ওয়েব সিরিজ রিভিউ: হোমস্টে মার্ডারস- চেক আউট ( পর্ব ৬ )

in hive-129948 •  last year 
হ্যালো বন্ধুরা, সবাই কেমন আছেন? আশা করি সবাই ভালো আছেন। সবাইকে আন্তরিক শুভেচ্ছা জানিয়ে আজকের ব্লগটি শুরু করছি।

আজকে আপনাদের সাথে 'হোমস্টে মার্ডারস' ওয়েব সিরিজটির অন্তিম পর্ব তথা ষষ্ঠ পর্ব রিভিউ দেব। এই পর্বের নাম হলো "চেক আউট"। গত পর্বে লাস্ট দেখেছিলাম যে দামিনী তার আসল পরিচয় সবার সামনে নিয়ে আসে আর কিঞ্জল এর সব চালাকি প্ল্যান করে ধরে ফেলে। তাকে পুলিশের হাতে ধরিয়ে দেওয়ার পরে কি হয় আজকে সেটা দেখবো।


স্ক্রিনশর্ট: ইউটিউব


✠কিছু গুরুত্বপূর্ণ তথ্য:✠

সিরিজটির নাম
হোমস্টে মার্ডারস
প্লাটফর্ম
hoichoi
সিজন
পর্ব
চেক আউট
পরিচালকের নাম
সায়ন্তন ঘোষাল
অভিনয়
অর্জুন চক্রবর্তী, সোহিনী সরকার, সৌরভ দাস, পর্ণ মিত্র ইত্যাদি
মুক্তির তারিখ
১২ মে ২০২৩ ( ইন্ডিয়া )
সময়
১৭ মিনিট ( ষষ্ঠ পর্ব )
মূল ভাষা
বাংলা
কান্ট্রি অফ অরিজিন
ইন্ডিয়া


❂মূল কাহিনী:❂


স্ক্রিনশর্ট: hoichoi

কিঞ্জলকে পুলিশের হাতে ধরিয়ে দেওয়ার পরে সবাই বলতে অনিমেষ, jew আর টনি বিষয়টা দেখে অবাক হয় কারণ তারাই তো একসময়ের জন্য তাকে মার্ডারার ভাবছিলো কিন্তু এই বিষয়টা মিতা আর কুণালকে আগে থেকেই জানিয়ে রেখেছিলো যে সে একজন আন্ডারকোভার হিসেবে কাজ করে। আর মোটামুটি কিঞ্জলের বিষয়টা অনেক আগে থেকেই ধরে ফেলেছিলো যে কিঞ্জলই সব কিছু করছে আর পরেও আতঙ্ক তৈরি করবে। আর এজণ্যই সে হেয়ালি করে বলার মতো সবার সামনে একবার বলেছিলো যে প্রিয়ার ছোট ভাই যেহেতু এখনো বেঁচে আছে তাই তার তখনকার বয়স অনুযায়ী এখনকার দিনে একটু ক্যালকুলেশন করলে বোঝা যাবে কত বড়ো হয়েছে, তবে কিঞ্জলের মতো দেখতে হবে এটাও হেয়ালীভাবে বলে। দামিনী মোটামুটি বিষয়গুলো আন্দাজ করতে পেরেছিলো কিন্তু প্রমান পাচ্ছিলো না , যার কারণে মালিকের সাথে কথা বলে একটা নাটক সাজায় যেটাতে কিঞ্জল ফেঁসে যায়। আর প্রথম থেকে মনীষা হোক আর কুহেলি হোক, সবার দিকেই দামিনীর নজর ছিল। আর কুহেলিকে যে এখানে কিঞ্জল ডেকে নিয়ে এসেছিলো সেটা জানে। তবে মিতার বোন গীতা যে মারা গিয়েছিলো অনেক আগে সেটা জানতো না, তাই সোশ্যাল মিডিয়ায় মিতার ছবিকে গীতা ভেবে তাকেই খুন করবে বলে সাথে কুহেলীকেও ডাকে যাতে একই জায়গায় দুইজনকে একসাথেই মারতে পারে।


