ডাংগুলি

in hive-129948 •  2 days ago 
হ্যালো বন্ধুরা, সবাই কেমন আছেন? আশা করি সবাই ভালো আছেন। সবাইকে আন্তরিক শুভেচ্ছা জানিয়ে আজকের ব্লগটি শুরু করছি।

DALL·E 2024-11-17 00.16.21 - A lively and nostalgic scene depicting children playing the traditional game of 'Danguli' outdoors in a rural village setting. A child is using a stic.webp

Image Created by OpenAI

আজকে আপনাদের সাথে শৈশবের একটি স্মৃতিচারণমূলক পোস্ট শেয়ার করে নেবো। শৈশবে ডাংগুলি নামের একটি খেলা ছিল অর্থাৎ এই খেলাটা ৯০ দশক থেকে ২০ শতকের প্রথম দিকে খুবই জনপ্রিয়মূলক একটি খেলা ছিল। এই খেলাটা গ্রামের দিকেই বেশি প্রচলন ছিল, মূলত এইসব খেলার প্রতি বেশি ঝোঁক ছিল গ্রামীণ ছেলেদের। তবে এই খেলাটা এখনো কিছু কিছু গ্রামের দিকে গেলে মাঝে মধ্যে চোখে পড়ে, কিন্তু এই খেলাটাও বর্তমানে প্রায় হারিয়ে যেতে বসেছে। প্রযুক্তির কাছে এই সাধারণ খেলাটাও আজ একটি স্মৃতির পাতায় রয়ে যাওয়ার মতো। তবে এই খেলাটা আমি আসলে প্রথম দিকে বুঝতাম না, তবে প্রায় এই খেলাটা আমি দেখতাম এবং আমিও একসময় এই খেলাটা অনেক খেলেছি।

আসলে এই খেলাটা অনেকটা সহজ আর বেশি কিছুর প্রয়োজন হয় না বলতে গেলে। দুটি লাঠি হলেই যথেষ্ট এই খেলাটা খেলার জন্য। তবে এই খেলাটায় যত বেশি লোকজন হতো তত বেশি মজা হতো। কম লোকজনে খেলে তেমন একটা মজা পাওয়া যায় না। এই খেলাটা যে শুধু কম বয়েসী ছেলেরা খেলতে পারতো তা নয়, সব বয়েসির লোকজনই মোটামুটি একসাথে খেলতে পারতো। এই খেলাটায় সব থেকে বেশি মজা পাওয়া যেত। একটা ছোট লাঠি আর একটা বড়ো লাঠি দিয়েই খেলাটা খেলতে হতো অর্থাৎ ছোট যে লাঠিটা সেটাকে গুল্লি বলা হতো, তবে এটার হয়তো অঞ্চলভেদে ভিন্ন ভিন্ন নামেও ডাকা হয় আর একটা বড়ো লাঠি, যাকে ডাং বলা হতো। তবে এই খেলার জন্য কোনো নির্দিষ্ট মাঠ অর্থাৎ একদম সমান জায়গা দরকার হয়, তা নয়।

উঁচু বা নিঁচু জায়গাতেও খেলা যায় এই খেলাটা। শুধু যে জায়গায় খেলা হবে, সেখানে একটি ছোট গর্ত মতো করে নিলেই ব্যাস। মূলত ওই গর্তে ছোট লাঠি, যেটাকে গুল্লি বলা হয়ে থাকে, ওখানে লাঠিটা রেখে দেওয়া হতো আর বড়ো ডাং দিয়ে দূরে ছুড়ে বা ছিটকিয়ে দিতে হতো। এরপর ওই লাঠি দিয়ে ছোট লাঠির গায়ে বাড়ি মেরে উপরে হাওয়ায় তোলা হতো এবং বাড়ি মেরে অনেক দূরে ফেলার চেষ্টা করা হতো। এটাই খেলার মূল আকর্ষণ ছিল। মূলত এই খেলায় যে যতদূর ছুড়ে ফেলতে পারবে তাকেই বিজয়ী ঘোষণা করা হতো, যদিও এই খেলায় পয়েন্ট এর একটা গণনা হতো। তবে বেশিরভাগ ক্ষেত্রে এই খেলায় দূরত্বটা মাপা হতো।

তবে এই খেলাটা গ্রামের দিকে একটি সাধারণ খেলা হিসেবে খেলা হলেও অনেক সময় বড়োরা একটা প্রতিযোগিতার আয়োজন করতো এবং তারাও এই খেলায় ভাগ নিতো। এই প্রতিযোগিতায় খেলার সময় পয়েন্ট এর একটা হিসাব করা হতো এবং সেই হিসেবে বিজয়ী করা হতো। এই খেলাটা আসলে বন্ধুদের সাথে একজোট হয়ে যেমন খেলা হতো, সময় কাটানো হতো, তেমন এর মধ্যে একটা আলাদা মজার ব্যাপার থাকতো। মূলত এই যে লাঠিটা বাড়ি মেরে দূরে ছুড়ে ফেলতে হবে, এটাতে একটা শক্তির পরীক্ষাও থাকতো অর্থাৎ যার গায়ে বা বাহুতে বেশি শক্তি থাকবে, নিঃসন্দেহে তারটাই বেশি দূরে গিয়ে পড়বে।

তবে এই খেলায় যদি লক্ষ্য আর স্থিরতার সাথে খেলা হয়, তাহলে সব থেকে ভালো হয়। কারণ আপনি যদি এই খেলায় শক্তির থেকে লাঠিটা কৈশলে যদি বেশি উপরে তুলে মারতে পারেন, তাহলে আরো দূরে যাবে। তবে বন্ধুদের সাথে এই খেলায় শেষ পর্যন্ত হার-জিত যেটাই হতো না কেন, সব শেষে মজাটাই সব থেকে বেশি হতো। সব থেকে মজা হতো আরেকটা বিষয় নিয়ে, কারণ অনেকে আবার না মারতে পারলে, হাত দিয়ে দৌড়িয়ে গিয়ে দূরে রেখে আসতো হা হা। যদিও এটা ডিসকোয়ালিফাই হিসেবে ধরা হতো। বেশ মজার একটি খেলা, যা এখন একটা আমাদের অতীতের জীবনে শৈশবের একটা সাক্ষী হিসেবে রয়েছে।


শুভেচ্ছান্তে, @winkles


Support @heroism Initiative by Delegating your Steem Power

250 SP500 SP1000 SP2000 SP5000 SP

Heroism_3rd.png



Authors get paid when people like you upvote their post.
If you enjoyed what you read here, create your account today and start earning FREE STEEM!
Sort Order:  

Upvoted! Thank you for supporting witness @jswit.

গুল্লির দুটো মুখ ছিলে সরু করা হত। যাতে একটা কোণায় জোরে মারলে ওপরে উঠে যায়৷ তাই তো? কত যে খেলেছি। বাবা দুপুরে ঘুমিয়ে গেলেই বেড়ালের মতো পা টিপে টিপে নেমে যেতাম। কোনদিন জেনে গেলে একটা মারও মাটিতে পড়ত না৷ হা হা হা। গ্রামের জীবনগুলোয় প্রাণ ছিল৷ আমরা ছোটবেলাটা এতো আনন্দে কাটিয়েছি ভাবি মাঝে মাঝে৷ এই গিলিডান্ডা বা ডাংগুলি বানাতাম বাবলা গাছের ডাল দিয়ে৷

এইসব খেলা আজকাল শিশুদের কাছে একেবারেই অজানা। ডাংগুলি খেলা এক সময় খুব জনপ্রিয় খেলা ছিল। আমরাও গ্রামের বাড়ি গেলে ছেলেবেলায় এই ধরনের খেলা খেলতাম। আপনি সেই খেলার নিয়মাবলী দারুণ ব্যাখ্যা করলেন দাদা। কিন্তু আজকাল ডিজিটাল যুগে এইসব খেলা হারিয়ে গেল। এখনকার শিশুদের এই ধরনের খেলা গুলো সম্বন্ধে কোন আইডিয়া নেই।

ডাংগুলি খেলা আজকালকার বাচ্চারা খেলবে কি জানেই না।এই খেলাটি বিষয়ে খুব সুন্দরভাবে তুলে ধরেছেন দাদা।এই খেলাটি আমার ভাইয়ারা ফাইনাল এক্সামের পর বাড়িতে গেলে তখন খেলতো।আমরা তখন দেখতাম দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে। এখন আর এসব খেলা দেখা যায় না।হয়তো গ্রামাঞ্চলে দেখা যায় এখনো।

ডাংগুলি খেলাটা ছোটবেলায় দেখতাম অনেকেই খেলতো। কিন্তু আমার কখনো ডাংগুলি খেলা হয়নি। এই খেলাটা নিঃসন্দেহে অনেক জনপ্রিয় ছিলো। ছোট বড় অনেকেই এই খেলাটা বেশ মজা করেই খেলতো। কিন্তু কালের বিবর্তনে এসব হারিয়ে গিয়েছে। যাইহোক পোস্টটি আমাদের সাথে শেয়ার করার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ দাদা।