হ্যাল্লো আমার বাংলা ব্লগবাসী। আশা করি আপনারা সবাই ভালো আছেন এবং সুস্থ আছেন। আমিও মহান সৃষ্টিকর্তার আশির্বাদে ভালো আছি।
আজ একটি জেনারেল রাইটিং আপনাদের সাথে শেয়ার করতে হাজির হলাম।
আজ ২১ শে জুন, ওয়ার্ল্ড মিউজিক ডে বা বিশ্ব সংগীত দিবস। এ নিয়েই আমার চিন্তাভাবনা আপনাদের সাথে শেয়ার করার উদ্দেশ্যে এই লেখা।
সংগীত বা গান আসলে আমাদের জীবনের সাথে ওতোপ্রোতো ভাবেই জড়িয়ে আছে। আমি বিশ্বাস করি, কেউ যেমন ফুল অপছন্দ করতে পারে না, ঠিক তেমনই গান বা সংগীতও কেউ অপছন্দ করতে পারে না। গান গাইতে না পারলেও অন্তত শুনতে সবাই পছন্দ করে। আবার সংগীতের জগৎ কিন্তু বিশাল জগৎ! কত শত জনরা/বিভাগ আছে সংগীতের । মানুষের রুচি ভেদে একেকজনের একেক রকমের গান বা সংগীত পছন্দের। পুরো বিশ্বে আছে হাজার রকম সংগীত যন্ত্রও। অবশ্য সংগীত যন্ত্রও কিন্তু মেন্ডাটরি না... বৃষ্টির শব্দ, স্রোতের শব্দ, পাখির কিচিরমিচির এগুলোও কিন্তু এক ধরনের সংগীত। কোক স্টুডিও বাংলাদেশের নতুন রিলিজ হওয়া গান 'কথা কইয়ো না' এর শুরুই হয় একটা পাতার বাঁশির মাধ্যমে। একটিমাত্র পাতা দিয়ে কত সুন্দর সংগীতের সৃষ্টি করা সম্ভব তা অবাক হওয়ার মতোই। এই গান শুনে মনে পড়েছে, ছোটবেলায় আমাদের গ্রামের বাড়িতেও একজনের থেকে আমি শুনেছিলাম পাতার বাঁশির সুর।
সংগীতের সাথে মানুষের ইমোশন জড়িয়ে থাকে। কিছু কিছু গান যেন ঠিক বুকে গিয়ে বিধে, মনে হয়, আরে, এই গান তো যেন আমার মনের কথাই বলছে! এই গান যেন শুধুমাত্র আমার জন্যই লেখা!
গানের মাধ্যমেই মানুষের খারাপ মন এক নিমিষেই ভালো হয়ে যায়। আবার এমনও কিছু গান আছে, যেটা শুনলে ভালো মনও যেন নিমিষে বিষন্ন হয়ে ওঠে। হয়তো কোন গান শুনলে মনের কোণে পরে থাকা কোন স্মৃতি ভেসে ওঠে অনেকদিন পর।
যেমন আজ থেকে প্রায় পনেরো- ষোলো বছর আগে, এক বৃষ্টিমুখর দিনে, আমাদের ক্লাস টিচার অনুপস্থিত ছিলেন। তার অবর্তমানে যে শিক্ষক ক্লাস নিতে এসেছিলেন, তারও বোধ হয় সেদিন উদাস মন ক্লাস নেয়ার মতন ছিলো না। তিনি ঠিক করলেন কোন পড়াশুনা হবে না,আজ কেবল গান হবে। ক্লাসের সবচেয়ে ভালো রবীন্দ্র সংগীত গাইতো যে মেয়েটা, সেদিন টানা তিনটা রবীন্দ্র সংগীত শুনিয়েছিলো। আর পুরো ক্লাস মুগ্ধ হয়ে শুনেছিলাম। সেই দিনটার কথা এখনো বছর বছরই মনে হয়!আবার আমার জন্য ছোটবেলায় অংক করার দিন মানেই ছিলো গান শুনতে শুনতে অংক করা! আহা, আমাদের সেইসব সুখের, চিন্তামুক্ত, সুন্দর ছেলেবেলার দিনগুলি! আবার এখনকার দিনের কোন উৎসব অনুষ্ঠান তো গান ছাড়া কল্পনাও করা যায় না। নিচের ছবিতে যেমন আমার বান্ধবীর বিয়েতে গানের সাথে নাচের মুহূর্ত দেখতে পাচ্ছেন।
পৃথিবীর সম্ভবত এমন কোনো ভাষা নেই যে ভাষায় গান নেই। অর্থাৎ মিউজিক এমন একটি বিষয়, যা সার্বজনীন। সর্ব ভাষাভাষী আর সর্ব কালেরও মধ্যে বিরাজমান। আবার ভাষাও সংগীতের জন্য কোন বাঁধা না। অনেকে অনেক ভিন্ন ভিন্ন ভাষার সংগীতও শুনে থাকে। গানের অর্থ না বুঝলেও সংগীত-আবহ সব মিলিয়ে পছন্দ করে থাকেন। এমনকি কোন ছোট বাচ্চা যে কিনা এখনোও ভাষা শিখে ও বুঝে উঠতে পারে নি, তার সামনে কোন গান বাজালে বা ছেড়ে দিলে সে অবুঝ বাচ্চাটিও কিন্তু গানের তালে তালে প্রতিক্রিয়া করতে থাকে, যেমন হাত-পা বা মাথা দুলিয়ে নাচার মতোন অংগভঙী করতে থাকে।
দৈনন্দিন জীবনের একঘেয়েমি কাটাতে, লম্বা কোন জার্নিকে আনন্দঘন করতে গানের জুড়িমেলা ভার!
বিষন্নতা, অতিরিক্ত দুশ্চিন্তা, অনিদ্রা, স্মৃতিশক্তি চলে যাওয়া, ডিমনেশিয়া, অটিজম বা স্পেশালি এবল চাইল্ডদের ক্ষেত্রে মিউজিকের মাধ্যমে চিকিৎসাও দেয়া হয়। একে বলা হয় 'মিউজিক থেরাপী'। গবেষণায় দেখা গেছে, মিউজিক থেরাপির মাধ্যমে মানুষের মস্তিষ্কের সমস্ত অংশই আলোড়িত হয়ে থাকে। এমনকি আরো অবাক করা বিষয় হচ্ছে মিউজিক থেরাপি শুধুমাত্র মানুষের উপরই কাজ করে বিষয়টা এমন না, অন্যান্য প্রানিদের পাশাপাশি গাছেদের উপরও প্রভাব ফেলতে সক্ষম!
এই সংগীত কখনোবা প্রেম প্রকাশের মাধ্যম, কখনো বা বিরহ- দুঃখ প্রকাশের মাধ্যম, কখনো বা প্রকৃতি বা ঈশ্বর বন্দনার মাধ্যম এমনকি তীব্র প্রতিবাদের মাধ্যমও হয়ে থাকে।
আমি আজকের এই লেখায় ' ওয়ার্ল্ড মিউজিক ডে' এর শুরু বা ইতিহাস সম্পর্কে কিছুই লিখলাম না। শুধু বলে রাখি, এই বিশেষ দিন প্রথমে ফ্রান্স পালন করা শুরু করে যা এখন আন্তর্জাতিক ভাবে পালিত হয়৷ যে মিউজিকের সাথে আমাদের দৈনন্দিন জীবন ওতোপ্রোতভাবে জড়িত, হোক না একটি বিশেষ দিন সেই গানকে উৎসর্গ করে। এই বিশেষ দিনে নিজের পছন্দের গানটি শুনে ফেলতে ভুলে যাবেন না যেনো। একটি দিন হোক শুধুই গানের জন্য...
বন্ধুরা, আজ এপর্যন্তই থাকলো। আমার লেখা আপনাদের কেমন লাগলো জানাবেন। গঠনমূলক আলোচনা করবেন। এছাড়াও গান নিয়ে আপনাদের সুখের বা মজার কোন স্মৃতিও শেয়ার করতে পারেন৷ খুব খুব ভালো থাকবেন।
আজ বিশ্ব সঙ্গীত দিবস তা জানাই ছিলো না। তোমার পোস্টের মাধ্যমে অনেক কিছু জানতে পারলাম সঙ্গীত দিবস নিয়ে। অসাধারণ হয়েছে তোমার লেখা গুলো পড়ে ভীষণ ভালো লাগলো।আর অসাধারণ পোস্ট টি শেয়ার করার জন্য অনেক অনেক ধন্যবাদ জানাই।♥️
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit