পরম করুণাময় অসীম দয়ালু মহান সৃষ্টিকর্তার নামে শুরু করিতেছি
হ্যালো আমার প্রিয় বাংলা ব্লগবাসি বন্ধুরা। আপনারা সবাই কেমন আছেন। আশা করি আপনারা সবাই সৃষ্টিকর্তার অশেষ রহমতে অনেক ভালো আছেন। আজকে আমি আপনাদের সাথে নতুন একটি ব্লগ নিয়ে হাজির হয়েছি। আজকে আমি ট্রেনে চড়ে কুলাউড়া থেকে ব্রাহ্মণবাড়িয়াতে আসার অনুভূতি শেয়ার করবো।
বন্ধুরা আমি আগের পূর্বে আপনাদের সাথে শেয়ার করেছিলাম আমি আপুর বাসা থেকে ব্রাহ্মণবাড়িয়া আসার পথে বাবুর জুতা কেনার জন্য বড় আপুর সাথে কুলাউড়া শপিং কমপ্লেক্স এ গিয়েছিলাম। সেখানে জুতা কিনে আমরা খুবই তাড়াহুড়ো করে কুলাউড়া স্টেশনে আসলাম। কারণ আমরা যখন শপিং কমপ্লেক্সে ছিলাম তখন ট্রেন আসার সময় হয়ে গিয়েছিল। আমাদের ভাগ্য ভালো যে আমরা তাড়াহুড়ো করে এসে দেখি তখনও ট্রেন আসে নাই। আসলে বাংলাদেশের ট্রেনের সিডিউল ৯৫% ঠিক থাকে না। মাঝে মধ্যে দু একটি ট্রেন ঠিকভাবে আসা-যাওয়া করে। অধিকাংশ ট্রেন লেইট করে স্টেশনে আসে ও পরিত্যাগ করে।
যায়হোক ট্রেন না আসার কারণে আমি আর আপু বসে কিছুক্ষণ রেস্ট নিলাম। তারপর একটু হাটাহাটি করে কুলাউড়া স্টেশনের কয়েকটি ফটোগ্রাফি নিলাম। আমি যেদিন ব্রাহ্মণবাড়িয়া আসতে ছিলাম সেদিন কুলাউড়া রেলওয়ে স্টেশনে তেমন বেশি যাত্রী ছিল না। সরকারি বন্ধ ছাড়া বা সাপ্তাহিক বন্ধ ছাড়া সপ্তাহের মাঝখানে আসলে ট্রেনের মধ্যে তেমন বেশি যাত্রী থাকেনা। যারা থাকে সবাই মোটামুটি সিটে বসেই আসা-যাওয়া করে। ঐদিক দিয়ে আবার আরাম। দুই একজন যাত্রী দাড়িয়ে গিলে তেমন কোন সমস্যা হয় না।
আমাদের ট্রেন ৪ টা ৪০ মিনিটে আসার কথা সেখানে পাঁচটার সময় ট্রেন এসেছে। ট্রেনে অবশ্য তেমন যাত্রী ছিল না, আমরা খুব সুন্দর ভাবে ট্রেনে প্রবেশ করলাম। ট্রেনে আমার সাথে আমার আম্মু এবং আমার বড় ভাগ্নি ছিল। বাবু ও তেমন কান্না করে নাই। হালকা হালকা একটু কান্নাকাটি করেছে। আমার আম্মু আমি এবং আমার ভাগ্নি তিনজন মিলিয়ে মোটামুটি আমার মেয়েকে সামাল দিয়ে নিলাম। কারন ট্রেন ছাড়ার পরে ট্রেনে বাতাস প্রবেশ করেছে। তাছাড়া সিলেটে তো গাছপালার অভাব নেই। বাতাসও ঠান্ডা ছিল।
ট্রেন ছেড়ে শায়েস্তাগঞ্জ আসার পরেই আমার মেয়ে ধীরে ধীরে ঘুমিয়ে গেল। বাবু ঘুমিয়ে যাওয়ার পরে আমারও হালকা হালকা ঘুম পেল। আমি আর আমার ভাগ্নি ছিটের মধ্যেই ঘুমিয়ে গেলাম। তবে আমার আম্মু ঘুমায়নি। আম্মু চিন্তা করে যদি ট্রেনে ঘুমিয়ে যায়, তাহলে ট্রেন আমাদেরকে নিয়ে ঢাকা চলে যাবে,হা হা হা। শহর বন্দর পেরিয়ে আমাদের ট্রেন তার নিজ গতিতে চলতে লাগলো। তবে অনেক স্টেশনেই ট্রেন দাঁড়িয়েছে। অবশেষে সাড়ে আটটার দিকে আমরা আমরা আখাউড়া উপজেলার সীমানায় প্রবেশ করলাম। তখন আমার আম্মু আমাদের সবাইকে ডেকে তুললেন। কারণ আর কিছুক্ষণ পরে ব্রাহ্মণবাড়িয়া স্টেশন চলে আসবে। ব্রাহ্মণবাড়িয়াতে প্রবেশ করেই ট্রেনের গতি কমে গেলো। এ ট্রেনে ভ্রমন করে মোটামুটি ভালই লেগেছে। কারণ প্রত্যেকটা স্টেশনে তিন থেকে পাঁচ মিনিটের বেশি অপেক্ষা করে নাই। তাছাড়া পিছনের বা সামনের কোন ট্রেনকে রাস্তা ছেড়ে দেওয়ার প্রয়োজন হয়নি। মোটামুটি নয়টা বিশ মিনিটের মধ্যে আমরা ব্রাহ্মণবাড়িয়া স্টেশনে এসে পৌঁছে গেলাম।
স্টেশনে আমার আব্বু দাঁড়ানো ছিল। আগেই ভাইয়াকে ফোন করে বলে রেখেছিলাম আমরা আসতেছি। আমার আব্বুর দোকান স্টেশনের কাছেই, স্টেশন থেকে হেঁটে যেতে মাত্র ৫ মিনিট সময় লাগে। আব্বু এসে আমাদের সমস্ত লাগেজ ব্যাগ নামিয়ে দিলেন। আমরা স্টেশন থেকে একটি সিএনজি নিয়ে সুজা আমাদের বাসায় চলে আসলাম। আমাদের বাসায় আসতে আসতে প্রায় দশটা বেজে গেছিল। যাই হোক তারপরেও কুলাউড়া থেকে ব্রাহ্মণবাড়িয়া আসার ট্রেন জার্নিটা আমার কাছে খুবই ভালো লেগেছে। ব্রাহ্মণবাড়িয়া আসা পর্যন্ত আমার বাবু ঘুম থেকে উঠে নাই। এদিক দিয়ে ঝামেলা থেকে বেঁচে গেলাম। বাড়িতে এসেও ঘুমের মধ্যেই ছিল।
যায়হোক বন্ধুরা আর কথা বাড়াবো না। এখন আমি আপনাদের কাছ থেকে বিদায় নিতেছি। আবার আগামীকাল দেখা হবে, ইনশাল্লাহ। আপনারা সবাই ভাল থাকবেন, সুস্থ থাকবেন। সবাই সবার জন্য দোয়া করবেন। সবার জীবন সুন্দর ভাবে কাটুক।
সবাইকে অনেক অনেক ধন্যবাদ,আল্লাহ হাফেজ।।
ফটোগ্রাফির বিবরণ:
ডিভাইস | মোবাইল |
---|---|
মডেল | রেডমি নোট-৮ |
শিরোনাম | ট্রেনে চড়ে কুলাউড়া থেকে ব্রাহ্মণবাড়িয়াতে আসার অনুভূতি ।। |
স্থান | কুলাউড়া, সিলেট, বাংলাদেশ। |
তারিখ | ২৩-০৭-২০২৪ |
কমিউনিটি | আমার বাংলা ব্লগ |
ফটোগ্রাফার | @titash |
আমার পরিচিতি
আমি মোছাঃ মুসলিমা আক্তার নীলা। স্টিমিট প্লাটফর্মে আমি @titash নামে পরিচিত। আমার জন্মস্থান চট্রাগ্রাম বিভাগের ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার ভাদুঘর গ্রামে। আমি বর্তমানে ব্রাহ্মণবাড়িয়া সরকারি মহিলা কলেজে অনার্স তৃতীয় বর্ষে বাংলা বিভাগ নিয়ে পড়াশোনা করতেছি। আমি বিবাহিত,আমার একটি কন্যা সন্তান আছে। আমি আমার হাসবেন্ডের সাথে ঢাকা বিভাগের অন্তর্গত নারায়নগঞ্জ জেলায় বসবাস করছি। আমি আমার হাসবেন্ডের মাধ্যমে স্টিমিট প্লাটফর্ম সম্পর্কে জানতে পারি। প্লাটফর্মটার বিষয়ে জেনে আমি এখানে কাজ করার আগ্রাহ প্রকাশ করি। তারপর ২০২৩ সালের ফ্রেব্রুয়ারী মাসে আমার বাংলা ব্লগের মাধ্যমে স্টিমিট প্লাটফর্মে যুক্ত হয়। আমি ভ্রমন করতে,মজার মজার রেসিপি করতে,বই পড়তে, নতুন নতুন বিষয় সম্পর্কে জ্ঞান লাভ করতে ও সৃজনশীল জিনিষ তৈরী করতে ভালোবাসি। আমি বাঙ্গালী জাতি হিসাবে ও আমার বাংলা ব্লগের সদস্য হতে পেরে নিজেকে নিয়ে গর্ববোধ করি।
দেশের সবচেয়ে নিরাপদ ভ্রমণ ট্রেন ভ্রমণ। আর সেই ভ্রমণ বিষয়ে দারুন একটি পোস্ট আমাদের মাঝে শেয়ার করেছেন। যেখানে লক্ষ্য করে দেখলাম কুলাউড়া থেকে ব্রাহ্মণবাড়িয়া পর্যন্ত ভ্রমণের বিস্তারিত আমাদের মাঝে উপস্থাপন করেছেন। এত সুন্দর ভাবে পোস্টটা শেয়ার করার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ।
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit