পরম করুনাময় অসীম দয়ালু, মহান সৃষ্টিকর্তার নামে শুরু করছি-
হ্যালো আমার বাংলা ব্লগ কমিউনিটির সদস্য বন্ধুরা। আপনারা সবাই কেমন আছেন। আশা করি আপনারা সবাই আল্লাহর রহমতে অনেক ভালো আছেন। আমিও আপনাদের দোয়ায় অনেক ভালো আছি,আলহামদুলিল্লাহ। আজকে আমি আপনাদের সাথে নতুন একটি ব্লগ নিয়ে হাজির হয়েছি। আজকে খুবই গুরুত্বপূর্ণ একটি বিষয় নিয়ে আপনাদের সাথে ব্লগ শেয়ার করবো।
আমাদের জীবনটা যেমন সহজ ঠিক তেমনি আবার কঠিন। আমাদের জীবনটা কোন কোন সময় থেমে যেতে চাই। কিন্তুু যদি আমরা থেমে যায় তাহলে আমরা জীবন যুদ্ধে হেরে যাবো। আর জীবন যুদ্ধে হেরে যাওয়া মানে পৃথিবীতে বেঁচে থাকার অধিকার নেই। শুধু মানুষ নয় প্রত্যেকটা প্রাণী, যে যেমন পরিস্থিতিতে আছে, সেভাবেই সেখানে মেনে নিতে চেষ্টা করে। আর এটা মেনে নিলেই জীবন সুন্দর। আমাদের ফেমিলিতে আমি আর আমার বড় বোন জন্মগত ভাবে বড় ছোট হলেও আকার আকৃতি ও গঠনের দিক দিয়ে সেইম সেইম ছিলাম। যার ফলে আপুর সাথে আমার অনেক জামেলা হতো। প্রত্যেকটা বিষয়ে আপুর সাথে গোলমাল লাগতো।
আপু যেহেতো আমার সিনিয়র তাই আপু আমার আগে স্কুলে ভর্তি হবে এটাই স্বাভাবিক। আমি আপুর এক বছর পরে গিয়ে কিন্ডার গার্টেনে প্লেতে ভর্তি হয়। আমি একবছর পরে প্লেতে থেকে দ্বিতীয় বছরে নার্সারী বা কেজিতে ভর্তি হয়। আর আপু ওয়ানে ভর্তি হয়। আমি স্কুলে গিয়ে নার্সারীর ক্লাসে বসতে মন চাইতো না। আমি আপু সাথে ক্লাস ওয়ানে গিয়ে বসতাম। ম্যাডামরা আমাকে নার্সারীতে বসালেও আমি বারবার আপু সাথে ক্লাস ওয়ানে গিয়ে বসতাম। তখন ম্যাডাম আমাকে নার্সারীর বই থেকে কিছু প্রশ্ন করে। আমি ঠিক ভাবে সব গুলো প্রশ্নের উত্তর দেওয়ার পরে ম্যাডামরা আমাকে স্থায়ী ভাবে ক্লাস ওয়ানে আপুর সাথে ভর্তি করিয়ে নেয়। আর তখন থেকেই আপুর সাথে আমার জামেলা শুরু হয়। এক ড্রেস, এক জুতা, একই বই খাতা কলম, এক সাথে ভাত খাওয়া, এক সাথে স্কুলে যাওয়া নিয়ে প্রতিদিন তুমুল লড়াই হতো। ধীরে ধীরে বড় হতে থাকলাম আর জামেলাও বাড়তে থাকে। এক সময় জামেলার কারনে রাগ করে বাড়ি ছেড়ে চলে যেতে মন চাইতো। কিন্তুু রাগ কমে গেলে সব কিছু স্বাভাবিক হয়ে যেতো।
রাগ কমে যাওয়ার পরে বিভিন্ন পরিস্থিতি নিয়ে চিন্তা করতাম। যদি রাগ করে কোন সিদ্ধান্ত নিতাম তাহলে কি অবস্থা হতো, সেটা নিয়ে ভাবতাম। যার ফলে আমি সবসময় আপুর সাথে মানিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করতাম। একসময় আপুর বিয়ে হয়ে গেলো। তখন আপুর বিয়ে হয়ে যাওয়ার পরে আপুর সাথে জামেলা হবে না বলে, উপরে উপরে খুশি লাগলেও ভিতরে ভিতরে কষ্ট লাগতো। শত হলেও আপন বোন। আপুরও নাকি আমার জন্য খারাপ লাগতো। তখন আপু কখন শ্বশুর বাড়ি থেকে আমাদের বাড়িতে বেড়াতে আসবে, সেই অপেক্ষা করতাম। আপু আসলে খুবই খুশি হতাম।
আপুর বিয়ে হওয়ার এক বছর পরেই আমার বিয়ে হয়ে যায়। নতুন শ্বশুর বাড়িতে গিয়ে খুবই খারাপ লাগতো। বাড়ির সবাইকে খুবই মিস করতাম। খুবই কষ্ট লাগতো। মাঝে মাঝে আমার সেই আপুর কাছে ফোনে কথা বলে বিভিন্ন বিষয় শেয়ার করতাম। তখন আপু আমাকে একটি কথা বলেছিলেন, আর সেটা হলে মেনে নিতে আর মানিয়ে নিতে পারলেই জীবন সুন্দর। আপুর এই কথাটা আমার কাছে খুবই ভালো লেগেছে। নতুন শ্বশুর বাড়িতে বিভিন্ন সময় বিভিন্ন কথা শুনতাম। আমি বিয়ের আগে বাবার বাড়িতে থাকতে ভাত নিয়ে খায় নি, জীবনে রান্না করি নাই, পড়াশুনা ছাড়া সংসারের কোন কাজ করি নাই। সেই আমি শ্বশুর বাড়িতে নতুন গিয়ে অনেক কান্না করেছি। আমার শ্বশুর বাড়িতে তেমন কোন কাজ নেই, তবে আমার বাবার বাড়ির জন্য, আমার ভাই বোনের জন্য খুবই খারাপ লাগতো। আবার হাসবেন্ডও চাকরির জন্য শহরে থাকতো। তখন খারাপ লাগলে আপুর সেই বাণীটা মনে করতাম। তখন আসলেই ভালো লাগতো। আর এখন অনেক পরিস্থিতি অতিক্রম করে শহরে বাসা নিয়ে হাজবেন্ডের সাথে অনেক সুখে আছি,আলহামদুল্লিাহ।
বর্তমানে আমাদের দেশে প্রাকৃতিক দুর্যাগ বন্যার কারনে বিভিন্ন মানুষ বিভিন্ন কঠিন পরিস্থিতির শিকার হচ্ছে। তাদের ক্ষেত্রে আমার আপুর সেই বানীটা বলতে চাই। যে কোন পরিস্থিতিতে মেনে নিতে আর মানিয়ে নিতে পারলেই জীবন সুন্দর। এই পরিস্থিতি একদিন থাকবে না। প্রাকৃতিক দুর্যাগ আমাদের মেনে নিয়েই জীবন যুদ্ধ চালিয়ে যেতে হবে। প্রাকৃতিক দুর্যাগ আমাদের জীবনেরই একটা অংশ। তাই যে কোন পরিস্থিতি আমাদের মোকাবেলা করেই বাঁচতে হবে।
সবাইকে অনেক অনেক ধন্যবাদ,আল্লাহ হাফেজ।।
আমার পরিচিতি
আমি মোছাঃ মুসলিমা আক্তার নীলা। স্টিমিট প্লাটফর্মে আমি @titash নামে পরিচিত। আমার জন্মস্থান চট্রাগ্রাম বিভাগের ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার ভাদুঘর গ্রামে। আমি বর্তমানে ব্রাহ্মণবাড়িয়া সরকারি মহিলা কলেজে অনার্স দ্বিতীয় বর্ষে বাংলা বিভাগ নিয়ে পড়াশোনা করতেছি। আমি বিবাহিত,আমার একটি কন্যা সন্তান আছে। আমি আমার হাসবেন্ডের সাথে ঢাকা বিভাগের অন্তর্গত নারায়নগঞ্জ জেলায় বসবাস করছি। আমি আমার হাসবেন্ডের মাধ্যমে স্টিমিট প্লাটফর্ম সম্পর্কে জানতে পারি। প্লাটফর্মটার বিষয়ে জেনে আমি এখানে কাজ করার আগ্রাহ প্রকাশ করি। তারপর ২০২৩ সালের ফ্রেব্রুয়ারী মাসে আমার বাংলা ব্লগের মাধ্যমে স্টিমিট প্লাটফর্মে যুক্ত হয়। আমি ভ্রমন করতে,মজার মজার রেসিপি করতে,বই পড়তে, নতুন নতুন বিষয় সম্পর্কে জ্ঞান লাভ করতে ও সৃজনশীল জিনিষ তৈরী করতে ভালোবাসি। আমি বাঙ্গালী জাতি হিসাবে ও আমার বাংলা ব্লগের সদস্য হতে পেরে নিজেকে নিয়ে গর্ববোধ করি।
আপনি ছোটবেলায় আপনার আপুর সাথে পাল্লা দিয়ে সকল কাজ করতেন। আপনার আপু যে ক্লাসে ভর্তি হয়েছিলেন আপনিও সেই ক্লাসে পরে ভর্তি হয়েছিলেন। অবশেষে যখন আপুর বিয়ে হয়ে যায় তখন আপনি খুবই কষ্ট পেয়েছিলেন। আপনার আপু যখন বাড়িতে আসতো তখন আপনি খুবই খুশি হতেন। আপনার আপু আপনাকে বলেছিল মানিয়ে নিতে বা মেনে নিতে পারলেই জীবন সুন্দর। সত্যি অনেক সুন্দর একটি কথা বলেছিলাম। আপনার লেখাটি পড়ে খুবই ভালো লাগলো। ধন্যবাদ আপু সুন্দর একটি পোস্ট শেয়ার করার জন্য।
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
হ্যাঁ আপু আপুর জন্য খুবই খারাপ লাগতো। এই কথাটির মাধ্যমে এখনো শ্বশুরবাড়িতে কোন ঝামেলা হলে আমি মেনে নেই আর মানিয়ে নেয়। ধন্যবাদ আপু।
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
