বসন্ত পঞ্চমী ২০২৫

in hive-129948 •  4 days ago 

হ্যাল্লো বন্ধুরা

|| আজ ৩ ফেব্রুয়ারি || সোমবার ||


প্রিয় আমার বাংলা ব্লগবাসী, সবাইকে আমার নমষ্কার /আদাব। কেমন আছেন আপনারা সবাই? আশা করছি আপনারা সকলে সব দিক থেকে ভালো আছেন এবং সুস্থ আছেন। আমিও মহান সৃষ্টিকর্তার কৃপায় পরিবার সহ যেমন আছি, বেশ ভালো আছি। আজ বরাবরের মতো আবারো আপনাদের মাঝে হাজির হলাম নতুন একটি পোস্ট নিয়ে। আশা করবো আমার পোস্ট টি পড়ে আপনাদের ভালো লাগবে। এবং আপনারা আপনাদের মূল্যবান মতামত শেয়ার করবেন। তো আর কথা না বাড়িয়ে সরাসরি চলে যাই মূল পোস্ট এ।

IMG20250203103104.jpg


আজ ছিলো বসন্ত পঞ্চমী বা মাঘী পঞ্চমী। এই বিশেষ তিথিতেই বিদ্যার দেবী স্বরস্বতী দেবীর পুজো করা হয়ে থাকে। বিদ্যার দেবী ছাড়াও দেবী সরস্বতী জ্ঞান, শিল্পকলা, সংগীত, বাকশক্তির দেবী হিসেবেও পরিচিত। আবার, ঋকবেদ এ দেবী সরস্বতী স্রোতস্বিনী নদীর দেবী হিসেবেও আবির্ভূত হয়েছেন। দেবীর শুভ্র বসন, তাঁর বাহন হংস- এসবকে তাঁর শুভ্রতার প্রতীক হিসেবে মানা হয়। এই বসন্ত পঞ্চমী বা মাঘী পঞ্চমীতে দেবীকে বিশেষ আরাধনা করা হয়, তাঁর চরণে শ্রদ্ধাভরে পুষ্পাঞ্জলি অর্ঘ্য প্রদান করেন সনাতন ধর্মাবলম্বী সকলে। আজ আমিও আমার পুজোর অভিজ্ঞতাই আপনাদের সাথে শেয়ার করতে চলেছি আমার আজকের পোষ্ট এর মাধ্যমে।

IMG20250203103056.jpg


IMG20250203103110.jpg


যেহেতু গতকাল থেকেই পঞ্চমী তিথি শুরু হয়ে গিয়েছিলো, তাই আজ সকাল ১০ টার মাঝেই পঞ্চমী তিথি শেষ হয়ে গিয়েছে। আজকের পুজোও তার মাঝেই করার কথা। তাই সকাল সকাল ঘুম থেকে উঠে হলুদ দিয়ে স্নান করে রেডি হয়ে আমি আর আমার হাজবেন্ড দুজনে মিলে চলে যাই স্থানীয় মন্দিরে ( বাঁশবাড়ি মন্দির) । মন্দির টি বেশি বড় না, বেশ ছোটই বলা চলে। আমরা গিয়ে দেখি ইতিমধ্যে প্রথম বার অঞ্জলী দেয়া শেষ করে একদল মন্দিরের বাহিরে যজ্ঞের ফোঁটা আর প্রসাদ নেয়ার জন্য লাইন ধরেছেন। মন্দিরের ভেতর গিয়ে আমরা ২য় ধাপে পুষ্পাঞ্জলি দিতে পারি। আমাদের পরে আরোও একধাপ পুষ্পাঞ্জলির ব্যবস্থা ছিলো। অর্থাৎ মন্দিরে উপস্থিত সকলেরই অঞ্জলির ব্যবস্থা ছিলো। আমাদের সময়ও যথেষ্ট ভীড় ছিলো। দূর থেকেই মা কে প্রণাম করে বাহিরের লাইনে দাঁড়িয়ে যাই যজ্ঞের ফোঁটা আর প্রসাদ নেয়ার জন্য। আমাদের আবার তাড়া ছিলো, কারণ সেখান থেকেই আবার সরাসরি আমার হাজবেন্ড অফিসের জন্য রওনা দিবে। যদিও লাইন বেশ বড় ছিলো, তবে সঠিক ব্যবস্থাপনার জন্য বেশ জলদিই আগাচ্ছিলো। বেশিক্ষণ অপেক্ষা করতে হয় নি প্রসাদের জন্য। লাইনে থাকা অবস্থাতেই প্রথমে যজ্ঞের ফোঁটা দিয়ে দিলো একজন ছোট্ট বাচ্চা। তারপর আরো কিছুদূর আগানোর পর একজন চরণামৃত দিলেন। চরণামৃত খেয়ে উপোস ভাঙার পর লাইনের শেষ মাথায় ওয়ান টাইম প্লেটে করে ফল প্রসাদ এবং খিচুড়ি প্রসাদ পেলাম। সেখানেই সাইডে গিয়ে খেয়ে নিলাম দুজনে। মন্দিরেই জল এবং হাত ধোঁয়ার ব্যবস্থা ছিলো। নিচের ছবি গুলো দেখলেই আপনারা বুঝতে পারবেন কেমন ভীড় ছিলো। এটা তো শুধু আমাদের প্রসাদ নেয়ার সময়কার ছবি। আমরা যখন মন্দিরে প্রবেশ করি, তখন ও এমনই লাইন ছিলো। এত ভীড় থাকার পরেও সুব্যবস্থাপনার জন্য সবকিছু বেশ ভালোয় ভালোয় ই হয়েছে।

IMG20250203103230.jpg


IMG20250203103224.jpg


IMG20250203103151.jpg


এরপর আমার হাজবেন্ড সেখান থেকেই সরাসরি অফিসে চলে যায় আমাকে বাসায় নামিয়ে দিয়ে। এদিকে বাসায় এসে আমি বসে পরি কুল বরই নিয়ে। যদিও বাজারে কুল বরাই উঠেছে বেশ আগেই। তবে আমরা আবার দেবীকে উৎসর্গ করার পরেই খেয়ে থাকি, তার আগে খাই না। তাই গতকাল ই বাজার থেকে বরই আনিয়ে রেখেছিলাম। আজ পুজোর অঞ্জলি দিয়ে বাসায় এসেই রোদে বসে বসে সেই বরই খেলাম। এই যে বেশ অপেক্ষার পর প্রথম বরই খাওয়া- এটাও কিন্তু বেশ অন্যরকম একটা অনুভূতি! এছাড়াও মনে পরে গেলো, পড়াশুনা করতাম যখন, তখন ছোটবেলা থেকে মা বলতেন আজকের দিনে পড়াশুনা থেকে ছুটি। কী যে খুশি হতাম আজকে পড়াশুনা থেকে অফিশিয়ালি ছুটি পেয়ে! তারপর যখন গল্পের বই পড়া শুরু করলাম, তখন এই পুজোর দিনে গল্পের বই পড়তাম, তাতেও মায়ের বকা খেতাম! 🥲 তবে মাকে বুঝাতাম এটা তো গল্পের বই- গল্পের বই পড়া তো আসলে কোনো পড়া না! 😂 সরস্বতী পুজোর সাথে এই স্মৃতি যেনো একেবারে মিশে আছে!

IMG_20250203_113733.jpg


যদিও এখন আর পড়াশুনা নাই। তবে জ্ঞান, বিদ্যা, সৃজনশীলতা - এগুলো তো সারাজীবন এর সঙ্গী! সেই দেবীকে মন -প্রাণ থেকে নমষ্কার করি, প্রণাম জানাই। সকলের সুবুদ্ধি প্রাপ্ত হোক- এটাই কামনা করি। আজকের লেখা আর বাড়াচ্ছি না। সকলের সুস্থতা কামনা করে আমার আজকের লেখা এখানেই শেষ করছি। শুভরাত্রি।

এতক্ষণ সময় নিয়ে আমার পোষ্টটি পড়ার জন্য আপনাকে
🌼 ধন্যবাদ 🌼

3jpR3paJ37V8JxyWvtbhvcm5k3roJwHBR4WTALx7XaoRovZPhyQZF46Jzu1RHsqJAYaFK79KURRYTTDCfs83L9hXVyhHVVfQHR1BRxtCJby4EjZZkEPu8kTbt3hCBMQWS3cpN.png

VOTE @bangla.witness as witness witness_proxy_vote.png OR
@rme as your proxy
witness_vote.png

photo_2021-06-30_13-14-56.jpg

IMG_20211205_182705.jpg

আমি- তিথী রানী বকসী, স্টিমিট আইডি @tithyrani। জাতীয়তাঃ বাংলাদেশী। শিক্ষগত যোগ্যতায় একজন টেক্সটাইল ইঞ্জিনিয়ার। দীর্ঘ ৬ বছর চাকরির পর বর্তমানে পুরোদমে একজন গৃহিণী। বিবাহিতা এবং বর্তমানে রাজধানী ঢাকায় বসবাস করছি।২০২৩ সালের জুন মাসের ১৯ তারিখে স্টিমিটে জয়েন করেছি।
ভ্রমণ করা, বাগান করা, গান শোনা, বই পড়া, কবিতাবৃত্তি করা আমার শখ। পাশাপাশি প্রতিদিন চেষ্টা করি নতুন নতুন কিছু না কিছু শিখতে, ভাবতে। যেখানেই কোন কিছু শেখার সুযোগ পাই, আমি সে সুযোগ লুফে নিতে চাই৷ সর্বদা চেষ্টা থাকে নিজেকে ধাপে ধাপে উন্নত করার।



Authors get paid when people like you upvote their post.
If you enjoyed what you read here, create your account today and start earning FREE STEEM!
Sort Order:  

Upvoted! Thank you for supporting witness @jswit.

image.png

বাপরে। এত বড় খিচুড়ির হাঁড়ি দেখে তো আমারই লোভ লেগে গেল প্রসাদ পাওয়ার। যদিও আমিও আজ খিচুড়ি খেয়েছি। এবারের বসন্তপঞ্চমী দুদিনের ভাগ করে পড়েছে বলে দুদিন ধরেই পূজো হয়েছে। এই তিথিটির সাথে বাঙালির যেন এক আলাদাই টান। আর বসন্ত পঞ্চমী এলেই সরস্বতী পূজার অঞ্জলি। কচিকাচাদের জন্য এ এক নতুন উদ্যমের আনন্দ।

কচিকাঁচা দের জন্য তো বটেই, তবে আমাদের জন্যও কম কিছু না! এই একটা দিন আসলেই অন্যান্য সকল পুজোর চেয়ে আলাদা উদ্যমের লাগে আমার কাছে, এখনোও!

Screenshot_2025-02-04-00-05-53-88_40deb401b9ffe8e1df2f1cc5ba480b12.jpg

Screenshot_2025-02-04-00-01-20-03_40deb401b9ffe8e1df2f1cc5ba480b12.jpg

Screenshot_2025-02-04-00-00-53-97_40deb401b9ffe8e1df2f1cc5ba480b12.jpg

Screenshot_2025-02-04-00-00-38-86_40deb401b9ffe8e1df2f1cc5ba480b12.jpg

Screenshot_2025-02-04-00-00-11-55_40deb401b9ffe8e1df2f1cc5ba480b12.jpg

Screenshot_2025-02-03-23-59-49-52_0b2fce7a16bf2b728d6ffa28c8d60efb.jpg

বেশ ভীড় দেখা যাচ্ছে মন্দিরে। মনে হচ্ছে বেশ ভালই আয়োজন করা হয়েছে। আমাদের কলেজে বেশ বড় করে সরস্বতী পুজার আয়োজন করা হতো। আমরা বন্ধুরা সবাই মিলে কলেজে যেতাম পুজা দেখতে। এখন আর পুজা দেখা হয় না। আপনার পোস্ট পড়ে সেই সকল দিনের কথা মনে পড়ে গেলো। ধন্যবাদ ব্লগটি শেয়ার করার জন্য।

হ্যা, বিভিন্ন স্কুল/কলেজ/ভার্সিটিতেই এই পুজো করা হয়ে থাকে। আপনারও যে তাতে অংশগ্রহণ ছিলো, বন্ধুরা মিলে যেতেন- সেই কথা জেনে ভীষণ ভালো লাগলো আপু।

বসন্ত পঞ্চমীতে বেশ সুন্দর মুহূর্ত অতিবাহিত করেছেন। আসলে ধর্মীয় কোন অনুষ্ঠানে যেতে পারলে খুব ভালো লাগে। পূজাতে অনেক মানুষের সমাগম হয়েছে দেখছি। সবাই নিশ্চয়ই উৎসাহ উদ্দীপনা নিয়ে প্রার্থনা করেছে এবং খাওয়া-দাওয়া অংশগ্রহণ করেছে। ধন্যবাদ আপনাকে এতো সুন্দর অনুভূতি শেয়ার করার জন্য।

জি ভাই। অনেক মানুষের সমাগম হয়েছিলো। তবে ব্যবস্থাপনা ভালো ছিলো বলেই কোন ঝামেলা হয় নি। সবকিছু বেশ ভালোয় ভালোয় হয়েছিলো।