্না হয়।আসলে জার্নি করে রান্না করা সত্যি অনেক কঠিন। তারপর আপনি সবার জন্য চেষ্টা করেছেন জেনে অনেক ভালো লাগলো।।

ছবিতে যা দেখছি তাতে আপনার রান্না প্রশংসা হওয়ার যোগ্যই। দেওর অনেকদিন পরে দেশে ফিরে বেশ সুন্দর সুন্দর রান্না করে ফেলেছেন। সকলে মিলে এমন একসাথে গ্রামের বাড়িতে খাওয়া দাওয়া করতে ভীষণ ভালো লাগে। আর বাইরে থেকে বাড়ির মানুষ যখন বাড়িতে ফিরে আসে এখন তো সেই অনুভূতির কথাই নেই। সুন্দর একটি পোস্ট শেয়ার করলেন।

আপনার দেবর কে রিসিভ করতে গিয়েছেন জেনে ভালো লাগলো। যাই হোক পরে সেখান থেকে আবার গ্রামের বাড়িতে। অল্প সময়ের মধ্যে অনেক কিছুই তৈরি করেছেন। প্রত্যেকটা খাবার বেশ লোভনীয় লাগছে দেখতে। সবাই মিলে একসাথে মজার খাবারগুলো খাওয়ার অনুভূতিটাই অন্যরকম।