মধ্যরাতের ট্রেন ( পর্ব ১ )

in hive-129948 •  11 days ago 
হ্যালো বন্ধুরা, সবাই কেমন আছেন? আশা করি সবাই ভালো আছেন। সবাইকে আন্তরিক শুভেচ্ছা জানিয়ে আজকের ব্লগটি শুরু করছি।

DALL·E 2024-12-13 23.20.56 - A stunning and mysterious image of a train that runs only at midnight, designed with an extraordinary and fantastical appearance. The train glows with.webp

Image Created by OpenAI

আজকে আপনাদের সাথে একটি গল্প শেয়ার করে নেবো। এই গল্পটি একটি ট্রেনকে কেন্দ্র করে। আর এই ট্রেনটি অদ্ভুত এবং মায়াবী। এই ট্রেনের নাম "মধ্যরাত্রির ছায়া" . এইরকম নামকরণের কারণ হলো, এই ট্রেনটি একমাত্র মাঝরাতের দিকে চলাচল শুরু করে। এই ট্রেনটি "ছায়া" নামের একটি স্টেশন থেকে "নিশীথ ধাম" স্টেশন পর্যন্ত চলাচল করে থাকে। তবে এই ট্রেনটি মাত্র সপ্তাহে একবারই যাওয়া আসা করে থাকে। শহরের বুকে একটি নিস্তব্দ রাত এবং এই নিস্তব্দ রাতের গহীনে ট্রেনটির যাত্রা শুরু হয়। তবে শহরের লোকজনের মুখে একটাই কথা বলতে শোনা যায় এই ট্রেনের সম্পর্কে যে, এই ট্রেনে একবার যে যাত্রা শুরু করে, সে নাকি আর কখনো ফিরে আসে না।

এই ট্রেনের মধ্যে একটা গুড় রহস্য লুকিয়ে আছে। এখন এই "ছায়া" স্টেশনে একমাত্র যারা যাত্রা করতে চায় অর্থাৎ যারা টিকিট কাটতে আসে, একমাত্র তারাই দেখতে পায় এই টিকিট কাউন্টারের লোকজনকে। তো এই নিয়ে শহরে অনেক রকম কথাবার্তা চলতে থাকে লোকমুখে। এই শহরের তন্ময় নামের এক তরুণ এই বিষয়গুলো জানার পরে সে একদমই এইসব আজব কথা বিশ্বাস করেনি, কারণ সে আবার নিজের চোখে যা না দেখে, সেইসব বিষয় বিশ্বাস করে না। এখন তার মনে কৌতুহল জাগে যে, এই ট্রেনের সম্পর্কে এতো কিছু শুনছি, তাহলে এর নিশ্চই কোনো রহস্য আছে। আর সেই এই রহস্য উন্মোচনের জন্য সিদ্ধান্ত নেয় যে, সে একদিন এই ট্রেনে ভ্রমণ করবে।

এখন সেই হিসেবে সে মধ্যরাতে স্টেশনে এসে টিকিট কাটে এবং একদম কাঁটায় কাঁটায় ট্রেনের হর্ন বেজে ওঠে আর যাত্রী রিসিভ করার জন্য স্টেশনে এসে থামে। দরজা খুলে যাওয়ার সাথে সাথে তন্ময় ট্রেনে উঠে পড়ে এবং সে উঠে একদম জনশূন্য ট্রেন দেখতে পায় অর্থাৎ এই ট্রেনে একমাত্র সে ছাড়া আর কেউই নেই। সেইদিন আবার চাঁদনীর রাত আর সেই চাঁদের আলো ট্রেনের সিটগুলোর উপরে এসে পড়েছে এবং সেখানে ছায়ার মতো যেন নাচছে এইরকম বোঝা যাচ্ছে। তন্ময় এটা দেখে একটু ঘাবড়ে যায়। তার উপর আবার তন্ময় এর থেকে বেশ কিছুটা দূরে দেখতে পায় একটা বৃদ্ধ লোক বসে আছে এবং সে আবার বেশ শ্যুট -কোট পড়ে আছে।

