বিয়ে উপলক্ষে নকশি পিঠা বানানোর অনুভূতি।।

in hive-129948 •  12 days ago 

আসসালামু আলাইকুম ওয়া রাহমাতুল্লাহ
পরম করুনাময় অসীম দয়াল মহান সৃষ্টিকর্তার নামে শুরু করিতেছি

photo_6_2024-11-10_23-07-14.jpg

photo_5_2024-11-10_23-07-14.jpg

হ্যালো আমার প্রিয় বাংলা ব্লগবাসি বন্ধুরা। আপনারা সবাই কেমন আছেন। আশা করি আপনারা সবাই অনেক ভাল আছেন। আজকে আমি আপনাদের সাথে নতুন একটি ব্লগ নিয়ে হাজির হয়েছি। আজকে আমি আপনাদের সাথে আমার দেবরের বিয়ে উপলক্ষে নকশী পিঠা বানানোর অনুভূতি শেয়ার করবো। আশা করি ব্লগ টি আপনাদের সবার কাছে ভালো লাগবে।

বন্ধুরা আমরা সবাই জানি যে আমাদের বাংলাদেশের সংস্কৃতিতে বিয়ে-শাদী উপলক্ষে অনেক ধরনের পিঠা বানানো হয়। এই পিঠার মধ্যে রয়েছে নকশী পিঠা, ফুল পিঠা, পাতা পিঠা, চিকন পিঠা সহ আরো নানা ধরনের পিঠা। ছেলে এবং মেয়ে তথা বর এবং কনে উভয়ের বাড়িতেই পিঠা বানানো হয়ে থাকে। তাছাড়া বিয়েতে যে আত্মীয়-স্বজন আসে, তারা ও আসার সময় বিভিন্ন ধরনের পিঠা বানিয়ে নিয়ে আসে। এটা আমাদের বাংলাদেশের গ্রামগঞ্জে বেশি দেখা যায়। শহরের দিকে কেমন সেটা আমার তেমন জানা নেই। তবে আমার মনে হয় সব জায়গায় পিঠা বানানোর প্রচলন রয়েছে।

আমার দেবর গত মাসের ২৮ তারিখে বাংলাদেশে এসেছে। আমি আমার হাজব্যান্ড আমার ননদ, শশুর সবাই আমরা এয়ারপোর্টে গিয়েছিলাম। তো বিদেশ থেকে আসার পরেই আমার শ্বশুর মশাই আমার মামাশ্বশুরের মেয়ের সাথে আমার দেবরের বিয়ে ঠিক করে। বিয়ে ঠিক হওয়ার পরেই বিয়ের আয়োজন শুরু হয়। বিভিন্ন রকম বাজার সদাই শুরু হয়। বিয়ে-শাদির একটা অংশ হলো নকশী পিঠা বানানো। আমি এয়ারপোর্ট থেকে আর বাসায় যায়নি, সোজা গ্রামে চলে গিয়ে ছিলাম। আমি আমার শাশুড়ি আমার ননদ আমরা সবাই মিলে নকশী পিঠা বানানোর উদ্যোগ নিলাম। আরো অনেক ধরনের পিঠা বানিয়েছি তবে নকশী পিঠাগুলোর ফটোগ্রাফি আমি ক্যাপচার করেছিলাম।

photo_9_2024-11-10_23-07-14.jpg

photo_10_2024-11-10_23-07-14.jpg

আপনারা সবাই জানেন কি কি উপকরণ দিয়ে নকশী পিঠা বানানো হয়। প্রথমে সিদ্ধ ছাড়া ধান শুকিয়ে চাউল করা হয়। তারপর সেই চাউল মেশিনের মাধ্যমে গুঁড়ো করা হয়। তারপর সেই চাউলের গুঁড়ো গরম পানি দিয়ে সিদ্ধ করে কাই বানানো হয়। সেই কাইকে বিভিন্নভাবে প্রসেস করে তারপর পিঠা বানানোর জন্য তৈরি করা হয়। খুবই লম্বা একটি প্রসেস। তারপর হাতের মাধ্যমে বিভিন্ন ধরনের নকশা তৈরি করে পিঠাগুলো বানানো হয়। সবাই কিন্তু নকশি পিঠা বানাতে পারে না। আমাদের ফ্যামিলিতে আমি খুবই সুন্দরভাবে এই পিঠাগুলো বানাতে পারি। আমার এই পিঠা বানানোর জন্য আমাদের বাড়িতে ও আমার শ্বশুর বাড়িতে সবাই আমার খুবই প্রশংসা করে থাকে।

বিয়ের আগের দিন আমরা সবাই মিলে অনেকগুলো পিঠা বানিয়েছিলাম। পিঠাগুলো বানিয়ে বড় কড়াইতে ডুবু তেলে সেগুলো ভাজি করে তারপর সংরক্ষণ করতে হয়। পিঠাগুলো ডুবো তেলে ভাজি করলে অনেকদিন সংরক্ষিত থাকে। আমাদের সংরক্ষণ করার প্রয়োজন হয়নি, কারণ পরের দিনই বিয়ে ছিল। আমরা ভাজি করে মাত্র একদিন রেখেছিলাম। পরের দিন থেকেই সকাল বেলা নাস্তার সাথে নকশী পিঠা খাওয়া শুরু হয়েছিল।

photo_12_2024-11-10_23-07-14.jpg

এই পিঠার কাইটা যত সুন্দর হয়, পিঠাগুলো ততই সুন্দর হয়। প্রত্যেকটা অনুষ্ঠানের মধ্যেই বড় ধরনের এক দুইটি পিঠা বানানো হয়। সে বড় পিঠাটি আমি বানিয়েছিলাম। আবার পিঠাগুলো ভালো করে ভাজি না করলেও খেয়ে স্বাদ পাওয়া যায় না। পিঠা গুলো কড়া করে ভাজি করলে খেয়ে ভালো স্বাদ পাওয়া যায়। আমাদের পিঠাগুলো খেয়ে আগত মেহমান সহ ফ্যামিলির সবাই অনেক প্রশংসা করেছে। পিঠা বানানো একটা শিল্প বা আর্ট। যেটা সবাই পারেনা। আমরা অনেক সময় শহরে দেখতে পাই বিভিন্ন জায়গায় পিঠার উৎসব হয়। সেখানে বিভিন্ন ধরনের পিঠা আমরা দেখতে পাই। পিঠার উৎসবে গেলে নতুন নতুন পিঠা দেখে সেগুলো বাড়িতে ট্রাই করা যায়। তাছাড়া নতুন নতুন পিঠার নকশার জন্য আমাদের গুগল মামা তো আছে। গুগলের সাহায্য নিয়েও নতুন নতুন পিঠা বানানো যায়।

যাইহোক বন্ধুরা আজকে আমি নকশী পিঠা বানানোর অনুভূতি আপনাদের সাথে শেয়ার করলাম। কেমন হলো আমার আজকের ব্লগ অবশ্যই কমেন্ট করে জানাবেন করবেন। সবাই ভালো থাকবেন, সুস্থ থাকবেন। সবাই সবার জন্য দোয়া করবেন।

সবাইকে অনেক অনেক ধন্যবাদ,আল্লাহ হাফেজ।।

ফটোগ্রাফির বিবরণ:

2gsjgna1uruv8X2R8t7XDv5HGXyHWCCu4rKmbB5pmEzjYSj1ATxRsaEvyH89EyziiK3D1ksn1tTDvDwLCveqrhctVcDnDqtNbsqFMtuqD1RetzrgjG.png

ডিভাইসমোবাইল
মডেলরেডমি নোট-৮
শিরোনামবিয়ে উপলক্ষে নকশি পিঠা বানানোর অনুভূতি।।
স্থাননিজবাসা, কসবা, ব্রাহ্মণবাড়িয়া, ঢাকা,বাংলাদেশ।
তারিখ০৬-১১-২০২৪
কমিউনিটিআমার বাংলা ব্লগ
ফটোগ্রাফার@titash

2gsjgna1uruv8X2R8t7XDv5HGXyHWCCu4rKmbB5pmEzjYSfQKFP87GjNCaLdCLKkYFWdxRmYuKurkfDpnYWoUUypXiwgziwKKNP24nNC65i32Am8Fp.png

JvFFVmatwWHRfvmtd53nmEJ94xpKydwmbSC5H5svBACH7xbS7ungTbMjNMsQ7fPnm8uUBT2bU8Azf8zCDQrq3tkzHjjCFyraxJQeY79tPTN45w8XxU9wtvaFmWRaLhgHSy5GYKQ6bg.png

আমার পরিচিতি

আমি মোছাঃ মুসলিমা আক্তার নীলা। স্টিমিট প্লাটফর্মে আমি @titash নামে পরিচিত। আমার জন্মস্থান চট্রাগ্রাম বিভাগের ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার ভাদুঘর গ্রামে। আমি বর্তমানে ব্রাহ্মণবাড়িয়া সরকারি মহিলা কলেজে অনার্স তৃতীয় বর্ষে বাংলা বিভাগ নিয়ে পড়াশোনা করতেছি। আমি বিবাহিত,আমার একটি কন্যা সন্তান আছে। আমি আমার হাসবেন্ডের সাথে ঢাকা বিভাগের অন্তর্গত নারায়নগঞ্জ জেলায় বসবাস করছি। আমি আমার হাসবেন্ডের মাধ্যমে স্টিমিট প্লাটফর্ম সম্পর্কে জানতে পারি। প্লাটফর্মটার বিষয়ে জেনে আমি এখানে কাজ করার আগ্রাহ প্রকাশ করি। তারপর ২০২৩ সালের ফ্রেব্রুয়ারী মাসে আমার বাংলা ব্লগের মাধ্যমে স্টিমিট প্লাটফর্মে যুক্ত হয়। আমি ভ্রমন করতে,মজার মজার রেসিপি করতে,বই পড়তে, নতুন নতুন বিষয় সম্পর্কে জ্ঞান লাভ করতে ও সৃজনশীল জিনিষ তৈরী করতে ভালোবাসি। আমি বাঙ্গালী জাতি হিসাবে ও আমার বাংলা ব্লগের সদস্য হতে পেরে নিজেকে নিয়ে গর্ববোধ করি।

2N61tyyncFaFVtpM8rCsJzDgecVMtkz4jpzBsszXjhqan9uuNWjCEgJj5LnknUa3pWA9yop6dT9GDfEUZtz2oDgA9ocMHrCEtkFpngXowo13q8Mn1YvzEMh5bSRg1SNaKSZwbsLwb3YA.png

mCz6aUXpYgcE9hndDxJeFHNCvijWNENnxm5KqcEUM3o1siCoMX3by8iWdE4qYzWA7pZHzh4KthdoHPj2eEciPaXhHTdxhx5dKApkU8hxE3mUrybeUbtQCvbs4JC247APSjksrR6prneL2GBtrunMiz4r5CiYySVGKj1e3nT19qBCX5ekz5F.png

5QqP4NVdsPNcDeePyfoZLTLv8efTACU5P6GADTBgMgfXR7uJx5fN91AE46tFfFA7GwMq22wjUwwY5XDyUBMksyZSJGUEyK1Re6UWVZ1PqVR2ntgu73qAW8iDh6yPt8YVsiJ7enc87gmY874JVVHPQo6hSZvUs47FymTjqs43bSUF1Wvtd8T.jpg

4gZTTLyoV1msFb1u1BdB14ZHSP5sNg8hbP9cbJyTmUqfzL1as2zt5nA5iP9iEBmXtJKZZD3SHGtdFKZ13Up5EmSAxpDYtwYvvxyhsR48F5wdZ6ZhgEKtW9w1csKVawJHrqc3fgSkcpz8WsTY1MvhswZsey8zNe3vkwTdKjCivA3Z6dpaPre.png

image.png

![image.png](

Authors get paid when people like you upvote their post.
If you enjoyed what you read here, create your account today and start earning FREE STEEM!
Sort Order:  

এতদিন ইউটিউবে দেখেছি নকশি পিঠা। এর জন্য যেহেতু একটি বিশেষ ধরনের চালের গুড়ার প্রয়োজন হয় যা আমি যেখানে থাকি সেখানে সহজে পাওয়া যায় না তাই কখনো বানিয়ে ওঠা হয়নি। আপনার ছবি দেখে পিঠাগুলো বেশ ভালই। বিয়েতে যে এত ধরনের পিঠে বানানো হয় তা জানতাম না। বাঙালি হয়েও একেক দেশে একেক রকম আচার। খুব ভালো লাগলো জেনে। উপভোগ করলাম আপনার ব্লগটি।

বিয়ে মানেই নানা রকমের রকমারি জিনিসপত্র আপনি বিয়ে উপলক্ষে চমৎকার সুন্দর পিঠা তৈরি করেছেন।ভীষণ সুন্দর হয়েছে আপনার বানানো পিঠা।পিঠা খেয়ে সবাই প্রসংশা করেছে জেনে ভালো লাগলো।ধন্যবাদ পোস্ট টি ভাগ করে নেয়ার জন্য।

আপনার দেবরের বিয়ে উপলক্ষে আপনি এবং আপনার ননদ সহ দারুন একটি উদ্যোগ নিয়েছেন। আসলেই বিয়ে বাড়িতে এরকম নকশী পিঠার আয়োজন থাকলে চমৎকার দেখায়। সবথেকে ভালো লাগার বিষয় হচ্ছে আত্মীয়তার মধ্যে আরও একটি আত্মীয় সম্পর্ক আবদ্ধ হতে যাচ্ছে আপনার ফ্যামিলি। এটাও সত্য যে নকশি পিঠা তৈরি করা সকালের পক্ষে সম্ভব নয় কেননা এটি একটি সূক্ষ্ম শিল্প। যাই হোক আপনার দেবরের বিবাহিত জীবন ফুলের মত পুষ্পসজ্জিত হোক এটাই কামনা করি।

বিয়েতে বেশ ভালো নকশি পিঠা বানিয়েছেন
সত্যি গ্রাম আঞ্চল এই পিঠাগুলো বেশি দেখা যায়। আপনার পিঠা গুলো দেখে লোভ লেগে গেল। ইস আগে জানলে চলে যেতাম বিয়ে খেতে হা হা হা।ধন্যবাদ আপু পোস্টটি আমাদের মাঝে শেয়ার করার জন্য।

নকশি পিঠা সবসময় নাম শুনেছি বাস্তবে কখনো দেখিনি। ইউটিউবে অবশ্য অনেকবার দেখেছি। যে পিঠা দেখতে এতো সুন্দর খেতে তো সুন্দর হবেই।বিয়ে মানে নানান ধরনের পিঠেপুলির বাহার জমে। বিশেষ করে গ্রাম অঞ্চলে এসব পিঠে বানাতে দেখা যায়। আপনি বিয়ে উপলক্ষে নকশী পিঠা তৈরি করেছেন দেখে ভালো লাগলো। অসংখ্য ধন্যবাদ আপনাকে।

বিয়ে উপলক্ষে দেখছি অনেক সুন্দর পিঠা তৈরি করেছেন। আপনার এত সুন্দর পিঠা তৈরি করতে দেখে খুব ভালো লেগেছে আমার। একটা ইউনিক পর্যায়ের রেসিপি ছিল আপনার আজকের পোস্টে। বেশি দারুন হয়েছে।

তাহলে তো দেখছি একেবারে রিলেটিভ এর মধ্যেই বিয়ে ঠিক হয়েছে। রিলেটিভ এর মধ্যে বিয়ে ঠিক হলে কিন্তু আলাদা রকমের আনন্দ হয়। বিয়ে উপলক্ষে চমৎকারভাবে পিঠার আয়োজন করা হয়েছে দেখে খুবই ভালো লাগলো আপু। ধন্যবাদ আপনাকে এই পোস্ট শেয়ার করার জন্য।