আমাদের বাড়িতে ঘরকে আলোকিত করে নতুন অতিথির আগমন হয়েছে।।

in hive-129948 •  6 months ago 

আসসালামু আলাইকুম ওয়া রাহমাতুল্লাহ
পরম করুণাময় অসীম দয়ালু মহান আল্লাহ তায়ালার নামে আরম্ভ করিতেছি
-

baby-3153965_1280.jpg
Image Source

হ্যালো আমার প্রিয় বাংলা ব্লগবাসি,
আপনারা সবাই কেমন আছেন, আশা করি সবাই অনেক ভালো আছেন। আমিও আলহামদুলিল্লাহ আপনাদের দোয়ায় অনেক ভালো আছি। এখন আমার ভালো থাকারই সময়। কারন আমাদের বাড়িতে নতুন অতিথি এসেছে, আমি আন্টি হয়েছি। আজকে আমি খুবই খুশি। আমাদের সবার মাঝে আনন্দের বন্যা বইতেছে।

বন্ধুরা আপনারা হয়তো অনেকেই জানেন যে, আমরা আট বোন দুই ভাই। আমি আমার বোনদের মধ্যে পঞ্চম। আমাদের পাঁচ বোনের বিয়ে হয়ে গেছে। আমরা সবাই অনেক ভালো আছি, আলহামদুলিল্লাহ। সংসার জীবনে সবাই অনেক সুখে শান্তিতেই আছে। আমার বাবা একজন ব্যবসায়ী মানুষ, বাবার সাথে আমার বড় ভাই ও বাবার ব্যবসা দেখাশোনা করে। আর আমার ছোট ভাইটি টেইলার্সের কাজ করে। তাকে বিদেশে পাঠানোর প্রক্রিয়া চলতেছে। কিছুদিনের মধ্যেই ইনশাল্লাহ বিদেশ চলে যাবে। ছোট ভাইটি বিদেশে যাওয়ার আগেই নতুন অতিথির মুখ দেখার সৌভাগ্য হয়েছে।

আমার বড় আপুর নাম নাসিমা আক্তার। তিনির বিয়ে হয়েছে ২০২১ সালের প্রথম দিক দিয়ে। আর আমার বিয়ে হয়েছে ২০২২ সালের মে মাসে। আমার আপুর হাজবেন্ড সৌদি আরবে থাকে। তিনি বিদেশে থাকা অবস্থায় আপুর সাথে বিয়ে ঠিক হয়েছিল। আমার দুলাভাই ছয় মাসের ছুটি নিয়ে এসে করোনা কালীন সময়ে বিয়ে করেছিল। যেদিন দুলাভাই বর সেজে আমাদের বাড়িতে আসার কথা ছিল, সেদিনই লকডাউন ছিল। যার ফলে এই বিয়ে নিয়ে অনেক তেলেসমাতি হয়েছিল। যাইহোক অবশেষে খুব সুন্দর ভাবেই আপুর বিয়ে হয়েছিল।

বিয়ের ছয় মাস পরে আমার দুলাভাই আবার বিদেশ চলে যাই। দুলাভাই যখন বিদেশ চলে গিয়েছিল তখন আপু প্রেগনেট ছিল। আমার বিয়ের ২-৩ মাস আগে আপুর ঘরে ফুটফুটে একটি কন্যা সন্তান জন্মগ্রহণ করেছিল। সবাই তখন অনেক খুশি হয়েছিল। ছোট বাবুকে কোলে নিয়েই আপু আমার বিয়েতে এসেছিল। আমার ওই ভাগ্নিটির নাম রাখা হয়েছিল মাহবুবা। সাপ্তাহ মাস বছর অতিক্রম হয়ে মাহবুবা বড় হতে লাগলো। ধীরে ধীরে মাহবুবা কথা বলতে শিখলো। বাবার সাথে বিদেশে ফোন করে কথা বলতো। এভাবে মাহবুবা প্রতিদিনই তার বাবার কোলে ওঠার ইচ্ছা প্রকাশ করতো। তার বাবাকে দেখার ইচ্ছা প্রকাশ করতো। একদিন দুলাভাই আপু এবং মাহবুবা কে বিদেশে নিয়ে যাওয়ার ইচ্ছা প্রকাশ করলেন। প্রথমদিকে আপুর শশুর শাশুড়ি নিষেধ করলেও মাহবুবার জন্য রাজি হয়ে যায়।