এরপর তন্ময় অনেক সাহস নিয়ে সামনের দিকে এগিয়ে যায় এবং লোকটিকে জিজ্ঞাসা করে যে, আপনি কোথায় যাচ্ছেন? উত্তরে বৃদ্ধ লোকটি বলে- সময় যেখানে থেমে গিয়েছে, সেখানেই আমার গন্তব্য। এরপর লোকটি তন্ময়কে জিজ্ঞাসা করে যে, তুমি কি জানো কোথায় যাচ্ছ? আর এই ট্রেন কোথায় গিয়ে থামবে? তন্ময় কিছুক্ষন চুপচাপ দাঁড়িয়ে থেকে বলে যে, আমি আসলে শুধু জানতে চাই যে, এই ট্রেনের আসল রহস্যটা কি? উত্তরে লোকটি বলে যে, তুমি যা খোঁজার জন্য এই ট্রেনে যাত্রা শুরু করেছো, সেটা হয়তো তোমার জন্য নয়। আর মাঝে মাঝে কিছু প্রশ্নের উত্তর না জানাই শ্রেয়। তাদের মধ্যে এইসব কথোপকথন শেষ হয়ে গেলে সাথে সাথে ট্রেনের সব কামরার লাইট বন্ধ হয়ে যায়।

এরপর চারিদিকে পুরো ঘন অন্ধকার এবং বাইরের দিকেও যেন কুয়াশার মতো ছেয়ে গিয়েছে। তন্ময় এই অন্ধকারে শুধু ট্রেনের চলার শব্দ শুনতে পায়। এইভাবে কয়েক ঘন্টা কেটে যাওয়ার পরে হঠাৎ করে আবার ট্রেনের ভিতরের সব লাইট জ্বলতে শুরু করলো। আর তন্ময় চোখ মেলে দেখলো যে, সে একটা অচেনা জায়গায় এসেছে অর্থাৎ এই ট্রেনটি সেই "নিশীথ ধাম" স্টেশনে এসে থমকে দাঁড়িয়েছে। তার কাছে একটি ভিন্ন জগৎ বলে মনে হয়েছে, কারণ তার শহরের জীবনযাত্রা এবং মানুষজনের চালচলনের থেকে একদম সম্পূর্ণ আলাদা।

তন্ময় যখন ট্রেন থেকে নেমে এই সবকিছু দেখছিলো, তখন তার সামনে আবার সেই বৃদ্ধ লোকটি এসে দাঁড়ায়। তাকে দেখতেই বলে যে, তোমার সময় শেষ হয়ে এসেছে-তাই তুমি দ্রুত সিদ্ধান্ত নাও যে, এখানে থাকবে না তোমার জগতে ফিরে যাবে! আর একবার ফিরে গেলে এখানে আর আসতে পারবে না। তন্ময় তো তার এই কথা শুনে ঝামেলায় পড়ে যায় অর্থাৎ সে কি সিদ্ধান্ত নেবে বুঝতে পারে না। কারণ তার এই রহস্য জানাটাও জরুরি। আবার তার নিজের জগতে তার আত্মীয় স্বজনও রয়েছে। এখন বিষয় হলো - তন্ময় কি তার নিজের জগতে ফিরে যাবে, না এই নতুন রহস্যে ঘেরা জগতে থেকে যাবে.......?


শুভেচ্ছান্তে, @winkles


Support @heroism Initiative by Delegating your Steem Power

250 SP500 SP1000 SP2000 SP5000 SP

Heroism_3rd.png



Authors get paid when people like you upvote their post.
If you enjoyed what you read here, create your account today and start earning FREE STEEM!
Sort Order:  

Upvoted! Thank you for supporting witness @jswit.

দাদা এমন একটা জায়গায় এই পর্বটা শেষ করেছেন, এখন তো পরবর্তী পর্ব পড়ার জন্য আমার অনেক বেশি আগ্রহ জেগেছে। তন্ময় দেখছি সাহস করে ওই ট্রেনে করে এসেছে রহস্যটা পুরোপুরি ভাবে জানার জন্য। কিন্তু এই ভিন্ন জগতে সে থেকে গেলে তার নিজের শহরে আর যেতে পারবে না দেখছি। ভালো একটা মুশকিলের মধ্যে তন্ময় পড়েছে বোঝাই যাচ্ছে। কিন্তু এখন সে কোন সিদ্ধান্তটা নেবে এটাই ভাবছি। আমার তো মনে হয় রহস্য জানার থেকে তার চলে যাওয়াই ভালো। কারণ সে নিজের জীবনটা চিরতরে হারাতে পারে এর কারণে। অপেক্ষায় থাকলাম দাদা পরবর্তী পর্বের রিভিউটা পড়ার জন্য।

এরকম ভূতের কাহিনী গুলো মাঝেমধ্যে আমার কাছে অনেক বেশি ভয় লাগে। তেমনি আপনার এই গল্পটা পড়তেও আমার কাছে অনেক বেশি ভয় লেগেছে। আমি তো ভেবেছিলাম তন্ময় হয়তো কোনো সুযোগ পাবে না নিজের শহরে আসার জন্য। এখন তো দেখছি সুযোগ পেয়েছে। কিন্তু সে ওই সুযোগটা হাতছাড়া করবে কিনা এটাই দেখতে হবে। সে যদি দুইটা বিষয়ের মধ্যে নিজের শহরে ফিরে আসার সিদ্ধান্তটা নেয়, তাহলে ভালো হবে তার জন্য। রহস্যটা রহস্যই থেকে যাক, না হলে তো তার জীবনটাই চলে যাবে। দাদা আশা করি আপনি তাড়াতাড়ি পরবর্তী পর্বটা সবার মাঝে শেয়ার করে নিবেন।

এ ধরনের গল্প গুলো পড়তে ভীষণ ভালো লাগে। কিন্তু দাদা আপনি এমন এক জায়গায় গল্পটি শেষ করলেন খুব খারাপ লাগছে পরের পর্বটি জানার জন্য। তন্ময় আসলে কি করবে এখন।সে কি রহস্য উন্মোচন করবে নাকি আত্মীয়-স্বজনের কাছে ফিরে আসবে??আশাকরি খুব দ্রুতই তা জানতে পারবো।অসংখ্য ধন্যবাদ দাদা চমৎকার একটি গল্প শেয়ার করার জন্য।

তন্ময় যদি নতুন রহস্যে ঘেরা জগতে যায়, তাহলে তো আর কখনোই নিজের জগতে ফিরে যেতে পারবে না। কারণ সেটা একটা ভয়ংকর জগত। এই ধরনের ভূতের গল্প পড়তে আমার বরাবরই ভীষণ ভালো লাগে। গল্পটা যখন পড়ছিলাম, তখন মনের মধ্যে ভিন্ন ধরনের ভালো লাগা কাজ করছিলো। যাইহোক কবিতাটি পড়ে ভীষণ ভালো লাগলো দাদা। শেয়ার করার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ আপনাকে।

দারুণ একটি গল্প শেয়ার করলেন দাদা আপনি পড়ে বেশ ভালো লাগলো। তবে বেশ কিছু প্রশ্ন থেকে গেছে গল্প থেকে জানার। আরো কিছু বিষয় জানা রয়েছে পুরো গল্পটি পড়ে হয়তো অনেক কিছু জানতে পারবো তম্ময়ের মাধ্যমে। অদ্ভুত ধরনের একটি ট্রেনের গল্প জানতে পারলাম আজকে। আশা করি পুরো পর্ব আপনি ধাপে ধাপে শেয়ার করবেন।

একটা ক্লাইমেক্স রেখে এই পর্বটা শেষ করেছেন দাদা। শেষ পযর্ন্ত তন্ময়ের কী হবে এটা ভেবে একটা কৌতূহল তৈরি হচ্ছে। গল্পটা পড়ার সময় বেশ রহস্যময় এবং ভৌতিক লাগছিল। দারুণ লিখেছেন আপনি। পরবর্তী পর্বের জন্য অপেক্ষায় থাকলাম।