ম্যাডামের মুখ গম্ভীর। কাহাতক আর সহ্য করা যায় এই ঝামেলা!! তাই তিনি সেদিন ভাবলেশহীণ হিন হয়ে বলেছিলেন,
" শোন মার্গারিটা, এখানে থাকতে গেলে এখানকার কতগুলো নিয়ম তোমাকে মেনে চলতেই হবে। তোমার একার জন্য তো আমরা এই স্যানেটোরিয়াম বন্ধ করে দিতে পারি না। তাছাড়া মনে রাখবে তুমি কিন্তু এখন অসুস্থ এবং খুব সম্ভবত রোগের প্রভাব তোমার মেন্টাল হেলথেও পরেছে, খুব শীঘ্রই আমরা তোমার চেকআপ করাবো। তোমার মা বাবা এখানে এলেও কিন্তু খুব একটা লাভ হবে না। কারন তুমি এখন অসুস্থ। এখানেই থাকতে হবে তোমাকে, সম্পুর্ন সুস্থ হওয়া অবধি। আগে যেখানে ছিলে, এই মুহুর্তে সেখানে তোমার স্থান হবে না"
আমার চোখ ফেঁটে জল এসেছিল। আমি কেঁদে উঠে বলেছিলাম, " ম্যাম...! ম্যাম প্লিজ একবার আমার মম-ড্যাডকে ডেকে পাঠান। " তাকে আমি বোঝাতে পারিনি আমার অবস্থাটা । কি করেই বা বোঝাবো, আমার কথায় তিনি কানই বা দেবেন কেন!!!
এই একটু আগে এসেছিল সে, আমার আর ভয় করেনি। আমি একদৃষ্টে তাকিয়েছিলাম তার চোখের দিকে। তার চোখে জ্বলছিল জিঘাংসার আগুন, শরীর থেকে ফুটে বেরোচ্ছিল অনন্ত রাগ। কিন্তু সেই রাগেই যেন নিহিত ছিল আমার প্রতি তার গভীর আকাঙখা। যেন আমার সম্পুর্ণ ভাবে না পেলে, সে নিজের ক্ষিধে মেটাতে পারছে না মন ভরে।
রাত আরো গভীর হল। আর লিখতে পারছি না আমি। কোন এক অজানা গভীর আকর্ষণে আকর্ষণ করছে সে আমাকে। আমার কেমন যেন পাগল পাগল মনে হয়, শরীর সেই বিশেষ জায়গাটিতে যেন আগুনের বান নেমেছে। জানিনা,এসব কেন হচ্ছে। আমি আর পারছিনা।আমাকে ওর কাছে যেতেই হবে, ওই পারবে এই জ্বালা জুড়োতে৷ আমি জানিনা এসব কি। আমি জানতেও চাই না। এই মুহুর্তে আমার জীবনের একটি মাত্র লক্ষ্য হল তার কাছে যাওয়া।
ওই তো!!! সে ডাকছে আমাকে। আমাকে সেই ডাক শুনতেই হবে। এই মুহুর্তে আমার জীবনের একমাত্র সত্য হল ওই ডেভিল, ওকেও বলে সবাই, শয়তান। পড়ে রইল আমার সব কিছু। আমার প্রিয় খাতা, বই, ডায়েরী। জলের বোতল আমার বান্ধবীরা। রইল সিসিলিয়া আমার মনে হচ্ছে তিন পাহাড়ের মধ্যে ওই যে লেক, ওখানেই ঘন অন্ধকারের অনন্ত জলরাশি মধ্যে আমি মিলিত হব তার সাথে
এখানেই শেষ হয়েছে, মার্গারিটার অসমাপ্ত ডায়েরি। এই একটু আগে তিন পাহাড়ের ওই লেকের জলের থেকে আবিস্কার হয়েছে মার্গারিটার বীভৎস রক্তাক্ত ক্ষতবিক্ষত দেহ।
কেউ বা কারা যেন নৃশংস ভাবে ছিড়ে খেয়েছে তাকে। দুই পা ফাঁক করে চিড়ে ফেলা হয়েছে কোমড় অবধি। খুবলে খাওয়া হয়েছে বুকের মাংস।
খবর পাঠানো হয়েছে তার মম আর ড্যাডকে। যে কোন মুহুর্তে এসে পড়বেন তারা।
এই অসমাপ্ত ডায়েরীর পাতায় চোখ রেখে তখন হাউ হাউ করে কেঁদে চলেছেন সুপার ম্যাম মিসেস স্মিথ। আর নিজেকে অভিশাপ দিচ্ছেন - " হা ইশ্বর আমি কেন মেয়েটার কথা শুনলাম না? কেন ডাক দিলাম না তার বাবা মাকে। তাহলে হয়ত আজ মেয়েটাকে অন্তত প্রাণে বাঁচানো যেত। শয়তান শয়তান! শয়তাম নিয়ে গেল ওকে... হে ঈশ্বর একি সর্বনাশ করলে তুমি। "
কিন্তু সেদিন যেমন মার্গারেটের কান্না কেউ শোনেননি, আজ তার কান্না শোনার জন্যও কেউ ছিল না সেখানে।
Your post was upvoted and resteemed on @upvoteandresteem
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit