জেনারেল রাইটিং :- শীতের এক রাত।

in hive-129948 •  7 days ago 
আমি @tuhin002, আমি আমার বাংলা ব্লগের সকল সদস্যগনকে আমার পক্ষ থেকে জানায় সালাম," আসসালামু আলাইকুম" সবাই কেমন আছেন ? আশা করি, মহান আল্লাহর অশেষ রহমতে অনেক ভালো আছেন। আমি ও আপনাদের দোয়ায় এবং মহান আল্লাহুর অশেষ রহমতে ভাল আছি। আজকে আমার আলোচনার বিষয়টি হলো শীতের এক রাত। আশা করি আজকের বিষয়বস্তু নিয়ে আলোচনাটি আপনাদের ভালো লাগবে। তাই শুরু করছি আমার আজকের ব্লগ...


man-1156619_1280.jpg

Source


দেখতে দেখতে আবারও শীতকাল আমাদের মাঝে হাজির হয়ে গেছে। যদিও অনেক আগে শীতের পরিমাণ বেশি ছিল কিন্তু বর্তমানে তেমন নেই। একটা সময় দেখেছে শীত আসলে মানুষের জড়তার শেষ থাকে না। চলমান সময়ে যে ধানগুলো আছে মানুষের ধান কাটার পরে ধানের যে চিঠি থাকে সেই চিঠিগুলো তারা ফেলে দিত না তারা গচ্ছিত রাখতো। আর এইগুলো গচ্ছিত রাখার কারণ একটাই ছিল প্রচন্ড শীত পড়তো আর এই শীতে তারা আগুন জ্বালিয়ে বসে থাকতো। আপনারা হয়তোবা অনেকেই জানেন একটা সময় সপ্তাহ মাস চলে যেত তবুও শীতের প্রকোপ কম তো না। আর এই কারণে মানুষগুলো সব সময় ব্যস্ত থাকতো শীতের আগেই গরম করার কোন জিনিসের আমজাম দেওয়া। তবে সেই সময় বেশ ভালো লাগতো সকালে উঠে অনেকেই একত্রিত হয়ে আগুন তাপ নেওয়াটা সত্যিই বেশ চমৎকার একটা সময় পার করেছি। যদিও এই সময়টায় সেই সময়ের থেকে অনেক পরিবর্তন কারণ এখন সে তো কমে গেছে। মানুষের মধ্যে সেই আবেগঘন মুহূর্তগুলো আর নেই। তবে এই সময় এবং ওই সময়ের মধ্যে অনেক তফাৎ রয়েছে।


যাইহোক আপনারা সবাই জানেন শীত আসলে খেজুরের রস খাওয়ার ধুম পড়ে যায়। আর আমরা সেই সময় স্টুডেন্ট হিসেবে ছিলাম আর স্টুডেন্ট হিসাবে আমরা একটা বোর্ডিং এ থাকতাম অনেকে। সবাই যখন এক জাগায় থাকতাম তখন আমাদের মধ্যে অনেক সময় অনেক ধরনের ইচ্ছা জাগত। আর এই ইচ্ছা গুলোকে পূরণ করা ছিল আমাদের একমাত্র টার্গেট। ঠিক এমন একটা রাত নেই যে রাতে আমাদের ইচ্ছার বিরুদ্ধে আমরা গেছি সব সময় যা মনে হয়েছে তাই করেছি। একদিন ইচ্ছা হল খেজুরের রস খাবো এবং আপনারা জানেন খেজুরে প্রথম কাঠের রসটা বেশ মিষ্টি হয়। আমাদের এলাকায় যথেষ্ট খেজুর গাছ রয়েছে আর এ কারণে যশোর থেকে লোক আসতো তারা এই খেজুর গাছ কাটতে। একদিন আমরা সবাই বললাম খেজুরের রস খাবো তাই বড় একটা ঘড়া নিলাম। এরপরে আমরা গেলাম রাত্রে সেটা নিয়ে খেজুর গাছের গোড়ায় গেলাম। এরপরে আমার একটা ছোট ভাইকে উঠিয়ে দিলাম খেজুর গাছে। গিয়ে দেখে ধুতরার ফল দিয়ে থুয়েছে এটা দেখে সে বেশ রাগান্বিত হলো। আমি মুখ ফসকে বলে ফেলেছি ভারটা ভেঙে ফেলত। আমার বলার কয়েক সেকেন্ডের মধ্যে এসে ভাড়টা ভেঙে ফেলল। আমরা বেশ অবাক হয়ে তার মুখের দিকে তাকিয়ে ছিলাম যে কাজটা করল কি সে?


যাহোক বেশ কয়টা গাছ আমরা ঘুরে দেখলাম এরপরে কয়েকটা গাছে দেখলাম এগুলো দেয়া নেই তাই সেখান থেকে সেগুলো পারলাম। যেহেতু আমরা একত্রে অনেকজন মানুষ থাকতাম তাই আমাদের কম জিনিসে হতো না অনেকগুলোই লাগতো। এরপর আমরা একটা একটা করে পারতে লাগলাম এবং ঘড়া পুড়তে লাগলাম। পুড়ে যাবার পরে আমরা সেটা নিয়ে বোর্ডিং এ চলে আসলাম। যে যতটুকু পারে সবাই কম বেশি খেলেও। আসলে শীতের রাতে খেজুরের রস খাওয়াটাও বেশ ঝামেলা রয়েছে সেটা হল বেশি পানি খেলে যা হয় আর কি। তো সেখানে আমাদের একটা মামা ছিল তাকে ডেকে ডেকে কোনভাবেই সে উঠবে না যদিও উঠল তারপরে সেই ঘটালে একটা কান্ড। একাই খেয়ে নিলো ছয় গ্লাস রস। তার এই কাণ্ড দেখে তো আমরা অবাক দিল খাবেই না সে লোক কি করলে এটা। যাইহোক বুঝতে পারছেন শীতের রাতে যদি বেশি পানি খাওয়া হয় তাহলে কি অবস্থা হয় এতটাই শীত পড়তো লেপের মধ্যে থেকে বের হতেই কষ্ট লাগতো। কিন্তু প্রকৃতির ডাকে তো প্রত্যেকটা মানুষের সাড়া দিতেই হবে। এই নিয়ে শুরু হয়ে গেল একজন যায় আরেকজন আসে কি অবস্থায় হচ্ছে আপনারা ঠিক বুঝতে পারছেন। আসলে শীতের সেই রাতের কথা এখনো মনে পড়ে এত হাস্যকর একটা রাত আমরা পার করেছি মুখে বলে বোঝানো যায় না।


সময়ের পরিবর্তনের সাথে সাথে মানুষের জীবনে পরিবর্তন ঘটে। কখনোই থেমে থাকে না আর বয়স যখন থেমে থাকে না তখন মানুষের জীবনে অনেক কিছু থেমে যায় সামনের দিনগুলোর জন্য। আমরা ওই বয়সে যে কাজগুলো করেছি এখন সেই বয়সে করা আমাদের জন্য অসম্ভব। তবে প্রত্যেকটা মানুষের জীবনের সবথেকে উত্তম সময় পার করে এসেছি আমরা। উত্তম সময় বললে ভুল হবে তার থেকেও যদি বেশি কিছু থাকে সেটাই শুধু আমরা নয় প্রত্যেকটা মানুষই তার জীবনের ওই সময়টা পার করে আসে। হয়তোবা সেই দিনগুলো আর পাবো না সেই সময় আছে কিন্তু সেই সময় থাকলেও আমাদের কিন্তু বয়স নেই। ইচ্ছা করলেই কি আর সেই যৌবনে সেই কাজগুলো করা সম্ভব হয়ে ওঠে ওঠে না। মানুষের জীবনের বয়সের সাথে সাথে বেশ কিছু জিনিসের শিক্ষা নেয়। একটা সময় মানুষ পৃথিবী ছেড়ে চলে যাবে। পৃথিবীর নিয়ম নীতির মধ্য দিয়ে আমাদেরকে চলতে হবে। হয়তোবা এক শীতের রাত আমাদের জীবন থেকে চলে গেছে হয়তোবা অন্য কারো জীবনে আবারও সেই শীতের রাত আসবে। এই যে বললাম শুধু বয়সে তার তোমার কারণেই কিন্তু এটা হয়ে থাকে।


আজ এই পর্যন্ত। সাথে থাকার জন্য অনেক ধন্যবাদ।

ডিভাইস poco M2
লোকেশন মেহেরপুর


👨‍🦰আমার নিজের পরিচয়👨‍🦰


1666192548913_1666192548801_1666192548599_1666192548416_1666192548270_1666192548091_1666192547839_1666192547665_1666192022150.jpg

আমি আবুল বাশার খায়রুল আলম তুহিন। আমার জন্ম ১১ এপ্রিল ১৯৯৫ সালে। আমার বাসা মেহেরপুর জেলা,গাংনী থানা, জুগীর গোফা গ্রাম। আমি বিবাহিত। বর্তমানে আমার একটা পুত্র সন্তান আছে। আমি গ্রাজুয়েশন শেষ করেছি রাজশাহী নিউ গভমেন্ট ডিগ্রী কলেজ থেকে। আমার পক্ষ থেকে আপনাদের জানাই প্রাণঢালা শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন। আমার মাতৃভাষা বাংলা। আমি বাংলা ব্লগে কাজ করতে অনেক ভালোবাসি। এই ব্লগে কাজ করার মাধ্যমে আলাদা প্রশান্তি পায়। আমি ছবি আঁকতে,গান গাইতে,কবিতা লিখতে অনেক পছন্দ করি। এছাড়া আমি বন্ধুদের সাথে আড্ডা দিতে খুব পছন্দ করি। আর আমি স্টিমেটে জয়েন করেছি (২৭ - ০৬ - ২০২২) সালে। সংক্ষিপ্ত আকারে আমার নিজের পরিচয় আপনাদের মাঝে শেয়ার করলাম। সবাই আমার জন্য দোয়া করবেন। আমার পক্ষ থেকে আপনাদের জন্য শুভকামনা রইলো।


Logo.png

(১০% প্রিয় লাজুক খ্যাঁক এর জন্য )


4gZTTLyoV1msFb1u1BdB14ZHSP5sNg8hbP9cbJyTmUqfzLdXDsNijBKWNGJn5ogmozSiA7cyReMsKwomyC79dv8nHgZj3RKbXhPtULzHviAUBY9Vc8ousmvcnNywqK...hMHPzmtXdqcE25kuBukgtAciNVXSHonSRqmAmfHf9YgyuYwwZo1Nd9dUCogeVvSsKh3MRCxw1Khi2NyeZh4Rt4J9n7wTsZvJ1tiUMafwrMjZ5AQz2ERchsjjJv.png

VOTE @bangla.witness as witness


witness_vote.png

OR

SET @rme as your proxy

witness_proxy_vote.png

Authors get paid when people like you upvote their post.
If you enjoyed what you read here, create your account today and start earning FREE STEEM!
Sort Order:  

Upvoted! Thank you for supporting witness @jswit.

অনেক ভালো লাগলো ভাইয়া শীতের সময় খেজুরের রস খাওয়ার অনুভূতি নিয়ে সুন্দর একটি পোস্ট আমাদের মাঝে শেয়ার করেছেন দেখে। শীতের সময় আসলে খেজুরের রস আর ভিন্ন রকমের পিঠা খাওয়ার আয়োজন শুরু হয় গ্রামে গ্রামে। এ সময়টা আমার কাছে অনেক ভালো লাগে কিন্তু অতিরিক্ত ঠান্ডা হলে ভালো লাগে না।

আসলে শীতের সময় মজাই হলো খেজুরের রসের, আর খেজুরের রস যুক্ত পিঠা তৈরি ।