অবশেষে ২০২৩ সালের জানুয়ারি মাসে আপু এবং মাহবুবা সৌদি আরবে চলে যাই। দুলাভাই মাহবুবা কে দেখে অনেক খুশি। মাহবুবা প্রথমে তার বাবাকে চিনতে না পারলেও ধীরে ধীরে তার বাবাকে চিনতে পারে। আপু এবং মাহবুবার ভিসার মেয়াদ ছিল ছয় মাস। সৌদি আরবে গিয়ে মাহবুবা সেখানের আবহাওয়ার সাথে মানিয়ে নিতে পারলেও আমার আপু সৌদি আরবের আবহাওয়ার সাথে নিজেকে মানিয়ে নিতে পারলেন না। এক মাস যেতে না যেতেই আপু অসুস্থ হয়ে গেলেন। তারপর সেখানে ডাক্তার দেখানো হলো। আপু বলেছে সেখানের ডাক্তাররা খুবই ভালো, তারা খুব সুন্দর ভাবে যত্ন সহকারে সেবা দিয়ে থাকে। আর তাদের ওষুধগুলো খুবই ভালো। অতিরিক্ত কোন ওষুধ দিতো না। অতিরিক্ত কোন টেস্ট দেইনি, যে রোগের জন্য যে ওষুধ তারা সেটাই দেওয়ার চেষ্টা করতো। সেখানে ডাক্তার দেখিয়ে ঔষধ খেয়ে আপু মোটামুটি সুস্থ হয়ে গেলো। বাংলাদেশে হলে বিভিন্ন টেস্ট করিয়েই দশ পনের হাজার টাকা খরচ হয়ে যেতো। তাদের কোন টেস্ট এর প্রয়োজন হয়নি।

তারপর দুই মাস আপু সুস্থভাবেই সেখানে থাকতে লাগলেন। তিন থেকে সাড়ে তিন মাস যাওয়ার পরে আপু আবার অসুস্থ হয়ে গেলেন। কিছুতেই সেখানের আবহাওয়ার সাথে আপু মানিয়ে নিতে পারছিলেন না। অবশেষে সেখানে ৪ মাস থেকে আপু বাংলাদেশে চলে আসলেন। বাংলাদেশে এসে,বাংলাদেশের ডাক্তারদের মাধ্যমে আপু চিকিৎসা নিতে লাগলেন। একসময় আপু জানতে পারলেন তিনি আবার মা হতে চলেছেন। এই খবর শুনে আপুর শশুর শাশুড়িসহ আমার দুলাভাই, আমরা সবাই অনেক খুশি হলাম। ধীরে ধীরে সাপ্তাহ মাস অতিক্রম হতে লাগলো।

গতকাল দুপুর দুইটার সময় আপুর কোল জুড়ে আমাদের ঘরকে আলোকিত করে আপুর দ্বিতীয় কন্যা সন্তান পৃথিবীতে আগমন করলো। আমাদের ভাগ্নি সুস্থ ভাবেই আমাদের বাড়িতেই জন্মগ্রহণ করেছে। বর্তমানে দুজনেই সুস্থ রয়েছে। আর দুজনেই আমাদের বাড়িতে রয়েছে। আমার দ্বিতীয় ভাগ্নির নাম রাখার উৎসব চলছে। কে কোন নামে ডাকবে সেটা নির্ধারণ করতে লাগলো। আপু আমাকেও বলেছিল একটি নাম রাখার জন্য। আমি এখনো কি নাম রাখবো সেটা নির্ধারিত করি নাই। আমার বড় ভাগ্নির সাথে মিল রেখেই ছোট ভাগ্নির নাম রাখবো, ইনশাআল্লাহ। আপনাদের মধ্যে যদি কেউ একটি ভালো নাম সাজেস্ট করেন, তাহলে অনেক খুশি হবো।

শুনেছি কন্যা সন্তান সৌভাগ্য নিয়ে জন্মগ্রহণ করে। সেটার প্রমাণ পেয়ে গেলাম। আমার দুলাভাই ব্রাহ্মণবাড়িয়া শহরে বি-বাড়িয়া টাওয়ারে একটি কাপড়ের দোকান রাখার জন্য ৪০ লাখ টাকা জমা দিয়েছিল। দুলাভাই সহ আরো কয়েকজন দোকানটির জন্য টাকা জমা দিয়েছিল। গত সপ্তাহে দুলাভাই সেই দোকানটি বুঝে পেয়েছে। যদিও দুলাভাই বর্তমানে সৌদি আরবের রয়েছে, তবে তিনি সেখান থেকেই দোকানটি একজনের মাধ্যমে ভাড়া দিয়েছেন। তিনি বিদেশ থেকে আসলে এই দোকানে বসবেন। এছাড়াও দুলাভাই তাদের গ্রামের বাড়িতে দুইটি জায়গা রেখেছে। ব্রাহ্মণবাড়িয়া শহরে একটি ফ্লাট রাখার প্লান করতেছে। এর দ্বারা বুঝা গেল আমার এই ভাগ্নিটি দুলাভাইয়ের সৌভাগ্য নিয়েই জন্মগ্রহণ করেছে। দুলাভাই বলেছে শুকরিয়া আদায়ের জন্য গরু জবাই করে আমার ভাগ্নির আকিকার অনুষ্ঠান সম্পূর্ণ করবেন। আপনারা সবাই আমার ভাগ্নির জন্য দোয়া করবেন। আমি এখনো ভাগ্নিকে দেখতে যাইনি, তবে দু-একদিনের মধ্যেই যাবো, ইনশাআল্লাহ।

