পুরানো সেই দিনগুলো...

in hive-129948 •  3 months ago 

হ্যাল্লো বন্ধুরা

প্রিয় আমার বাংলা ব্লগবাসী, সবাইকে আমার নমষ্কার /আদাব। আশা করছি আপনারা সকলে ভালো আছেন এবং সুস্থ আছেন। আমিও মহান সৃষ্টিকর্তার আশির্বাদে পরিবার সহ বেশ ভালো আছি। সকলের সুস্থতা কামনা করেই আমি আমার আজকের নতুন পোস্ট শুরু করছি। আশা করছি আপনারা আপনাদের মূল্যবান মতামত শেয়ার করে পাশে থাকবেন।

FB_IMG_1724419885200.jpg


তখন সাল ২০১৮। চাকরি জীবন শুরুর কয়েক মাস তখন। তবে মা- বাবার সাথে ব্যাচেলর লাইফে চাকরি,, তাই অফিসের সময়টুকু ছাড়া আর তেমন বিশেষ কিছু পরিবর্তন আসে নি লাইফে। আমি বরাবরই ঘুম কাতুরে মানুষ! তখন আমার অফিস টাইম শুরু হতো সাড়ে নয়টা থেকে। বাসা থেকে সৌভাগ্যক্রমে অফিসের দূরত্ব ছিলো ১৫-২০ মিনিটের রিক্সায় গেলে। আর হেটে গেলে সর্বোচ্চ ৪০ মিনিট! তো, জ্যাম ঠেলে অফিস যাওয়া লাগবে- সেই চিন্তাও ছিল না মাথায়! ওদিকে সকাল আট টা বাজেও আমার ঘুম ভাঙে না দেখে মা রান্নার ফাঁকে রান্নাঘর থেকে এসে ডেকে যেতো ( ইয়ে মানে, সকাল ৮ টার পরেও ঘুম ভাঙেনি বলে, মা রান্নাঘর থেকে ছুটে যখন ডাকতে আসতো, বুঝতেই পারছেন, খুব নরম গলায় তো আর ডাকবে না! 😅) যাই হোক, তখন নিয়ে উঠে, ফ্রেশ হয়ে, রেডি হয়ে দেখতাম সকালের খাবার, দুপুরের লাঞ্চ বক্স সব ই মা রেডি করে রেখেছে! আমি খেয়ে দেয়ে, লাঞ্চ বক্স নিয়ে বেড়িয়ে পড়তাম অফিসের জন্য! এমনও হয়েছে যে মা সকালে রাগে ইচ্ছে করে ডাকে নি আমায়, আর আমার নিজের থেকে ঘুম ভাংতে দেখি সকাল ৯ টা!! 😂😂 এখন সেসব দিনের কথা মনে পড়লে ভাবি, কী বিন্দাস জীবন ছিলো তখন!! 😇😇


অফিস থেকে বেরিয়ে বাসায় ফেরার পথে কিছু ফুলের দোকান পরতো। মাঝে মধ্যে বেলি ফুলের মালা পাওয়া গেলে, নিয়ে নিতাম দুটো! দরজা খুলে দিয়ে, মায়ের হাতে দিলে, মা এত খুশি হতো ওতে!! আমার মায়ের আবার বকুল ফুল ই বেশি পছন্দের! মা - বাবা প্রতিদিন ভোরে হাটতে যেতেন। কোন কোন দিন আমাকেও ডেকে সঙ্গে নিতেন।যেদিন ঘুম ভাংতো আর কি!! যখন আমি আর মা একসাথে হাটতে গিয়ে কোন বকুল ফুলের গাছ পরত, দুজনে একসাথে ফুল কুড়াতাম - হাত মুঠ করে! আহা! কী সুন্দর ঘ্রাণ!! বাসায় এনে আমি রেখে দিতাম প্রিয় কোন বই এর উপর!!

IMG_20180825_105336.jpg



একদিন অফিস থেকে ফেরার সময়, পেয়ে গিয়ে নিয়ে নিলাম দুটি বেলি ফুলের মালা। গেট খুলতেই মায়ের হাতে দিলাম। আমি ফ্রেশ হয়ে দেখি মা তার খোঁপায় গুঁজে দিয়েছে! আমার যে কী খুশী লাগছিলো সেটা দেখে!! একদম প্রথম ছবিটায়, আমার মায়ের মাথায় খোঁপায় সেই আমার এনে দেয়া বেলি ফুলের মালা। চুরি করে ছবি টা তুলে রেখেছিলাম। আজ এত বছর পর এসে গ্যালারি ঘাটতে ঘাটতে সেই সব ছবি দেখি। আর ভাবি, কী সুন্দর জীবন কাটিয়েছি আমি! চোখের কোণে জল জমলেও, ভালোলাগার আবেশ টাই যেন জড়িয়ে ধরে রাখে!! এখন সময়ের কারণে মাস পার হয়ে যায়, চাইলেই মাকে দেখা যায় না, চাইলেই জড়িয়ে ধরে মায়ের ঘ্রাণ নেয়া যায় না। তবু, এইসম ছবিতেও যেন মায়ের ঘ্রাণ পাওয়া যায়! দূরে থাকলেও, মা আমার সুস্থ আছে, বেঁচে আছে, এর জন্যও সৃষ্টিকর্তার কাছে শুকরিয়া! তাঁর কাছে এটাই প্রার্থনা যেন, আমার মা থাকে দুধে- ভাতে! ❤️


আর কথা বাড়াচ্ছি না। আপনাদের সকলের সুস্থতা কামনা করি।

এতক্ষণ সময় নিয়ে আমার পোষ্টটি পড়ার জন্য আপনাকে
🌼 ধন্যবাদ 🌼

2ADPRBseKViTiLXUVCVcyKFFWwAQqRwPpNQSzHtUi2RNRAqmtaYXVePNznvthWTiKKFEk4EbRfwux6CuwsJ5AdzuSvjS6fzMA5fAA4Y1CW...qejroL7Ny1fgjD8vjRSRCARb7j8ome286FSutyVqFH96mi8ANj6PyFMjnWZcArE6PJDNk8DXMW8gVmYMokCaY4CX44YupoyUxF6CSnmBhY5cK3FBL7XWc4rv6.webp

VOTE @bangla.witness as witness witness_proxy_vote.png OR
@rme as your proxy
witness_vote.png

photo_2021-06-30_13-14-56.jpg

IMG_20211205_182705.jpg

আমি- তিথী রানী বকসী, স্টিমিট আইডি @tithyrani। জাতীয়তাঃ বাংলাদেশী। পেশায় একজন টেক্সটাইল ইঞ্জিনিয়ার। বিবাহিতা এবং বর্তমানে রাজধানী ঢাকায় বসবাস করছি।২০২৩ সালের জুন মাসের ১৯ তারিখে স্টিমিটে জয়েন করেছি।
ভ্রমণ করা, বাগান করা, গান শোনা, বই পড়া, কবিতাবৃত্তি করা আমার শখ। পাশাপাশি প্রতিদিন চেষ্টা করি নতুন নতুন কিছু না কিছু শিখতে, ভাবতে। যেখানেই কোন কিছু শেখার সুযোগ পাই, আমি সে সুযোগ লুফে নিতে চাই৷ সর্বদা চেষ্টা থাকে নিজেকে ধাপে ধাপে উন্নত করার।



Authors get paid when people like you upvote their post.
If you enjoyed what you read here, create your account today and start earning FREE STEEM!
Sort Order:  

Upvoted! Thank you for supporting witness @jswit.

ওই সময় মায়েদের ডাক শুনে খুব রাগ হলেও এখন সেই ডাকগুলো খুব মিস করি। ঠিকই বলেছেন আপু এখন আর সময় সুযোগ হলো মায়ের কাছে গিয়ে থাকা হয় না। পৃথিবীর সকল মায়েরা যেন সুস্থ থাকে এই দোয়া করি। ভালো লাগলে আপনার পোস্টটি পড়ে।

ভালোবাসা নিবেন আপু ❤️

দিদি, আপনার পোস্টটা পড়ছিলাম আর আমার বর্তমান জীবনের সাথে অনেকটাই মিল খুঁজে পাচ্ছিলাম। আসলে আমিও যখন অফিস যাই, তখন মাঝেমধ্যে ঘুম থেকে উঠতে দেরি হয়। তখন দেখি মা ডেকে দিচ্ছে এবং সকালের খাবার এবং দুপুরের টিফিন সবকিছু রেডি করে দিয়েছে। আসলে আপনার ওই জীবনটা এখন আমি উপভোগ করছি। সেজন্য আমার কাছে অনেকটাই ভালো লাগছে। তবে জানিনা ভবিষ্যতে কি হবে। তাছাড়া অফিসে যাওয়ার পথে বিভিন্ন জিনিস কিনে নিয়ে যাওয়া এবং মায়ের জন্য অফিস থেকে ফেরার সময় কিছু কিনে আনা, এগুলো কিন্তু আমার নিত্যদিনের অভ্যাস। খুব ভালো লাগলো দিদি আপনার পোস্ট টি পড়ে।

আপনি নিশ্চিতভাবেই আপনার জীবনের সোনালী সময় পার করছেন। 😇 😇

হ্যাঁ দিদি, সেটা বলতে পারেন। তাছাড়া আমার মনে হয় জীবনের এই সোনালী সময়টাকে ভালো করে উপভোগ করা উচিত।