স্ক্রিনশর্ট: hoichoi

আর এইসব দেখেই দামিনী এখানে হোটেল বুক করে চলে আসে। কারণ মনীষার খুনের পরে আর তার বডির পাশে প্রিয়ার ছবি দেখে বুঝতেই পেরেছিলো যে তার কাছের কেউ এইটা করছে। আর এইজন্যই সবার উপরে নজরটা নিজের পরিচয় লুকিয়ে রেখে তারপর এই কাজগুলো করেছে নাহলে যে পরে আবার সতর্ক হয়ে যাবে। তাই যেদিন তারা সবাই একসাথে এই গেস্ট হাউসে জয়েন করেছিল তখন থেকেই সবার চলাফেরা, কথাবার্তা সবকিছুতেই একটা নজর রাখতো আর এটা দেখেই সবাই ভাবতো মাথায় কোনো গন্ডগোল আছে। আর কুহেলি যখন খুন হয় তখন কিঞ্জল যে সেই ছুরিটা সাথে না নিয়ে জানলা দিয়ে বাইরে ছুড়ে ফেলে দেয় সেটাও দেখে ফেলে, তবে সেটা কিঞ্জল ছিল কিনা সেটা শিউর ছিল না, কিন্তু বাইরে কিছু ফেলতে দেখে আর দামিনী ওই মুহূর্তেই লুকিয়ে গিয়ে সেই ছুরিটা প্রমান হিসেবে প্যাকেট করে রাখে। আর এরপরে পরেরদিন ওই সেম জায়গায় অনিমেষ আর কিঞ্জল প্রমান খুঁজতে যায় কিন্তু কিঞ্জলই জানতো যে ওখানে কি থাকতে পারে আর ওটাকে চাপা দেওয়ার জন্য যায়, কারণ সে পুলিশ তাই কেউ সন্দেহ করবে না তদন্তের স্বার্থে।


স্ক্রিনশর্ট: hoichoi

আর আরো একটা সবথেকে গুরুত্বপূর্ণ যে বিষয়টা সেটা হলো কিঞ্জলের পায়ে সমস্যা আছে অর্থাৎ তার দুই পায় একটু বাঁকা মতো, মানে হাঁটার সময় পায়ের পাতা বেঁকিয়ে হাঁটে। এক্ষেত্রে আমরা নরমালি সোজাভাবে যখন চলি তখন আওয়াজ হয় কিন্তু তার হাঁটার ক্ষেত্রে কম আওয়াজ হয়। আর এখানেই আইডেন্টিফাই করে ফেলে দামিনী যে কিঞ্জল সন্দেহজনক। আর এই সমস্যাটা যেহেতু জন্মগত তাই তার দিদি প্রিয়ারও যে এই সমস্যা ছিল সেই হিসেবে সন্দেহের তীর পুরোপুরিভাবে তার দিকে যায়। আর কারো পায়ের সমস্যা থাকলে যে পুলিশে ভর্তি হওয়া যায় না তা সেটা ভালোভাবেই জানা তার। এইসব বিষয় সব ক্লু অজান্তেই দামিনীর কাছে প্রকাশ করে ফেলে। আর একদিন রাতে মিতা তার দুর্বলতার একটা কথা সবাইকে বলেছিলো যে তার বাদামে খুব এলার্জি যেটা তার সহ্য ক্ষমতার বাইরে। আর কিঞ্জল এটা শুনেই তার মারার প্ল্যান অন্যভাবে করে। যে দুইজনকে দুইভাবে মারতে হবে। আর মিতাকে খাবারের মাধ্যমে মারলে সন্দেহটা যাবে খাবার তৈরি যে করেছে তার দিকে। দামিনী বুঝতে পেরেছিলো যে মিতাকে মারার কিছু প্ল্যান করছে আর কিঞ্জলকে রান্নাঘরে খাবারে কিছু একটা মেশাতে দেখে। এরপরেই দামিনী গিয়ে চেক করে আর মিতাকে সতর্ক করে।


স্ক্রিনশর্ট: hoichoi

আর মিতা সেই খাবারটা খাইনি, শুধু খাওয়ার ভান করে নিচে পড়ে যাওয়ার অভিনয় করে। আর এইসবের প্ল্যান দামিনী করে রেখেছিলো। আর মিতাকে কুনাল ফাঁক বুঝে একটা গুপ্ত দরোজার আড়ালে লুকিয়ে দেয় যাতে কেউ খুঁজে না পায়, কারণ সেটার রহস্য একমাত্র কুনাল জানতো। আর পুলিশকে আগে থেকেই কোনো খবর কিঞ্জল জানায়নি, দামিনীই পরে থানায় ফোন করে সবকিছু জানিয়ে রেখেছিলো আর সেই মতে পুলিশ এসে শনাক্ত করে নিয়ে যায় কুহেলির লাশ আর লাস্টে তো কাহিনী ওটাই ছিল কিঞ্জলকে ধরিয়ে দেওয়া। যাইহোক, দামিনী তার প্রথম থেকে পুরো কাহিনীটা তাদের সামনে ক্লিয়ার করে দেয় কিভাবে কি হলো। এরপর সবাই যার যার মতো ঝামেলাবিহীন হয়ে বাড়িতে ফিরে যাওয়ার প্রস্তুতি নিয়ে নেয় আর চলেও যায় সবাই। তবে এই ঘটনাটা গল্প আকারে অনিমেষকে পাবলিশ করার অনুমতি দিয়ে দেয়।


❂ব্যক্তিগত মতামত:❂

অন্তিম পর্বে আসলে তেমন বিশেষ কিছু ছিল না, যেটা হওয়ার আগের পর্বেই ঘটে গেছে। তবে এতো সব কাহিনী কিভাবে হলো কি জন্য হলো এর মূল রহস্যটা ছিল দামিনীর কাছে, কারণ সে পুরো বিষয়টা স্টাডি করে তারপরই মাঠে নেমেছে। এটা তার ডিপার্টমেন্ট ছিল না, কিন্তু সে এই কাজ করে ডিপার্টমেন্টের মধ্যে একটা দুঃসাহসিকতার পরিচয় দেয়। বিষয়টা সম্পূর্ণ মার্ডার আর তদন্তের উপরে নির্ভর করে গল্প সাজানো ছিল আর আমার কাছেও কাহিনীটা মোটামুটি ভালোই লেগেছে। এই সিরিজটা সম্পূর্ণ দেখলে আপনারাও বুঝতে পারবেন, আসলে এইধরণের সিরিজগুলো যতই পড়া হোক না কেন, একবার না দেখলে তার কন্সেপ্টা ঠিকভাবে ক্লিয়ার হয় না।


❂ব্যক্তিগত রেটিং:❂
৮.৮/১০


❂ট্রেইলার লিঙ্ক:❂


শুভেচ্ছান্তে, @winkles


Support @heroism Initiative by Delegating your Steem Power

250 SP500 SP1000 SP2000 SP5000 SP

Heroism_3rd.png

Authors get paid when people like you upvote their post.
If you enjoyed what you read here, create your account today and start earning FREE STEEM!
Sort Order:  

Upvoted! Thank you for supporting witness @jswit.

দাদা হোমস্টে মার্ডারস সিরিজের অন্তিম পর্ব পড়ে ভীষণ ভালো লাগলো। আসলে গত পর্বেই জানতে পেরেছিলাম এইসব কিছুর পেছনে কিঞ্জলই রয়েছে। তার সাথে আবার জানতে পেরেছিলাম দামিনীর আসল পরিচয়। আর এই পর্বে দামিনী নিজের সবকিছু সবার সামনে উপস্থাপন করেছে। বিশেষ করে এই কাজটার সাথে দামিনী যুক্ত না থাকা সত্ত্বেও সে পুরো কাজটা করেছে। তাছাড়া ডিপার্টমেন্টের মধ্যে অনেক বেশি দুঃসাহসিকতার পরিচয় দিয়েছে। তবে সবকিছু হিসেবে এই সিরিজটা আমার কাছে ভীষণ ভালো লেগেছে। আমি মনে করি এটা আমার দেখার কোন প্রয়োজন নেই। কারণ আপনার প্রতিটা পর্ব পড়েই আমি সিরিজ টা দেখার অনুভূতি নিয়ে নিয়েছি। পরবর্তীতে নতুন কোন সিরিজ রিভিউ দেখার অপেক্ষায় রইলাম।

দাদা হোমস্টে মার্ডারস এর ছয়টা পর্বই আমার কাছে ভীষণ ভালো লেগেছে। বিশেষ করে আজকের পর্বের মিলটা সবথেকে সুন্দর লেগেছে। যদিও কালকের পর্বেই জানতে পেরে গিয়েছিলাম যে দামিনী একজন ডিটেকটিভ। তার সাথে সাথে কিঞ্জলই সবকিছুর জন্য দায়ী। এ পর্বে দেখছি দামিনী নিজের সবকিছু খুলে বলল। অবশ্য দামিনী রে এটা কাজ না হলেও কিন্তু ও কাজটা খুব ভালোভাবেই পূরণ করেছে। আর এটা কিন্তু অনেক বড় একটা কাজ। তবে রহস্যটা আস্তে আস্তে বের হয়েছে এমনকি সবকিছু জানতে পেরে ভীষণ ভালো লেগেছে। আশা করি পরবর্তীতে আরো সুন্দর কোন ওয়েব সিরিজের পর্ব নিয়ে আসবেন।