জীবনে বিভিন্ন সময় বিভিন্ন মুহূর্তে আমরা অনেক খারাপ পরিস্থিতির সম্মুখীন হয়। সেটা বিয়ের পরে হোক কিংবা আগে হোক। সবকিছুকে যখন আমরা মেনে নিতে শিখবো তাহলে জীবন আমাদের জন্য সুন্দর। তবে মেয়েদের জন্য সবচেয়ে কঠিন সময় হচ্ছে বিয়ের পরে। এই সময় যদি মানিয়ে নেওয়াটা শেখা যায় তাহলে সংসার সুখের হয়। সেটা শুধু সংসার জীবনের ক্ষেত্রে নয় জীবনের যেকোনো পরিস্থিতিতে মানিয়ে নেওয়াটা খুবই দরকার। তাহলে জীবন খুবই সুন্দর হয়। আপনার লেখাগুলো পড়ে খুবভালো লাগলো।
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
জি আপু জীবনকে সুন্দর করতে হলে, মেনে নিতে হবে আর মানিয়ে নিতে হবে। এটাই সত্য। ধন্যবাদ আপু।
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
আসলে জীবনে অনেক কিছু সম্মুখীন হতে হয়। ছোট থেকে বেড়ে ওঠার মাঝখানে অনেক বুদ্ধি বিবেক জেগে ওঠে বিভিন্ন কার্যক্রম এর মধ্য দিয়ে। তবে তার ভেতরেই নিজেদেরকে পরিস্থিতি এবং পরিবেশের সম্মুখীন হয়ে মানিয়ে নেওয়া মেনে নেওয়াটা স্বাভাবিক। সেখানে সুফল বয়ে আসে। বিয়ের পর প্রথম প্রথম নতুন পরিবেশ একটু অন্যরকম লাগে। তবে যুগ যুগ ধরে মেয়েরা অবহেলা হোক আর অবহেলা না হোক তার মধ্যে নিজেকে মানিয়ে নেয়।
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
জ্বী আপু আমরা ছোট থেকে অনেক কিছু শিখি। আর সে শেখা থেকেই আমরা অনেক জ্ঞান অর্জন করি। আর সেই জ্ঞানগুলোর মধ্যে একটি জ্ঞান হলো মেনে নেওয়া আর মানিয়ে নেওয়া। ধন্যবাদ আপু।
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
সব সময় সব পরিস্থিতি আমাদেরকে অবশ্যই মেনে নিতে হবে। আর সব সময় আমাদেরকে এগুলোও মানিয়ে নিতে হবে, আর মানিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করতে হবে। আমরা অনেক সময় অনেক পরিস্থিতির সম্মুখীন হবো। কিন্তু এগুলোতে ধৈর্য হারিয়ে ফেললে চলবে না। অবশ্যই এগুলো মেনে নিতে হবে, আর মানিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করতে হবে। ভাই বোনের মধ্যে যতই ঝগড়া বিবাদ হোক না কেন, দূরে থাকলে কিন্তু অনেক বেশি কষ্ট লাগে। এই প্রাকৃতিক দুর্যোগে আমরা অনেক কঠিন একটা পরিস্থিতির সম্মুখীন হয়েছে। এটা আসলে আমাদের জীবনের একটা অংশ। আমাদেরকে সব সময় সাবধানে থাকতে হবে এজন্য।
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
জ্বি আপু প্রাকৃতিক দুর্যোগ হয়তো থাকবে না। কিন্তু আমাদের সকলকে এই জিনিসটা মেনে নিতে হবে। আবার মানিও নিতে হবে। তাই আমাদের সকলকে নিজ নিজ অবস্থান থেকে সাবধানে থাকতে হবে। ধন্যবাদ আপু।
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
আজকে আপনি খুব সুন্দর একটি পোস্ট করেছেন। মেনে নিতে আর মানিয়ে নিতে পারাটা এত সহজ নয়। তবে আপনার মত আমিও প্রথম শ্বশুরবাড়িতে এসে অনেক কান্নাকাটি করেছি। এখানে আমার মন বসত না। পরে আস্তে আস্তে সব ঠিক হয়ে গেছে। আসলে পরিবেশের সাথে মানিয়ে নেওয়া অনেক কষ্টকর। সুন্দর একটি পোস্ট করার জন্য ধন্যবাদ আপনাকে।
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
জ্বি আপু পরিবেশের সাথে মানিয়ে নিতে কষ্ট হলেও মেয়েদের মানিয়ে নিতেই হয়। এটাই মেয়েদের জীবন।সুন্দর মন্তব্য করার জন্য আপনাকে ধন্যবাদ আপু।
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit