কেমন আছেন বন্ধুরা? আমি ভালো আছি। আশাকরি আপনারা ও ভালো আছেন।
আমি আজ থেকে একটা গল্প লেখা শুরু করলাম। গল্পের নাম দিয়েছি । আর যাবো না মামা বাড়ি
আশা করি এই গল্পের প্রতিটি পার্ট আপনাদের ভালো লাগবে ।
তো চলুন শুরু করা যাক আজকের পর্ব:-
(পর্ব ০১)
উত্তমের বাবা-মা ঢাকায় চাকরি করতেন। তারা শহরের ব্যস্ত জীবনে পার করতেন উত্তমের বাবা একজন সরকারি কর্মকর্তা আর মা একজন স্কুল শিক্ষিকা। ঢাকার জীবনযাত্রা যানজট এবং কোলাহলের মাঝে উত্তমের লেখাপড়া ঠিকমতো হচ্ছিল না। তাই তারা সিদ্ধান্ত নিলেন উত্তম কে তার মামার বাড়িতে পাঠাবে সেই গ্রাম টি একটি অনেক সুন্দর গ্রামে।
গ্রামের নাম ছিল শান্তিপুর। চারিদিকে সবুজ ফসলের মাঠ শান্ত নদীর ধারা পাখির ডাক সব মিলিয়ে এক শান্তির পরিবেশ। উত্তমের মামার বাড়ি ছিল সেই গ্রামে। মামা ছিলেন একজন শিক্ষক আর মামি গৃহিনী। তাদের কোন সন্তান ছিল না,তাই উত্তম তাদের খুব আদরের ছিল।
উত্তম গ্রামে এসে অনেক খুশি হল। শহরের ব্যস্ততা থেকে মুক্তি পেয়ে সে যেন নতুন করে শ্বাস নিতে পারল। প্রথম দিন মামা-মামী তাকে খুব আদর করলেন। মামা বললেন, তোমার লেখাপড়ার জন্য এখানে অনেক ভালো পরিবেশ আছে। আমি তোমাকে সব সময় সাহায্য করব তুমি লেখা পড়া করে অনেক বড় হবে বাবা
শান্তিপুরের স্কুলে উত্তম ভর্তি হলো। প্রথমদিন স্কুলে যেতে তার একটু ভয় লাগতেছিল। কিন্তু মামা বললেন কোনো ভয় নেই । সাহস নিয়ে যাও তুমি অনেক ভালো করবে এই স্কুলে ।
স্কুলে গিয়ে প্রথমেই তার পরিচয় হলো বাণীর সাথে। বাণী ছিল খুব সুন্দর এবং মেধাবী মেয়ে। তার হাসি ছিল অনেক সুন্দর। ক্লাসে সবাই তার বন্ধু হতে চাইতো। বাণী উত্তমকে দেখে হাসি দিয়ে বলল, তুমি এখানে নতুন ভর্তি হলে তাই না? আমার নাম বাণী। তোমার নাম কী?
উত্তম একটু লজ্জা পেয়ে বলল, আমার নাম উত্তম।
বাণী তাকে সাহায্য করল ক্লাসের সকল নিয়ম কানুন উত্তম কে বুজিয়ে দিলেন। ধীরে ধীরে তারা অনেক ভালো বন্ধু হয়ে উঠল। স্কুল শেষে তারা একসাথে বাড়ি ফিরত, পড়াশোনা করত এবং খেলত। বাণীর সাথে পরিচয় হওয়ার পর উত্তমের স্কুল জীবন অনেক সহজ এবং সুন্দর হয়ে গেলো।
দিন গড়াতে লাগল। উত্তম এবং বাণী একে অপরের ভালো বন্ধু হয়ে উঠল। উত্তমের পড়াশোনার ধীরে ধীরে উন্নতি হতে লাগল। বাণী তাকে সকল বিষয়ে সাহায্য করত। তাদের বন্ধুত্ব স্কুলের সকলের নজরে পড়ল। সবাই বলত,ওরা খুব ভালো বন্ধু হয়েছে।
একদিন বাণী উত্তমকে তার বাড়িতে নিয়ে গেল। অনেক ভালো ভালো খাবার খেতে দিল।বাণীর মা-বাবা তাকে খুব আদর করলো। বাণীর মা বললেন, তুমি আমাদের বাড়িতে যতবার খুশি আসতে পারো।
বাণীর সাথে কাটানো সময় উত্তমের কাছে খুব আনন্দের ছিল। তারা একসাথে প্রকৃতির সৌন্দর্য উপভোগ করত,সুযোগ পেলেই, নদীর ধারে বসে গল্প করত। ধীরে ধীরে তাদের বন্ধুত্ব গভীর হতে থাকল
একদিন স্কুলে একটি বড় পরীক্ষা ছিল। উত্তম অনেক পড়াশোনা করলেও তার মনে হলো, সে পারবে না। বাণী তাকে সাহস দিল বলল তুমি পারবে, আমি জানি তুমি খুব মেধাবী ছাত্র।
পরীক্ষার দিন উত্তম অনেক পরিশ্রম করল এবং ভালো ফলাফল পেল। সে ক্লাসে প্রথম হলো । বাণী তার পাশে দাঁড়িয়ে বলল, আমি জানতাম তুমি পারবে!
উত্তমের আত্মবিশ্বাস বেড়ে গেল। সে মনে মনে ভাবল আমি কখনোই বাণীর সাহায্য ছাড়া এতটা ভালো করতে পারতাম না।
উত্তম আর বাণীর বন্ধুত্ব ধীরে ধীরে আরও গভীর হলো। তারা একে অপরকে ছাড়া আর কিছু ভাবতেই পারত না। একদিন উত্তম ভাবল, আমি কি বাণীকে ভালোবেসে ফেলেছি?
উত্তম ওই বিষয় টা নিয়ে অনেক ভাবতে লাগলো। এবং সে সুশান্ত নিলো এটা মামা কে বলবে।
সে তার পরের দিন মামার কাছে সব বলল। মামা হেসে বললেন, বাণী একজন ভালো মেয়ে। যদি সে তোমাকে ভালোবাসে তাহলে কোনো সমস্যা নেই।
উত্তমের মনে সাহস জাগল, এবং সে সিদ্ধান্ত নিলো বাণী কে তার ভালোবাসার কথা জানাবে।
একদিন বিকেলে নদীর ধারে বসে উত্তম বাণীকে বলল,বাণী আমি একটা কথা বলতে চাই ।
বাণী তার দিকে তাকিয়ে হাসি দিয়ে বলল, কি বলতে চাও বলো।
উত্তম সাহস করে বলল, বাণী আমি তোমাকে অনেক ভালোবাসি।
বাণী হেসে বলল, উত্তম তুমি যে আমাকে ছোট্ট বেলা থেকেই ভালোবাসো আমি তো টা জানি । তুমি যেহেতু আজ সাহস করে বলেই দিলে , তাইলে আমি ও বলি। আমি ও তোমাকে অনেক ভালোবাসি উত্তম
তাদের বন্ধুত্ব তখন ভালোবাসায় পরিণত হলো। তারা প্রতিজ্ঞা করল, ভবিষ্যতে একে অপরের সাথে থাকবে। সেই মুহূর্তে তাদের জীবন যেন আরও সুন্দর হয়ে উঠল।
উত্তম আর বাণী তাদের পড়াশোনা শেষ করল এবং জীবনে অনেক সফল হলো। কিন্তু তাদের সুখের দিন বেশিদিন টিকে রইল না। একদিন উত্তমের বাবা-মা ঢাকায় তাকে ফিরিয়ে নেওয়ার সিদ্ধান্ত নিলেন। উত্তমের উচ্চশিক্ষার জন্য ঢাকায় ফিরে যেতে হবে।
ধন্যবাদ সকলকে আমার লেখা গল্পটি পড়ার জন্য।
ভালো লাগলে একটা কমেন্ট করে জানাবেন
আজ যাচ্ছি দেখা হবে বার পরের পর্বে