এই ওয়েব সিরিজের অন্তিম পর্ব ভীষণ ভালো লাগলো পর্বে। আসলে কোন সিরিজ দেখার সময় শেষ পর্বে যখন সবকিছু ঠিক হয়ে যায় দেখতে ভীষণ ভালো লাগে। দামিনীর সব কাহিনী জেনে একটু অবাক হলাম। শেষ হলে ডিটেকটিভ হয়েও সবার কাছ থেকে সবকিছু গোপন রেখেছিল। তাছাড়া এই কাজটার সাথে জড়িয়ে যাওয়ার কারণে সবকিছু খুঁজে বের করেছে। সবশেষে কিঞ্জলকে ধরিয়ে দেওয়া হল। আশা করব পরবর্তীতে অন্য কোন নতুন সিরিজ দেখতে পাবো।

যদিও গত পর্বেই দামিনীর সম্পর্কে জেনেছিলাম এমনকি কিঞ্জল দোষী এটাও জেনেছিলাম। তারপর তো দেখলাম এ পর্বে কিঞ্জলকে পুলিশের হাতে ধরিয়ে দেওয়া হল। যদিও সবকিছু কিঞ্জল কিছুই বলেনি শুধুমাত্র দামিনী নিজেই সবকিছু বলেছে। আর দামিনী সম্পর্কে জেনে একটু অবাকই হলাম। কারণ হচ্ছে শুরু থেকে দামিনী একদমই অন্যরকম ছিল। আসলে সবার কাছ থেকে সত্যিটা বের করার জন্যই এত কিছু। তবে আজকে লাস্ট পর্ব পড়ে ভীষণ ভালোই লেগেছে। আপনার এই ওয়েব সিরিজের পর্ব গুলো পড়েই আমার দেখা হয়ে গেছে।

দাদা সব মিলিয়ে দারুন একটি ওয়েব সিরিজ পড়লাম। এই সিরিজে দামিনীর সাহসিকতা দেখে সবাই মুগ্ধ হয়ে গেছে। সে দক্ষ হাতেই সব কিছু সমাধান করেছে। এই সিরিজ গুলো পড়ার থেকে দেখলে অনেক কিছু শেখা যাবে। বাস্তবে যে জিনিষ ঘটে সে গুলোকে নিয়ে নাটক সিরিজ বানানো হয়। তাই এগুলো দেখলে অনেক কিছু জানা যায়। শিক্ষনীয় একটি ওয়েব সিরিজ শেয়ার করার জন্য আপনাকে অনেক অনেক ধন্যবাদ।

'হোমস্টে মার্ডারস' ওয়েব সিরিজটির অন্তিম পর্ব বা ষষ্ঠ পর্ব রিভিউ পড়ে অনেক ভালো লাগলো। দেখতে দেখতে আমরা শেষ পর্বে চলে এলাম। তবে এই ওয়েব সিরিজের গল্পটি কিন্তু বেশ দারুন ছিল। খুনের রহস্য উন্মোচন এবং খুনিকে খুঁজে বের করা সত্যিই অনেক কঠিন ছিল। দামিনীর চতুরতা এবং দক্ষতা সবকিছুকে সহজভাবে সমাধান করতে সহায়তা করেছে। দামিনী খুবই দক্ষতার সাথে সবকিছু হ্যান্ডেল করেছে। আসলে দামিনী গভীর ভাবে এই কেসটি হ্যান্ডেল করার চেষ্টা করেছে এবং পুরো বিষয় ভালোভাবে স্টাডি করেছিল। তাই তো সব রহস্য খুব সহজেই উন্মোচন করে ফেলেছে। দামিনী অনেক চালাকির সাথে কিঞ্জলের সব রহস্য খুঁজে বের করেছে এবং তাকে ধরে ফেলেছে। সবকিছুর পেছনে কি রহস্য ছিল তা সামনে তুলে ধরেছে। সত্যি দাদা আপনি একদম ঠিক বলেছেন রিভিউ পড়ে কোন কিছুর মূল কনসেপ্ট ভালোভাবে বুঝতে পারা যায় না। আমি সময় পেলে অবশ্যই এই ওয়েব সিরিজটি দেখে নেব। আমার কাছে বেশ ভালো লেগেছে। অনেক অনেক ধন্যবাদ দাদা দারুন একটি ওয়েব সিরিজের রিভিউ সবার মাঝে উপস্থাপন করার জন্য।