বন্ধুরা আজকের ব্লগ টি সামনের দিকে আর বাড়াচ্ছি না। এখান থেকেই বিদায় নিতেছি। সবাই ভালো থাকবেন, সুস্থ থাকবেন। আবার আগামীকাল নতুন কোন ব্লগ নিয়ে হাজির হবো, ইনশাআল্লাহ।।

সবাইকে অনেক অনেক ধন্যবাদ,আল্লাহ হাফেজ।।

2gsjgna1uruv8X2R8t7XDv5HGXyHWCCu4rKmbB5pmEzjYSfQKFP87GjNCaLdCLKkYFWdxRmYuKurkfDpnYWoUUypXiwgziwKKNP24nNC65i32Am8Fp.png

JvFFVmatwWHRfvmtd53nmEJ94xpKydwmbSC5H5svBACH7xbS7ungTbMjNMsQ7fPnm8uUBT2bU8Azf8zCDQrq3tkzHjjCFyraxJQeY79tPTN45w8XxU9wtvaFmWRaLhgHSy5GYKQ6bg.png

আমার পরিচিতি

আমি মোছাঃ মুসলিমা আক্তার নীলা। স্টিমিট প্লাটফর্মে আমি @titash নামে পরিচিত। আমার জন্মস্থান চট্রাগ্রাম বিভাগের ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার ভাদুঘর গ্রামে। আমি বর্তমানে ব্রাহ্মণবাড়িয়া সরকারি মহিলা কলেজে অনার্স দ্বিতীয় বর্ষে বাংলা বিভাগ নিয়ে পড়াশোনা করতেছি। আমি বিবাহিত,আমার একটি কন্যা সন্তান আছে। আমি আমার হাসবেন্ডের সাথে ঢাকা বিভাগের অন্তর্গত নারায়নগঞ্জ জেলায় বসবাস করছি। আমি আমার হাসবেন্ডের মাধ্যমে স্টিমিট প্লাটফর্ম সম্পর্কে জানতে পারি। প্লাটফর্মটার বিষয়ে জেনে আমি এখানে কাজ করার আগ্রাহ প্রকাশ করি। তারপর ২০২৩ সালের ফ্রেব্রুয়ারী মাসে আমার বাংলা ব্লগের মাধ্যমে স্টিমিট প্লাটফর্মে যুক্ত হয়। আমি ভ্রমন করতে,মজার মজার রেসিপ করতে,বই পড়তে, নতুন নতুন বিষয় সম্পর্কে জ্ঞান লাভ করতে ও সৃজনশীল জিনিষ তৈরী করতে ভালোবাসি। আমি বাঙ্গালী জাতি হিসাবে ও আমার বাংলা ব্লগের সদস্য হতে পেরে নিজেকে নিয়ে গর্ববোধ করি।

2N61tyyncFaFVtpM8rCsJzDgecVMtkz4jpzBsszXjhqan9uuNWjCEgJj5LnknUa3pWA9yop6dT9GDfEUZtz2oDgA9ocMHrCEtkFpngXowo13q8Mn1YvzEMh5bSRg1SNaKSZwbsLwb3YA.png

mCz6aUXpYgcE9hndDxJeFHNCvijWNENnxm5KqcEUM3o1siCoMX3by8iWdE4qYzWA7pZHzh4KthdoHPj2eEciPaXhHTdxhx5dKApkU8hxE3mUrybeUbtQCvbs4JC247APSjksrR6prneL2GBtrunMiz4r5CiYySVGKj1e3nT19qBCX5ekz5F.png

5QqP4NVdsPNcDeePyfoZLTLv8efTACU5P6GADTBgMgfXR7uJx5fN91AE46tFfFA7GwMq22wjUwwY5XDyUBMksyZSJGUEyK1Re6UWVZ1PqVR2ntgu73qAW8iDh6yPt8YVsiJ7enc87gmY874JVVHPQo6hSZvUs47FymTjqs43bSUF1Wvtd8T.jpg

4gZTTLyoV1msFb1u1BdB14ZHSP5sNg8hbP9cbJyTmUqfzL1as2zt5nA5iP9iEBmXtJKZZD3SHGtdFKZ13Up5EmSAxpDYtwYvvxyhsR48F5wdZ6ZhgEKtW9w1csKVawJHrqc3fgSkcpz8WsTY1MvhswZsey8zNe3vkwTdKjCivA3Z6dpaPre.png

ddddoo.png

Posted using SteemPro Mobile

Authors get paid when people like you upvote their post.
If you enjoyed what you read here, create your account today and start earning FREE STEEM!
Sort Order:  

Thank you, friend!
I'm @steem.history, who is steem witness.
Thank you for witnessvoting for me.
image.png
please click it!
image.png
(Go to https://steemit.com/~witnesses and type fbslo at the bottom of the page)

The weight is reduced because of the lack of Voting Power. If you vote for me as a witness, you can get my little vote.